hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শামায়েলে তিরমিযী

লেখকঃ মুহাম্মাদ বিন ঈসা আত তিরমিযী (রহ.)

৫৭
অধ্যায়- ৫৪ : রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ওফাত
রাসূলুল্লাহ ﷺ রবিউল আউয়াল মাসে এবং সোমবারে ইন্তেকাল করার ব্যাপারে কারো কোন মতভেদ নেই। কিন্তু তারিখ নিয়ে ঐতিহাসিকদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। অধিকাংশের মতে সেদিন ছিল, ১২ (বার) রবিউল আউয়াল।

রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ওফাতের দিন আবু বকর (রাঃ) লোকদের ইমামতি করেন :

عَنْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ : اٰخِرُ نَظْرَةٍ نَظَرْتُهَا اِلٰى رَسُوْلِ اللهِ كَشْفُ السِّتَارَةِ يَوْمَ الْاِثْنَيْنِ ، فَنَظَرْتُ اِلٰى وَجْهِهٖ كَاَنَّهٗ وَرَقَةُ مُصْحَفٍ وَالنَّاسُ خَلْفَ اَبِيْ بَكْرٍ ، فَاَشَارَ اِلَى النَّاسِ اَنِ اثْبُتُوْا ، وَاَبُوْ بَكْرٍ يَؤُمُّهُمْ وَاَلْقَى السِّجْفَ ، وَتُوُفِّيَ رَسُوْلُ اللهِ مِنْ اٰخِرِ ذٰلِكَ الْيَوْمِ

২৯৫. আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল ﷺ কে শেষবারের মতো দর্শন করলাম, যখন মৃত্যু রোগে আক্রান্ত অবস্থায় সোমবার ফজরের নামাজের সময়; তখন তিনি পর্দা তুলে উম্মতের সালাতের অবস্থা দেখছিলেন। আমি তাঁর চেহেরায় যেন আল-কুরআনের পৃষ্ঠা জ্বলজ্বল করতে দেখেছিলাম। লোকেরা আবু বকর (রাঃ) এর পেছনে সালাত আদায় করছিল। (লোকেরা সরে দাঁড়াতে চাইল) কিন্তু তিনি ইঙ্গিতে সকলকে স্থির থাকার নির্দেশ দিলেন এবং আবু বকর (রাঃ) ইমামতি করলেন। সেদিন শেষ বেলায় রাসূলুল্লাহ ﷺ ইন্তেকাল করেন। [সহীহ বুখারী, হা/৬৮০; সহীহ মুসলিম, হা/৯৭১; ইবনে মাজাহ, হা/১৬২৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/১২০৯৩; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৬৮৭৫; বায়হাকী, হা/৪৮২৫; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৮২৪; মুসনাদে হুমাইদী, হা/১২৪১।]

রাসূলুল্লাহ ﷺ ওফাতের সময় আয়েশা (রাঃ) এর কোলে ঠেস লাগিয়ে ছিলেন :

عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : كُنْتُ مُسْنِدَةً النَّبِيَّ اِلٰى صَدْرِيْ - اَوْ قَالَتْ : اِلٰى حِجْرِيْ - فَدَعَا بِطَسْتٍ لِيَبُوْلَ فِيْهِ ، ثُمَّ بِالَ ، فَمَاتَ

২৯৬. আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ওফাতের সময় তিনি আমার সিনায় বা আমার কোলে ঠেস লাগিয়ে ছিলেন। অতঃপর তিনি প্রস্রাব করার জন্য একটি পাত্র আনতে বললেন এবং তাতে প্রস্রাব করলেন। এরপর তিনি ইন্তেকাল করেন। [ইবনে খুযাইমা, হা/৬৫; ইবনে মাজাহ, হা/১৬২৬; মুসনাদে আবু ‘আওয়ানা, হা/৫৭৫০।]

রাসূলুল্লাহ ﷺ -ও মৃত্যুর যন্ত্রণা ভোগ করেছিলেন :

عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : لَا اَغْبِطُ اَحَدًا بَهَوْنِ مَوْتٍ بَعْدَ الَّذِيْ رَاَيْتُ مِنْ شِدَّةِ مَوْتِ رَسُوْلِ اللهِ

২৯৭. আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর মৃত্যুর কষ্ট দেখার পর অন্য কারো মৃত্যুর সময় কষ্ট হলে আমার হিংসা হয় না।

ব্যাখ্যা : এখানে মৃত্যুর পূর্বে রোগের কষ্ট বুঝানো হয়েছে। আয়েশা (রাঃ) এ কথা বলার উদ্দেশ্য, আমি মনে করতাম, রোগ ছাড়া হঠাৎ মৃত্যু সম্মান ও সৌভাগ্যের ব্যাপার। কিন্তু রাসূলুল্লাহ ﷺ এর রোগের কষ্ট দেখে অবগত হতে পেরেছি, এটা কোন সৌভাগ্যের ব্যাপার নয়। কারণ রাসূলুল্লাহ ﷺ এর চেয়ে ভাগ্যবান আর কে হতে পারে? বরং রোগের কষ্ট দ্বারা গোনাহ মাফ হয় এবং মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। রোগের কারণে মৃত্যুর প্রস্তুতি গ্রহণের সুযোগ তৈরি হয়।

রাসূলুল্লাহ ﷺ কে তাঁর মৃত্যুর স্থানেই দাফন করা হয় :

عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : لَمَّا قُبِضَ رَسُوْلُ اللهِ اِخْتَلَفُوْا فِيْ دَفْنِهٖ ، فَقَالَ اَبُوْ بَكْرٍ : سَمِعْتُ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ شَيْئًا مَا نَسِيْتُهٗ قَالَ : مَا قَبَضَ اللهُ نَبِيًّا اِلَّا فِي الْمَوْضِعِ الَّذِيْ يُحِبُّ اَنْ يُدْفَنَ فِيْهِ . اَدْفِنُوْهُ فِي مَوْضِعِ فِرَاشِهٖ

২৯৮. আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ইন্তিকাল হলো তখন তাঁর দাফন নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিল। আবু বকর (রাঃ) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ হতে এ সম্পর্কে এমন কিছু শুনেছি, যা আমি আজও ভুলিনি। অতঃপর বলেন, আল্লাহ তা‘আলা নবীদেরকে এমন স্থানেই মৃত্যু দেন, যেখানে দাফন করা তিনি পছন্দ করেন। অতএব রাসূলুল্লাহ ﷺ কে তাঁর মৃত্যুশয্যার স্থানেই দাফন করা হোক। [শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৮৩২; ।]

রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ওফাতের পর আবু বকর (রাঃ) তাঁর কপালে চুম্বন করেন :

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، وَعَائِشَةَ ، اَنَّ اَبَا بَكْرٍ ، قَبَّلَ النَّبِيَّ بَعْدَ مَا مَاتَ

২৯৯. ইবনে আববাস ও আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ওফাতের পর আবু বকর (রাঃ) তাঁর কপালে চুম্বন করেন। [সহীহ বুখারী, হা/৪৪৫৫; ইবনে মাজাহ, হা/১৪৫৭; সুনানে নাসাঈ, হা/১৮৪০; মুসনাদে আহমাদ, হা/২০২৬; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৩০২৯; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হা/১২১৯৫।]

عَنْ عَائِشَةَ ، اَنَّ اَبَا بَكْرٍ ، دَخَلَ عَلَى النَّبِيِّ بَعْدَ وَفَاتِهٖ فَوَضَعَ فَمَهٗ بَيْنَ عَيْنَيْهِ وَوَضَعَ يَدَيْهِ عَلٰى سَاعِدَيْهِ ، وَقَالَ : وَانَبِيَّاهُ ، وَاصَفِيَّاهُ ، وَاخَلِيْلَاهٗ

৩০০. আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ওফাতের পর আবু বকর (রাঃ) তাঁর নিকট এসে তাঁর দুই চোখের মাঝখানে মুখ লাগিয়ে চুম্বন করেন এবং তাঁর বাহুতে দু’হাত রেখে বলেন, হায় নবী! হায় অন্তরঙ্গ বন্ধু! হায় বন্ধু! [মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪০৭৫; মুসনাদে আবু ই‘আলা, হা/৪৮।]

ব্যাখ্যা : আবু বকর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কপালে দু’চোখের মাঝখানে চুম্বন করেছেন। সাহাবী উসমান ইবনে মাযউনের ইন্তেকালের পর রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁকে চুম্বন করেছেন। এতে বুঝা যায়, মৃত ব্যক্তিকে চুম্বন করা জায়েয।

রাসূলুল্লাহ ﷺ এর মৃত্যুতে সাহাবীদের কাছে সবকিছু অন্ধকার মনে হচ্ছিল :

عَنْ اَنَسٍ قَالَ : لَمَّا كَانَ الْيَوْمُ الَّذِي دَخَلَ فِيْهِ رَسُوْلُ اللهِ الْمَدِيْنَةَ اَضَاءَ مِنْهَا كُلُّ شَيْءٍ ، فَلَمَّا كَانَ الْيَوْمُ الَّذِي مَاتَ فِيْهِ اَظْلَمَ مِنْهَا كُلُّ شَيْءٍ ، وَمَا نَفَضْنَا اَيْدِيَنَا مِنَ التُّرَابِ ، وَاِنَا لَفِي دَفْنِهٖ حَتّٰى اَنْكَرْنَا قُلُوبَنَا

৩০১. আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ যেদিন মদিনায় প্রবেশ করছিলেন, সেদিন সেখানকার প্রতিটি জিনিস আলোকোজ্জল হয়ে পড়েছিল। অতঃপর যেদিন তিনি ইন্তেকাল করেন, সেদিন আবার তথাকার প্রতিটি জিনিস অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল। আমরা তাঁর দাফনকার্য শেষ করে কবরের মাটি থেকে হাত ঝাড়া না দিতেই আমাদের অন্তরে পরিবর্তন অনুভব করলাম। [ইবনে মাজাহ, হা/১৬৩১; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৮৫৭; মুসনাদুল বাযযার, হা/৬৮৭১; মুসনানে আবু ই‘আলা, হা/৩২৯৬; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৮৩৪; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৬৬৩৪; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/১৪০৫।]

ব্যাখ্যা : এ বক্তব্যের অর্থ, এটা নয় যে, সাহাবীদের আমল ও আক্বীদার মাঝে পরিবর্তন হয়ে গেছে; বরং উদ্দেশ্য হলো, তারা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সান্নিধ্যে অন্তরে প্রশান্তি লাভ করতেন, সে বিশেষ অবস্থার পরিবর্তন অনুভব করেছেন।

রাসূলুল্লাহ ﷺ সোমবারের দিন ইন্তেকাল করেন :

عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : تُوُفِّيَ رَسُوْلُ اللهِ يَوْمَ الْاِثْنَيْنِ

৩০২. আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ সোমবারের দিন ইন্তেকাল করেন। [মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৮৩৪।]

মঙ্গলবারের দিন রাতে তাঁকে দাফন করা হয় :

عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ ، عَنْ اَبِيْهِ قَالَ : قُبِضَ رَسُوْلُ اللهِ يَوْمَ الِاثْنَيْنِ فَمَكَثَ ذٰلِكَ الْيَوْمَ وَلَيْلَةَ الثُّلَاثَاءِ ، وَدُفِنَ مِنَ اللَّيْلِ

৩০৩. জা‘ফর ইবনে মুহাম্মাদ (রহঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ সোমবারে ইন্তেকাল করেন। সোমবার ও মঙ্গলবার দাফন-কাফনের প্রস্তুতিতেই চলে যায়। অতঃপর মঙ্গলবার দিবাগত রাতে তাঁকে দাফন করা হয়।

রাসূলুল্লাহ ﷺ এর মৃত্যু ও আবু বকর (রাঃ) এর বাইয়াত গ্রহণ :

عَنْ سَالِمِ بْنِ عُبَيْدٍ ، وَكَانَتْ لَهٗ صُحْبَةٌ قَالَ : أُغْمِيَ عَلٰى رَسُوْلِ اللهِ فِي مَرَضِهٖ فَاَفَاقَ ، فَقَالَ : حَضَرَتِ الصَّلَاةُ ؟ فَقَالُوْا : نَعَمْ . فَقَالَ : مُرُوْا بِلَالًا فَلْيُؤَذِّنْ ، وَمُرُوْا اَبَا بَكْرٍ اَنْ يُّصَلِّيَ للنَّاسِ - اَوْ قَالَ : بِالنَّاسِ - قَالَ : ثُمَّ أُغْمِيَ عَلَيْهِ ، فَاَفَاقَ ، فَقَالَ : حَضَرَتِ الصَّلَاةُ ؟ فَقَالُوْا : نَعَمْ . فَقَالَ : مُرُوْا بِلَالًا فَلْيُؤَذِّنْ ، وَمُرُوْا اَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ ، فَقَالَتْ عَائِشَةُ : اِنَّ اَبِيْ رَجُلٌ اَسِيْفٌ ، اِذَا قَامَ ذٰلِكَ الْمَقَامَ بَكٰى فَلَا يَسْتَطِيْعُ ، فَلَوْ اَمَرْتَ غَيْرَهٗ قَالَ : ثُمَّ أُغْمِيَ عَلَيْهِ فَاَفَاقَ فَقَالَ : مُرُوْا بِلَالًا فَلْيُؤَذِّنْ ، وَمُرُوْا اَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ ، فَاِنَّكُنَّ صَوَاحِبُ اَوْ صَوَاحِبَاتُ يُوْسُفَ قَالَ : فَأُمِرَ بِلَالٌ فَاَذَّنَ ، وَأُمِرَ اَبُوْ بَكْرٍ فَصَلّٰى بِالنَّاسِ ، ثُمَّ اِنَّ رَسُوْلَ اللهِ وَجَدَ خِفَّةً ، فَقَالَ : اُنْظُرُوْا لِيْ مَنْ اَتَّكِئِ عَلَيْهِ ، فَجَاءَتْ بَرِيْرَةُ وَرَجُلٌ اٰخَرُ ، فَاتَّكَاَ عَلَيْهِمَا فَلَمَّا رَاٰهٗ اَبُو بَكْرٍ ذَهَبَ لِينْكُصَ فَاَوْمَاَ اِلَيْهِ اَنْ يَثْبُتَ مَكَانَهٗ ، حَتّٰى قَضٰى اَبُو بَكْرٍ صَلَاتَهٗ ، ثُمَّ اِنَّ رَسُوْلَ اللهِ قُبِضَ ، فَقَالَ عُمَرُ : وَاللهِ لَا اَسْمَعُ اَحَدًا يَذْكُرُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قُبِضَ اِلَّا ضَرَبْتُهٗ بِسَيْفِيْ هٰذَا قَالَ : وَكَانَ النَّاسُ أُمِّيِّيْنَ لَمْ يَكُنْ فِيْهِمْ نَبِيٌّ قَبْلَهٗ ، فَاَمْسَكَ النَّاسُ ، فَقَالُوْا : يَا سَالِمُ ، انْطَلِقْ اِلَى صَاحِبِ رَسُوْلِ اللهِ فَادْعُهٗ ، فَاَتَيْتُ اَبَا بَكْرٍ وَهُوَ فِي الْمَسْجِدِ فَاَتَيْتُهٗ اَبْكِيْ دَهِشًا ، فَلَمَّا راٰنِيْ قَالَ : اَقُبِضَ رَسُوْلُ اللهِ ؟ قُلْتُ : اِنَّ عُمَرَ يَقُوْلُ : لَا اَسْمَعُ اَحَدًا يَذْكُرُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قُبِضَ اِلَّا ضَرَبْتُهٗ بِسَيْفِيْ هٰذَا ، فَقَالَ لِيْ : اِنْطَلِقْ ، فَانْطَلَقْتُ مَعَهٗ ، فَجَاءَ هُوَ وَالنَّاسُ قَدْ دَخَلُوا عَلٰى رَسُوْلِ اللهِ فَقَالَ : يَا اَيُّهَا النَّاسُ ، اَفْرِجُوْا لِيْ ، فَاَفْرَجُوْا لَهٗ فَجَاءَ حَتّٰى اَكَبَّ عَلَيْهِ وَمَسَّهٗ ، فَقَالَ : ﴿اِنَّكَ مَيِّتٌ وَاِنَّهُمْ مَيِّتُوْنَ﴾ ثُمَّ قَالُوْا : يَا صَاحِبَ رَسُوْلِ اللهِ ، اَقُبِضَ رَسُوْلُ اللهِ ؟ قَالَ : نَعَمْ ، فَعَلِمُوْا اَنْ قَدْ صَدَقَ ، قَالُوْا : يَا صَاحِبَ رَسُوْلِ اللهِ ، اَيُصَلّٰى عَلٰى رَسُوْلِ اللهِ؟ قَالَ : نَعَمْ ، قَالُوْا : وَكَيْفَ؟ قَالَ : يَدْخُلُ قَوْمٌ فَيُكَبِّرُوْنَ وَيُصَلُّوْنَ وَيَدْعُوْنَ ، ثُمَّ يَخْرُجُوْنَ ، ثُمَّ يَدْخُلُ قَوْمٌ فَيُكَبِّرُوْنَ وَيُصَلُّوْنَ وَيَدْعُوْنَ ، ثُمَّ يَخْرُجُوْنَ ، حَتّٰى يَدْخُلَ النَّاسُ ، قَالُوْا : يَا صَاحِبَ رَسُوْلِ اللهِ ، اَيُدْفَنُ رَسُوْلُ اللهِ ؟ قَالَ : نَعَمْ ، قَالُوْا : اَيْنَ ؟ قَالَ : فِيْ الْمَكَانِ الَّذِيْ قَبَضَ اللهُ فِيْهِ رُوْحَهٗ ، فَاِنَّ اللهَ لَمْ يَقْبِضْ رُوْحَهٗ اِلَّا فِيْ مَكَانٍ طَيِّبٍ . فَعَلِمُوْا اَنْ قَدْ صَدَقَ ، ثُمَّ اَمَرَهُمْ اَنْ يَّغْسِلَهٗ بَنُو اَبِيْهِ وَاجْتَمَعَ الْمُهَاجِرُوْنَ يَتَشَاوَرُوْنَ ، فَقَالُوْا : اِنْطَلِقْ بِنَا اِلٰى اِخْوَانِنَا مِنَ الْاَنْصَارِ نُدْخِلُهُمْ مَعَنَا فِيْ هٰذَا الْاَمْرِ ، فَقَالَتِ الْاَنْصَارُ : مِنَّا اَمِيْرٌ وَمِنْكُمْ اَمِيْرٌ ، فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ : مَنْ لَهٗ مِثْلُ هٰذِهِ الثَّلَاثِ ﴿ثَانِيَ اثْنَيْنِ اِذْ هُمَا فِي الْغَارِ اِذْ يَقُوْلُ لِصَاحِبِهٖ لَا تَحْزَنْ اِنَّ اللّٰهَ مَعَنَا﴾ مَنْ هُمَا ؟ قَالَ : ثُمَّ بَسَطَ يَدَهٗ فَبَايَعَهٗ وَبَايَعَهُ النَّاسُ بَيْعَةً حَسَنَةً جَمِيْلَةً

৩০৪. সাহাবী সালিম ইবনে উবাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ অসুস্থ অবস্থায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিলেন। জ্ঞান ফিরে এলে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, সালাতের সময় হয়েছে কি? সাহাবীগণ বলেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তোমরা বেলালকে আযান দিতে নির্দেশ দাও এবং আবু বকরকে ইমামতি করতে বলো। অতঃপর তিনি আবার অজ্ঞান হয়ে পড়েন। জ্ঞান ফিরে এলে তিনি বলেন, সালাতের সময় হয়েছে কি? সাহাবীগণ বলেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তোমরা বেলালকে আযান দিতে বলো এবং আবু বকরকে ইমামতি করতে বলো। আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমার পিতা কোমল হৃদয়ের লোক। যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন, তখন কেঁদে ফেলবেন এবং ইমামতি করতে সক্ষম হবেন না। আপনি যদি তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে নির্দেশ দিতেন।

বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আবার জ্ঞান হারান। জ্ঞান ফিরে এলে তিনি বললেন, তোমরা বেলালকে আযান দিতে বলো এবং আবু বকরকে লোকদের সালাত পড়াতে বলো। পুনরায় আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমার পিতা কোমল হৃদয়ের লোক। তিনি ঐ ইমামতের জায়গায় দাঁড়ালে কেঁদে ফেলবেন এবং ইমামতি করতে সক্ষম হবেন না। আপনি যদি তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে নির্দেশ দিতেন। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তোমরা তো ইউসুফ (আঃ) এর ঘটনার সাথে জড়িত মহিলাদের মতো। বর্ণনাকারী বলেন, বেলাল (রাঃ)-কে আযান দেয়ার নির্দেশ দেয়া হলে তিনি আযান দেন এবং আবু বকর (রাঃ)-কে নির্দেশ দেয়া হলে তিনি লোকদের সালাত পড়ান। অতঃপর রাসূলুল্লাহ ﷺ কিছুটা সুস্থতাবোধ করে বলেন, দেখতো! আমার ভর নেয়ার মতো কোন লোক পাওয়া যায় কি না? তখন বর্ণনাকারী ও অপর এক লোক এলে তিনি তাঁদের উপর ভর করেন (এবং মসজিদে যান)। তাঁকে দেখে আবু বকর (রাঃ) পেছনে সরে আসতে উদ্যোগী হলে তিনি তাঁকে স্বস্থানে স্থির থাকতে ইশারা করেন। এ অবস্থায় আবু বকর (রাঃ) সালাত আদায় করান। অতঃপর সোমবার রাসূলুল্লাহ ﷺ ইন্তেকাল করলে উমর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! যে ব্যক্তিকে এ কথা বলতে শুনব যে, ‘‘রাসূলুল্লাহ ﷺ ইন্তেকাল করেছেন’’ আমি আমার তরবারি দিয়ে তাকে আঘাত করব। আর লোকদের এ ব্যাপারে কোন অভিজ্ঞতা ছিল না। কারণ, তাঁরা ইতোপূর্বে কোন নবীর মৃৃৃৃৃৃত্যু দেখেনি। তাই তাঁরা নীরব থাকেন।

কতিপয় সাহাবী বলেন, হে সালেম, তুমি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথীকে ডেকে আন। অতএব আমি আবু বকর (রাঃ) এর নিকট এলাম। তখন তিনি মসজিদে ছিলেন। আমি দিশেহারা হয়ে কান্নারত অবস্থায় আবু বকর (রাঃ) এর নিকট উপস্থিত হলাম। তিনি আমাকে দেখেই বললেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ কি ইন্তেকাল করেছেন? আমি বললাম উমর (রাঃ) বলেছেন, যাকে এ কথা বলতে শুনব যে, ‘‘রাসূলুল্লাহ ﷺ ইন্তেকাল করেছেন’’ আমি আমার এ তরবারী দ্বারা তাকে আঘাত করব। আবু বকর (রাঃ) আমাকে বললেন, চলো। অতএব আমি তাঁর সাথে চললাম এবং তিনিও আসলেন। ইতোমধ্যে রাসূলুল্লাহ ﷺ কে দেখার জন্য লোকজন এসে সমবেত হয়েছে। তিনি বলেন, হে লোক সকল, আমার জন্য রাস্তা করে দাও। তিনি এসে তাঁর প্রতি ঝুঁকে পড়েন এবং কপালে চুম্বন করে এ আয়াত পড়েন,

﴿اِنَّكَ مَيِّتٌ وَاِنَّهُمْ مَيِّتُوْنَ﴾

অর্থাৎ নিশ্চয় আপনি মরণশীল এবং তাঁরাও (আপনার শত্রুরা) মরণশীল। [সূরা যুমার- ৩০।]

অতঃপর লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হে রাসূলের সাহাবী! রাসূলুল্লাহ ﷺ কি ইন্তেকাল করেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন সবাই বিশ্বাস করলেন, তিনি সত্য কথাই বলেছেন। তারা আবার জিজ্ঞেস করেন, হে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথী! আমরা কি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জানাযা পড়ব? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তারা জিজ্ঞেস করেন, তা কী নিয়মে? তিনি বললেন, একদল লোক প্রবেশ করবে, তারা তাকবীর বলবে, দু‘আ করবে এবং দরূদ পাঠ করবে। তারা বের হয়ে এলে আরেক দল প্রবেশ করে একই নিয়েম তাকবীর, দু‘আ ও দরূদ পড়ে বের হয়ে আসবে। এ নিয়মে জামা‘আত ছাড়া সকলে আলাদা আলাদা জানাযার সালাত আদায় করবে। তারা আবার জিজ্ঞেস করেন, হে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সঙ্গী! রাসূলুল্লাহ ﷺ কে কি দাফন করা হবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তারা জিজ্ঞেস করেন, কোথায়? তিনি বললেন, যে স্থানে তাঁর ইন্তেকাল হয়েছে সেখানেই। আল্লাহ তার পছন্দের স্থানেই তাঁর জান কবয করেছেন। তখন সকলের বিশ্বাস হলো, তিনি সত্য কথাই বলেছেন। তারপর তিনি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে গোসল দেয়ার জন্য তাঁর পরিবারবর্গ ও আত্মীয়-স্বজনকে আদেশ করেন।

অতঃপর মুহাজিররা (খেলাফত প্রশ্নে) পরামর্শের জন্য মিলিত হন। মুহাজিররা আবু বকর (রাঃ)-কে বললেন, আমাদেরকে নিয়ে আনসার ভাইদের কাছে চলুন এবং এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমাদের সাথে তাদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করব। আনসারগণ বললেন, আমাদের মধ্য হতে একজন আমীর এবং আপনাদের (মুহাজিরদের) মধ্য থেকে একজন আমীর হোক। তখন উমর (রাঃ) বললেন, এমন কে আছে, যে এই ঘটনার তৃতীয়জন (যে ঘটনাটির ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন)-

﴿ثَانِيَ اثْنَيْنِ اِذْ هُمَا فِي الْغَارِ اِذْ يَقُوْلُ لِصَاحِبِهٖ لَا تَحْزَنْ اِنَّ اللّٰهَ مَعَنَا﴾

‘‘দু’জনের একজন যখন তারা ছিল গুহার মধ্যে, যখন সে তার সাথিকে বলল, বিচলিত হয়ো না; নিশ্চয় আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন।’’ [সূরা তাওবা- ৪০।]

কারা ছিলেন সে দু’জন? বর্ণনাকারী বলেন, তারপর উমর (রাঃ) তাঁর হাত প্রসারিত করে দিয়ে আবু বকর (রাঃ)-এর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করেন। তারপর লোকেরাও তাঁর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করেন। [সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৭০৮১; সুনানুল কুবরা লিত তাবারানী, হা/৬২৪৩।]

রাসূলুল্লাহ ﷺ এর মৃত্যুতে ফাতিমা (রাঃ) এর ক্রন্দন :

عَنْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ : لَمَّا وَجَدَ رَسُوْلُ اللهِ مِنْ كُرَبِ الْمَوْتِ مَا وَجَدَ ، قَالَتْ فَاطِمَةُ : وَاكَرْبَاهٗ ، فَقَالَ النَّبِيُّ  : لَا كَرْبَ عَلَى اَبِيْكِ بَعْدَ الْيَوْمِ ، اِنَّهٗ قَدْ حَضَرَ مِنْ اَبِيْكِ مَا لَيْسَ بِتَارِكٍ مِنْهُ اَحَدًا الْمُوَافَاةُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ

৩০৫. আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন মৃত্যুর কষ্ট ভোগ করছিলেন, তখন ফাতেমা (রাঃ) বললেন, হায়! আমার আববার কতই না কষ্ট হচ্ছে! রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, আজকের পর তোমার পিতার আর কোন কষ্ট থাকবে না। তোমার পিতার নিকট মৃত্যু নামক এমন এক বিষয় উপস্থিত হয়েছে, যা থেকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত কেউ রেহাই পাবে না। [ইবনে মাজাহ, হা/১৬২৯।]

- بَابُ : مَا جَاءَ فِي مِيرَاثِ رَسُوْلِ اللهِ

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন