hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হজ পালন অবস্থায় রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নান্দনিক আচরণ

লেখকঃ ফায়সাল বিন আলী আল বা’দানী

২৯
চ. হজ্বে মানুষের জন্য রাসূলুল্লাহ r এর ধৈর্য
ধৈর্য , যারা আল্লাহকে ভয় করেন তাদের পাথেয়, প্রতিষ্ঠা প্রাপ্তির সিংহদার, কল্যাণের এক অমূল্য গুপ্তধন। বিজয় আসে না কিন্তু ধৈর্যের পর। নেতৃত্ব জুটে না কিন্তু ধৈর্যের শর্তে। কখনো কাউকে পরিচালনা ধৈর্য ব্যতীত সম্ভব নয়। কেননা উত্তেজিত হলে ধৈর্যই ব্যক্তিকে দমন করে, উচ্ছৃঙ্খল হলে লাগাম লাগায়, ভালোবাসাকে ফলপ্রসূ করে, ইচ্ছাশক্তিকে শানিত করে, চিন্তাকে দেয় স্বচ্ছতা। এজন্য একজন মানুষকে সর্বোত্তম যা দেয়া হয় তা হলো এই ‘ধৈর্য’। মারফু হাদীসে এসেছে: যে ধৈর্য ধরে আল্লাহ তাকে ধৈর্যের সুযোগ করে দেন। আর কোনো ব্যক্তিকে ধৈর্যের চেয়ে মহৎ ও উত্তমতম আর কিছু দেয়া হয় নি’’। জ্ঞানীরা এবিষয়টির ব্যাপারে সজাগ, আর নেতৃত্বদানকারীরাও এ বিষটি রপ্ত করেছেন। ফারুকে আযম বলছেন : ‘‘ ধৈর্য দিয়েই আমরা উত্তম জীবনযাপনে সমর্থ হয়েছি।’’ আর আলী (রা) বলছেন :‘‘ ধৈর্য এমন এক বাহন যা কখনো হোঁচট খায় না।’’

রাসূল্লাহ r এর ধৈর্য ছিল একমাত্র আল্লাহর জন্য ও আল্লাহর ওপর ভরসা করে। আনুগত্যের বিষয়ে নিজেকে বাধ্য করে, এবং আল্লাহর ফয়সালার আওতায় নিজেকে ধরে রেখে তিনি এ-ধৈর্যের সর্বোচ্চ শিখরে আরোহণ করেছেন। আর হজ্বে - যা একপ্রকার জিহাদ- তিনপ্রকার ধৈর্যকেই একত্রিত করে দেয়া হয়েছে। কেননা তিনি তার সাথিদের মধ্যে সর্বাধিক আল্লাহর প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারী, সমধিক আনুগত্যকারী ও আল্লাহর নির্দেশ বাস্তবায়নকারী ছিলেন। ইবাদত চর্চাতেও তিনি সবার থেকে বেশি ধৈর্যধারণের পরিচয় দিয়েছেন। আর এভাবে তিনি সকল পুণ্যকর্মই প্রতিপালকের সামনে বিনয় নম্রতা ইখ্বাত প্রশান্ত হৃদয় ও মিনতির সাথে পালন করতেন।

রাসূলুল্লাহ r এর ছিলেন আল্লাহভীরুতায় সর্বোধ্বে, আল্লাহ সম্পর্কে গভীরতম জ্ঞানের অধিকারী, আল্লাহর ইস্যুতে সবচেয়ে বেশি রাগকারী, আল্লাহর সীমানার অতন্দ্র রক্ষী ও আল্লাহর নিষিদ্ধ সীমানা থেকে সবচেয়ে বেশি দূরে অবস্থানকারী।

উত্তেজিত না হয়ে অথবা বিন্দুমাত্র বিরক্তি প্রকাশ না করে অক্লান্তভাবে তিটি এঁটে থেকেছেন নিজ দায়িত্বে । জনতাকে পরিচালনার কষ্ট-ক্লেশ তিনি সহ্য করেছেন অসম্ভব ধৈর্য নিয়ে। হজ্বে রাসূলুল্লাহর অচ্ছেদ্য কর্মতৎপরতা-উদ্যম- ধৈর্য তাঁর অবস্থা ও যারা তাঁর সাথে ছিলেন তাদের অবস্থা থেকে সম্যক আঁচ করা যায়।

হজ্বে রাসূলুল্লহ r এর অবস্থা ও দায়দায়িত্ব পালনের আকার-প্রকৃতির প্রতি নজর দিলে বলা যায় যে তিনি ছিলেন সর্বার্থে আল্লাহর দাস। বিনয় ও নম্রতার পূর্ণতা অর্জনে সর্বোচ্চ শিখরের অশ্বারোহী। হজ্ব পালনে যখন যেভাবে যা করা উচিত ঠিক সেভাবেই অনুপূঙ্খভাবে তা পালনকারী। তিনি মানুষদের পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছেন, হাজ্বীদের সুবিধা-অসুবিধা দেখেছেন। তাদের অবস্থা বিষয়ে দায়িত্বশীল ও তাদের ঐক্য ধরে রাখার প্রতি যত্নবান ছিলেন।

রাসূলুল্লাহ r বিশাল এক জনগোষ্ঠীর মুয়াল্লিম ও মুরশিদ ছিলেন। যা কিছু ভালো ও কল্যাণকর সে বিষয়ে তিনি ছিলেন দীক্ষাদাতা। তিনি সারাক্ষণ যে বিষয়টি নিয়ে ভাবতেন তা হলো রিসালাত পোঁছিয়ে দেয়া ও ধর্মীয় অনুশাসনসমূহ খুলেখুলে মানুষদেরকে বলে দেয়া।

রাসূলুল্লাহ r মানুষের জন্য ছিলেন আদর্শ, তাদের দৃষ্টির ছিলেন মধ্যমণি। তাঁরই কথা ও কর্মের প্রতি ছিল সবার আগ্রহ; যাতে তারাও সে-মতে কর্ম সম্পাদন করতে পারে। তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলতে পারে।

উপরন্তু খোদ হজ্বকর্ম পালনে যে শ্রম দিতে হয় তা বলাই বাহুল্য। বিশেষ করে সেকালে, যখন বর্তমান যুগের মতো যাতায়াত ও থাকা-খাওয়ার আয়েশি ব্যবস্থার কিঞ্চিৎ পরিমাণও কল্পনা করা যেতো না। বিশেষ করে তিনি যখন হজ্ব করেন তাঁর বয়স হয়েছিল ষাটোর্ধ্ব আর সাথে ছিল নয় উম্মহাতুল মুমিনিন বা রাসূলুল্লাহর পবিত্র স্ত্রীগণ, আত্মীয়স্বজনদের দুর্বল লোকেরা। আর এঁদের সবার দেখাশোনার দায়দায়িত্বও ছিল রাসূলুল্লাহ r এর ওপর আরোপিত।

যাদেরকে নিয়ে তিনি হজ্ব করেছেন তাদের অবস্থার প্রতি দৃষ্টি দিলে দেখা যাবে সংখ্যায় তারা ছিলেন অনেক। এঁদের কেউ পুরাতন মুসলমান আবার কেও নতুন, ধর্ম বিষয়ে কারো জ্ঞান গভীর, কারো ভাসাভাসা। এজাতীয় বৈচিত্র্যের পাশাপাশি অঞ্চল গোত্র বয়স আর্থসামাজিক অবস্থান এবং এর ফলশ্রুতিতে বুদ্ধি অনুভূতি মেজাজ ভাষা ইত্যাদির পার্থক্যের বিষয়টি তো আছেই। আর শিশু ও দুর্বল মহিলারা যে সেবাযত্নের দাবি করে তার উল্লেখ না হয় বাদই দিলাম।

এসব বিষয় মাথায় রেখে যদি ভেবে দেখি রাসূলুল্লাহ r কী পরিমাণ ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন, কী পরিমাণ কষ্ট সহ্য করেছেন তাহলে আশ্চর্য না হয়ে পারি না।

তাই আপনিও ধৈর্য ধরুন যেভাবে ধরেছেন রাসূল r ; কেননা‘‘ধৈর্য ও ক্ষমার নামই ঈমান, ’’ আর আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে এ বিষয়টি পবিত্র কোরআনে স্পষ্টরূপে উল্লেখ হয়েছে। ধৈর্যশীলের ছোঁয়াব কি পরিমাণে দেয়া হবে তার একমাত্র হিসাব আল্লাহ ব্যতীত আর কারও জানা নেই। তাই রাসূলের ধৈর্য আপনার মাইলফলকে পরিণত করুন যার দিকনির্দেশনায় আপনার হজ্বকর্মসমূহ সম্পাদন করবেন ধারাবাহিকভাবে। রাসূলুল্লাহর আনুগত্যে কখনো যেন ছন্দপতন না ঘটে কঠিনভাবে সে বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি রাখুন। গোনাহের কাজ থেকে সতর্ক থাকুন, কখনো যেন পা ফসকে গোনাহের নর্দমায় পড়ে না যান সে ব্যাপারে হুঁশিয়ার থাকুন। কষ্ট সহ্য করুন, অস্থিরতা কৈফিয়ত ও ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে উত্তেজনা প্রদর্শন থেকে বেচে থাকুন। মানুষের স্পর্শে নিজেকে নিয়ে যান। মিশুন। তাদের দেয়া যাতনা সহ্য করুন। কেননা ‘‘যে মুমিনব্যক্তি মানুষের সাথে মিশে ও তাদের দেয়া কষ্ট সহ্য করে সে ওই ব্যক্তির থেকে উত্তম যে এরূপ করে না, ও ধৈর্য ধারণ করে না।’’ বিষণ্ণ চেহারা , কুঞ্চিত ললাট মানুষকে দেখাবেন না; কেননা তা ধৈর্যের বিপরীত অবস্থারই পরিচায়ক।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন