মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
মুসলমানদের প্রতি নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে। সৃষ্টি হচ্ছে নির্যাতনের নতুন নতুন ক্ষেত্র, বিস্তৃত হচ্ছে পরিসীমা। এর শেষ যে কোথায়? এ মুহূর্তে তা বলা কঠিন। মুসলমানরা পেরে উঠছে না বিধর্মীদের সাথে। অথচ আল্লাহ তা’আলা মুসলমানদের উদ্দেশ্যেই পবিত্র কুরআনে ঘোষণা দিয়েছেন, তোমরাই বিজয়ী হবে যদি তোমরা মোমিন হও। আল্লাহ পাকের এ চিরন্তন ঘোষণা সর্বকালের জন্য, সর্ব যুগের মু’মিনদের জন্য এ ঘোষণা সন্দেহ ও সংশয় পোষণের বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই। কেউ এরূপ করলে তার ঈমান থাকবে না। তাহলে মোমিনরা পেরে উঠছে না কেন? কেন তারা বিধর্মীদের হাতে মার খাচ্ছে? কেন তারা নির্মম নির্যাতনের শিকার হচ্ছে? এসব বিষয় নিয়ে মুসলমানরা একটু গভীরভাবে চিন্তা করেছে কি? চিন্তা করলে মূল কারণ অবশ্যই উদ্ঘাটিত হত।
আল্লাহ তা‘আলা আমাদের বিজয়কে একটি শর্তের সাথে সম্পৃক্ত করেছেন। আর সেটা হচ্ছে মোমিন হওয়া। আমরাতো নিজেদেরকে ম‘মিন বলে দাবি করি এবং বর্তমানে মু‘মিনদের সংখ্যা অন্য যে কোন সময়ের তুলনায় অনেক বেশী। তারপরও তারা নির্যাতিত হচ্ছে। এর দ্বারা স্পষ্টত বুঝা যাচ্ছে যে, তাদের ঈমানে ঘাটতি রয়েছে, ত্রুটি রয়েছে। সুতরাং সেই ঘাটতি ও ত্রুটি দূর করে মুসলমানরা যদি ঈমানী শক্তিতে নিজেদেরকে বলীয়ান করতে সক্ষম হয়, তাহলে কুরআনের ঘোষণা অনুযায়ী সত্যিই তাদের বিজয় অনিবার্য। যুদ্ধে বিজয়ের জন্য জনশক্তি ও অস্ত্রশক্তির প্রয়োজন অবশ্যই আছে। তবে মুসলমানদের জন্য সবচে বড় শক্তি হচ্ছে তাদের ঈমানী শক্তি। ত্রুটিপূর্ণ ঈমান নিয়ে কেবলমাত্র অস্ত্রশক্তি ও জনশক্তি প্রয়োগ করে অথবা অভিনব রণ-কৌশল অবলম্বন করে মুসলমানদের পক্ষে বিজয় অর্জন করা সম্ভব নয়। ইসলামের প্রাথমিক যুগের ঘটনা প্রবাহের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলে তোমাদের মাতৃ গর্ভ হতে এ বিষয়টি দিবালোকের ন্যায় উজ্জ্বলরূপে আমাদের নিকট প্রতিভাত হবে। ইসলামের প্রথম যুদ্ধ ছিল বদর যুদ্ধ। এতে একদিকে ছিল নিরস্ত্র, নিরন্ন ৩১৩ জনের একটি ক্ষুদ্র বাহিনী, আর অপর পক্ষে ছিল আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত ও সর্বপ্রকার জীবনোপকরণ সামগ্রী সমৃদ্ধ ১০০০ জনের এক বিশাল বাহিনী। কৌশলগত দিক থেকেও যুদ্ধ ক্ষেত্রের উত্তম স্থানটি ছিল প্রতিপক্ষের দখলে। এতকিছুর পরও আল্লাহর সাহায্যে মুসলমানরা সেই যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছেন। পবিত্র কুরআনেও এ সম্পর্কিত বর্ণনা রয়েছেঃ আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে সাহায্য করেছেন বদর যুদ্ধে, অথচ তোমরা ছিলে দুর্বল ও সংখ্যায় ছিলেন নগণ্য। সুতরাং আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হতে পার।
মুসলমানরা তখন সংখ্যায় নগণ্য হলেও তাদের ঈমান ছিল আকাশসম। তাই ঈমানী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে সামর্থ্যনুযায়ী যুদ্ধ সরঞ্জাম নিয়ে বাতিলের বিরুদ্ধে যখন তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তখন ত্বরিত গতিতে আল্লাহর সাহায্য অবতীর্ণ হয়েছিল। ফলে ৩১৩ জনের ক্ষুদ্র বাহিনী ১০০০ জনের বিশাল বাহিনীর বিরুদ্ধে সহজেই জয়লাভ করেছিল।
