hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শামায়েলে তিরমিযী

লেখকঃ মুহাম্মাদ বিন ঈসা আত তিরমিযী (রহ.)

২৯
অধ্যায়-২৬ : রাসূলুল্লাহ ﷺ এর তরকারীর বর্ণনা
عَنْ عَائِشَةَ ، اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ : نِعْمَ الْاِدَامُ الْخَلُّ . قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ ، فِي حَدِيْثِهٖ : نِعْمَ الْاِدَامُ اَوِ الْأُدْمُ الْخَلُّ

১১৩. আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, সিরকা কতই না চমৎকার তরকারী।

আবদুল্লাহ ইবনে আবদুর রহমান (রহঃ) তাঁর বর্ণিত হাদীসে বলেন, সিরকা কতই না চমৎকার উদুম অথবা ইদাম তথা তরকারী। [ইবনে মাজাহ, হা/৩৩১৬।]

ব্যাখ্যা : এ হাদীসে সিরকার প্রশংসা করা উদ্দেশ্য। সিরকা উত্তম তরকারী হওয়ার কয়েকটি কারণ রয়েছে। যেমন সহজে তৈরি করা যায়, এর সাহায্যার্থে অনায়াসে রুটি ভক্ষণ করা যায় এবং সবসময় পাওয়া যায়।

এছাড়া সিরকার মাঝে কিছু উপকারিতাও রয়েছে। যেমন কফ ও পিত্ত দূর করে। হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।

عَنْ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيْرٍ يَقُوْلُ : اَلَسْتُمْ فِي طَعَامٍ وَشَرَابٍ مَا شِئِتُمْ ؟ لَقَدْ رَاَيْتُ نَبِيَّكُمْ وَمَا يَجِدُ مِنَ الدَّقَلِ مَا يَمْلَأُ بَطْنَهٗ

১১৪. সিমাক ইবনে হার্ব (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নু‘মান ইবনে বাশীর (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, তোমরা কি পানাহারের ব্যাপারে যা ইচ্ছা তা গ্রহণ কর না? (অর্থাৎ নিশ্চয় গ্রহণ করছ)। অথচ আমি দেখেছি তোমাদের নবী তৃপ্তি সহকারে পেট ভরে সাধারণ খেজুরও খেতে পাননি। [সহীহ মুসলিম, হা/৭৬৫০; ইবনে হিববান, হা/৬৩৪০।]

ব্যাখ্যা : রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ওফাতের পর সাহাবী ও তাবিয়ীগণ যখন প্রচুর খাদ্যের অধিকারী হন, তখন তাদেরকে সম্বোধন করে নু‘মান ইবনে বাশীর (রাঃ) একথা বলেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর অনুসরণের প্রতি এবং দুনিয়ার উপকরণ সংক্ষিপ্ত রাখার প্রতি উৎসাহিত করা তাঁর উদ্দেশ্য ছিল।

عَنْ زَهْدَمٍ الْجَرْمِيِّ قَالَ : كُنَّا عِنْدَ اَبِيْ مُوْسٰى الْاَشْعَرِيِّ ، فَأُتِيَ بِلَحْمِ دَجَاجٍ فَتَنَحّٰى رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ فَقَالَ : مَا لَكَ ؟ فَقَالَ : اِنِّيْ رَاَيْتُهَا تَأْكُلُ شَيْئًا فَحَلَفْتُ اَنْ لَا اٰكُلَهَا قَالَ : اُدْنُ فَاِنِّي رَاَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ يَأْكُلُ لَحْمَ دَجَاجٍ

১১৫. যাহদাম জারমী (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা একবার আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ)-এর কাছে গেলাম। তখন তাঁর কাছে ভূনা মুরগীর গোশত আনা হলো। ফলে উপস্থিত লোকদের একজন চলে যেতে উদ্যত হলো। তিনি [আবূ মূসা আশ‘আরী (রাঃ)] তাঁকে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলেন। সে বলল, আমি এক (মুরগীকে) নাপাক খেতে দেখে এ মর্মে কসম করেছি যে, আমি আর কখনো মুরগীর গোশত খাব না। তিনি বললেন, কাছে এসো (এবং নির্দ্বিধায় খাও)। কারণ আমি এ ব্যাপারে নিশ্চিত যে, রাসূলুল্লাহ ﷺকে আমি মুরগী খেতে দেখেছি। [সহীহ মুসলিম, হা/৪৩৫৪; মু‘জামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/১৫৮৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/২৮০৭।]

ব্যাখ্যা : উক্ত কথার দ্বারা আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ) এটা বুঝাতে চেয়েছেন যে, কোন হালাল বস্তুকে হারাম করা অনুচিত।

عَنْ زَهْدَمٍ الْجَرْمِيِّ قَالَ : كُنَّا عِنْدَ اَبِيْ مُوْسٰى الْاَشْعَرِيِّ قَالَ : فَقَدَّمَ طَعَامَهٗوَقَدَّمَ فِي طَعَامِهٖ لَحْمَ دَجَاجٍ وَفِي الْقَوْمِ رَجُلٌ مِنْ بَنِيْ تَيْمِ اللهِ اَحْمَرُ كَاَنَّهٗ مَوْلًى قَالَ : فَلَمْ يَدْنُ فَقَالَ لَهٗ اَبُوْ مُوْسٰى : اُدْنُ ، فَاِنِّيْ قَدْ رَاَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ اَكَلَ مِنْهُ ، فَقَالَ : اِنِّيْ رَاَيْتُهٗ يَأْكُلُ شَيْئًا فَقَذِرْتُهٗ فَحَلَفْتُ اَنْ لَا اَطْعَمَهٗ اَبَدًا

১১৬. যাহদাম জারমী (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আবু মূসা (রাঃ) এর নিকট ছিলাম। তিনি বলেন, তাঁর নিকট খাবার পরিবেশন করা হলো এবং সে খাবারে মুরগীর গোশত ছিল। সেখানে তায়মুল্লাহ গোত্রের লাল বর্ণের এক ব্যক্তি ছিল। তাকে দেখে মনে হচ্ছিল, সে যেন একজন গোলাম। বর্ণনাকারী বলেন, সে লোকটি খেতে আসল না। তখন আবু মূসা (রাঃ) তাঁকে বললেন, খেতে এসো- কারণ আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ -কে মুরগীর গোশত খেতে দেখেছি। সে বলল, একে ময়লা কিছু খেতে দেখেছি। সে কারণে আমার ঘৃণা জন্মেছে। তাই আমি কসম করেছি যে, আমি এটা কখনো খাব না।

عَنْ اَبِيْ اَسِيْدٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ  : كُلُوْا الزَّيْتَ وَادَّهِنُوْا بِهٖ ؛ فَاِنَّهٗ مِنْ شَجَرَةٍ مُبَارَكَةٍ

১১৭. আবু আসীদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমরা যায়তুন [যাইতুন জলপাই জাতীয় ফল, যা আরব দেশগুলোতে জন্মে।] তৈল খাও এবং তা মালিশ করো। কারণ, তা বরকতময় বৃক্ষ হতে উৎপন্ন। [ইবনে মাজাহ, হা/৩৩২০; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৩৫০৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬০৯৮; দারেমী, হা/২০৫২; শারহুস সুন্নাহ, হা/২৫৭০; শু‘আবুল ঈমান, হা/৫৫৩৮; জামেউস সগীর, হ/৮৬২৭; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৩৭৯।]

রাসূলুল্লাহ ﷺ লাউ পছন্দ করতেন :

عَنْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ يُعْجِبُهٗ الدُّبَّاءُ فَأُتِيَ بِطَعَامٍ ، اَوْ دُعِيَ لَهٗ فَجَعَلْتُ اَتَتَبَّعُهٗ فَاَضَعُهٗ بَيْنَ يَدَيْهِ لِمَا اَعْلَمُ اَنَّهٗ يُحِبُّهٗ

১১৮. আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ লাউ খুবই পছন্দ করতেন। একবার তাঁর সম্মুখে খানা পরিবেশন করা হলো অথবা তিনি কোন দাওয়াতে গিয়েছিলেন (রাবীর সন্দেহ)। আমার যেহেতু জানা ছিল যে, তিনি লাউ খুব পছন্দ করেন, তাই (তরকারীর মধ্য হতে) বেছে বেছে তাঁর সামনে লাউ পেশ করলাম। [শারহুস সুন্নাহ, হা/২৮৬১।]

ব্যাখ্যা : রাসূলুল্লাহ ﷺ লাউয়ের তরকারী পছন্দ করার কারণ বহুবিধ। এটা শরীর ঠান্ডা রাখে, বুদ্ধি বৃদ্ধি করে। গরম আবহাওয়াতে উপকারী এবং ঠান্ডা আবহাওয়ার পক্ষে অনুকূল হয়। এ ছাড়াও পিপাসা নিবারণ করে, মাথা ব্যথা দূর করে। আবার এটি স্বচ্ছন্দে গিলা যায়।

এ হাদীস থেকে বুঝা যায়, যদি কোন পাত্রে বিভিন্ন খাবার থাকে, তাহলে নিজের সামনে ছাড়া অন্যের দিক থেকেও কোন প্রিয় জিনিস নেয়া যায়। শর্ত হচ্ছে, অন্য কারো যেন অপছন্দ না হয়। লাউয়ের টুকরা তালাশ করার কারণ হলো, সে সময় তরকারীতে ঝোল বেশি দেয়ার নিয়ম ছিল। কারণ, রাসূলুল্লাহ ﷺ তরকারিতে ঝোল বেশি দিতে উৎসাহ দিতেন- যাতে প্রতিবেশীর ঘরে হাদিয়া পাঠানো যায়।

عَنْ جَابِرٍ قَالَ : دَخَلْتُ عَلَى النَّبِيِّ فَرَاَيْتُ عِنْدَهٗ دُبَّاءً يُقَطَّعُ فَقُلْتُ : مَا هٰذَا ؟ قَالَ : نُكَثِّرُ بِهٖ طَعَامَنَا

১১৯. জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি নবী ﷺ এর কাছে গিয়ে দেখলাম যে, লাউ কেটে টুকরো টুকরো করা হচ্ছে। আমি বললাম, এর দ্বারা কী হবে? তিনি বললেন, এর দ্বারা আমরা আমাদের খানা বৃদ্ধি করব। [শারহুস সুন্নাহ, হা/২৮৬২।]

ব্যাখ্যা : এ হাদীসের শিক্ষা হলো, রান্না করার বিষয়ে দৃষ্টি রাখা, তদারকি করা তাওয়াক্কুল এবং যুহদের বিপরীত নয়; বরং পরিমিত ব্যয় ও অল্পেতুষ্টি লাভে সহায়ক।

عَنْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ يَقُوْلُ : اِنَّ خَيَّاطًا دَعَا رَسُوْلَ اللهِ لِطَعَامٍ صَنَعَهٗ ، قَالَ اَنَسٌ : فَذَهَبْتُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ اِلٰى ذٰلِكَ الطَّعَامِ فَقَرَّبَ اِلٰى رَسُوْلِ اللهِ خُبْزًا مِنْ شَعِيْرٍ ، وَمَرَقًا فِيْهِ دُبَّاءٌ وَقَدِيْدٌ ، قَالَ اَنَسُ : فَرَاَيْتُ النَّبِيَّ يَتَتَبَّعُ الدُّبَّاءَ حَوَالَيِ الْقَصْعَةِ فَلَمْ اَزَلْ أُحِبُّ الدُّبَّاءَ مِنْ يَوْمِئِذٍ

১২০. আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার এক দর্জি খানা তৈরি করে রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে দাওয়াত দেয়। আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথে আমিও ঐ দাওয়াতে গিয়েছিলাম। দর্জি লোকটি রাসূলুল্লাহ ﷺএর সামনে যবের রুটি ও ঝোল পরিবেশন করল। সে ঝোলের মধ্যে লাউ ও শুকনা গোশত ছিল। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে তরকারীর বাটির বিভিন্ন দিক থেকে লাউয়ের টুকরো খোঁজ করতে দেখেছি। আর সে দিন হতে আমি লাউ খুব পছন্দ করে আসছি। [সহীহ বুখারী, হা/২০৯২; সহীহ মুসলিম, হা/৪৫৫৬; আবু দাউদ, হা/৩৭৮৪।]

ব্যাখ্যা : রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথে আনাস (রাঃ) এরও দাওয়াত ছিল। অথবা তিনি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর খাদিম হিসেবে গিয়েছিলেন। এতে দোষের কিছু নেই যদি দাওয়াতদাতা অসন্তুষ্ট না হয়।

রাসূলুল্লাহ ﷺমিষ্টি দ্রব্য ও মধু অধিক পছন্দ করতেন :

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ : كَانَ النَّبِيُّ يُحِبُّ الْحَلْوَاءَ وَالْعَسَلَ

১২১. আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ মিষ্টি দ্রব্য ও মধু অধিক পছন্দ করতেন। [সহীহ বুখারী, হা/৫৪৩১; ইবনে মাজাহ, হা/৩৩২৩; ইবনে হিববান, হা/৫২৫৪।]

ব্যাখ্যা : হালওয়া মিষ্ট বস্তু, মিষ্টি জাতীয় জিনিস, মিষ্টান্ন। সাধারণ মানুষ যেসব মিষ্টি খাবার তৈরি করে তাকেই মূলত হালওয়া বলে। আর মূল অর্থের দিকে লক্ষ্য করলে এর আওতায় মিষ্টি ফলমূলও পড়ে, তথাপিও প্রচলিত পরিভাষা হিসাবে এটা হালওয়ার অন্তর্ভুক্ত নয়। ‘হালওয়া’ বলতে গুড়, চিনি, মধুকেও বুঝায় এবং এর দ্বারা প্রস্তুত মিষ্ট খাদ্যসমূহকেও বুঝিয়ে থাকে।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বকরীর পাঁজরের ভূনা গোশত পছন্দ করতেন :

عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ اَنَّهَا قَرَّبَتْ اِلٰى رَسُوْلِ اللهِ جَنْبًا مَشْوِيًّا فَاَكَلَ مِنْهُ ، ثُمَّ قَامَ اِلَى الصَّلَاةِ وَمَا تَوَضَّاَ

১২২. উম্মে সালামা (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদা তিনি বকরীর পাঁজরের ভূনা গোশত রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সামনে পরিবেশন করেন। তিনি তা হতে খেলেন এবং ওযূ না করেই সালাতে দাঁড়িয়ে যান। [নাসাঈ, হা/১৮৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬৬৬৩।]

ব্যাখ্যা : অত্র হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, আগুনে তৈরি খাবার খেলেও ওযূ ভঙ্গ হয় না। তবে অন্য হাদীস দ্বারা আগুনে পাক করা খাদ্য খেলে ওযূ নষ্ট হয়ে যায় বলেও প্রমাণিত রয়েছে। কিছু সংখ্যক সাহাবী ও তাবিয়ীর মতামতও এটাই। তবে চার খলীফা এবং অধিকাংশ মুহাদ্দিসগণের মতে আগুনে তৈরি খাবার খেলেও ওযূ ভঙ্গ হয় না। তাঁরা বলেন, যে সকল হাদীস থেকে ওযূ ওয়াজিব হওয়ার কথা উল্লেখও হয়েছে, সেগুলো রহিত হয়ে গেছে।

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الْحَارِثِ ؕ قَالَ : اَكَلْنَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ شِوَاءً فِي الْمَسْجِدِ

১২৩. আবদুল্লাহ ইবনে হারিস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথে মসজিদে ভূনা গোশ্ত খেয়েছি।

ব্যাখ্যা : এ হাদীসের আলোকে বুঝা যায়, একা বা জামা‘আতবদ্ধভাবে মসজিদে পানাহার করা বৈধ, তবে মসজিদের পবিত্রতা-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করতে হবে।

عَنِ الْمُغِيْرَةِ بْنِ شُعْبَةَ قَالَ : ضِفْتُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ ذَاتَ لَيْلَةٍ فَأُتِيَ بِجَنْبٍ مَشْوِيٍّ ، ثُمَّ اَخَذَ الشَّفْرَةَ فَجَعَلَ يَحُزُّ ، فَحَزَّ لِي بِهَا مِنْهُ قَالَ : فَجَاءَ بِلَالٌ يُؤْذِنُهٗ بِالصَّلَاةِ فَاَلْقٰى الشَّفْرَةَ فَقَالَ : مَا لَهٗ تَرِبَتْ يَدَاهُ ؟ قَالَ : وَكَانَ شَارِبُهٗ قَدْ وَفٰى ، فَقَالَ لَهٗ : اَقُصُّهٗ لَكَ عَلٰى سِوَاكٍ اَوْ قُصُّهٗ عَلٰى سِوَاكٍ

১২৪. মুগীরা ইবনে শু‘বা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার রাতে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথে মেহমান হলাম। তখন (আমার সামনে) ছাগলের পাঁজরের ভূনা গোশত পরিবেশন করা হলো। তারপর তিনি ছুরি দ্বারা তা কাটলেন এবং আমাকে দিলেন। এমন সময় বিলাল (রাঃ) তাঁকে সালাতের আহবান জানালেন। তিনি ছুরিটি ছুঁড়ে ফেললেন এবং বললেন, তার কী হলো তার উভয় হাত ধূলোয় ধূসরিত হোক। বর্ণনাকারী বলেন, তাঁর গোঁফ লম্বা হয়ে গিয়েছিল। তাই তিনি তাঁকে বললেন, তোমার গোঁফ আমি মিসওয়াকের উপরে রেখে কেটে দেব। [শারহুস সুন্নাহ, হা/২৮৪৮; মিশকাত, হা/৪২৩৬।]

ব্যাখ্যা : তার দু’হাত ধূলিময় হোক। শাব্দিক বিবেচনার হিসেবে এটা বদ্দু‘আ। অর্থাৎ- সে দরিদ্র ও নিঃস্ব হয়ে যাক। তবে এখানে বদ্দু‘আ উদ্দেশ্য নয়। আরবি ভাষায় ধমক, তিরস্কার ও আক্ষেপমূলক বাক্য হিসেবে এ শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়; এখানে এটাই উদ্দেশ্য।

রাসূলুল্লাহ ﷺ উরুর গোশত পছন্দ করতেন :

عَنْ اَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ : أُتِيَ النَّبِيُّ بِلَحْمٍ فَرُفِعَ اِلَيْهِ الذِّرَاعُ وَكَانَتْ تُعْجِبُهٗ فَنَهَسَ مِنْهَا

১২৫. আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সামনে বকরীর সামনের উরু পরিবেশন করা হলো। তিনি তা খুবই পছন্দ করতেন। অতঃপর তিনি তা থেকে দাঁত দিয়ে কেটে খেলেন। [সহীহ বুখারী, হা/৪৭১২; সহীহ মুসলিম, হা/৫০১; ইবনে মাজাহ, হা/৩৩০৭।]

ব্যাখ্যা : মানুষের ক্ষেত্রে কুনুই থেকে আঙ্গুলের আগা পর্যন্তকে যিরা বলে। গরু ও বকরীর ক্ষেত্রে বাহু বলতে রানকে বুঝায়। এখানে বাহু বলতে রান উদ্দেশ্য।

عَنْ اَبِيْ عُبَيْدٍ قَالَ : طَبَخْتُ لِلنَّبِيِّ قِدْرًا وَقَدْ كَانَ يُعْجِبُهٗ الذِّرَاعُ فَنَاوَلْتُهُ الذِّرَاعَ ثُمَّ قَالَ : نَاوِلْنِي الذِّرَاعَ ، فَنَاوَلْتُهٗ ثُمَّ قَالَ : نَاوِلْنِي الذِّرَاعَ فَقُلْتُ : يَا رَسُوْلَ اللهِ ، وَكَمْ لِلشَّاةِ مِنْ ذِرَاعٍ فَقَالَ : وَالَّذِي نَفْسِيْ بِيَدِهٖ لَوْ سَكَتَّ لَنَاوَلْتَنِي الذِّرَاعَ مَا دَعَوْتُ

১২৬. আবু উবায়দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার নবী ﷺ এর জন্য এক ডেগ গোশত রান্না করলাম। তিনি বকরীর সামনের উরুর গোশত অধিক পছন্দ করতেন। তাই আমি তাঁকে সামনের একটি পা দিলাম। তারপর তিনি বললেন, আমাকে সামনের আরেকটি পা দাও। তখন আমি তাঁকে সামনের আরেকটি পা দিলাম। তারপর তিনি পুনরায় বললেন, আমাকে সামনের আরেকটি পা দাও। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! বকরীর সামনের পা কয়টি থাকে? তিনি বললেন, সে মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার জীবন! যদি তুমি চুপ থাকতে তাহলে আমি যতক্ষণ সামনের পা চাইতাম, ততক্ষণ তুমি দিতে পারতে। [মুজামুল কাবীর, হা/১৮২৮৬; মুসনাদে বাযযার, হা/৮৩৪৫।]

রাসূলুল্লাহ ﷺ শুকনো রুটি এবং সিরকা পছন্দ করতেন :

عَنْ أُمِّ هَانِئِ ، قَالَتْ : دَخَلَ عَلَيَّ النَّبِيُّ فَقَالَ : اَعِنْدَكِ شَيْءٌ ؟ فَقُلْتُ : لَا اِلَّا خُبْزٌ يَابِسٌ وَخَلٌّ ، فَقَالَ : هَاتِيْ ، مَا اَقْفَرَ بَيْتٌ مِنْ أُدْمٍ فِيْهِ خَلٌّ

১২৭. উম্মু হানী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নবী ﷺ আমার ঘরে এসে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নিকট খাবার কিছু আছে কি? আমি বললাম, না। আমার নিকট শুকনো রুটি এবং সিরকা ছাড়া কোন কিছুই নেই। তিনি বললেন, নিয়ে এসো। তখন তিনি বলেন, যে ঘরে সিরকা আছে সে ঘর তরকারীশূন্য নয়। [শারহে সুন্নাহ, হা/২৮৬৯; সিলসিলা সহীহাহ, হা/২২২০; মিশকাত, হা/৪২২২।]

ব্যাখ্যা : এ হাদীসে বর্ণিত ঘটনাটি মক্কা বিজয়ের দিন ঘটেছিল। উম্মু হানী (রাঃ) ছিলেন আবু তালেবের মেয়ে এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ এর চাচাতো বোন। এ ঘটনা থেকে বুঝা যায়, রাসূলুল্লাহ ﷺ কত সাধারণ জীবন অতিবাহিত করতেন। আরো জানা যায় যে, যাদের সাথে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক থাকে, প্রয়োজনে তাদের কাছে কিছু চেয়ে নেয়া দোষের কিছু নয়।

عَنْ أَبِيْ مُوْسٰى اَلْأَشْعَرِيِّ ، عَنِ النَّبِيِّ قَالَ : فَضْلُ عَائِشَةَ عَلَى النِّسَاءِ كَفَضْلِ الثَّرِيْدِ عَلٰى سَائِرِ الطَّعَامِ

১২৮. আবু মূসা (রাঃ) নবী ﷺ হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রমণীদের মধ্যে আয়েশা (রাঃ) মর্যাদা সেরূপ, যেরূপ মর্যাদা যাবতীয় খাদ্যের মধ্যে সারীদের। [সহীহ বুখারী, হা/৩৪১১; সহীহ মুসলিম, হা/৬৪২৫; সুনানে নাসাঈ, হা/৩৯৪৭; ইবনে মাজাহ, হা/৩২৮০; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৯৫৪১; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৭১১৪; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৩৫৩৫।]

ব্যাখ্যা : ঝুলের মধ্যে ভিজানো টুকরা টুকরা রুটিকে সারীদ বলা হয়। এ হাদীসে সারীদকে শ্রেষ্ঠ খাদ্য বলা হয়েছে। কারণ, এটা সহজে তৈরি করা যায় এবং তাড়াতাড়ি ভক্ষণ করা যায়। তাছাড়া এটা মজাদারও বটে এবং শক্তিবর্ধক। এসব কারণে গোশত ও রুটি জাতীয় যাবতীয় খাদ্যের মধ্যে সারীদ সর্বশ্রেষ্ঠ।

সর্বশ্রেষ্ঠ মহিলা কে?

এখানে ‘রমণীদের’ বলে আয়েশা (রাঃ) এর সমসাময়িক স্ত্রীলোকদেরকে বুঝানো হয়েছে। বস্তুত শ্রেষ্ঠতম মহিলা হলেন, মারইয়াম বিনতে ইমরান, তারপর ফাতিমা (রাঃ), তারপর খাদীজা (রাঃ) এরপর আয়েশা (রাঃ)। আয়েশা (রাঃ) এর শ্রেষ্ঠত্ব ছিল বুদ্ধিমত্তা, বিচক্ষণতা এবং প্রিয়তমা হওয়ার দিক থেকে। তাছাড়া তাঁর সাথে একই বিছানায় থাকা অবস্থায় রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উপর ওহী নাযিল হতো। খাদীজা (রাঃ) এর শ্রেষ্ঠত্ব ছিল এ হিসেবে যে, তিনি ছিলেন রাসূলুল্লাহ ﷺ প্রথম স্ত্রী এবং প্রথম মহিলা মুমিন। আর ফাতিমা (রাঃ) শ্রেষ্ঠত্ব এ দিক থেকে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কন্যা এবং জান্নাতের রমণীকুলের সর্দার।

عَنْ اَنَسٍ يَقُوْلُ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ  : فَضْلُ عَائِشَةَ عَلَى النِّسَاءِ كَفَضْلِ الثَّرِيْدِ عَلٰى سَائِرِ الطَّعَامِ

১২৯. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, রমণীকুলের মধ্যে আয়েশা (রাঃ) মধ্যমণী ও মর্যাদার অধিকারিণী, যেমন সারীদ যাবতীয় খাদ্যের মধ্যমণী। [সহীহ বুখারী, হা/৩৪৩৩; সহীহ মুসলিম, হা/৬৪৫২; ইবনে মাজাহ, হা/৩২৮১; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৮১১; দারেমী, হা/২১১৩; জামেউস সগীর, হা/৩৮৮০; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৩৫৩৫;।]

রাসূলুল্লাহ ﷺ বকরীর কাঁধের গোশতও খেতেন :

عَنْ اَبِي هُرَيْرَةَ ، اَنَّهٗ رَاٰى رَسُوْلَ اللهِ تَوَضَّاَ مِنْ اَكْلِ ثَوْرِ اَقِطٍ ، ثُمَّ رَاٰهُ اَكَلَ مِنْ كَتِفِ شَاةٍ ، ثُمَّ صَلّٰى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ

১৩০. আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি একবার রাসূলুল্লাহ ﷺ -কে পানি খাওয়ার শেষে ওযূ করতে দেখেছেন। তিনি এও দেখেছেন যে, তিনি একবার বকরীর কাঁধের গোশত আহার করলেন। অথচ ওযূ না করেই সালাত আদায় করলেন। [সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/৪২; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১১৫১; বায়হাকী, হা/৭০১; জামেউস সগীর, হা/১৩১১১; সুনানে কুবরা লিল বায়হাকী, হা/৭৫২।]

ব্যাখ্যা : আবু হুরায়রা (রাঃ)-এর বর্ণনার আলোকে বুঝা যায়, রাসূলুল্লাহ ﷺ ইসলামের প্রথম দিকে আগুনে রান্না করে জিনিস খেলে ওযূ করতেন। তাই তিনি পনীর খেয়ে ওযূ করেছেন। পরে এ হুকুম পরিবর্তন হয়ে যায়। তাই রাসূলুল্লাহ ﷺ বকরীর গোশত খেয়েও পুনরায় ওযূ করেননি।

রাসূলুল্লাহ ﷺ খেজুর ও ছাতু দ্বারা ওলীমা করেছিলেন :

عَنْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ : اَوْلَمَ رَسُوْلُ اللهِ عَلٰى صَفِيَّةَ بِتَمْرٍ وَسَوِيْقٍ

১৩১. আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ সাফিয়্যা (রাঃ) এর বিয়েতে খেজুর ও ছাতু দ্বারা ওলীমা সম্পন্ন করেন। [মুসনাদের আহমাদ, হা/১২০৯৯; মুসনাদে বাযযার, হা/৬২৯৪; মুসনাদে আবু ই‘আলা, হা/৩৫৫৯।]

ব্যাখ্যা : যে ভোজের আয়োজন বিবাহের পর করা হয়, নবদম্পতির প্রথম মিলনের পর যে খুশির খানা তৈরি করা হয়, সেটিকে ওলীমা বলে।

খাইবারের যুদ্ধে সপ্তম হিজরীর মুহার্রম মাসে সাফিয়্যা মুসলমানদের হাতে বন্দী হন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁকে আযাদ করে দিয়ে বিয়ে করে নেন। এ সফরে খাইবার থেকে ফেরার পথে ওলীমা অনুষ্ঠান আয়োজন করেন। ওলীমা করা হয়েছিল হায়স, খেজুর ও ছাতু দ্বারা। হায়স হলো খেজুর, ঘি ও পনীর দ্বারা তৈরি এক প্রকার হালুয়া।

রাসূলুল্লাহ ﷺ গোশত পছন্দ করতেন :

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ : اَتَانَا النَّبِيُّ فِيْ مَنْزِلِنَا فَذَبَحْنَا لَهٗ شَاةً ، فَقَالَ : كَاَنَّهُمْ عَلِمُوْا اَنَّا نُحِبُّ اللَّحْمَ وَفِي الْحَدِيْثِ قِصَّةٌ

১৩২. জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নবী ﷺ আমাদের বাড়িতে আসলেন। আমরা তাঁকে (আপ্যায়নের জন্য) একটি বকরী যবেহ করি। তারপর তিনি বললেন, মনে হচ্ছে তারা যেন জানে যে, আমি গোশত পছন্দ করি। এ হাদীসের সাথে দীর্ঘ ঘটনা সম্পৃক্ত রয়েছে।

عَنْ جَابِرٍ قَالَ : خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ وَاَنَا مَعَهٗ فَدَخَلَ عَلٰى اِمْرَاَةٍ مِنَ الْاَنْصَارِ ، فذَبَحَتْ لَهٗ شَاةً فَاَكَلَ مِنْهَا ، وَاَتَتْهُ بِقِنَاعٍ مِنْ رُطَبٍ ، فَاَكَلَ مِنْهُ ، ثُمَّ تَوَضَّاَ لِلظُّهْرِ وَصَلّٰى ، ثُمَّ انْصَرَفَ ، فَاَتَتْهُ بِعُلَالَةٍ مِنْ عُلَالَةِ الشَّاةِ ، فَاَكَلَ ثُمَّ صَلَّى الْعَصْرَ وَلَمْ يَتَوَضَّأْ

১৩৩. জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ ﷺ এক আনসারী মহিলার ঘরে আসলেন। আমি তখন তাঁর সাথে ছিলাম। তখন ঐ মহিলাটি তাঁর জন্য একটি বকরী যবাই করলেন। তিনি তা হতে কিছু গোশত আহার করলেন। এরপর ঐ মহিলাটি তাঁর সামনে এক থোকা তাজা খেজুর পেশ করলেন। তিনি তা হতেও কিছু খেয়ে নিলেন। এরপর তিনি ওযূ করে যোহরের সালাত আদায় করলেন। তারপর তিনি ঐ মহিলাটির নিকটে ফিরে আসলেন। মহিলাটি অবশিষ্ট গোশতের কিছু অংশ তাঁর সামনে পরিবেশন করলেন এবং তিনি তা খেলেন। এরপর ওযূ না করেই আসরের সালাত আদায় করলেন। [শারহুস সুন্নাহ, হা/২৮৫০; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/১৭৭৫।]

রাসূলুল্লাহ ﷺ চর্বিযুক্ত খাবারও আহার করতেন :

عَنْ أُمِّ الْمُنْذِرِ ، قَالَتْ : دَخَلَ عَلَيَّ رَسُوْلُ اللهِ وَمَعَهٗ عَلِيٌّ ، وَلَنَا دَوَالٍ مُعَلَّقَةٌ ، قَالَتْ : فَجَعَلَ رَسُوْلُ اللهِ يَأْكُلُ وَعَلِيٌّ مَعَهٗ يَأْكُلُ ، فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ لِعَلِيٍّ : مَهْ يَا عَلِيُّ ، فَاِنَّكَ نَاقِهٌ ، قَالَتْ : فَجَلَسَ عَلِيٌّ وَالنَّبِيُّ يَأْكُلُ ، قَالَتْ : فَجَعَلْتُ لَهُمْ سِلْقًا وَشَعِيْرًا ، فَقَالَ النَّبِيُّ لِعَلِيٍّ : مِنْ هٰذَا فَاَصِبْ فَاِنَّ هٰذَا اَوْفَقُ لَكَ

১৩৪. উম্মুল মুনযির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাদের বাড়িতে আসলেন। তাঁর সঙ্গে আলী (রাঃ)ও ছিলেন। আমাদের ঘরে কয়েক ছড়া (কাঁদি) খেজুর ঝুলন্ত ছিল। তিনি বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ ঐ কাঁদিগুলো হতে খেজুর খেতে থাকলেন এবং তাঁর সঙ্গে আলী (রাঃ)ও খেতে থাকলেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, হে আলী! থাম- তুমি খেজুর খেয়ো না। কারণ, তুমি সবে মাত্র রোগ মুক্ত হয়েছ। তিনি বললেন, এতে আলী (রাঃ) খাওয়া বন্ধ করলেন। আর রাসূলুল্লাহ ﷺ খেতে থাকলেন। বর্ণনাকারী আরো বলেন, আমি তাঁদের জন্য চর্বি দিয়ে যব রান্না করলাম। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, আলী! তুমি এ থেকে খাও। কারণ, তা তোমার স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপযোগী। [ইবনে মাজাহ, হা/৩৪৪২; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৮২৪৪; মু‘জামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/২০২১১; শারহুস সুন্নাহ, হা/২৮৬৩; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/২৪১৩৩; মিশকাত, হা/৪২১৬।]

রাসূলুল্লাহ ﷺ ‘হায়স’ নামক খাবারও খেতেন :

عَنْ عَائِشَةَ ، أُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ قَالَتْ : كَانَ النَّبِيُّ يَأْتِيْنِيْ فَيَقُوْلُ : اَعِنْدَكِ غَدَاءٌ ؟ فَاَقُوْلُ : لَا . قَالَتْ : فَيَقُولُ : اِنِّيْ صَائِمٌ . قَالَتْ : فَاَتَانِيْ يَوْمًا ، فَقُلْتُ : يَا رَسُوْلَ اللهِ ، اِنَّهٗ أُهْدِيَتْ لَنَا هَدِيَّةٌ قَالَ : وَمَا هِيَ؟ قُلْتُ : حَيْسٌ قَالَ : اَمَا اِنِّيْ اَصْبَحْتُ صَائِمًا قَالَتْ : ثُمَّ اَكَلَ

১৩৫. উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ ভোরে আমার কাছে এসে বলতেন, তোমার নিকট নাশতা করার কিছু আছে কি? আমি কখনো কখনো বলতাম, না- কোন খাবার নেই। তখন তিনি বলতেন, আমি রোযার নিয়ত করলাম। একবার তিনি আমাদের নিকট আসলেন। তখন আমি তাঁকে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের জন্য কিছু হাদিয়া এসেছে। তিনি বললেন, তা কোন ধরণের খাবার? আমি বললাম, হাইস (খেজুরের তৈরি মিষ্টান্ন বিশেষ)। তিনি বললেন, আমি তো রোযাদার অবস্থায় সকাল কাটিয়েছি। আয়েশা (রাঃ) বললেন, এরপর তিনি খেয়ে নিলেন। [সহীহ মুসলিম, হা/২৭৭০; আবু দাউদ, হা/২৪৫৭; নাসাঈ, হা/২৩২২; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪২৬৬; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৩৬২৮; দার কুতনী, হা/২২৩৬; শারহুস সুন্নাহ, হা/১৭৪৫; মিশকাত, হা/২০৭৬।]

ব্যাখ্যা : উক্ত হাদীস থেকে প্রতিয়মান হয় যে, নফল সওমের নিয়ত সুবহে সাদিকের সময় করা জরুরি নয়; সুবহে সাদিকের পর নিয়ত করলেও সওম সিদ্ধ হবে। প্রয়োজন হলে নফল সওম ভাঙ্গার অবকাশ আছে।

রাসূলুল্লাহ ﷺ ‘সুফল’ পছন্দ করতেন :

عَنْ اَنَسٍ  : اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ كَانَ يُعْجِبُهُ الثُّفْلُ قَالَ عَبْدُ اللهِ : يَعْنِي مَا بَقِيَ مِنَ الطَّعَامِ

১৩৬. আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ ‘সুফল’ পছন্দ করতেন। আবদুল্লাহ [ইমাম তিরমিযী (রহঃ) এর উস্তাদ] বলেন, ‘সুফ্ল’ হচ্ছে সে জিনিস, যা লোকেরা খাদ্য গ্রহণের পর হাঁড়ি-পাতিলের তলায় লেগে থাকে। [মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৩২৩; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৭১১৬; জামেউস সগীর, হা/৯১১০; মিশকাত, হা/৪২১৭।]

بَابُ مَا جَاءَ فِي صِفَةِ وُضُوْءِ رَسُوْلِ اللهِ عِنْدَ الطَّعَامِ

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন