মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আল্লাহর সন্তুষ্টির বলয়ে রসূলুল্লাহ ﷺ এর হৃদয় ছিল বাঁধা, পরকালে যা কিছু উপকারী নয় তা থেকে তিনি ছিলেন বিমুখ। দুনিয়ার বিষয়ে ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তিনি ছিলেন নিরাগ্রহ। দুনিয়ার ধনরত্ন অবলীলায় তিনি মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিতেন, নিজের ও পরিজনের জন্য কিছুই সঞ্চিত করে রাখতেন না। রাসূলুল্লাহর গুণ বর্ণনাকারী জনৈক ব্যক্তি বলেছেন, ‘‘ তিনি মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুনিয়াত্যাগী ছিলেন।’’ রাসূলুল্লাহ ﷺ এর যুহদ ও দুনিয়াবিমুখতার ঘটনাসমূহ গুণে শেষ করা যাবে না। এর মধ্যে কয়েকটি হলো নিম্নরূপ:
তিনি আল্লাহর কাছে এই বলে প্রার্থনা করতেন : ‘‘ হে আল্লাহ ! আপনি মুহাম্মদের পরিবারকে স্বাস্থ্য রক্ষার মতো রিযিক দিন।’’ অন্য এক বর্ণনায় এসেছে : ‘‘ হে আল্লাহর ! ন্যূনতম প্রয়োজন মিটে এরূপ সম্পদ আপনি আলে মুহাম্মদের জন্য নির্ধারণ করুন’’
কখনো তিনি পুরা দিবস ক্ষুধায় কাতর হয়ে কাটাতেন এবং উদরে দেয়ার জন্য নিম্নমানের খেজুরও পেতেন না। হজরত ওমরের (রা) এক বর্ণনা মতে, আমি রাসূলুল্লাহকে সারা দিন ক্ষুধায় কাতর দেখেছি, তিনি পেটে দেয়ার জন্য অতি নিম্নমানের খেজুরও পেতেন না।
রাসূলুল্লাহ ﷺ এ-অবস্থায় ইন্তেকাল করেন যে তিনি কখনো একাধারে তিনদিন গমের রুটি আহার করেন নি, হজরত আয়েশা (রা) বর্ণনা করেন : রাসূলুল্লাহ ﷺ লাগাতার তিনদিন গমের রুটি পরিতৃপ্ত হয়ে খেতে পারেননি এ পর্যন্ত যে তিনি ইন্তেকাল করলেন’’ অন্য এক বর্ণনায় এসেছে : ‘‘রাসূলুল্লাহ ﷺ তরল-ব্যঞ্জন দিয়ে গমের রুটি আহারে লাগাতার তিনদিন পরিতৃপ্ত হননি’’।
আখেরাত বিষয়ে রাসূলুল্লাহর নির্লিপ্ততা এখান থেকে প্রকাশ পায় যে তিনি আরাফায় দাঁড়িয়ে বলেছেন: ‘‘ আমি হাজির হে আল্লাহ আমি হাজির, আখেরাতের কল্যাণই তো কেবল কল্যাণ’’ অন্য এক বর্ণনায় এসেছে,‘‘ আমি হাজির, নিশ্চয়ই জীবন আখেরাতেরটাই।’’
রাসূলুল্লাহ ﷺ জীর্ণ পুরাতন গদি ও চার দিরহামের চাদরে হজ সম্পন্ন করেন যার মূল্য চার দিরহাম অথবা যার কোনো মূল্যই নেই। ইবনুল কাইয়েম বলেন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর হজ গদি ওপর ছিল। মেহমাল , হাওদাজ বা আমবারিয়ার ওপর ছিল না। সহাবী ইবনে ওমর রাসূলুল্লাহ ﷺ এর এ- অবস্থা স্মরণ করেন যখন বেশ কয়েক বছর পর য়ামানী হাজীদের একটি দল তাঁর পাশ দিয়ে গেলেন, তাদের গদি ছিল শুকনো চামড়ার, উটের লাগাম ছিল পশমের বৃত্ত, (এসব দেখে ) তিনি বললেন :‘‘ বিদায় হজে রাসূলুল্লাহ ﷺ ও তাঁর সাহাবীদের অবস্থার সাথে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ এবছর আসা হাজিদের জামাত যে ব্যক্তি দেখতে চাইবে এই জামাতের দিকে যেন সে তাকিয়ে দেখে’’
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর আরোহণের জন্তু ছিল সদা ব্যবহৃত স্ত্রী-উট যা তিনি আসবাবপত্র ও পাথেয় বহনে ব্যবহার করতেন। হজে ব্যবহারের জন্য বিশেষ কোনো উট তাঁর ছিল না । হজরত ছুমামা বলেন :‘‘ হজরত আনাস গদির ওপর হজ করেন, যদিও তিনি বখিল ছিলেন না, তিনি এও বর্ণনা করেছেন যে তিনি সওয়ারের পশুর ওপর সফর করেছেন আর তা ছিল সবসময় ব্যবহারের জন্তু।
হজরত উসামা ইবনে যায়েদ ও ফযল ইবনে আববাসকে সঙ্গে চড়িয়ে নেওয়াও এ পর্যায়ে পড়ে ।
হজের সময় অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র না হওয়াও একই সূত্রে গাঁথা। এর উজ্জ্বলতম উদাহরণ , রাসূলুল্লাহ ﷺ পানি পানের উৎসে এলেন এবং পান করতে পানি তলব করলেন , হজরত আববাস বললেন, হে ফযল ! তোমার মায়ের কাছে যাও এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জন্য পানি নিয়ে এসো। রাসূলুল্লাহ বললেন :‘‘ পানি দিন’’। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, লোকেরা এতে হাত রাখছে, রাসূলুল্লাহ বললেন, পানি দিন ! অতঃপর তিনি সেখান থেকে পান করলেন অন্য এক বর্ণনা মতে : ‘ বাড়ি থেকে আপনার জন্য পানি নিয়ে আসি, একথা বললে রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন ‘‘ ওতে আমার দরকার নেই , জনতা যেখান থেকে পান করছে সেখান থেকেই আমাকে দাও।’’
দুনিয়ার প্রতি অনীহার আরো একটি উদাহরণ বহুল পরিমাণে কোরবানি করা, কেননা তিনি একশত পশু কোরবানি করেছেন পক্ষান্তরে দুনিয়ার মোহগ্রস্ত ব্যক্তি- যা বাধ্যতামূলক- সেটুকু করেই ক্ষান্ত হয়।
হজের হাদি ( উৎসর্গকৃত পশু ) ও কোরবানি উভয়টাই একসাথে করা যদিও হাদি কোরবানিরও কাজ দেয়, এ-পর্যায়েরই একটি উদাহরণ।
অধিক পরিমাণে সদকা করা এবং লোকদেরকে খাওয়ানো এ পর্যায়েই পড়ে। কেননা তিনি তারবিয়ার দিন (৮ জিলহজ) নিজ হাতে সাতটি উট দাঁড়ানো অবস্থায় জবেহ করেছেন, আর ১০ যিলহজ্বের দিন হজরত আলীকে নির্দেশ করলেন গোশত, চামড়া ও গদি-লাগামসহ সমস্ত কিছু গরীবদের মাঝে বণ্টন করে দিতে।
দুনিয়াত্যাগের আরেকটি উদাহরণ হজে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সদকা বণ্টন। কোরবানির দিন তিনি মেষের অতি সামান্য অংশকেও ভাগ করে দিয়েছেন। হজে রাসূলুল্লাহর কাছে দু’ব্যক্তি এলো, তিনি সদকা বণ্টনরত অবস্থায় ছিলেন, তিনি তাদের দিকে তাকিয়ে দেখে আবার দৃষ্টি নিম্নমুখী করলেন, তাদেরকে তিনি বলবান দেখতে পেলেন এবং বললেন :‘‘ তোমাদের ইচ্ছা হলে আমি দিতে পারি, তবে এতে ধনী ও উপার্জনক্ষম শক্তিমান ব্যক্তির কোনো অধিকার নেই।’’
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর অনাড়ম্বর ও অতি সাধারণ খাবারেও এ বিষয়টি স্পষ্ট । তিনি বিদায় হজের সময় কোরবানি জবেহ করলে হজরত ছাওবানকে বললেন : এই গোশতটা প্রস্ত্তত করো, ছাওবান বললেন : ‘‘ আমি প্রস্ত্তত করলাম, এবং মদিনায় পৌঁছা পর্যন্ত তা থেকে তিনি আহার করে গেলেন’’ অন্য এক বর্ণনায় ‘‘ আমি তাঁকে উহা থেকে আহার করাতে থাকি এ পর্যন্ত যে তিনি মদীনায় পৌঁছে যান।’’
তাই, যদি আপনার অন্তর্চক্ষুসর্বস্ব হৃদয় থেকে থাকে তাহলে দুনিয়া, ও এর চাকচিক্য থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখুন। দুনিয়ার মোহমুগ্ধতা বা দাসত্ব থেকে নিজেকে রক্ষা করুন। কেননা এ-হলো নশ্বর জগৎ, যা হীন ও নিকৃষ্ট। ‘‘ যার বাড়ি নেই দুনিয়া কেবল তারই বাড়ি, যার সম্পদ নেই তার সম্পদ, আর দুনিয়ার জন্য সেই জমায় যে অজ্ঞান, নির্বোধ।’’ দুনিয়া সন্তুষ্টির জায়গা হলে আল্লাহ তাঁর ওলী ও চয়নকৃত বান্দাদের জন্য তা পছন্দ করতেন, তাই দুনিয়াকে নিরাপদ মনে করে ভরসা করবেন না। আর এর ফিতনার বিষয়ে হুঁশিয়ার , কেননা ইহা কেবলই অহংকারের সামগ্রী।
এ-হলো প্রতিপালকের সঙ্গে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিবিড় সম্পর্ক, স্রষ্টার সামনে বিনয় ও নম্রতা প্রকাশ, মাওলার আনুগত্যে নিজেকে সঁপে দেয়ার কিছু উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, বিমূর্ত দৃশ্যপট। হজের দিনগুলোতে এ সুযোগ আপনার হাতের মুঠোয়। এ-হলো পুণ্য কেনার বিশাল বাজার, আনুগত্যের মৌসুম যা আপনার পাশ দিয়ে অতিক্রম করছে। একদিন স্রষ্টার আদালতে আপনাকে দাঁড়াতে হবে, যখন নিজেকে দেখতে পাবেন আল্লাহর বিষয়ে অবহেলা করেছেন, তাঁর নির্দেশ অবজ্ঞা করেছেন, তাঁর আনুগত্যের ক্ষেত্রে অলসতা দেখিয়েছেন, বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেঁধে দেয়া সীমা অতিক্রম করেছেন। কিন্তু সেসময় আক্ষেপ-আফসোস ব্যতীত আর কিছুই করার থাকবে না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/163/16
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।