পক্ষান্তরে হুনাইনের যুদ্ধে মুসলমানদের সংখ্যা ছিল বার হাজার। যুদ্ধাস্ত্রও ছিল ইতিপূর্বের যে কোন সময়ের তুলনায় বেশী। আর প্রতিপক্ষ ছিল মাত্র চার হাজার। সংখ্যাধিক্যের কারণে মুসলমানদের মনে ধারণা জন্মাল, আজ আমরা নিশ্চিতরূপে বিজয় অর্জন করব। কিন্তু প্রথমত ফল হল সম্পূর্ণ বিপরীত। অর্থাৎ মুসলমানরা যখন যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করছিল, ঠিক সে সময়ই প্রতিপক্ষের সৈন্যরা পাহাড়ের উপর হতে এমন অতর্কিত আক্রমণ শুরু করল যে, মুসলমানরা ছত্রভঙ্গ হয়ে এদিক সেদিক পালাতে শুরু করল। শেষপর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট মাত্র কিছু সংখ্যক সাহাবী রয়ে গেলেন। তাদেরও মনোবাসনা ছিল যে, এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে রাসূলুল্লাহ্ (সা.) যেন আর অগ্রসর না হন।
এ অবস্থা প্রত্যক্ষ করে প্রিয়নবী (সা.) হজরত আববাস (রা.) কে উচ্চস্বরে মুসলমানদেরকে আহবান করতে বললেন। তাঁর আওয়াজ রণাঙ্গনকে প্রকম্পিত করে তুলল। পলায়নরত সাহাবায়েকেরাম ফিরে দাঁড়ালেন এবং আল্লাহর উপর ভরসা করে সাধ্যানুযায়ী শক্তি প্রয়োগ করে যুদ্ধে অবতীর্ণ হলেন। এরপর আল্লাহ তা’আলা তাদের সাহায্যার্থে ফেরেশতাদের অবতীর্ণ করলেন। মুহূর্তেই যুদ্ধের মোড় ঘুরে গেল। শেষপর্যন্ত আল্লাহ তা’আলা উক্ত যুদ্ধে মুসলমানদেরকে বিজয় দান করলেন। এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনের বর্ণনা নিম্নরূপঃ
‘‘আল্লাহ তোমাদের সাহায্য করেছেন অনেক ক্ষেত্রে এবং হুনায়নের দিনে, যখন তোমাদের সংখ্যাধিক্য তোমাদেরকে উৎফুল করেছিল। কিন্তু তা তোমাদের কোন কাজে আসেনি এবং পৃথিবী প্রশস্ত হওয়া সত্ত্বেও তোমাদের জন্য সংকুচিত হয়েছিল। অতঃপর পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে তোমরা পলায়ন করেছিলে। এরপর আল্লাহ নাজিল করেন নিজের পক্ষ হতে সাকিনা তাঁর রাসূল ও মুমিনগণের প্রতি এবং অবতীর্ণ করেন এমন বাহিনী, যাদেরকে তোমরা দেখতে পাওনি। আর শাস্তি প্রদান করেন কাফেরদেরকে এবং এটা হল তাদের কর্মফল।
উপরোক্ত দুটি ঘটনা দ্বারা স্পষ্টত বুঝা যায় যে, মুসলমানদের বিজয়ের অন্যতম হাতিয়ার হল তাদের ঈমানী শক্তি। ঈমানী শক্তিতে বলিয়ান হয়ে মুসলমানরা যখন বাতিলের মুকাবিলায়, তাগুতের প্রতিরোধে অবতীর্ণ হবে তখন অবশ্যম্ভাবীরূপে আল্লাহর সাহায্য নেমে আসবে।
সুতরাং আজ বিশ্বব্যাপী যে মুসলিম নির্যাতন চলছে, মুসলমানরা যে গণহত্যার শিকার হচ্ছে, মুসলিম নারীর ইজ্জত যেভাবে হরণ করা হচ্ছে, মুসলমানদের রক্ত নিয়ে যে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে, এরূপ অবস্থা সৃষ্টির জন্য স্বয়ং মুসলমানরাও কিছুটা দায়ী। সুতরাং মুসলমানদের সেই হারানো গৌরব তথা অপরাজেয় ঈমানী শক্তি অর্জনে যথা শীঘ্র আত্মনিয়োগ করা উচিত। মুসলমানরা তা করতে পারলে সকল বাতিল শক্তি মূলোৎপাটিত হয়ে সমগ্র পৃথিবী মুসলমানদের পদানত হতে বাধ্য। বিজয় অবশ্যই তাদের পদ চুম্বন করবে। যারা এ আশা পোষণ করে যে, দ্বীনের পথ হবে নিষ্কণ্টক, সহজ ও বিপদমুক্ত, তারা মূলত ভুলের মধ্যে রয়েছে। কেননা বিপদাপদ এসে থাকে ইসলাম অনুসরণে একনিষ্ঠতার দাবিতে সত্যবাদী ও মিথ্যাবাদীদের মাঝে পার্থক্য নির্ণয় করার জন্য। এ জন্য আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেনঃ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা জেনে নিবেন (প্রকাশ করে দিবেন) কারা সত্য বলেছে, আর কারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। যারা সত্যবাদী, শত বিপদের সময়েও তারা দ্বীনের উপর অবিচল থাকে। আর যারা মিথ্যাশ্রয়ী, বিপদের সময় তাদের স্বরূপ উন্মোচিত হয়ে যায়।
সত্যবাদিতা ও একনিষ্ঠতা তো আর দাবি করে প্রমাণ করার বিষয় নয় যে, ‘‘আমার ঈমান ঠিক’’ আমার দিল সাফ’’ ইত্যাদি বাগাড়ম্বর দ্বারা তা প্রমাণিত হয়ে যাবে। বরং সত্যবাদিতা হল কঠিন বাস্তবতা-যা প্রমাণিত হয় বাস্তব জীবনে বিপদ ও মুসিবতের মুখোমুখি হলে।
এ বিপদ দু’ ধরনের হয়ে থাকে, ছোট ও বড়। দ্বীনের উপর চলতে গিয়ে পরিবারস্থ লোকজন, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের দিক থেকে যে সব বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয় সেগুলো ছোট বিপদ। আর জেল, জুলুম, হত্যা, নির্যাতন, নাগরিকত্ব হরণ ইত্যাকার মুসিবত হল বড় বিপদ। ছোট হোক, আর বড় হোক-দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বাধা-বিপত্তি ও বিপদাপদের সম্মুখীন হওয়াটা স্বাভাবিক। এসব বাধা-বিপত্তি ডিঙিয়ে এবং দুঃখ-যাতনা জয় করেই অবিরাম সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। কাজেই দ্বীন প্রতিষ্ঠার পথে কষ্ট-ক্লেশ সহ্য করার জন্য সবাইকে মানসিকভাবে প্রস্ত্তত থাকতে হবে। কেননা দ্বীনের পথ হল কণ্টকময়, বন্ধুর। স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন: ‘জাহান্নামকে প্রবৃত্তির কামনা দ্বারা, আর জান্নাতকে কষ্ট-ক্লেশ দ্বারা আবৃত করা হয়েছে।’ (বুখারী-২/৯৬০)
অর্থাৎ যে সব কর্মের পরিণতিতে মানুষ জাহান্নামে যাবে, তার সবগুলোই বাহ্যিকভাবে সুন্দর ও মনোগ্রাহী। নফস বা প্রবৃত্তি এগুলোকে খুবই পছন্দ করে। এজন্য জাহান্নামের পথ অতি সহজ। আর যে সব কর্মগুণে মানুষ জান্নাতের অধিকারী হবে, সেগুলো কঠিন ও কষ্টকর। প্রবৃত্তি কখনো তা করতে চায় না। এজন্য জান্নাতের রাস্তা কঠিন ও বিপদসংকুল। তাই জান্নাতের প্রত্যাশী ঈমানদারদের বিপদাপদে মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্ত্তত থাকতে হবে। এক শ্রেণীর লোক রয়েছে, ঈমানের দুর্বলতার কারণেই তারা তথাকথিত পরাশক্তির সামনে নিজেকে ছোট ও তুচ্ছ মনে করে। অথচ তারা যদি আল্লাহ তাআলার অসীম শক্তি ও অগণিত দৃশ্য বাহিনীর কথা চিন্তা করতো যার হিসাব একমাত্র আল্লাহই ভাল জানেন,রক তাহলে তারা অবশ্যই বলতে বাধ্য হত যে, আল্লাহর নির্দেশে সামান্য একটি ভূমিকম্পই মেক্সিকো ও সানফ্রান্সিসকো’র মত জৌলুসপূর্ণ শহরকে নিমিষেই ধ্বংস করে দিতে সক্ষম। আল্লাহর নির্দেশে তাদের তৈরী আণবিক বোমা তাদের দিকেই বুমেরাং হতে পারে। ‘‘চেরনোবিল’’ এর মর্মান্তিক দুর্ঘটনা আজও তাদের হৃদকম্পন সৃষ্টি করে, যে ঘটনায় নিহত হয়েছিল অসংখ্য বনী আদম। এ ঘটনার পর থেকে আজ পর্যন্ত তারা এই চিন্তায় অস্থির হয়ে আছে যে, কীভাবে অমানবিক শক্তির বিস্তার রোধ করা যায়।
সুতরাং মুসলিমদের এ বিশ্বাস রাখা উচিত যে, আমাদের জন্য আল্লাহর অসংখ্য বাহিনীই যথেষ্ট যে বাহিনীর সাথে মোকাবিলা করার সাধ্য কোন পরাশক্তির নেই।
তথাপি আল্লাহকে নির্দেশ পালনার্থে আসবাব গ্রহণ ও বৈষয়িক শক্তি সঞ্চয়ের চেষ্টা করতে হবে। তবেই আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য আসতে থাকবে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/482/70
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।