hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল্লাহর বাণী আল-কুরআন ও আধুনিক বিজ্ঞান

লেখকঃ মোহাম্মদ ওসমান গনি

কুরআন নাজিলের পূর্বের যুগ
সর্ব প্রথম সেই মহান করুণাময় আল্লাহ তা’আলার সার্বিক প্রশংসা যিনি আমাদের জন্য সর্ব শ্রেষ্ঠ নবী প্রেরণ করেছেন, এবং সর্ব উৎকৃষ্ট কিতাব দান করেছেন, এবং ইসলামকে আমাদের জন্য জীবন বিধান হিসেবে মনোনীত করেছেন। সেই মহানবী সা. এর উপর দরুদ ও সাল্লাম যিনি আমাদেরকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন এবং অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে এসেছেন।

কুরআন নাজিলের পূর্ব যুগকে জাহেলিয়াত যুগ বলা হয়। জাহেলিয়াত আরবী শব্দ যার অর্থ হচ্ছে অজ্ঞতা। জাহেলিয়াত ইসলামের বিপরীত। ইসলাম বুঝতে হলে জাহেলিয়াতকে বুঝতে হবে, প্রবাদে আছে,

" من لم يعرف الجاهلية لم يعرف الإسلام "

যে ব্যক্তি জাহেলিয়াত জানতে পারেনি সে ইসলাম জানতে পারেনি।

জাহেলিয়াত বলতে সাধারণত যা বুঝায় তা হচ্ছে ইসলাম আগমনের পূর্বের যুগ, যা বিশ্বের সর্বত্র বিস্তৃত ছিল। তবে প্রশ্ন হলো চৌদ্দ শত বৎসর পূর্বের সেই যুগকে কেন জাহেলিয়াতের যুগ বলা হতো? সেই যুগের মানুষকে কেন জাহিল বলা হতো? আসলেই কি তারা শিক্ষাদীক্ষা, জ্ঞান বিজ্ঞান থেকে এতই পিছপা ছিল, যার কারণে তাদের নাম হলো জাহিল?

ইতিহাসের পাতা যদি উল্টিয়ে দেখা যায়, তবে সকলকে এক বাক্যে স্বীকার করতে হবে যে, সেই যুগেও শিক্ষাদীক্ষার চর্চা ছিল। তাদের ভাষা ও কবিতা গুলোতে এতো উচ্চাঙ্গতা, ভাবের গাম্ভীর্যতা ও অপরূপ প্রকাশ ভঙ্গি ছিল, যা দেখে পরবর্তী যুগের কবি সাহিত্যিকদের হিমশিম খেতে হয়। এমন কি তাদেরকে লক্ষ্য করে কুরআনের চ্যালেঞ্জ এটাই প্রমাণ করে যে তারা মূর্খ ছিল না। কিন্তু তারপরও সেই যুগকে কেন জাহেলিয়াতের যুগ বলা হতো? এই প্রশ্নের সঠিক জবাব পেতে হলে আমাদেরকে নজর দিতে হবে আল্লাহর কিতাব পবিত্র কুরআনের দিকে। কারণ হলো আরবী ভাষায় এবং জাহেলিয়াত শব্দটি সর্ব প্রথম কুরআনেই ব্যবহৃত হয়েছে। আল্লাহ তা’আলা বলেন:

وجوزنا ببني إسرائيل البحر فأتوا على قوم يعكفون على أصنام لهم ، قالوا يا موسى اجعل لنا إلها كما لهم آلهة . قال إنكم قوم تجهلون ( سورة الأعراف ১৩৮)

আমি বনী ইসরাইলকে সাগর পার করে দিয়েছি। তখন তারা এমন একটি সম্প্রদায়ের কাছে গিয়ে পৌঁছাল, যারা স্বহস্তে নির্মিত মূর্তি পূজায় নিয়োজিত ছিল। তারা বলতে লাগল, হে মুসা, তাদের যেমন অনেক গুলি মাবুদ রয়েছে তেমন আমাদের জন্য একজন মাবুদ বানিয়ে দাও। তিনি (মুসা আ:) বললেন: নিশ্চয়ই তোমরা জাহিল সম্প্রদায়। অর্থাৎ প্রকৃত মাবুদের পরিচয় লাভে তোমরা অজ্ঞ ও মূর্খ।

সুরা আল ইমরান ১৫৪ আয়াতে বর্ণিত হচ্ছে:

يظنون بالله غير الحق ظن الجاهلية ( سورة العمران ১৫৪)

তারা আল্লাহর সম্পর্কে জাহেলিয়াত যুগের ধারণার ন্যায় মিথ্যা ধারণা করছে।

সূরা মায়েদার ৫০ নং আয়াতে বর্ণিত হচ্ছে:

أفحكم الجاهلية يبغون ومن أحسن من الله حكما لقوم يوقنون ( سورة المائدة ৫)

তারা কি জাহেলিয়াত যুগের হুকুম কামনা করে। আল্লাহ অপেক্ষা বিশ্বাসীদের জন্য উত্তম হুকুম দাতা আর কে হতে পারে?

আল্লাহর হুকুম ছাড়া যত হুকুম রয়েছে সব জাহেলিয়াত। সূরা আল ফাতাহ এর ২৬ নং আয়াতে বর্ণিত হচ্ছে:

إذ جعل الذين كفرو في قلوبهم الحمية , حمية الجاهلية ( سورة الفتح ২৬)

কাফেররা তাদের অন্তরে মূর্খতা যুগের জিদ পোষণ করত।

সুরা আহজাবের ৩৩ নং আয়াতে উলেখ আছেঃ

ولا تبرجن تبرج الجاهلية الأولي ( سورة الأعراب ৩৩)

জাহেলিয়াত যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। (অর্থাৎ সেই যুগে বিস্তৃত ছিল নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনা।)

উপরোক্ত আয়াতগুলো থেকে আমরা সুস্পষ্টভাবে বুঝতে পারলাম যে, জাহেলিয়াত যুগের চারটি প্রধান বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যার কারণে সেই যুগকে জাহেলিয়াত বা অজ্ঞতার যুগ বলা হতো। বৈশিষ্ট্য গুলো হলো:

(ক) الجهل بحقيقة الإله : আকীদাগত দিক দিয়ে প্রকৃত মাবুদের পরিচয়ে তারা ছিল অজ্ঞ।

(খ) الجهل بحكم الله : আইন গত দিক দিয়ে তারা আল্লাহর হুকুম সম্পর্কে অজ্ঞ ছিল।

(গ) চরিত্র গত দিক দিয়ে তাদের অন্তরে ছিল জেদ ও গর্ব।

(ঘ) পরিবেশ গত দিক দিয়ে তাদের ছিল নির্লজ্জতা ও বেহায়পনা।

আয়াত গুলোতে আরও ইঙ্গিত রয়েছে যে এরপরও আবার অপর কোন অজ্ঞতার প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে। যে সময় আবার সে যুগের ন্যায় উক্ত অজ্ঞতার বিস্তার ঘটবে, সে যুগকেও জাহিলিয়াতের যুগ বলা হবে। বলাবাহুল্য বর্তমান পশ্চিমা বিশ্বের সর্বত্র সে অজ্ঞতারই জয়জয়কার, বরং অধুনা সারা পৃথিবী জুড়েই তার প্ররাদূর্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

সে জাহেলী সমাজে প্রকৃত মাবুদের সঠিক পরিচয় জানা না থাকার কারণে তারা মূর্তি, গাছ, ও আগুনের পূজা করত। তেমনি বর্তমান চাক্যচিক্যময় চোখ ধাঁধানো পৃথিবীতে প্রকৃত মাবুদের পরিচয় ভুলে গিয়ে কেউ করছি মাজার পূজা, কেউ করছি নেতার পূজা, কেউ করছি ভন্ড পীরের পূজা, কেউ করছি নফছের পূজা, আবার কেউ করছি শয়তানের পূজা।

সেই জাহেলী সমাজ আল্লাহর আইন বা হুকুম সম্পর্কে অজ্ঞ ছিল। আল্লাহর হুকুম ছাড়া সমস্ত কানুন হচ্ছে জাহেলী কানুন।

বর্তমানেও আল্লাহর বিধান ছেড়ে দিয়ে মানব রচিত বিধান দিয়ে দেশ ও জাতি শাসন করা হচ্ছে। এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা আরও বলেন,

ألم تر إلي الذين يزعمون أنهم آمنوا بما أنزل إليك وما أنزل من قبلك يريدون أن يتحاكموا إلي الطاغوت وقد أمروا أن يكفروا به ( سورة النساء ৬০)

আপনি কি তাদেরকে দেখেননি যারা দাবি করে যে, যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে, এবং আপনার পূর্বে যা অবতীর্ণ হয়েছে আমরা সে বিষয়ের উপর ঈমান এনেছি। তারা বিরোধীর বিষয়কে শয়তানের দিকে নিয়ে যেতে চায়, অথচ তাদের প্রতি তাগুদকে মান্য না করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সূরা নিছা-৬০

জাহেলী সমাজ ভ্রান্তির মধ্যে নিমজ্জিত ছিল। তারা জেদের বশীভূত হয়ে এক গোত্র অন্য গোত্রের সাথে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লিপ্ত হতো।

আর বর্তমানে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করার জন্য অথবা জেদের বশীভূত হয়ে, এক দল অন্য দলের সাথে, এক দেশ অন্য দেশের সাথে যুদ্ধ করছে। তাদের মাঝে মারামারি, যুদ্ধ বিগ্রহ হতো লাঠি সোঁটা, তলোয়ার, বলম দ্বারা, আর এখন হচ্ছে রাইফেল, বন্দুক, মেশিনগান ও পারমাণবিক বোমার দ্বারা।

বর্তমান যুগে নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনা যেভাবে প্রকাশ পেয়েছে, তা আইয়্যামে জাহেলিয়াতের চেয়েও একধাপ এগিয়ে।

তখন নারী হাইজ্যাক হতো ঘোড়ার লাগাম টেনে, আর এখন হচ্ছে গাড়িতে করে ও হুন্ডা হাঁকিয়ে।

তখন নারী নির্যাতন হতো জ্যান্ত সমাহিত করে, যা কেবল অত্যাচারই ছিল, আর এখন নারী স্বাধীনতার নামে নারী জাতিকে চরম ভাবে অপমানিত করা হচ্ছে, রাজ পথে টেনে এনে, পালাক্রমে ধর্ষণ করে, অ্যাসিড মেরে, ক্ষত বিক্ষত করে, বিদেশে পাচার করে, লাইসেন্স দিয়ে পতিতালয়ে নিক্ষেপ করে, বিষ প্রয়োগ করে, শ্বাস রুদ্ধ করে অথবা ধারালো অস্ত্র দিয়ে দেহ থেকে মস্তক ছিন্ন করে।

তারা আঙ্গুর ও খেজুরের তৈরী অপরিশোধিত মদ খেত। আর এখন অভিজাত হোটেল, রেস্তরাঁ ও ক্লাবে পরিশোধিত ও উন্নত মদ চলছে।

তারা মা’বুদের নৈকট্য লাভের জন্য সন্তানদেরকে হত্যা করত, আর এখন নেতাদের সন্তুষ্টির লক্ষ্যে শত শত মানুষ খুন করা হচ্ছে।

এরপরও কি আমরা বলতে পারি যে আমাদের সমাজ জাহেলী সমাজ নয়? এই জাহিল সমাজ থেকে বাঁচতে হলে আমাদেরকে সব কিছুর ইবাদত থেকে মুক্ত হয়ে একমাত্র আল্লাহর ইবাদতে মনোনিবেশ করতে হবে।

إن الحكم إلا لله أمر ألا تعبدوا إلا إياه . ذلك الدين القيم ( سورة يوسف ৪০)

আল্লাহ ছাড়া কারও বিধান দেয়ার ক্ষমতা নেই, তিনি আদেশ দিয়েছে যে, তিনি ব্যতীত অন্য কারও এবাদত করো না। এটাই সরল পথ। সুরা ইউসুফ ৪০ আয়াত।

পৃথিবীতে একটি মাত্র পথ যা আল্লাহর দিকে নিয়ে যায়, আর অন্যান্য সকল পথ আল্লাহর দিকে নিতে পারে না, তারা নিয়ে যায় আল্লাহর বিরুদ্ধে।

إن هذا صراطي مستقيما فاتبعوه . ولا تتبعوا السبل فتفرق بكم عن سبيله ( سورة الأنعام ১৫৩)

নিশ্চয় এটি আমার সরল পথ। অতএব এ পথে চল এবং অন্যান্য পথে চলো না। তা হলে সেসব পথ তোমাদেরকে তার পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিবে। সূরা আনআম -১৫৩

পৃথিবীতে একটি মাত্র শরীয়ত যা আল্লাহর শরীয়ত। এছাড়া যা কিছু আছে তা হচ্ছে শয়তান ও প্রবৃত্তির অনুশাসন।

ثم جعلنك علي شريعة من الأمر فاتبعها ولا تتبع أهوآء الذين لا يعلمون ( سورة الجاثية ১৮)

এরপর আমি তাকে রেখেছি ধর্মের এক বিশেষ শরীয়তের উপর। অতএব আপনি এর অনুসরণ করুন এবং অন্যান্যদের খেয়াল খুশির অনুসরণ করবেন না। (সূরা জাসিয়া-১৮)

পৃথিবীতে একটি মাত্র পথ সত্য, এ ছাড়া যা রয়েছে তা হচ্ছে ভ্রান্ত। সত্যের পরে গোমরাহি ছাড়া কি রয়েছে? সুতরাং তোমরা কোথায় ঘুরছ? অতএব আসুন জাহেলিয়াতের করাল গ্রাস থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর বিধান পুরোপুরি অনুসরণের চেষ্টা করি। শয়তানের পদাংক দূরে ফেলে ইসলামের অনুশাসন মেনে চলি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন