hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাওহীদ পুনরুদ্ধার

লেখকঃ আবদুল্লাহ্‌ আল কাফী

৪০
ক) মারেফতের পীররা মৃতকে জীবিত করার ক্ষমতা রাখেন!
এ ক্ষেত্রে তারা আল্লাহর অনুমতির তোয়াক্কা করেন না।

কিন্তু ইসলাম কী বলে? মানুষকে জীবন দেয়া ও মৃত্যু দেয়া একমাত্র আল্লাহরই কাজ। তিনিই জীবন-মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন। [. দ্রঃ সূরা মুলকঃ ২ নং আয়াত।] এ কাজে তিনি কাউকে অংশীদার করেননি। নবী-রাসূলদের (আঃ) মো'জেযা স্বরূপ কতিপয় ঘটনা পাওয়া যায়, যাতে তাঁদের মাধ্যমে মৃত জীবিত হয়েছে। কিন্তু সেগুলো সবই ছিল তাঁদের নবুওতকে প্রমাণ করার জন্যে মো'জেযা স্বরূপ। শুধু আল্লাহ্‌র নির্দেশেই তা সম্ভব হয়েছে। [. যেমন ঈসা (আঃ) সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে তিনি আল্লাহর হুকুমে মৃতকে জীবিত করতেন। আল্লাহ্ বলেন, وَأُحْيِي الْمَوْتَى بِإِذْنِ اللَّهِ ঈসা (আঃ) বানী ইসরাঈলকে বললেন, ‘‘আল্লাহর হুকুমে আমি মৃতকে জীবিত করি।’’ (সূরা আলে ঈমরানঃ ৪৯) আল্লাহ্ তা’আলাও ঈসা (আঃ)কে সে কথা স্মরণ করিয়ে বলেন, وَإِذْ تُخْرِجُ الْمَوْتَى بِإِذْنِي ‘‘তুমি যখন আমার নির্দেশে মৃতকে জীবিত করতে।’’ (সূরা মায়েদাঃ ১১০)] কিন্তু ঐ নবীগণ (আঃ) আল্লাহর এত প্রিয়পাত্র হওয়া সত্বেও কখনো এরূপ বলেননিঃ তুমি আমার হুকুমে জেন্দা হও। অথবা তারা কখনো আল্লাহর নিকট থেকে রূহ ছিনিয়ে নিয়ে আসার স্পর্ধা দেখাননি। কেননা তাঁরা সবাই আল্লাহর নির্দেশে চলতেন। তার নির্দেশের বাইরে কখনো চলতেন না। তাবরীজি সাহেব যদি আল্লাহর নির্দেশে চলতেন বা তার কাছে তাওহীদ থাকত, তবে মহান মালিকের অনুমতি নিয়েই রূহ নিয়ে আসার ব্যবস্থা করতেন। একক ক্ষমতাবান আল্লাহর কাছে আবেদন করতেন। যেহেতু তিনি নিজের হুকুমে মৃতকে জেন্দা করেছেন এবং জোর করে রূহ নিয়ে এসেছেন, সেহেতু আমরা নিশ্চিত যে, (যদি এ ঘটনা সত্য হয় তবে) আল্লাহর কাছ থেকে নয়; বরং শয়তানের কাছে সাহায্য নিয়েছেন। অর্থাৎ শয়তান ঐ ছেলের আকৃতি ধারণ করে বৃদ্ধের সম্মুখে উপস্থিত হয়েছে। যার কারণে ঐ ছেলের মুখ দিয়ে বের হয়েছে যে, আল্লাহর ওলী আমাকে জেন্দা করিয়াছে।

আমরা জানি কিয়ামতের পূর্বে দাজ্জাল বের হবে সে মানুষের কাছে গিয়ে তাদের মৃত বাবা-মাকে জীবিত করে দিবে। তখন মানুষ দাজ্জালের উপর ঈমান আনবে। একজন জিন শয়তান তার বাবার আকৃতী ধারণ করবে আরেকজন জিন শয়তান তার মায়ের আকৃতী ধারণ করবে আর তারা বলবে ইনি (দাজ্জাল) তোমাদের রব। তোমাদেরকে একথা বলে দেয়ার জন্যে তিনিই আমাদেরকে জেন্দা করেছেন। [. রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ) وَإِنَّ مِنْ فِتْنَتِهِ أَنْ يَقُولَ لِأَعْرَابِيٍّ أَرَأَيْتَ إِنْ بَعَثْتُ لَكَ أَبَاكَ وَأُمَّكَ أَتَشْهَدُ أَنِّي رَبُّكَ فَيَقُولُ نَعَمْ فَيَتَمَثَّلُ لَهُ شَيْطَانَانِ فِي صُورَةِ أَبِيهِ وَأُمِّهِ فَيَقُولَانِ يَا بُنَيَّ اتَّبِعْهُ فَإِنَّهُ رَبُّكَ (দাজ্জালের ফিতনা হচ্ছেঃ সে জনৈক গ্রাম্য লোককে বলবে, তুমি কি মনে কর আমি তোমার বাবা-মাকে যদি জীবিত করে দেই, তবে কি আমাকে রব বলে মানবে? সে বলবেঃ হ্যাঁ। তখন দু’জন শয়তান তার বাবা-মার আকৃতি ধারণ করে সেখানে উপস্থিত হবে, অতঃপর বলবে, বৎস! একে মেনে চল, ইনি তোমার পালনকর্তা।’’ (আবু উমামা বাহেলী থেকে ইবনে মাজাহ্ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। হাদীছটি ছহীহ্, দ্রঃ সহীহ ইবনে মাজাহ হা/৪০৭৭, ছহীহুল জামে হা/১৩৮৩৩)]

অতএব তাবরিজী সাহেব কোন মানুষকে জেন্দা করেছেন এরূপ বিশ্বাস করা তাওহীদ বিরোধী সুস্পষ্ট কুফরী এবং শির্ক। যা থেকে তাওবা করা আবশ্যক।

আমার মনে হয় এই পীর সাহেব যদি রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর যুগে থাকতেন, তবে মানুষ তার কাছেই ছুটে যেত। কারণ তার কাছে গিয়ে আবেদন করলে মৃত সন্তানকে জীবিত করে পাওয়া যায়। আর রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে কাজ করে দিতেন না, তিনি আল্লাহর ক্ষমতা কেড়ে নেয়ার দুঃসাহস করতেন না; বরং তিনি মানুষকে সবরের উপদেশ দিতেন।

ثُمَّ كَانَ مِنَ الَّذِينَ آَمَنُوا وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ وَتَوَاصَوْا بِالْمَرْحَمَةِ

অতঃপর সেই সব লোকদের অন্তর্ভূক্ত হবে যারা ঈমান এনেছে এবং পরস্পরকে ধৈর্য ধারণ ও দয়া-দাক্ষিণ্যের উপদেশ প্রদান করেছে। (সূরা বালাদঃ ১৭)

এরকমই একটি ঘটনা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর যুগে ঘটেছিল। আনাস বিন মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোথাও যাচ্ছিলেন। দেখতে পেলেন জনৈক মহিলা একটা কবরের কাছে বসে ক্রন্দন করছে। তিনি তাকে ক্রন্দনের কারণ জিজ্ঞেস করলে সে অভিযোগ করল যে, আমার বাচ্চাটি মারা গেছে তাই তার শোকে কাঁদছি। নবীজী তাকে বললেনঃ اتَّقِي اللَّهَ وَاصْبِرِي আল্লাহকে ভয় কর এবং সবর কর। অর্থাৎ এখানে কাঁদার কি আছে অথবা আল্লাহর উপর অসন্তুষ্ট হওয়ার কী আছে? তিনি তো বান্দাদের প্রতি যুলুম করেন না। যাতে বান্দার কল্যাণ আছে তিনি তাই করে থাকেন। জীবন-মৃত্যু যেহেতু আল্লাহরই হাতে সুতরাং এতে আফসোসের কিছু নেই; বরং তুমি সবর কর, তবেই আল্লাহ্‌ তোমাকে ভালবাসবেন এবং এই দুঃখে প্রতিদান দিবেন। তখন মহিলাটি বলল, আপনি আমার থেকে দূরে যান। এই সন্তান মারা যাওয়াতে আমার কত বিপদ তা আপনি কি বুঝবেন? মহিলাটি রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে চিনতে পারেনি। নবীজী চলে গেলে মহিলাকে বলা হল, তুমি জান কার সাথে কথা বলছিলে? তিনি ছিলেন রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। একথা শুনে মহিলাটি লজ্জিত ও আতঙ্কিত হয়ে উঠল। কেননা নবীজীর সাথে বেয়াদবী মূলক আচরণ করেছে। তাই সে তাঁর বাড়ীর দরজায় গিয়ে উপস্থিত হল। দরজায় কোন দারোয়ান পেল না। তারপর বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আসলে আপনাকে চিনতে পারিনি। তখন তিনি বললেনঃ إِنَّمَا الصَّبْرُ عِنْدَ أَوَّلِ الصَّدْمَةِ প্রকৃত সবর হচ্ছে ওটাই যা প্রথম চোটে হয়ে থাকে। অর্থাৎ- বিপদ ঘটে যাওয়ার প্রথম ধাক্কাতেই যদি সবর করা হয় তবে তার বিনিময়ে আল্লাহর কাছে অফুরন্ত ছোয়াব পাওয়া যাবে। হায়-হুতাশ ও চিৎকার করে কান্নাকাটি করার পর সবর করলে ওটাকে সবর বলে না। (হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বুখারী ও মুসলিম)

অতএব তাবরিজী সাহেবের উচিত ছিল বৃদ্ধকে সবরের উপদেশ দেয়া, আল্লাহর ফায়সালায় মনক্ষুন্ন না হয়ে সবর করে তাঁর কাছে নিজেকে সোপর্দ করা, তাঁর কাছে এর প্রতিদান কামনা করা। মুমিনের যেখানে কল্যাণ আছে আল্লাহ্‌ সেটাই ফায়সালা করেন। তিনি কারো প্রতি যুলুম করেন না। তাঁর ফায়সালা মেনে নেয়াতেই মুমিনের ইহ-পরকালে সুখ-শান্তি ও সৌভাগ্য নিহিত আছে।



আবু মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যখন কোন বান্দার সন্তানের জান কবজ করা হয় তখন আল্লাহ্‌ ফেরেশতাদেরকে বলেন, তোমরা আমার বান্দার সন্তানের জান কবজ করে নিয়েছ? তাঁরা বলেন, হ্যাঁ। আল্লাহ্‌ আবার বলেনঃ তোমরা আমার বান্দার হৃদয়ের টুকরার রূহ কবজ করে নিয়েছ? তাঁরা বলেন, হ্যাঁ। তখন আল্লাহ্‌ জিজ্ঞেস করেন, এত বড় মুসীবতে আমার বান্দা কী বলেছে? ফেরেশতারা বলেন, সে আপনার (ফায়সালা মেনে নিয়েছে, আপনার উপর অসন্তুষ্ট হয়নি; বরং আপনার) প্রশংসা করেছে এবং ইন্নালিল্লাহ্‌ ... পড়েছে। আল্লাহ্‌ বলেনঃ আমার বান্দার জন্যে জান্নাতে একটি ঘর তৈরী করে দাও, আর তার নাম রাখ বায়তুল হাম্‌দ বা প্রশংসার ঘর। [. তিরমিযী, হাদীছটি হাসান, দ্রঃ সিলসিলা সহীহা হা/১৪০৮।]

প্রিয় পাঠক! আপনার কাছে সুস্পষ্ট হয়ে গেছে এই তাবরিজী সাহেব এবং তার দলের মারেফত পন্থীরা যদি সত্যিকার আল্লাহ্‌ প্রেমী ও প্রিয় নবীর খাঁটি অনুসারী হতেন, তবে আল্লাহর বন্ধু মহানবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর তরীকায় নিজেদেরকে পরিচালিত করতেন। মানুষ বিপদে পড়লে তাদেরকে সবরের উপদেশ দিয়ে বড়জোর তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করতেন। কখনো আল্লাহর সাথে বেয়াদবী মূলক আচরণ করতেন না বা তাদের অনুসারীরা ঐ অসৌজন্য মূলক অবৈধ (কুফরী) কথাকে বৈধ করার জন্যে অপব্যাখ্যা করতেন না। অতএব মারেফতের নাম করে তাদের আল্লাহ্‌ প্রেমের দাবী ও নবী প্রেমের মহড়া যে নিছক ভন্ডামী ও মানুষকে ধোকা দিয়ে স্বার্থ সিদ্ধি করার উদ্দেশ্যে তা আর ব্যাখ্যা করে বলতে হবে না। আল্লাহ্‌ সত্যই বলেছেনঃ

وَلَوْ كَانُوا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالنَّبِيِّ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مَا اتَّخَذُوهُمْ أَوْلِيَاءَ وَلَكِنَّ كَثِيرًا مِنْهُمْ فَاسِقُونَ “

ওরা যদি সত্যিকার ভাবে আল্লাহ্‌, নবী এবং তাঁর নিকট যা নাযিল হয়েছে তার প্রতি ঈমান রাখত, তবে তাদেরকে ওলী হিসেবে গ্রহণ করত না। কিন্তু তাদের অনেক লোকই ফাসেক। (সূরা মায়েদাঃ ৮১)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন