মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
الحمد لله رب العالمين ولا عدوان إلا على الظالمين والصلاة والسلام على قائد الغر المحجلين وخاتم النبيين وسيد المرسلين محمد بن عبد الله وعلى آله وصحبه أجمعين ومن تبعهم إلى يوم الدين . أما بعد :
বর্তমান বিশ্বের আনাচে-কানাচে প্রায় দেড়শত কোটি মুসলমান বসবাস করে। মুসলমানদের এই বিরাট সংখ্যা নিঃসন্দেহে একটি আনন্দের বিষয়। আজ মুসলমানগণ বিশ্বের অন্যান্য জাতির সাথে তাল মিলিয়ে সভ্যতা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে প্রতিযোগিতার সাথে এগিয়ে চলেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এই যুগে মুসলমানগণও পিছিয়ে নেই। কিন্তু তাদের এই প্রতিযোগিতা তাদেরকে তাদের মূল ও আসল প্রতিযোগিতা থেকে দূরে ঠেলে দিয়েছে। করে তুলেছে তাদেরকে বস্তুবাদী ও ভোগবিলাসী। ফলে মুসলমান নাম ধারণ করেও তাদের অনেকের আচরণ অমুসলিম-কাফেরদের সাথে অনেকাংশে মিলে যায়; বরং কোন কোন সময় অনেক মুসলমানের দিকে তাকালে তাকে চেনা যায় না সে কোন জাতির অন্তর্ভূক্ত? তার কার্যাবলীর দিকে দেখলে বুঝা যায় না সে কোন সভ্যতা ও কালচারের অনুসরণ করছে? প্রকৃতভাবে তার সত্তাগত ও জাতিগত পরিচয়ই বা কি? তাদের অনেকের কথা-বার্তা, চাল-চলন, পোশাক-আশাক ইত্যাদি দেখে বুঝার উপায় নেই তারা কি মুসলমান না হিন্দু না খৃষ্টান না ইহুদী।
আবার মুসলমানদের মধ্যে যারা ইবাদত-বন্দেগীতে নিয়োজিত আছে, তারা অধিকাংশই শতধা বিভক্ত। বিভন্ন তরীকা ও মাযহাবের বেড়াজালে নিজেদেরকে আবদ্ধ করে নিয়ে পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন জীবন-যাপন করছে। তাদের কর্মপদ্ধতি দেখলে বুঝা যায় না তারা প্রকৃত পক্ষে কার বিধানের অনুসরণ করছে? কোন নবীর উম্মত হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিচ্ছে?
অধিকাংশ মুসলমান আজ ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা থেকে দূরে সরে গিয়ে শাখাগত শিক্ষা-দীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত আছেন। কেউ আবার শুধুমাত্র চারিত্রিক সংশোধন ও নির্দিষ্ট কয়েকটি ইবাদতের মাঝে নিজেদেরকে সীমাবদ্ধ রেখেছেন। বিরোধ হতে পারে এমন বিষয় থেকে দূরে থেকে ন্যায়ের আদেশ ও অন্যায়ের নিষেধকে পাশ কাটিয়ে শুধুমাত্র ফযীলতের বিষয়গুলো রপ্ত করে তার মাধ্যমেই নিজেদের আধ্যাত্মিক উন্নতি নিয়ে ব্যস্ত আছেন। তার উপরেই চলে চিন্তা-ফিকির এবং মেহনত ও গবেষণা। কেউ ওযীফা ও যিকির-আযকার নিয়েই সর্বদা তালীম দেন। বাইয়াতের মাধ্যমে মুরীদান বৃদ্ধিতেই গুরুত্বারোপ করেন বেশী। হাকীকত ও মারেফত এবং শরীয়ত ও তরীকতের দীক্ষাই তাদের মূল বিষয়; যদিও মারেফতের গুরুত্ব সেখানে সর্বাধিক এবং শরীয়ত গৌণ বিষয়। কিভাবে সহজে জান্নাত যাওয়া যাবে, কঠিন কিয়ামতে কিভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে তার সহজ পথ বের করে মানুষকে সেদিকেই আহবান করতে তারা সর্বদা সচেষ্ট।
আরেক দল লোক মানুষকে আহবান করেন ইসলামী প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে পশ্চাত্য রাজনীতির গোলক ধাঁধায় বেঁধে সেই পথে অগ্রসর হতে। দল-মত ও আকীদা-বিশ্বাস যার যা থাকুক না কেন সংখ্যা গরিষ্ঠ লোকের রায় নিয়ে শাসন ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা হয়ে গেলেই ইসলাম প্রতিষ্ঠা হয়ে যাবে। সকল মানুষ এসে যাবে ইসলামের আওতায়। ফলে বাস্তবায়ন করা যাবে ইসলামী বিধি-নিষেধ এবং প্রয়োগ হবে ইসলামের দন্ডবিধি।
অথচ একটি বিষয় এ সকল দলের কাছে উপেক্ষিত। তাদের দাওয়াত-তাবলীগ, প্রশিক্ষণ-তালীম প্রভৃতিতে তা অনুপস্থিত। আর তা হচ্ছে তাওহীদ। তাওহীদ সম্পর্কে সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা অনেক প্রতিথযশা আলেম ও বিখ্যাত ইসলামী ব্যক্তিত্ব, চিন্তাবিদ ও পন্ডিতের মধ্যে কোন স্বচছ-ধারণা নেই। তাওহীদের পরিচয় কী অধিকাংশ মানুষ তা জানে না। মানুষের মধ্যে অনেকের ধারণা ইসলাম শিখতে হলে পীর ছাড়া উপায় নেই, আল্লাহকে চিনতে ও পেতে হলে পীরের বিকল্প নেই। বিপদ মুক্তি, সন্তান কামনা, রোগ মুক্তি ইত্যাদি বিষয়ে পীর ছাড়া পথ নেই। এমনকি মানুষকে এই পীরেরা শিখিয়েছেন যে, রোজ হাশরে ভীষণ কিয়ামতের মাঠে পীর ছাড়া নাজাত পাওয়া যাবে না, গুনাহ মাফ পাওয়া যাবে না, জান্নাতও পাওয়া যাবে না, তাই তাদের স্মরণাপন্ন হওয়া ছাড়া মুক্তির উপায় নাই। আর মানুষও তাদের কথায় মুগ্ধ হয়ে ছুটে চলেছে তাদের পদসেবা করতে, তাদের ইসলাম বিরোধী আকীদা-বিশ্বাস ও কার্যকলাপ বাস্তবায়ন করতে। তারপরও মানুষ দাবী করে আমরা ওতাওহীদী জনতা; কিন্তু তাওহীদের প্রকৃত অর্থ ও তাৎপর্য কি? চলমান জীবনে, দৈনন্দিন ইবাদতে ও কর্মে কিভাবে তাওহীদ বাস্তবায়ন করতে হবে তার চিত্র অধিকাংশ মানুষের কাছে অনুপস্থিত। আজ মুসলিম সমাজের সর্বস্তরে তাওহীদই হচ্ছে সর্বাধিক উপেক্ষার বিষয়।
ফলে মুসলমানদের মধ্যে শির্ক দাপটের সাথে বিচরণ করছে। ইবাদত-বন্দেগী, শিক্ষা-দীক্ষা, মসজিদ-মাদরাসা, দাওয়াত-তাবলীগ, রাজনীতি, শাসন কার্য, কথা-বার্তা, সুখ-দু:খ, বিপদ-আপদ, বিবাহ-শাদী তথা জীবনের প্রায় প্রত্যেকটা ক্ষেত্র তাওহীদ শুন্য এবং শির্কের অন্ধকারে পরিপূর্ণ। কিন্তু মানুষ তা মোটেও অনুধাবন করতে পারে না। তাওহীদ শুন্য জীবন পরিচালনা করেও তৃপ্তির ঢেকুর তুলে আর বলতে থাকে আমরা ইসলামী সমাজের মানুষ, আমরা তাওহীদী জনতা!
প্রিয় পাঠক! এই কারণে আমি তাওহীদ পুনরুদ্ধার নামে এ পুস্তকটি প্রস্তুত করার ইচ্ছা করেছি। যাতে থাকবে কিভাবে মুসলমান সমাজের সর্বস্তরে তাওহীদ আজ উপেক্ষা ও অবেহেলার স্বীকার হচ্ছে তার বাস্তব ও প্রামাণ্য তথ্য। থাকবে শির্কের অন্ধকার গহ্বর থেকে বের হয়ে তাওহীদের প্রকৃত পরিচয় ও তা পুনরুদ্ধার করার সঠিক ও সহজ ব্যবস্থাপনা। বিশেষ করে বাংলাদেশের হক্কানী পীর বলে খ্যাত চরমোনাই পীর ইসহাক সাহেবের লিখিত কয়েকটি বই থেকে কিছু শিরকী বক্তব্যে উদ্ধৃতি উল্লেখ পূর্বক সেগুলো পর্যালোচনা করব। সেই সাথে কুরআন-হাদীছের বক্তব্য কি তা জাতির সামনে তুলে ধরতে চেষ্টা করব। কাউকে হেয় বা খাটো করার উদ্দেশ্যে নয়; বরং সত্য উদ্ঘাটন ও সতর্কী করণের জন্যে আমি প্রচলিত তাওহীদ বিরোধী শির্কের কর্মকান্ডগুলো তুলে ধরার প্রচেষ্টা চালাব। কেননা রাতের অন্ধকার আছে বলেই আলোর মর্যাদা বুঝা যায়। অজ্ঞতা না থাকলে জ্ঞানের মূল্য বুঝা যেতো না। এ জন্যে ওমার বিন খাত্তাব (রাঃ) বলেছেনঃ ইসলামের কিনারাগুলো একটি একটি করে ভেঙ্গে যাবে, যখন মানুষ শুধু ইসলাম জানবে কিন্তু জাহেলিয়াত জানবে না। তাওহীদ জানতে ও চিনতে চাইলে শির্ক কাকে বলে তা জানতে হবে, কি কি কাজে শির্ক হয় তা বুঝতে হবে। তাহলেই তাওহীদের আলোকে জীবন গড়া যাবে, শির্কের অন্ধকার থেকে মুক্ত হওয়া যাবে।
মিথ্যুকের মুখোশ উম্মোচন করাই আমার ধর্ম
বিদআতীর জড় কাটাই আমার কর্ম,
তাওহীদের সৈনিক সে তো বড় যোদ্ধা
শির্ক পঙ্কিলতা দমনে সচেষ্ট সর্বদা।
হে আল্লাহ্! আমার এই প্রচেষ্টাকে তোমার তাওহীদ রক্ষার কাজে সামান্য খেদমত হিসেবে কবুল করে নিও। এ দ্বারা তাওহীদ পিপাসু মানুষকে এবং তাওহীদ বঞ্চিত পথ হারা সমাজকে উপকৃত করো। আর শির্ক হতে বেঁচে ও মুশরেকদের থেকে সতর্ক থেকে তোমার তাওহীদের উপর মৃত্যু অবধি সবাইকে সুদৃঢ় ও অবিচল রেখো। আমীন॥
এ বইটি প্রস্তুত করার ব্যাপারে যারা আমাকে বিভিন্নভাবে উৎসাহিত করেছেন এবং ছাপানোর কাজে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের সকলের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা করছি শাইখ আদুর রব আফ্ফান ও শাইখ আবদুল্লাহিল হাদীর। তারা উভয়েই বইটির সম্পাদনা করেছেন। আরো কৃতজ্ঞতা করছি ইয়ানবো রয়েল কমিশন, ইয়ানবো আল বাহার এবং আল ঈস ইসলামী সেন্টারের শিক্ষার্থী প্রবাসী ভাইদের যাদের অর্থানুকুল্যে বইটি ছাপানো হয়েছে। আল্লাহ্ যেন তাঁদের সকল উদ্যোগ ও প্রচেষ্টাকে গ্রহণ করে তাদের জন্য সাদকায়ে জারিয়া হিসেবে কবুল করে নেন এবং রোজ কিয়ামতে নাজাতের উসীলা করে দেন। যে পিতা-মাতার অক্লান্ত পরিশ্রম ও একনিষ্ঠ দুআ ছাড়া আমার মত ক্ষুদ্র ব্যক্তির এই সামান্য খিদমত আঞ্জাম দেয়া সম্ভব হত না, মহান আল্লাহ্ পূর্ণ প্রতিদান স্বরূপ তাঁদের ঠিকানা জান্নাতুল ফিরদাউসে করে দিন। আমীন।
সম্মানিত পাঠক-পাঠিকার নিকট নিবেদন, সহীহ্ দলীল ভিত্তিক যে কোন সমালোচনা সাদরে গ্রহণ করা হবে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য যেহেতু ইসলামের সঠিক জ্ঞান লাভ করা এবং নির্ভূলভাবে আক্বীদা ও আমল পরিচালনা করা, তাই আমার এই বইয়ে যদি সেরকম কোন ভূল দেখা যায় তবে জানাতে কার্পণ্য করবেন না এবং নিজেকে ছোয়াব থেকে বঞ্চিত করবেন না। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কল্যাণের পথ প্রদর্শক, আমলকারীর সমপরিমাণ প্রতিদান লাভ করে। (তিরমিযী)
বিনীত, মুহা আবদুল্লাহ্ আল কাফী
mohdkafi12@yahoo.com
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/37/2
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।