hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হালাল রিযিকের সন্ধানে

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৮০
১. চাষাবাদ
মানুষের জীবিকা নির্বাহের জন্য চাষাবাদ হচ্ছে সর্বপ্রাচীন একটি মাধ্যম। সৃষ্টিকুলের খাদ্যের উৎসও হচ্ছে চাষাবাদ। আর এ কারণেই আল্লাহ তা‘আলা পৃথিবীর মাটিকে উৎপাদন ও ফসল ফলানোর উপযোগী হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। তারপর মানুষ নিজেদের সুবিধার্থে আল্লাহপ্রদত্ত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে এ ব্যবস্থার আরো উন্নতি সাধন করেছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فَلْيَنْظُرِ الْاِنْسَانُ اِلٰى طَعَامِهٖ اَنَّا صَبَبْنَا الْمَآءَ صَبًّا ثُمَّ شَقَقْنَا الْاَرْضَ شَقًّا فَاَنْۢبَتْنَا فِيْهَا حَبًّا وَعِنَبًا وَّقَضْبًا وَزَيْتُوْنًا وَّنَخْلًا وَحَدَآئِقَ غُلْبًا وَفَاكِهَةً وَّاَبًّا مَتَاعًا لَّكُمْ وَلِاَنْعَامِكُمْ﴾

মানুষ তার খাদ্যের প্রতি লক্ষ্য করুক। আমি প্রচুর পানি বর্ষণ করি, অতঃপর আমি ভূমিকে অদ্ভুতভাবে বিদীর্ণ করি। ফলে তাতে উৎপন্ন করি শস্য, আঙ্গুর, শাকসবজি, যায়তুন, খেজুর, বহু নিবিড় ঘন বাগান, ফল-ফলাদি এবং গবাদি পশুর খাদ্য (ঘাস), তোমাদের ও তোমাদের পশুগুলোর ভোগের সামগ্রী হিসেবে। (সূরা আবাসা, ২৪-৩২)

ইসলামে চাষাবাদ করাকে খুবই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে এবং এজন্য উৎসাহও প্রদান করা হয়েছে। যেমন- হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَنَسٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ  : مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَغْرِسُ غَرْسًا أَوْ يَزْرَعُ زَرْعًا فَيَأْكُلُ مِنْهُ طَيْرٌ ، أَوْ إِنْسَانٌ ، أَوْ بَهِيْمَةٌ إِلَّا كَانَ لَه بِه صَدَقَةٌ

আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, কোন মুসলিম যখন কোন গাছ লাগায় অথবা ফসল ফলায়, অতঃপর তা হতে কোন পাখি, মানুষ অথবা পশু (তার ফল-ফসল ইত্যাদি) খায়, তখন তা তার জন্য সাদাকা স্বরূপ হয়। [সহীহ বুখারী, হা/২৩২০; সহীহ মুসলিম, হা/৪০৫৫; তিরমিযী, হা/১৩৮২; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৪১৩; মুসনাদে তায়ালুসী, হা/২১১০; মুসনাদে আবু ই‘আলা, হা/২৮৫১; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/১২০৮৬; মুসত্মাখরাজে আবু আওয়ানা, হা/৪২৩০।]

এছাড়াও অনেক হাদীসেই এ পেশাকে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। সুতরাং হালাল উপার্জনের জন্য এটি খুবই উত্তম পন্থা। তবে এ ক্ষেত্রে ইসলাম কিছু দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে, যেগুলো মেনে চলা একামত্ম আবশ্যক। নিম্নে সে সম্পর্কে দৃষ্টিপাত করা হলো :

১. জমির মালিক নিজেই চাষ করবে :

কোন জমি চাষ করা বা না করার অধিকার সে জমির মালিকের। সুতরাং যদি সামর্থ থাকে তাহলে উক্ত জমির মালিকই জমি চাষ করবে, তারপর সে যাকে অনুমতি দেবে সে চাষ করবে। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ  : مَنْ كَانَتْ لَه أَرْضٌ فَلْيَزْرَعْهَا ، أَوْ لِيَمْنَحْهَا أَخَاهُ فَإِنْ أَبٰى فَلْيُمْسِكْ أَرْضَه

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যার কাছে ভূমি আছে সে যেন তাতে নিজে কৃষিকাজ করে কিংবা তার ভাইকে (চাষ করতে) দেয়। যদি এটাও না করতে চায় তবে সে যেন তার ভূমি ফেলে রাখে। [সহীহ বুখারী, হা/২৩৪১; সহীহ মুসলিম, হা/৪০১৩; ইবনে মাজাহ, হা/২৪৫২; মুসত্মাখরাজে আবু আওয়ানা, হা/৪১৯৭; জামেউস সগীর, হা/১১৪৬০।]

২. জমির মালিক পারিশ্রমিকের বিনিময়ে চাষ করিয়ে নিতে পারে :

জমির মালিক যদি নিজে চাষ করতে অক্ষম হয় তাহলে সে নির্দিষ্ট পারিশ্রমিকের বিনিময়ে অপরের মাধ্যমেও চাষ করাতে পারবে। এ ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখা উচিত-

 পারিশ্রমিক প্রদানে যেন কমতি না হয়।

 পারিশ্রমিক নির্ধারণের সময় যেন প্রচলিত দামের দিকে লক্ষ্য করা হয়।

 শ্রমিকের কোনরূপ দুর্বলতার সুযোগ নেয়া না হয়।

৩. বর্গাচাষ করতে দেয়া যাবে :

উৎপন্ন ফসলের নির্দিষ্ট অংশ প্রদানের শর্তে কাউকে জমি চাষ করতে দেয়াকে বর্গাচাষ বলে। জমির মালিক ইচ্ছা করলে যে কাউকে এ ধরনের চাষ করতে দিতে পারে। ইমাম বুখারী মু‘আল্লাক সূত্রে বর্ণনা করেন,

عَنْ أَبِيْ جَعْفَرٍ قَالَ مَا بِالْمَدِيْنَةِ أَهْلُ بَيْتِ هِجْرَةٍ إِلَّا يَزْرَعُوْنَ عَلَى الثُّلُثِ وَالرُّبُعِ .

আবু জা‘ফার (ইমাম বাকির) বলেছেন, মদীনাতে মুহাজিরদের এমন কোন পরিবার ছিল না যারা এক-তৃতীয়াংশ কিংবা এক-চতুর্থাংশ ফসলের শর্তে ভাগে চাষাবাদ করত না।

وَقَالَ الْحَسَنُ لَا بَأْسَ أَنْ يُجْتَنَى الْقُطْنُ عَلَى النِّصْفِ .

হাসান বসরী (রাঃ) বলেন, আধাআধি শর্তে তুলা চাষ করাতে কোন দোষ নেই। [সহীহ বুখারী, ‘অর্ধেক বা অনুরূপ ফসলের শর্তে ভাগে চাষাবাদ’ অধ্যায়; ৩/১৩৭ পৃঃ; মিশকাত, হা/২৯৮০।]

তাছাড়া রাসূলুল্লাহ ﷺ নিজেও এ ধরনের চাষ করিয়ে নিয়েছেন।

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ - - أَنَّه دَفَعَ إِلٰى يَهُوْدِ خَيْبَرَ نَخْلَ خَيْبَرَ وَأَرْضَهَا عَلٰى أَنْ يَعْتَمِلُوْهَا مِنْ أَمْوَالِهِمْ وَلِرَسُوْلِ اللهِ - - شَطْرُ ثَمَرِهَا

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ ﷺ হতে বর্ণনা করেন। তিনি (রাসূলুল্লাহ ﷺ) খায়বারের বাগান ও জমিন খায়বারের ইয়াহুদিদেরকে এ শর্তে প্রদান করেন যে, তারা নিজেদের মাল খরচ করে তাতে কাজ করবে, আর রাসূলুল্লাহ ﷺ তার ফলের অর্ধেক প্রাপ্ত হবেন। [সহীহ মুসলিম, হা/৪০৪৮; আবু দাউদ, হা/৩৪১১; সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৪৬৪৬; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/১১৯৬৬; মুসত্মাখরাজে আবু আওয়ানা, হা/৪১৫৬; মিশকাত, হা/২৯৭২।]

عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا - أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ أَعْطٰى خَيْبَرَ الْيَهُوْدَ عَلٰى أَنْ يَعْمَلُوْهَا وَيَزْرَعُوْهَا وَلَهُمْ شَطْرُ مَا خَرَجَ مِنْهَا

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। (তিনি বলেন) রাসূলুল্লাহ ﷺ ইয়াহুদিদেরকে খায়বারের জমি এ শর্তে প্রদান করেন যে, তারা নিজেরা তাতে শ্রম দিবে, চাষাবাদ করবে এবং তার বিনিময়ে উৎপন্ন ফসলের অর্ধেক তারা লাভ করবে। [সহীহ বুখারী, হা/২৩৩১; সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৪৬৪৭; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/১১৯৬৪; মিশকাত, হা/২৯৭২।]

তবে রাসূলুল্লাহ ﷺ মুখাবারা পদ্ধতিতে বর্গাচাষ করতে দিতে নিষেধ করেছেন। আর মুখাবারা বলা হয় ঐ পদ্ধতিকে, যার মাধ্যমে জমির মালিক জমির নির্দিষ্ট অংশের ফসল গ্রহণের শর্তে বর্গা দেয়। এ ব্যাপারে হাদীসে এসেছে,

عَنِ ابْنِ عُمَرَ يَقُوْلُ كُنَّا لَا نَرٰى بِالْخِبْرِ بَأْسًا حَتّٰى كَانَ عَامُ أَوَّلَ فَزَعَمَ رَافِعٌ أَنَّ نَبِىَّ اللهِ - - نَهٰى عَنْهُ

ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা মুখাবারা করায় কোন দোষ মনে করতাম না। এভাবে যখন প্রথম বছর অতিবাহিত হলো, তখন রাফি‘ (রাঃ) বললেন, নবী ﷺ এ কাজ থেকে নিষেধ করেছেন। [সহীহ মুসলিম, হা/৪০১৭; নাসাঈ, হা/৩৯১৯; মুসনাদে তায়ালুসী, হা/১০০৭; মুসত্মাখরাজে আবু আওয়ানা, হা/৪১৬৭; মিশকাত, হা/২৯৭৩।]

عَنْ رَافِعٍ قَالَ : كُنَّا أَكْثَرَ أَهْلِ الْمَدِيْنَةِ حَقْلًا ، وَكَانَ أَحَدُنَا يُكْرِيْ أَرْضَه فَيَقُوْلُ هٰذِهِ الْقِطْعَةُ لِيْ وَهٰذِه لَكَ فَرُبَّمَا أَخْرَجَتْ ذِه وَلَمْ تُخْرِجْ ذِه فَنَهَاهُمُ النَّبِيُّ .

রাফি‘ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মদীনাবাসীদের মধ্যে আমাদের অধিক কৃষি জমি ছিল। আমাদের মাঝে কেউ কেউ তার জমি বর্গা দিত এবং বলত, এ অংশ আমার এবং এ অংশ তোমার। কখনো এক অংশে ফসল ফলত, আর অন্য অংশে ফসল ফলত না। নবী ﷺ তাদেরকে এরকম করতে নিষেধ করেছেন। [সহীহ বুখারী, হা/২৩৩২; শারহুস সুন্নাহ, হা/২১৭৮; মিশকাত, হা/২৯৭৫।]

যারা জমির মালিকের অনুমতি না নিয়ে জমি চাষ করে, তাদের ব্যাপারে হাদীসে বলা হয়েছে,

عَنْ رَافِعِ بْنِ خَدِيْجٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ - - مَنْ زَرَعَ فِىْ أَرْضِ قَوْمٍ بِغَيْرِ إِذْنِهِمْ فَلَيْسَ لَه مِنَ الزَّرْعِ شَىْءٌ وَلَه نَفَقَتُه

রাফে‘ ইবনে খাদীজ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন লোকের অনুমতি ব্যতীত তার জমিতে কৃষি চাষ করে, তার জন্য কৃষির কোন অংশ নেই। সে তার খরচ পাবে মাত্র। [আবু দাউদ, হা/৩৪০৫; তিরমিযী, হা/১৩৬৬; ইবনে মাজাহ, হা/২৪৬৬; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/১২০৮১; মিশকাত, হা/২৯৭৯।]

৪. নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে এক বা একাধিক বছরের জন্য চাষ করতে দেয়া :

নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ গ্রহণের বিনিময়ে কাউকে এক বা একাধিক বছরের জন্য চাষ করতে দেয়া যাবে।

৫. জমিতে হারাম দ্রব্য উৎপাদন বা প্রসত্মুত করা যাবে না :

কোন জমিতে এমন দ্রব্য উৎপাদন করা যাবে না, যা শরীয়তে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে অথবা যাতে ক্ষতিকর কোন উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। যেমন- আফিম, গাঁজা, চারস বা অনুরূপ মাদক দ্রব্য ইত্যাদি।

আবার কোন জমি এমন কাউকে ব্যবহারের অনুমতি দেয়া যাবে না, যে এতে হারাম দ্রব্য প্রসত্মুত করবে বলে জানা যাবে। যেমন- মদের কারখানা, বিড়ি তৈরি করার কারখানা ইত্যাদি।

৬. জমির ফসলের ওশর প্রদান করতে হবে :

জমির ফসলের হক্ব হচ্ছে যথাযথভাবে ওশর প্রদান করা। সুতরাং নির্দিষ্ট নিয়মে ফসলের উৎপাদনের পর সমসত্ম ফসলের ১০ ভাগের এক ভাগ বৃষ্টির পানিতে হলে বা ২০ ভাগের এক ভাগ সেচের পানিতে হলে ওশর হিসেবে প্রদান করা ফরয।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন