hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হজ পালন অবস্থায় রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নান্দনিক আচরণ

লেখকঃ ফায়সাল বিন আলী আল বা’দানী

৩০
ছ. মানুষের সাথে কোমল আচরণ
কোমল আচরণের গুরুত্ব বর্ণনায় ও মানুষকে এ-ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে

রাসূলুল্লাহর বহু বিভিন্ন বাণী রয়েছে, যেমন :

রাসূলুল্লাহ r বলেছেন :‘‘ আল্লাহ সকল বিষয়ে কোমলতা-নরমপন্থা পছন্দ করেন’’ ‘‘কোনো বিষয়ে কোমলতার উপস্থিতি তার ওজনকে বাড়িয়ে দেয়, আর কোনো জিনিসে কোমলতার অনুপস্থিতি তার ত্রুটিপূর্ণ হয়ারই আলামত। আর যে ব্যক্তি নরমপন্থা থেকে বঞ্চিত হলো সে সকল কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হলো। কেননা কোমলতাই প্রজ্ঞার উৎস, জ্ঞানের সৌন্দর্য, বোধগম্যতার শিরোনাম। সচ্চরিত্র ও প্রবৃত্তিকে লালসা রাগ-রোষ থেকে নিয়ন্ত্রণ, কুড়িয়ে আনে মানুষের ভালোবাসা, হিংসা দ্বেষ দূর করে পরস্পরের সম্পর্ককে করে মজবুত। রাসূলুল্লাহ r কোমল আচরণের অধিকারী ছিলেন বর্ণনাতীতভাবে। তিনি ছিলেন সর্বাধিক ক্ষমাশীল, দয়ালু। পবিত্র কোরআনে রাসূলুল্লাহর রহমত, করুণা ও বিনম্র স্বভাবের উল্লেখ করে বলা হয়েছে,- আল্লাহর দয়ায় তুমি তাদের প্রতি কোমলচিত্ত হয়েছ। রূঢ় ও কঠিনচিত্ত হলে সরে পড়তো তারা তোমার আশপাশ থেকে। অতঃপর তুমি তাদেরকে ক্ষমা করো, তাদের পাপ মোচনের প্রার্থনা করো, কাজে-কর্মে তাদের সাথে পরামর্শ করো।’

- রাসূলুল্লাহ r তালবিয়ায় যে শব্দমালা ব্যবহার করেছেন সেগুলোতে বাড়ানো-কমানোর অনুমতি দেয়া নরমপন্থা অবলম্বনেরই একটি নিদর্শন।

- রাসূলুল্লাহ r এর রোদ থেকে ছায়া গ্রহণ। হজ্বে আসার পথে, ও পবিত্রস্থানসমূহে গমনাগমনের সময় আরোহণের জন্তু ব্যবহার। কিছু হজ্বকর্ম আরোহিত অবস্থায় পালনও কোমলতা প্রদর্শনের একটি আলামত, কেননা এর অন্যথা হলে মানুষ কষ্ট পেতো; রাসূলুল্লাহকে ভির-মুক্ত করার জন্য হয়তো মানুষদেরকে তাড়ানো হতো অথবা মারধর করা হতো।

- মানুষের সাথে কোমল আচরণের আরেকটি উদাহরণ গোটা হজ্বমৌসুমে রাসূলুল্লাহr এর দৃশ্যমান আকারে থাকা। কেননা স্বভাবতই মানুষেরা তাদের সমস্যা নিয়ে তাঁর কাছে আসবে এবং সমাধান তলব করবে।

- সহজকরণ এবং এমন কোনো কিছুর নির্দেশ না দেয়া যা মানুষের সাধ্যাতীত হবে। চাই তা হজ্বের কর্মাদী সম্পর্কে হোক অথবা মানুষদের নেতৃত্ব প্রদান করার ক্ষেত্রে হোক। রাসূলুল্লাহ r এর সীরাতে চিন্তা করে দেখলে এ-বিষয়গুলো অত্যন্ত উজ্জ্বলভাবে প্রতীয়মান হয়।

- সকল হজ্বকৃত্য পালনের ক্ষেত্রে এবং হজ্বের পবিত্রস্থানসমূহের মধ্যে যাতায়াতের সময় ভাব-গাম্ভির্য ও শান্ত-ভাব ধরে রাখা এর একটি উদাহরণ। রাসূলুল্লাহ r মানুষদেরকেও কোমলতা অবলম্বনের নির্দেশ দিলেন; কেননা এর অন্যথা হলে মানুষের কষ্ট হবে ।

- আরাফার খোতবা সংক্ষিপ্ত করে দেয়াও মানুষের প্রতি কোমল আচরণের আলামত।

- তোওয়াফে কুদুমের পর আরাফা থেকে ফিরে আসার আগে বায়তুল্লাহর আর কোনো তোওয়াফ না করা । তাশরিকের দিবসসমূহে স্থির হয়ে অবস্থান, ও সেখান থেকে হারাম শরিফে না যাওয়া বিদায়ি তোওয়াফের পূর্বে। যদিও তোওয়াফের ফযিলত অনেক, নিঃসন্দেহে এটা ছিল মানুষের প্রতি কোমলতা প্রদর্শনের এক উজ্জ্বল নিদর্শন।

- সর্বদা সহজটাকে অবলম্বনও কোমল আচরণের আলামত , যেমন হাজ্বীদের যারা সাথে করে কোরবানির পশু নিয়ে আসেননি তাদেরকে পুরোপুরি হালাল হয়ে যেতে বলা। আর আরাফা ও মুযদালিফায় দুই নামাজ একত্রিত করা ও কসর করে পড়া।

-সাহাবাদেরকে যার যার অবস্থানস্থলে কোরবানি করার অনুমতি দেয়াও এ পর্যায়ের একটি উদাহরণ, হযরত জাবের (রা) থেকে মারফু হাদীসে এসেছে রাসূলুল্লাহ r বলেছেন, ‘‘ আমি এখানে কোরবানি করলাম, আর মিনা পুরোটাই কোরবানির জায়গা। অতঃপর তোমাদের যার যার অবস্থানস্থলেই কোরবানি করে।’’ আর মহিলাদেরকে সূর্যোদয়ের পূর্বেই কঙ্কর নিক্ষেপের অনুমতি দেয়া একই সূত্রে গাঁথা ; কেননা মানুষের প্রচন্ড ভিরে তাদের নানাবিধ ক্ষতি হওয়ার আশংকা থেকে যায়।

মানুষদেরকে হজ্বকর্ম পালনের পর দ্রুত দেশে ফেরার তাগিদও এই পর্যায়ে পড়ে। কেননা সফর হলো একটুকরো আযাব, তাই সাহাবাদের প্রতি দয়া পরবশ হয়ে তিনি বলেছেন : ‘‘ যখন তোমাদের কেউ হজ্ব সম্পন্ন করে ফেলে সে যেন তার পরিবার পরিজনের কাছে দ্রুত ফিরে যায়। আর এতেই বেশি ছোঁয়াব রাসূলুল্লাহ r সাহাবাদেরকে তাদের নিজেদের ব্যাপারে কোমল হতে বলেছেন। তিনি এক ব্যক্তিকে দেখলেন তার কোরবানির পশু টেনে নিয়ে যাচ্ছে আর নিজে চলছে হেঁটে। রাসূলুল্লাহ r বললেন : আরোহণ করো, লোকটি বললেন, এ-তো কোরবানির পশু ! তিনি বললেন : আরোহণ করো, লোকটি বললেন : এ-তো কোরবানির পশু! তিনি বললেন : আরোহণ করো, কি হলো ? - দ্বিতীয়বার অথবা তৃতীয়বার বললেন-’’ তিনি আরো বলেছেন :‘‘ তোমরা সৌজন্যের সাথে কোরবানির পশুতে আরোহণ করো, যতক্ষণ না অন্য বাহন পেয়ে যাও। কঙ্কর নিক্ষেপের সময় বলেছেন : হে লোকসকল, তোমরা একে অপরকে হত্যা করো না, একে অপরকে আঘাত করো না, আর যখন কঙ্কর নিক্ষেপ করবে আঙুল দিয়ে নিক্ষেপ করার মতো কঙ্কর নিক্ষেপ করবে। তিনি হযরত ওমর (রা) কে বলেছেন হে ওমর! তুমি শক্তিমান মানুষ। হাজরে আসওয়াদ স্পর্শের জন্য ভির ঠেলে যেতে যেও না যা দুর্বলকে কষ্ট দিবে। যদি খালি পাও তবে স্পর্শ করো। অন্যথায় এর দিকে মুখ করো , তাকবির দাও ও তাহলিল পড়ো।

-সাহাবাদের ইচ্ছার বিপরীতে কিছু ঘটলে তাদেরকে বুঝানো ও সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা এ পর্যায়েরই ঘটনা। এই সূত্রেই তিনি বলেছেন : যদি আমি পেছনের দিনগুলো সামনে পেতাম কোরবানীর পশু সঙ্গে আনতাম না, যদি কোরবানির পশু আমার সঙ্গে না থাকতো তাহলে আমি হালাল হয়ে যেতাম।’’ অর্থাৎ যদি আমি জানতাম একাজটি তোমাদের জন্য কঠিন হবে তাহলে কোরবানির পশু সঙ্গে আনা ছেড়ে দিতাম এবং তোমরা যেভাবে ইহরাম ছেড়ে দিচ্ছ আমিও সেভাবে ছেড়ে দিতাম। সা’ব ইবনে জুছামা (রা) রাসূলুল্লাহ r কে গাধার পশ্চাদ্ভাগের গোশত হাদিয়া হিসেবে খেতে দিলে ফেরত দিলেন এবং বললেন :‘‘ আমরা ইহরাম অবস্থায় আছি, অন্যথায় ফিরিয়ে দিতাম না’’ হযরত আবু কাতাদাহর (রা) সাথিদেরকে বললেন যখন তিনি শিকার করলেন, আর তার সাথিরা ছিলেন ইহরাম অবস্থায় , কিন্তু তিনি ছিলেন হালাল। তিনি শিকার করেছিলেন তাদের কোন ইঙ্গিত বা সাহায্য ব্যতীতই, অতঃপর তারা বিষয়টি নিয়ে সন্দেহে পড়ে গেলেন, রাসূলুল্লাহ তাদেরকে বললেন, তোমাদের মধ্যে কি কেউ নির্দেশ দিয়েছে? অথবা ইশারা করেছে? তারা বললেন, না । তিনি বললেন : তাহলে অবশিষ্ট গোশত খেয়ে ফেলো’’ অন্য এক বর্ণনায় : তিনি বললেন, তোমাদের সাথে এর কিছু অংশ অবশিষ্ট আছে ? তারা বললেন : পায়ের অংশ। তিনি তা নিলেন ও খেলেন।’’

বর্তমান যুগের হাজীদের মাঝে হজ্বসংক্রান্ত অজ্ঞানতা খুবই প্রকট। দুর্বল ও বয়োবৃদ্ধদের সংখ্যাও প্রচুর যারা কোমল আচরণের মুখাপেক্ষী সকল বিষয়ে। পরিচালনা, তালীম তারবিয়ত, নসীহত ও দিকনির্দেশনা, এমনকী সেবা ও এহসান সকল বিষয়েই তারা সদাচারের দাবি রাখে।

তাদের সাথে সুন্দর কথা বলুন। বিনয় ও নম্রতার আদর্শ স্থাপন করুন। আপনার সকল আচরণে কোমল হন। তাদের পক্ষে যা সহজ তা পছন্দ করুন। রাগ-রোষের স্পর্শ অনুভব করলে নিজেকে কন্ট্রোল করুন। সহিংস আচরণ বর্জন করুন। অশালীন ভাব ও ভাষা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখুন, কেননা তা সদয় ও আলোকিত আদর্শের পরিপন্থী। হাদীসে এসেছে : ‘‘ যাকে কোমল আচরণের একটি অংশ দেয়া হলো, তাকে কল্যাণের একটি অংশ দেয়া হলো। আর যার কোমল আচরণে অংশ নেই সে কল্যাণের অংশ থেকেও বঞ্চিত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন