মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আল্লাহ তাঁর নিদর্শনসমূহকে সম্মান-শ্রদ্ধা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি যেসব বিষয়ের সম্মানের নির্দেশ দিয়েছেন যথার্থভাবে সেগুলোর সম্মান দাসত্বের শর্ত ও কল্যাণার্জনের পথ হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে : ওটা.
এবং যারা আল্লাহর নিদর্শনসমূহ সম্মান করবে তাঁদের হৃদয়ের তাকওয়ার কারণেই তা করবে। আরো এরশাদ হয়েছে : ‘‘ ইহাই , এবং যে ব্যক্তি আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত পবিত্র অনুষ্ঠানগুলোর সম্মান করে , প্রতিপালকের কাছে তা হয় উত্তম।’’ রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন :‘‘ তোমরা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত পবিত্র অনুষ্ঠানগুলোর বিষয়ে তাকওয়া অবলম্বন করো, মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আল্লাহর দাসত্বকারী হবে।
অন্যদিকে আল্লাহর নিদর্শনসমূহের প্রতি তাচ্ছিল্য-অনীহা-অবজ্ঞা-অবহেলা ও আল্লাহর হুরমত লঙ্ঘন থেকে কঠিনভাবে বারণ করেছেন। আল্লাহ পাক বাইতুল হারাম সম্পর্কে বলেন :
ومن يرد فيه بإلحاد بظلم نذقه من عذاب أليم .
‘আর যে ব্যক্তি সেখানে- ইচ্ছাপূর্বক সীমা লঙ্ঘন করে - পাপ কাজ করতে যাবে, আমি তাকে বেদনাদায়ক শাস্তি আস্বাদন করাব।’ আল্লাহ পাক আরো এরশাদ করেন:
‘আর কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্য হলে এবং তাঁর সীমা লঙ্ঘন করলে আল্লাহ তাকে আগুনে নিক্ষেপ করবেন যেখানে সে স্থায়ী হবে এবং তার জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর শাস্তি।’
আল্লাহর এ-হুঁশিয়ারি চয়নকৃত বান্দাদের বোধগম্য হলো। নিগূঢ় তত্ত্বজ্ঞানীরা বুঝে নিল। আর এঁদের লিস্টের শীর্ষে হলেন প্রেরিতদের ইমাম, সকল সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ , আল্লাহর নিদর্শনসমূহের সমধিক সম্মান শ্রদ্ধাকারী আল্লাহর সীমানাসমূহের সবচেয়ে বেশি যত্নবান ও সংরক্ষণকারী, ও তাঁর নিষিদ্ধ সীমানা থেকে দূরে অবস্থানকারী - মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
হজে রাসূলুল্লাহ কর্তৃক আল্লাহর নিদর্শন সমূহের সম্মান প্রদর্শন বিচিত্র ধারায় প্রকাশ পেয়েছে :
ক-
এহরামের জন্য গোসল করা ও চুল সুস্থির (তালবিদ) করা । গোসলের পর উত্তম
খুশবু ব্যবহার- হজরত যায়েদ ইবনে ছাবেত বলেন: ‘‘তিনি দেখেছেন যে রাসূলুল্লাহ ﷺ এহরামের জন্য বস্ত্র ছেড়েছেন ও গোসল করেছেন।’’ হজরত ইবনে ওমর থেকে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে :‘‘ আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে চুল সুস্থিরকৃত (মুলাববাদ) অবস্থায় হজ শুরু করতে দেখেছি।’’ এক বর্ণনায় হজরত আয়েশা বলেন :‘‘ আমি এহরামের পূর্বে রাসূলুল্লাহর ﷺগায়ে উত্তম খুশবু লাগাতাম।’’ অন্য এক বর্ণনায় ‘‘ সর্বোত্তম খুশবু যা রাসূলুল্লাহ ﷺ সংগ্রহ করতে পেতেন তা দিয়ে আমি তাঁকে সুগন্ধযুক্ত করতাম।’’
খ
কোরবানির জন্তু হিসেবে রাসূলুল্লাহ ﷺ যুলহুলাইফা থেকে উট সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন যা আল্লাহর নিদর্শনের মধ্যে গণ্য। পবিত্র কোরআনে এসেছে
‘‘ উটগুলোকে আমি তোমাদের জন্য করেছি আল্লাহর নিদর্শন।’’ রাসূলুল্লাহ ﷺ এই কোরবানির কিছু জন্তুকে চিহ্নিত করলেন (ও প্রথা অনুসারে এগুলোর গলায় বা কুঁজে মালা ঝুলালেন । হজরত ইবনে আববাস (রা) এক বর্ণনায় বলেন: ‘‘ রাসূলুল্লাহ ﷺ যুলহুলাইফায় যোহরের নামাজ আদায় করলেন, তিনি উষ্ট্রী নিয়ে আসতে বললেন ও তার কুঁজের ডানপার্শে ক্ষত করে চিহ্নিত করলেন, রক্ত বেয়ে পড়ল, অতঃপর তিনি দু’টি জুতো দিয়ে মালা ঝুলালেন’’ ইমাম ইবনে কাছির বলেন: ‘ এর দ্বারা বুঝা গেলো কোরবানির এ-পশুটি তিনি নিজ হাতে চিহ্নিত ও তাকে মালা পরিয়েছেন । পক্ষান্তরে অন্যান্যগুলোর ক্ষেত্রে এ দায়িত্ব অন্যরা পালন করেছে।’’ অন্য একটি বর্ণাতেও এর সমর্থন মিলে যেখানে বলা হয়েছে: ‘‘ তিনি তাঁর কোরবানির জন্তুটি ডানপার্শ দিয়ে চিহ্নিত করতে বললেন।’’ অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহর ﷺ এই মর্মে নিষেধাজ্ঞা যে, যে ব্যক্তি আরোহণের জন্তু পেলো সে যেন কোরবানির পশুতে আরোহণ না করে , এই মর্মে হজরত যাবেরের বর্ণনায় এসেছে : ‘‘ অপারগ অবস্থায় সৌজন্যের সহিত এতে আরোহণ করো যতক্ষণ না অন্য একটি বাহন পাও’’
গ
হজে প্রবেশ থেকে শুরু করে ১০ জিলহজ জামরাতুল আকাবায় কঙ্কর নিক্ষেপ পর্যন্ত রাসূলুল্লাহর ﷺ তালবিয়া পড়তে থাকা আল্লাহর নির্ধারিত পবিত্র অনুষ্ঠানাদির প্রতি সম্মান প্রদর্শনেরই উদাহরণ। হজরত ইবনে আববাস বর্ণনা করেন :‘‘ রাসূলুল্লাহ ﷺ আকাবায় কঙ্কর নিক্ষেপের পূর্ব পর্যন্ত তালবিয়া পড়তে থাকেন ’’ হজরত ইবনে মাসঊদ এক বর্ণনায় বলেন : ‘‘ যিনি সত্যসহ মোহাম্মদকে পাঠিয়েছেন তাঁর কসম, আমি মিনা থেকে আরাফায় রাসূলুল্লাহর ﷺ সাথে গিয়েছি, তিনি কখনো তালবিয়া পড়া থেকে বিরত হননি জামরাতুল আকাবায় কঙ্কর নিক্ষেপের পূর্ব পর্যন্ত , হাঁ যদি মাঝখানে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ অথবা ‘আল্লাহু আকবার’ মিশ্রিত করতে চাইতেন তাহলে।’’
তালবিয়ার সময় রাসূলুল্লাহ ﷺ স্বর উঁচু করতেন যা সাহাবিগণ শুনতে পেতেন, হজরত ইবনে ওমর এক হাদিসে উল্লেখ করেন :‘‘ আমি রাসূলুল্লাহকে ﷺ চুল সুস্থিরকৃত অবস্থায় ‘লাববাইক’ বলতে শুনেছি।’’ হজরত ইবনে আববাসের বর্ণনায় : ‘‘ রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন : ‘‘ জিব্রিল আমার কাছে এসেছেন, ঘোষিত আকারে তালবিয়া পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন’’। হজরত আবু সাইদ তাঁর বর্ণনায় বলেন :‘‘ আমরা রাসূলুল্লাহ ﷺ সাথে গিয়েছি হজের তালবিয়া চিৎকার করে বলে বলে।’’
ঘ
মক্কায় প্রবেশের পূর্বে রাসূলুল্লাহ ﷺ গোসল করেন সফরের অবসাদ ও আলুথালু ভাব ঝেড়ে ফেলার জন্য, আর মসজিদুল হারামে প্রবেশের সাথে সাথেই তিনি তাওয়াফ আরম্ভ করেন, এটাও আল্লাহর নির্ধারিত হজের পবিত্র অনুষ্ঠানাদি ও নিদর্শনের সম্মান-শ্রদ্ধার উদাহরণ। হজরত নাফে বর্ণনা করেন, হজরত ইবনে ওমর মক্কায় এলে ‘যু তা-ওয়া’ নামক স্থানে রাত্রি যাপন করতেন, সেখানেই তিনি প্রভাত করতেন এবং গোসল সেরে নিতেন। তিনি, অতঃপর , দিনের বেলায় মক্কায় প্রবেশ করতেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ এরূপই করেছেন বলে তিনি উল্লেখ করতেন’’। হজরত আয়শা এর বর্ণনা অনুসারে রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন ( মক্কায়) আগমন করলেন শুরুতেই ওজু করলেন ও তাওয়াফ সম্পাদন করলেন।’’
ঙ
হজরে আসওয়াদ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর যত্ন ও সম্মানবোধও আল্লাহর নিদর্শন সমূহকে সম্মান দেখানোর একটি অংশ। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর হাজরে আসওয়াদকে আঁকড়ে ধরেছেন, চুমু খেয়েছেন, এর ওপর সিজদা করেছেন ও এর পাশে কেঁদেছেন। তিনি রুকনে য়ামানী স্পর্শ করেছেন, হজরত ছাওয়ীদ ইবনে গাফালা বলেন : ‘‘ আমি হজরত ওমরকে দেখেছি, তিনি হাজরে আসওয়াদ চুমু খেয়েছেন , আঁকড়ে ধরেছেন ও বলেছেন : আমি রাসূলুল্লাহকে দেখেছি তোমাকে সম্মান দেখাতে।’’ হজরত ইবনে আববাস এক বর্ণনায় বলেন :‘‘ আমি ওমর ইবনুল খাত্তাবকে দেখেছি হাজরে আসওয়াদ এর ওপর ঝুঁকে পড়তে এবং বলতে : আমি নিশ্চয়ই জানি তুমি একটি পাথর, তোমাকে চুমু খেতে ও স্পর্শ করতে আমি আমার প্রিয় নবীকে না দেখলে তোমাকে চুমু খেতাম না, স্পর্শও করতাম না।’’ অন্য এক বর্ণনায় তিনি বলেন : ‘‘ ওমর ইবনুল খাত্তাব কে দেখেছি. তিনি হজরে আসওয়াদ চুমু খেয়েছেন, এর ওপর সিজদা করেছেন এবং বলেছেন: রাসূলুল্লাহকে ﷺ এরূপ করতে দেখেছি তাই করেছি।’’ হজরত জাবের থেকে বর্ণিত তিনি বলেছেন : ‘‘ তিনি হাজরে আসওয়াদ দিয়ে শুরু করলেন, তিনি তা চুমু খেলেন এবং কান্নায় দুই চোখ আপ্লুত করলেন।’’ হজরত ইবনে ওমর বলেন : রাসূলুল্লাহ ﷺ রুকনে য়ামানী ও হাজরে আসওয়াদ প্রতি তাওয়াফেই স্পর্শ করতেন।’’
চ
এ-পর্যায়ের আরেকটি উদাহরণ মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে নামাজ আদায়। সাফা পাহাড় থেকে সাঈ’ শুরু ও এর ওপর, এবং মারওয়ার ওপর দোয়া ও জিকিরের উদ্দেশে দাঁড়ানো। হজরত জাবের বলেন : ‘‘ অতঃপর তিনি মাকামে ইব্রাহীমে গেলেন এবং পড়লেন : واتخذوا من مقام إبراهيم مصلى ‘ তোমারা মাকামে ইব্রাহীমকে নামাজের স্থল রূপে গ্রহণ করো’ তিনি মাকামে ইব্রাহীমকে তাঁর মাঝে ও কাবার মাঝে রাখলেন। তিনি দরজা দিয়ে সাফার দিকে বের হয়ে গেলেন । সাফার নিকটবর্তী হলে তিনি বললেন : إن الصفا والمروة من شعائر الله ‘ নিশ্চয়ই সাফা এবং মারওয়া আল্লাহর নিদর্শন সমূহের একটি।’ আমি শুরু করছি যেটা দিয়ে শুরু করেছেন আল্লাহ। তিনি সাফা থেকে শুরু করলেন। সাফায় তিনি এতটুকু আরোহণ করলেন যে কাবা দৃষ্টিগ্রাহ্য হলো। তিনি কেবলামুখী হলেন , আল্লাহর একত্ববাদ ঘোষণা করলেন, তকবির পড়লেন এবং বললেন :
لا إله إلا الله وحده لاشريك له ، له الملك وله الحمد وهو على كل شيء قدير ، لا إله إلا الله وحده ، أنجز وعده ، ونصر عبده ، وهزم الأحزاب وحده . ثم دعا بين ذلك ، قال مثل هذا ثلاث مرات ، ثم نزل إلى المروة ... ففعل على المروة كما فعل على الصفا
‘ আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরিক নেই, রাজত্ব তারই, প্রশংসাও তাঁর । তিনি সকল বিষয়ের ওপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই , তিনি তাঁর অঙ্গীকার পূরণ করেছেন, তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন, ও একাই তাঁর শত্রুদেরকে পরাজিত করেছেন। এর মাঝে তিনি দোয়া করলেন, পূর্বের ন্যায় তিনবার বললেন, অতঃপর মারওয়া অভিমুখে রওনা হলেন... মারওয়াতেও তিনি অনুরূপ করলেন । অন্য এক বর্ণনায় এসেছে ‘‘ অতঃপর তিনি মাকামে ইব্রাহীমে এলেন এবং পবিত্র কোরআনের এ-আয়াতটি পড়লেন:
واتخذوا من مقام إبراهيم مصلى
‘‘ তোমরা মাকামে ইব্রাহীমকে নামাজের স্থান হিসেবে গ্রহণ করো।’’ তিনি সেখানে দু’রাকাত নামাজ আদায় করলেন এ-অবস্থায় যে মাকামে ইব্রাহীম তাঁর ও কাবার মাঝে...’’
ছ
আল্লাহর নিদর্শনসমূহকে তাজিম করা ও হজের পবিত্র অনুষ্ঠানাদির প্রতি যথাযথ সম্মান দেখানোর আরো একটি উদাহরণ মাশআরুল হারামে (মুযদালিফায় কুযাহ পাহাড়ের সন্নিকটে) রাসূলুল্লাহ ﷺ এর দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা যেহেতু আল্লাহ পাক এরশাদ করেছেন:
‘‘ তোমাদের কোন ক্ষতি নেই যে তোমরা তোমাদের প্রভুর করুণা তালাশ করবে--- এ-সময়ে তিনি আল্লাহর জিকিরে মত্ত থেকেছেন, আল্লাহর আশ্রয়ে নিজেকে সঁপে দিয়েছেন, তাঁর সামনে নিজেকে করেছেন অবনত। হজরত জাবের বলেন : ‘‘ তিনি আজান ও ইকামতসহ ফজরের নামাজ পড়লেন, প্রভাতরশ্মি বের হয়ে এলো, তিনি কাসওয়ায়- পরিবহণ হিসেবে ব্যবহৃত রাসূলুল্লাহর উট - আরোহণ করলেন , মাশআ’রুল হারামে এলেন, কেবলামুখী হলেন, আল্লাহকে ডাকলেন , তকবির ও লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু পড়লেন, একত্ববাদের ঘোষণা দিলেন। দিনের আলোয় দিগন্ত উদ্ভাসিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি দাঁড়িয়েই রইলেন। অতঃপর সূর্যোদয়ের পূর্বে প্রস্থান করলেন।’’
জ
১০ জিলহজ প্রাথমিক হালালের পর বায়তুল্লাহর জিয়ারতের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করা এ-পর্যায়েরই একটি উদাহরণ। হজরত আয়েশা (র) বলেন : ‘ আমি রাসূলুল্লাহ ﷺকে সুগন্ধযুক্ত করেছি তাওয়াফে জিয়ারতের পূর্বে।’
ঝ
রাসূলুল্লাহ কর্তৃক হজকৃত্যের স্থান ও কালকে সম্মান করাও এই পর্যায়ে পড়ে। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন : ‘‘নিশ্চয়ই তোমাদের রক্ত ও সম্পদ তোমাদের জন্য হারাম, তোমাদের এই মাস, এই শহর ও এই দিবসের হারামের মতই ’’। তিনি আরো বলেছেন : ‘‘ নিশ্চয় আল্লাহর নিকট সবচেয়ে সম্মানিত দিন য়াউমুননাহর, এর পর পরবর্তী দিন।’’ তিনি আরো বলেন: ‘‘ আরাফা, য়াউমুন্নহর (১০ জিলহজ) ও তাশরীকের দিনসমূহ আমাদের ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের ঈদ, এগুলো পান-ভোজের দিন।’’ তিনি যথাযথভাবে হজের সম্মান রক্ষা ও কোনো অর্থেই যাতে এর পবিত্রতা ক্ষুণ্ণ না হয় সে জন্য হাজিদেরকে উদ্বুদ্ধ করে বলেছেন: ‘‘ মাবরুর হজের একমাত্র প্রতিদান বেহেশ্ত।’’ তিনি আরো বলেছেন : ‘‘ যে হজ করল , এবং স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত রইল , অন্যায় কাজ করল না সে নবজাতক শিশুর মতো হয়ে গেলো।’’ পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে :
‘‘ হজ জ্ঞাত কয়েকটি মাস, যে এগুলোতে হজ ফরজ করে নিল তার উচিত হজে স্ত্রী সহবাস, অন্যায় ও ঝগড়া থেকে বিরত থাকা। আর তোমরা যে ভালো কাজ কর আল্লাহ তা জানেন। তোমরা পাথেয় সংগ্রহ কর, নিশ্চয়ই তাকওয়াই হলো উত্তম পাথেয়। আমাকেﷺ তোমরা ভয় করো হে জ্ঞানীগণ।’’
এ তো গেলো হজে আল্লাহর শা’আয়ের-নিদর্শনসমূহের তাজিম ও হজকর্মের যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা রক্ষায় রাসূলুল্লাহ ﷺএর অবস্থা। পক্ষান্তরে আধুনিক যুগের হজ পালনকারীদের কর্মকান্ডে মনোনিবেশ করলে দেখা যাবে অনেকেই প্রকাশ্যভাবে সীমা লঙ্ঘন করছে , পবিত্র হজের অমর্যাদা করছে। এটা যথার্থভাবে আল্লাহকে মূল্যায়ন ও মর্যাদা প্রদর্শনে ব্যর্থতারই আলামত। ইমাম ইবনুল কাইয়েম বলেছেন :‘‘ আল্লাহকে যথাযথভাবে মর্যাদা দেখাল না ওই ব্যক্তি, যার কাছে আল্লাহর নির্দেশ তুচ্ছ বলে মনে হলো ফলে তা অমান্য করল, তাঁর নিষেধ হালকা বলে মনে হলো অতঃপর সে তা করল। তার হক হীন বলে প্রতিভাত হলো অতঃপর সে তা নষ্ট করল। তাঁর জিকির নিরর্থক বলে মনে হলো অতঃপর সে তা উপেক্ষা করল ও তার হৃদয় এ-থেকে গাফেল রইল। আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণের থেকে তার খায়েশই তার কাছে প্রাধান্যপ্রাপ্ত হলো, মখলুকের আনুগত্য তার কাছে স্রষ্টার আনুগত্যের চাইতে গুরুত্বপূর্ণ মনে হলো । তার হৃদয়-জ্ঞান-কার্য-কথা ও সম্পদে আল্লাহর অধিকার যদি থাকে তাহলে কেবলই উচ্ছিষ্ট অংশে, এসব ক্ষেত্রে অন্যদের অধিকারই বরং অগ্রাধিকার পায়; কারণ তারাই তার গুরুত্বের পাত্র।’ তাই রাসূলুল্লাহ ﷺ এর পদাঙ্ক অনুসরণে আল্লাহর শা’আয়ের তথা নিদর্শনসমূহের সম্মান শ্রদ্ধা, তাঁর হুদুদ সমূহের তাজিম, হজ পালনে সর্বোচ্চ সতর্কতা, এবং আল্লাহর বান্দাদেরকে সত্য ন্যায় ও ধৈর্যের বিষয়ে উপদেশ দেয়া ব্যতীত অন্য কোনো গত্যন্তর নেই।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/163/5
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।