মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
ওয়াজ-উপদেশ সংস্কারকদের দায়িত্বের একটি বড়ো অংশ, আল্লাহর পথে আহবায়কদের মূল পদ্ধতি। দৃঢ় প্রত্যয়ী রাসূলদেরকে আল্লাহ এমর্মে আদেশ করেছেন, তিনি মুসা কে খেতাব করে বলেছেন:
‘‘বের করে নিয়ে এসো তোমার সম্প্রদায়কে অন্ধকার থেকে আলোতে, আল্লাহর দিবস বিষয়ে তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দাও।’’ অন্য এক আয়াতে আল্লাহ পাক তাঁর নবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন:
فَذَكِّرْ إِنَّمَا أَنْتَ مُذَكِّرٌ
‘‘ অতএব উপদেশ দাও, নিশ্চয় তুমি একজন উপদেশ দাতা।’’ ওয়াজ উপদেশই হলো মানুষের হৃদয়কে উদ্দেশ্য করে কথা বলার পদ্ধতি, তার ভাবাবেগকে উদ্দীপিত করার পথ। ওয়াজ-উপদেশ পদস্খলিত হওয়া থেকে বাঁচিয়ে রাখতে সহায়তা করে, উদাসীনতা থেকে বের করে ঐকান্তিকতার সংস্পর্শে নিয়ে যেতেও এর ভূমিকা অপরিসীম। ওয়াজ ও উপদেশ মানুষের মনকে নরম করে, আলোকিত করে, ময়লা আবর্জনা ও কর্দমাক্ততা সরায়, এবং প্রতিপালকের বড়োত্ব হৃদয়ে সজাগ করতে প্রেরণা দেয়। আল্লাহর নির্দেশ বাস্তবায়নে দ্রুত এগিয়ে যেতে, নিষেধাজ্ঞা থেকে বেচে থাকতে সহায়তা করে। একারণে প্রতি ব্যক্তিরই এবিষয়টির প্রয়োজন। তবে এ থেকে কেবল সেই উপকৃত হয় যার হৃদয়ে আল্লাহর ভয় রয়েছে। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে :‘‘ উপদেশ দাও, যদি উপদেশ ফলপ্রসূ হয়।’’ আরো এরশাদ হয়েছে:‘‘ উপদেশ দিন নিশ্চয়ই উপদেশে মুমিনদের উপকার হয়।’’
এজন্য উপদেশ ও স্মরণ করিয়ে দেয়ার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ r এর বিশেষ যত্ন ছিল, ওয়াজের প্রতিও তাঁর গুরুত্ব দৃষ্টিগ্রাহ্য। তিনি উম্মতকে যা কিছু ভালো তার দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, উৎসাহ জুগিয়েছেন, দুষ্কর্ম ও অকল্যাণ থেকে বারণ করেছেন, হুঁশিয়ার করেছেন। সাহবীদের কখন নসীহত করা উত্তম হতে পারে তার উপযুক্ত সময় তিনি খুঁজতেন। তিনি অত্যন্ত মর্মস্পর্শী নসীহতের মাধ্যমে উপদেশ দিতেন, শুনে অশ্রু ঝরাতো চোখ, কম্পিত হতো হৃদয় , আর এটা ছিল তাঁর দায়িত্বের একটি অংশ। রাসূলুল্লাহ থেকে বর্ণিত এক হাদীসে এরই ইঙ্গিত রয়েছে, তিনি বলেন :‘‘ আমার উদাহরণ ও আমাকে যা দিয়ে পাঠানো হয়েছেন তার উদাহরণ ওই ব্যক্তির মতো যে একটি সম্প্রদায়ের কাছে এলেন, অতঃপর বললেন : হে আমার সম্প্রদায়, আমি স্বচক্ষে শত্রু-সৈন্য দেখেছি, এবং আমি উলঙ্গ হুঁশিয়ারকারী। অতঃপর বাঁচো। তার সম্প্রদায়ের একদল লোক আনুগত্য করল ও রাতের আঁধারে বের হয়ে গেলো, তারা ধীরেসুস্থে রওনা হলো অতঃপর পরিত্রাণ পেয়ে গেলো। আর একদল অবাধ্য হলো এবং সেখানেই সকাল করল, শক্র সৈন্য প্রভাতে তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল, তাদের ধ্বংস করল, পিষ্ট করল। যে আমার ও আমি যা এনেছি তার আনুগত্য করল অথবা যে আমার অবাধ্য হলো ও আমি যা এনেছি তা অমান্য করল তার পরিণতি হবে ওপরে বর্ণিত উদাহরণের মতোই।’’
হজ্বে রাসূলুলালহ r এর ছিলেন মানুষদেরকে উপদেশ ও নসীহত দাতা। রাসূলুল্লাহ r ওয়াজ নসিহত ও উপদেশে যে মনোযোগ দিবে তার কাছে বেশ কিছু বিষয় প্রতিভাত হবে, যেমন :
ওয়াজ ও নসীহতের প্রতি সমধিক গুরুত্বারোপ, স্থান ও কালের বৈরিতার প্রতি লক্ষ্য। আরাফায় রাসূলুল্লাহ r ওয়াজ করেছেন এবং মানুষের হৃদয়কে করেছেন আন্দোলিত। তিনি ওয়াজ উপদেশ করেছেন হজ্বের পবিত্র স্থানসমূহে যাতায়াতকালে, ১০ যিলহজে মিনায়, তাশরিকের দিনগুলোয়, মদীনায় ফেরার পথে। আর তা তিনি এজন্যই করেছেন যে হজ্বমৌসুমে উপদেশ ও নসীহত গ্রহণের জন্য মানুষের মন থাকে উন্মীলিত, প্রস্ত্তত।
তিনি ওয়াজ নসীহত করার যেকোনো সুযোগকে যথাযথ কাজে লাগিয়েছেন। তিনি বিভিন্ন অবস্থানের মাঝে যোগসূত্র কায়েম করেছেন, উদাহরণস্বরূপ তিনি ঈদের দিন বলেছেন: ‘‘ তোমরা কি জানো এটা কোন দিন , আমরা বললাম : আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি চুপ রইলেন, আমরা ভাবলাম তিনি হয়তো দিনটির নাম বদলে দিবেন। তিনি বললেন এটা কি য়াউমুননাহর নয় ? বললাম, হাঁ, য়াউমুননাহর। তিনি বললেন: এটা কোন মাস? বললাম, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভালো জানেন। তিনি চুপ রইলেন, আমরা মনে করলাম তিনি হয়তো নাম বদলে দিবেন। তিনি বললেন : এটা কি জিলহাজ মাস নয়? আমরা বললাম , হাঁ, জিলহজ মাস। তিনি বললেন : এটা কোন অঞ্চল ? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি চুপ রইলেন। আমরা মনে করলাম, তিনি হয়তো নাম পালটে অন্য নাম রাখবেন। তিনি বললেন, এটা কি হারাম অঞ্চল নয় ? আমরা বললাম, হাঁ হারাম তথা পবিত্র অঞ্চল। তিনি বললেন: তাহলে নিশ্চয়ই তোমাদের সম্পদ, রক্ত, তোমাদের জন্য হারাম, তোমাদের এই দিবসের মতোই, এই মাসে এই অঞ্চলে, যতক্ষণ না তোমরা প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাৎ কর।’’ ১০ জিলহজ্বের কার্যসমূহে আগে পিছে করার ব্যাপারে যখন জিজ্ঞাসা করা হলো তিনি বললেন : কোনো ক্ষতি নেই, কোনো ক্ষতি নেই, তবে যে তার মুসলমান ভাইয়ের সম্মানে আঘাত করল, মূলত সেই ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংসপ্রাপ্ত।
উপদেশের ক্ষেত্রে তিনি একই বিষয় বিভিন্ন জায়গায় স্মরণ করিয়ে দিতেন। যেমন রক্ত সম্পদ সম্মান হারাম হওয়ার বিষয়টি আরাফায়, ১০ যিলহজে তাশরীকের দিবস সমূহে তিনি পুনর্বার ব্যক্ত করেছেন। বরং এমন হয়েছে যে তিনি একই বিষয় এক জায়গায় কয়েকবার বলেছেন; উদাহরণস্বরূপ ইবনে আববাস (রা) থেকে বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে। রাসূলুল্লাহ r য়াউমুননাহরে (১০ যিলহজ্ব) জনতাকে লক্ষ্য করে বক্তৃতা করেন, তিনি বলেন : হে লোকসকল! এটা কোন দিবস, তারা বলল : পবিত্র দিবস। তিনি বললেন : এটা কোন অঞ্চল ? তারা বলল হারাম তথা পবিত্র অঞ্চল। তিনি বললেন, এটা কোন মাস ? তারা বলল : হারাম তথা পবিত্র মাস। তিনি বললেন, তাহলে তোমাদের রক্ত, তোমাদের সম্পদ, তোমাদের সম্মান তোমাদের ওপর হারাম, এই দিবসের মতো, এই অঞ্চলে, ও এই মাসে। কথাটা তিনি তিনবার পুনব্যক্ত করলেন।
রাসূলের উপদেশ ও তাঁর কর্ম এ’দুয়ের মাঝে কোনো ছেদ না থাকাও একটি লক্ষণীয় ব্যাপার। তিনি যে বিষয়ে মানুষদেরকে উপদেশ দিতেন সে বিষয়ের প্রয়োগে তিনিই ছিলেন অগ্রণী। তিনি যা করতেন না তা বলতেনও না। তিনি কোনো কিছুর নির্দেশ দিলে সর্বাগ্রে তা নিজেই বাস্তবায়ন করতেন, কোন কিছু থেকে মানুষকে বারণ করলেন প্রথমে তা নিজেই পরিহার করতেন। তিনি ছিলেন সমধিক পরিমাণে আল্লাহকে ভয়কারী, স্রষ্টার বিষয়ে সবচেয়ে বেশি সত্যবাদী ও নিষ্ঠাবান।
রাসূলুল্লাহ r তাঁর ওয়াজে স্পষ্ট ছিলেন, কথা সরাসরি বলতেন। তিনি আড়ম্বরতা পরিহার করে কথা বলতেন। একারণে ওয়াজ-উপদেশে কোনো দুর্বোধ্য শব্দ তিনি ব্যবহার করেননি, কঠিন ও সর্পিল কোনো পদ্ধতিরও আশ্রয় নেন নি।
তিনি ওয়াজ-উপদেশে সর্বাধিক প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো উপস্থাপন করতেন, মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতেন যা আখেরাতের মুক্তির জন্য অবশ্যম্ভাবীরূপে জরুরি। তিনি কখনোই ওয়াজ-উপদেশের মাধ্যমে কোনো কিছুকে কঠিন করতে চাইতেন না, অথবা কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে আলোচনায় আনতেন না।
ওয়াজ-উপদেশের ক্ষেত্রে কেবল নিজেই এ দায়িত্ব পালন করে ক্ষান্ত হননি, বরং জনতার মাঝে ডেকে ডেকে উপদেশ প্রদানের জন্যও লোক নির্ধারিত করেছেন। বিশর ইবনে সুহাইম (রা) থেকে বর্ণিত : ‘‘ রাসূলুল্লাহ r তাশিরিকের দিনসমূহে জনতার মাঝে ডেকে ডেকে বলতে বলেছেন : মুমিন ব্যতীত কেউ বেহেশতে প্রবেশ করবে না।’’
রাসূলুল্লাহ rএর ওয়াজ উপদেশের নির্ভরতা কেবল ভয় দেখানোয় সীমাবদ্ধ ছিল না, তিনি বরং সুসংবাদ ও উৎসাহিত করার পদ্ধতিকেও রীতিমত ব্যবহার করেছেন। মানুষদেরকে খোশখবরি শুনিয়েছেন। নীচের হাদীসটি তারই উদাহরণ :
‘‘যে কেবল আল্লাহর জন্য হজ্ব সম্পাদন করল, এবং স্ত্রী-সহবাস থেকে বিরত রইলো, শরীয়ত বিরোধী কাজে লিপ্ত হলো না সে তার মাতৃ গর্ভ থেকে জন্ম নেয়ার দিনের মতো হয়ে গেলো।’’ মুযদালিফার দিন সকালে জনতাকে উদ্দেশ্য করে বললেন : আল্লাহ তোমাদের এই জমায়েতের ওপর অনুকম্পা করেছেন , অতঃপর তোমাদের পাপীকে পুণ্যবানের কাছে সোপর্দ করেছেন, আর পুণ্যবানের সকল চাওয়া তিনি পূরণ করেছেন। তাই আল্লাহর নামে রওনা হও।’’
তিনি r তাঁর ওয়াজ উপদেশে কথার গন্ডি ছাড়িয়ে সরাসরি প্রয়োগে গিয়েছেন, তাইতো বাতনুল ওয়াদিতে - যেখানে আসহাবুল ফিলের ওপর আল্লাহর রোষ পতিত হয়েছিল - তিনি দ্রুত চলেছেন। এটা ছিল ওয়াদি মুহাস্সার, যেমন আলীর (রা) হাদীসে এসেছে:‘‘ তারপর তিনি চললেন এবং ওয়াদি মুহাস্সারে এসে পৌঁছোলেন, তিনি তাঁর উটকে আঘাত করলেন, সে দৌড়ে চলল এবং উপত্যকা অতিক্রম করল, ও দাঁড়াল। উক্ত ওয়াদিকে এভাবে নামকরণ করার কারণ আবরাহার হাতিগুলো এখানে এসে ক্লান্ত ও অবসন্ন হয়ে পড়েছিল, ফলে কাবা পর্যন্ত তাদের যাত্রা বাধাপ্রাপ্ত হলো। ইমাম ইবনুল কাইয়েম বলেন, ‘‘আল্লাহর শত্রুদের ওপর যেখানে শাস্তি এসেছে সেখানে এরূপ করাই ছিল রাসূলুল্লাহ r এর অভ্যাস। রাসূলুল্লাহ r তাঁর ওয়াজ উপদেশে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর আলোকপাত করেছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো :
দুনিয়া বিষয়ে মানুষদেরকে নির্লোভ করা : আরাফার দিন সূর্যাস্তের পূর্বে তিনি বললেন, হে লোকসকল! দুনিয়ার অতিক্রান্ত অংশের তুলনায় অবশিষ্ট অংশ আজকের দিনের অতিক্রান্ত অংশের তুলনায় যতটুকু বাকি রয়েছে তার মতোই।’’
তাকওয়া অর্জনের নির্দেশ ও বেহেশতে প্রবেশের কারণ হবে এমন আমলসমূহ দেখিয়ে দেয়া- হাদীসে এসেছে , ‘‘তোমাদের প্রতিপালককে ভয় করো, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়, রমজান মাসের রোজা রাখো, এবং সম্পদের যাকাত দাও, নেতার আনুগত্য করো, তবে তোমাদের প্রতিপালকের বেহেশতে প্রবেশ করবে।
কেউ কারও পাপের বোঝা টানবে না, আল্লাহর সামনে জবাবদিহিতা ও দায়দায়িত্ব সম্পূর্ণই ব্যক্তিগত,এ বিষয়টি ভালো করে বুঝিয়ে দেয়া- এরশাদ হয়েছে : জুলুমকারী কেবল নিজের ওপরেই জুলুম করে, পিতা ছেলের ওপর জুলুম করে না, না ছেলে পিতার ওপর।’’
ভালো চরিত্র, ভালো কাজ , ও হজ্ব পালনে শরীয়তবর্জিত ও গোনাহের কাজ থেকে বেচে থাকা ও কল্যাণকর কাজে নিজেকে জড়িয়ে রাখার বিষয়ে উৎসাহ দান - এরশাদ হয়েছে, ‘‘যে ব্যক্তি হজ্ব করল এবং যৌনতার স্পর্শে গেলো না, শরীয়তপরিপন্থী কোনো কাজও করল না, সে মাতৃ গর্ভ থেকে সদ্যজন্ম নেওয়া শিশুর মতো ফিরে এলো’’, তিনি আরো বলেছেন, ‘‘ ঘোড়া অথবা উটকে জোরে হাঁকিয়ে নেয়াতে কল্যাণ নেই।’’ হজ্বে কল্যাণকর কাজ কী? জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘‘খাবার খাওয়ানো ও ভালো কথা বলা’’।
প্রান্তিকতা ও বাড়াবাড়ি থেকে সতর্ক করা- এরশাদ হয়েছে, ‘‘হে লোকসকল! ধর্মে বাড়াবাড়ি থেকে সাবধান, নিশ্চয়ই ধর্মে বাড়াবাড়ি তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে ধ্বংস করেছে।’’
মাতা-পিতার সাথে সদাচার ও আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষার বিষয়ে গুরুত্বারোপ- এরশাদ হয়েছে, ‘‘(তোমার সদাচার পাওয়ার অধিকারী) তোমার মা, তোমার বাবা, তোমার ভাই, তোমার বোন, অতঃপর নিকট আত্মীয়রা পর্যায়ক্রমে।’’
মহিলা ও অন্যান্য দুর্বলদের প্রতি করুণা ও দয়া প্রদর্শনের নির্দেশ- ‘‘মহিলাদের ব্যাপারে তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। কেননা আল্লাহর নিরাপত্তায় তোমরা তাদের নিয়েছ এবং আল্লাহর বাণী দিয়ে তাদের স্ত্রীর যৌনাঙ্গের বৈধ অধিকার পেয়েছ।’’ অন্য এক বর্ণনায় এসেছে ‘‘মহিলাদের বিষয়ে হিতাকাঙ্ক্ষী হও কেননা এরা তোমাদের কাছে বাঁধা।’’
অন্যদেরকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকা, আনুগত্যের ক্ষেত্রে আপ্রাণ চেষ্টাসাধনা ও পাপ পরিত্যাগের ব্যাপারে উৎসাহ দান - বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ r বলেছেন : ‘‘মুমিন কে? এ বিষয়ে কি আমি তোমাদের বলব না? যাকে মানুষ তাদের জান-মালের বিষয়ে নিরাপদ মনে করে, সেই মুমিন। আর মুসলিম যার জিহবা ও হাত থেকে মানুষ নিরাপদে থাকে। আর মুজাহিদ সেই যে আল্লাহর আনুগত্যের ক্ষেত্রে নিজের নফসের বিরুদ্ধে লড়াই করে, আর হিজরতকারী সে যে পাপ ও ত্রুটিকে বর্জন করে।’’
রাসূলুল্লাহ r তাঁর পক্ষ থেকে তাবলীগ তথা পোঁছিয়ে দেয়ার বিষয়েও উৎসাহ দিয়েছেন এবং তার ওপর কোন মিথ্যাচারিতা থেকে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেছেন :‘‘ আল্লাহ পাক উজ্জ্বল করুন ওই ব্যক্তির চেহারা যে আমার কথা শুনল, ও তা পোঁছিয়ে দিল। অনেক ‘ফিকহ’ বহনকারী নিজে ফকিহ নয়, আবার অনেকেই ফিকহ এমন ব্যক্তির কাছে বহন করে নিয়ে যায় যে তার চেয়েও বেশি বুদ্ধিসম্পন্ন। তিনি আরো বলেছেন : ‘‘তোমরা আমাকে দেখলে শুনলে। তোমাদেরকে আমার সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে, অতঃপর যে আমার ওপর মিথ্যা বলবে সে যেন তার স্থল নরকে প্রস্ত্তত করে নেয়।’’
আকুতি মিনতি মোনাজাত ও দোয়ায় শ্রম-সাধনার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান এবং আল্লাহর ক্ষমা ও করুণা প্রাপ্তি বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করণ। বর্ণনায় এসেছে : ‘‘আরাফা দিবসের মতো অন্য কোন দিন এতো অধিক পরিমাণে আল্লাহ তার বান্দাদেরকে মুক্তি দেন না, আর এদিন আল্লাহ নিকটবর্তী হন। এবং তার বান্দাদের নিয়ে ফেরেশতাদের সাথে গর্ব করেন ও বলেন, ওরা কি চায়?।’’
রাসূলুল্লাহ r যদি আবুবকর, ওমর, আশারায়ে মুবাশ্শারা, আহলে বদর, হুদায়বিয়ার বায়আতকারীগণ ও অন্যান্য সাহাবাদের (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) উপদেশ দিতে এতো শ্রম-সাধনা ব্যয় করে থাকেন , এবং তাদের এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ওয়াজ- উপদেশ দিয়ে থাকেন যার দ্বারা হৃদয়ে ত্রস্ততা আসে, মন কাঁপে, অশ্রু ঝরে; এবং প্রতিনিধি প্রেরণ করেন ও এ-উদ্দেশ্যে আহবায়ক পাঠান; পক্ষান্তরে তারা হলেন এ-উম্মতের সর্বোত্তম ব্যক্তিবর্গ, সমধিক স্বচ্ছ হৃদয়ের অধিকারী, গভীর জ্ঞানসম্পন্ন, সবচেয়ে বেশি অনাড়ম্বর, সত্যবাদী, সঠিকতম হেদায়েতে প্রতিষ্ঠিত, সুন্দরতম অবস্থায় অধিষ্ঠিত, যাদেরকে আল্লাহ পাক তাঁর নবীর সহবত ও ইকামতে দ্বীনের জন্য চয়ন করেছেন; তাদেরকে ওয়াজ-উপদেশ করার ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ r এতটুকু হন তাহলে হজ্বে আমাদের এ সবের কতই না প্রয়োজন। বিশেষ করে আমাদের অনেকেই জাহেল, উদাসীন। অনেকেই পাপী, মূর্খ। আবার অনেকের মধ্যেই বাসা বেঁধেছে পশুপ্রবৃত্তি খুব শক্তভাবে। অনেককে আবার সন্দেহ ও অস্পষ্টতা ঘিরে রেখেছে চতুর্দিক থেকে।
সন্দেহ নেই, বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশাল দায়দায়িত্বের দাবিবহ, বরং এর প্রয়োজনীয়তা খাদ্য ও পানীয়ের থেকেও অধিক। কেননা প্রয়োজন দরজায় কড়া নাড়ছে, আর শূন্যহৃদয়সমূহ রয়েছে আগ্রহে অপেক্ষা-মান। তাই শক্তি-সামর্থ্য আছে এমন প্রতিটি ব্যক্তিরই উচিত ওয়াজ উপদেশের দায়িত্ব নিয়ে দাঁড়ানো। সুযোগ যথার্থভাবে কাজে লাগানো। হয়তো মৃত হৃদয় জীবন-স্পন্দন অনুভব করবে নতুন করে, জেগে উঠবে ঘুমন্ত মন। যার ফলে ঈমান পাবে সজীবতা, আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনকারীদের সংখ্যা পাবে আধিক্য, নত হবে তার সামনে অনেকেই, অতঃপর তারা পরিণত হবে হিদায়েতের কান্ডারিতে, কারণ হবে উম্মতের মধ্যে নতুন আলোক জ্বলার কারণ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/163/20
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।