মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে বুঝা যায়, হাল্লাজের চেয়ে ফেরাউন অনেক ভাল ছিল। কারণ ফেরাউন বাহ্যিকভাবে কুফরী করলেও মনে মনে আল্লাহকে এবং নবী মূসা (আঃ)কে বিশ্বাস করত। আল্লাহ্ বলেন, وَجَحَدُوا بِهَا وَاسْتَيْقَنَتْهَا أَنْفُسُهُمْ ظُلْمًا وَعُلُوًّا অন্যায় ও অহংকার বশতঃ তারা তা অস্বীকার করেছিল, কিন্তু তাদের অন্তর সমূহ তা সত্য বলে বিশ্বাস করেছিল। (সূরা নমলঃ ১৪) অর্থাৎ মূসা (আঃ)এর আনিত বিধান সত্য- আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত, তিনি সত্যই আল্লাহর নবী, তাদের যাদু মিথ্যা ইত্যাদি বিষয় ফেরাউন ও তার অনুসারীদের অন্তর স্বীকার করেছিল, কিন্তু শুধু হঠকারিতার কারণে বাহ্যিকভাবে তারা সেগুলো অমান্য করেছে। এজন্যে তারা হয়েছে কাফের- আল্লাহর শত্রু। [. দ্রঃ তাফসীর তবারী ও তাফসীর ইবনে কাছীর সূরা যুখরুফেুর ৫১-৫৪ নং আয়াতের তাফসীর।]
ফেরাউনের বাহ্যিক এই অহংকারের একটি কারণও ছিল। তাকে আল্লাহ্ বিশাল ক্ষমতার অধিকারী করেছিলেন। তাকে বিরাট রাজত্ব দান করেছিলেন। সেই রাজত্ব ও ক্ষমতার দাপটে সে মানুষকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছিল যে, আমিই তোমাদের সর্বোচ্চ পালনকর্তা। (সূরা নাযেআতঃ ২৪) আমরা জানি মানুষ শক্তের ভক্ত, সবলের প্রতি দূর্বল। ফেরাউনের অহংকারের কারণ সম্পর্কে আল্লাহ্ বলেনঃ
ফেরাউন তার সমপ্রদায়কে ডাক দিয়ে বলল, হে আমার সমপ্রদায়! মিসরের বাদশাহী কি আমারই নয়? তোমরা কি দেখ না এই নদীগুলো আমার পাদদেশে প্রবাহিত? আমি কি এই ব্যক্তি (মূসা আঃ)র চেয়ে উত্তম নই? যে কিনা হীন ও দূর্বল এবং সুস্পরূপে কথাও বলতে পারে না। তিনি যদি সত্যিই নবী হতেন, তবে তাকে কেন স্বর্ণের বালা দেয়া হল না? কেনই বা তার সাথে ফেরেশতারা সারিবদ্ধভাবে নাযিল হল না? (ইত্যাদি ধোকাপূর্ণ কথাবার্তা বলে) সে তার সমপ্রদায়কে হতবুদ্ধি করে দিল, (তাদেরকে বিভ্রান্ত করে দিল) ফলে তারা তাকে মেনে নিল তার আনুগত্য করল। মূলতঃ তারা ছিল এক অবাধ্য সমপ্রদায়। (সূরা যুখরুফঃ ৫১- ৫৪)
সম্মানিত পাঠক! ফেরাউনের মানষিক অবস্থার পরিচয় আমরা কুরআন থেকে পেলাম। কিন্তু মানসূর হাল্লাজের আভ্যন্তরীণ ঈমানের পরিচয় আমাদেরকে কে দিবে? ফেরাউন অন্তরে বিশ্বাস রাখার পরেও জাহেরা শরীয়তের খেলাফ চলার কারণে যদি আল্লাহর শত্রু হয়, তবে কিভাবে হাল্লাজ আল্লাহর বন্ধু হতে পারে? অথচ সেও তো জাহেরী শরীয়তের খেলাফ চলেছে। উপরন্তু তার অন্তরে ঈমান আছে কি না সে সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত নই, সে ব্যাপারে আমাদের কাছে কোন ওহীও নেই।
যদি বলা হয়, আল্লাহর মুহাব্বতের অতিরিক্ত এস্কে পড়ে তিনি পাগল হয়ে এরকম কথা (আনাল হক- আমিই আল্লাহ্) বলেছেন। তাহলে তো পাগলের উপর ইসলামের কোন হুকুম প্রজোয্য নয়। পাগলের উপর থেকে হিসাবের কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। যেমনটি আমরা পূর্বে উল্লেখ করেছি। দুনিয়ার জীবনে পাগলের বিবাহ-শাদী, বেচা-কেনা ইত্যাদি কোন কার্য-কলাপ বৈধ নয়, তাহলে ইবাদতের ক্ষেত্রে তাকে কি বাধ্য করা যাবে? অথবা তার দ্বারা অন্যায় ঘটে গেলে তাকে দন্ড দেয়া যাবে?
যদি বলা হয়, মানসূর হাল্লাজকে শাস্তি দেয়ার সময় তার মাধ্যমে বহু কারামতী জাহের হয়েছে, তাতেই বুঝা যায় তিনি আল্লাহর আশেক ও ওলী ছিলেন। তবে আমরা বলব, যে সমস্ত কারামতীর কথা উল্লেখ করা হয়, সেগুলো সবই মিথ্যা ও বানোয়াট। তার কোন সনদ নেই, দলীল-প্রমাণ নেই।
ইমাম ইবনে তায়মিয়া (রহঃ) লিখেছেনঃ যারা উল্লেখ করেছে যে, হাল্লাজকে হত্যা করার সময় তার রক্ত মাটিতে পড়ে ওআল্লাহ শব্দের নক্সা হয়ে যেত, (যেমন- চরমোনাই পীর লিখেছেনঃ তার প্রত্যেক ফোটা রক্ত যমীনে পড়ামাত্র ওআনাল হক বলিতে লাগিল.... শরীর থেকে রক্ত যমীনে পড়িয়া আনাল হক নক্সা হইয়া যাইত।- আশেক মাশুকঃ ৫৩ পৃঃ) [. উক্ত পুস্তকে চরমোনাই পীর সাহেব হাল্লাজ সম্পর্কে আরো অনেক উদ্ভট ও হাস্যকর কথা উল্লেখ করেছেন, দলীল-প্রমাণ বিহীন উক্ত অবান্তর কথাগুলো উল্লেখ করে বইয়ের কলেবর বৃদ্ধি করা সমিচীন নয়, তাই তা ছেড়ে দিলাম। (দেখুন উক্ত বইয়ের ৪৮-৫৩ পৃষ্ঠা)] ইত্যাদি কথা নি:সন্দেহে মিথ্যা ও বানোয়াট। এ সমস্ত কথা জাহেল-মূর্খ অথবা মুনাফেক ব্যতীত কেউ বর্ণনা করতে পারে না। কোন যিনদীক-বক ধার্মিক ইসলামের শত্রু একথাগুলো বানোয়াট ভাবে উল্লেখ করেছে। যাতে করে ইসলামের শত্রুরা বলতে পারে যে, মুহাম্মাদ বিন আবদুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর শরীয়তে আল্লাহর ওলীদেরকে হত্যা করার অনুমতি রয়েছে। আমরা জানি ইতিহাসে অনেক নবী (আঃ)কে হত্যা করা হয়েছে, তাঁদের অনুসারীদেরকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর অনেক সাহাবীকে হত্যা করা হয়েছে। অনেক তাবেঈকে হত্যা করা হয়েছে। তাছাড়া অগণিত নেক লোককেও হত্যা করা হয়েছে। যাদের সঠিক সংখ্যা আল্লাহ্ ছাড়া কেউ বলতে পারবে না। তাঁরা ফাসেক কাফের ও জালেমদের তরবারীতে নিহত হয়েছেন। অথচ তাঁদের কারো রক্ত দ্বারা ওআল্লাহ্ নামের নক্সা হয়নি। অতএব হাল্লাজ কি এই সমস্ত শ্রেষ্ঠ লোকদের চেয়েও উত্তম? তার রক্ত কি এই পূণ্যবানদের রক্তের চেয়েও পবিত্র?
হাল্লাজ যদি বেঁচে থাকত, তাকে যদি হত্যা না করা হত, তবে আরো অনেক জাহেল-মূর্খ তার দ্বারা বিভ্রান্ত হত। কেননা সে মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি, কুসংস্কার ছড়াতো, শয়তানী হালত তার উপর গালেব ছিল। এই জন্যে তাকে সম্মান করে তারাই যারা শয়তানী হালতকে সম্মান করে, প্রবৃত্তির অনুসরণ করে এবং মিথ্যাচারিতাকে আশ্রয় দেয়। যারা আল্লাহর প্রকৃত ওলী, যারা হাল্লাজের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে অবগত তারা কখনো তাকে সম্মান করেন না। এই জন্যে শায়খ আবুল কাসেম কুশায়রী সুফী-সাধক মাশায়েখদের মধ্যে হাল্লাজকে গণ্য করেননি। শায়খ আবু ইয়াকূব নাহারজূরী নিজের মেয়েকে হাল্লাজের সাথে বিবাহ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি যখন হাল্লাজের অবস্থা জানলেন, জানলেন যে সে যিনদীক বা বক ধার্মিক, তখন মেয়েকে ছাড়িয়ে নিয়েছেন। শায়খ আমর বিন উছমান উল্লেখ করতেন যে সে ছিল কাফের। তিনি বলেন, আমি একদা তার কাছে ছিলাম। এমন সময় হাল্লাজ জনৈক লোককে কুরআন পড়তে শুনে বলল, আমিও এরূপ কুরআন রচনা করতে পারি। [. মাজমূ ফাতাওয়া ৯/২১৪ পৃঃ]
ইবনে তায়মিয়া (রহঃ) আরো বলেনঃ অনেক মুসলমান ঐতিহাসিক বিভিন্ন গ্রন্থে হাল্লাজের ঘটনা উল্লেখ করেছেন। হাল্লাজকে হত্যা করার সময় অনেকে উপস্থিতও ছিলেন। ছাবেত বিন সিনান ওআখবারুল খোলাফা গ্রন্থে হাল্লাজের কথা উল্লেখ করেন। হাল্লাজকে হত্যার সময় তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আরো উপস্থিত ছিলেন ইসমাঈল বিন আলী হাতাফী। তিনি ওতারীখে বাগদাদ নামক গ্রন্থে হাল্লাজের হত্যাযজ্ঞ কাহিনী উল্লেখ করেছেন। অনুরূপভাবে আরো অনেকে হাল্লাজের ঘটনা উল্লেখ করেছেন। যেমন ঐতিহাসিক হাফেয আবু বকর খাতীব বাগদাদী ওতারীখে বাগদাদ গ্রন্থে। আরো উল্লেখ করেছেন কাযী আবু বকর ইবনে তীব, আবু মুহাম্মাদ ইবনে হাযম প্রমূখ। আরো উল্লেখ করেছেন আবু ইউসুফ কাযভীনী এবং আবুল ফারাজ ইবনুল জাওযী। এদের মধ্যে কেউ উক্ত কাল্পনিক কথা উল্লেখ করেননি যে, হাল্লাজকে হত্যা করার সময় তার রক্ত দ্বারা ওআল্লাহ্ শব্দ বা ওআনাল হক শব্দের নক্সা তৈরী হয়েছে, অথবা হত্যা করা হবে এই খবর শুনে হাল্লাজ আনন্দ প্রকাশ করেছে... ইত্যাদি কথা উদ্ভট ও বানোয়াট। [. মাজমু’ ফাতাওয়াঃ ১/২০১ পৃঃ]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/37/51
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।