hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শামায়েলে তিরমিযী

লেখকঃ মুহাম্মাদ বিন ঈসা আত তিরমিযী (রহ.)

৪৮
অধ্যায়-৪৫ : রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ক্রন্দন
রাসূলুল্লাহ ﷺ সালাত আদায়কালে ক্রন্দন করতেন :

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الشِّخِّيْرِ ، عَنْ اَبِيْهِ قَالَ : اَتَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ وَهُوَ يُصَلِّيْ وَلِجَوْفِهٖ اَزِيْزٌ كَاَزِيْزِ الْمِرْجَلِ مِنَ الْبُكَاءِ

২৪৭. আবদুল্লাহ ইবনে শিখখীর (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি তার পিতা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলাম যে, তিনি সালাত আদায় করছেন। এমতাবস্থায় তাঁর বক্ষদেশ হতে কান্নার এমন শব্দ বের হচ্ছে, যেমন চুলার উপর রাখা পাত্র হতে টগবগ শব্দ শোনা যায়। [সুনানে নাসাঈ, হা/১২১৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৩৫৫; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/৯০০; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৯৭১; শু‘আবুল ঈমান, হা/১৮৮৯; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৩৩২৯।]

রাসূলুল্লাহ ﷺ কুরআন শ্রবণ করেও ক্রন্দন করতেন :

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ : قَالَ لِيْ رَسُوْلُ اللهِ  : اِقْرَأْ عَلَيَّ فَقُلْتُ : يَا رَسُوْلَ اللهِ ، اَقَرَأُ عَلَيْكَ وَعَلَيْكَ أُنْزِلَ قَالَ : اِنِّيْ أُحِبُّ اَنْ اَسْمَعَهٗ مِنْ غَيْرِيْ ، فَقَرَأْتُ سُوْرَةَ النِّسَاءِ ، حَتّٰى بَلَغْتُ ﴿وَجِئْنَا بِكَ عَلٰى هٰؤُلَاءِ شَهِيْدًا﴾ قَالَ : فَرَاَيْتُ عَيْنَيْ رَسُوْلِ اللهِ تَهْمِلَانِ

২৪৮. আবদুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাকে বললেন, আমাকে কুরআন পাঠ করে শুনাও। আমি বললাম, আমি আপনাকে পাঠ করে শুনাব, যা আপনার উপর নাযিল হয়েছে! তিনি বললেন, আমি তা অপরের কাছ থেকে শুনতে পছন্দ করি। ফলে আমি সূরা নিসা পাঠ করতে শুরু করলাম। অতঃপর যখন আমি এ আয়াত পর্যন্ত পৌঁছলাম-

﴿وَجِئْنَا بِكَ عَلٰى هٰؤُلَاءِ شَهِيْدًا﴾

অর্থাৎ আপনাকে ডাকব তাদের উপর সাক্ষীরূপে। [সূরা নিসা- ৪১।]

তখন আমি দেখতে পেলাম যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর চক্ষুদ্বয় হতে অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছে। [সহীহ বুখারী, হা/৪৬৮২; সহীহ মুসলিম, হা/১৯০৩; আবু দাউদ, হা/৩৬৭০; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৬০৬; বায়হাকী, হা/২০৪৮৬; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হা/৩৫৫৬০; শু‘আবুল ঈমান, হা/১৮৯০।]

রাসূলুল্লাহ ﷺ সিজদাতে গেলেও ক্রন্দন করতেন :

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ : اِنْكَسَفَتِ الشَّمْسُ يَوْمًا عَلٰى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ فَقَامَ رَسُوْلُ اللهِ يُصَلِّيْ ، حَتّٰى لَمْ يَكَدْ يَرْكَعُ ثُمَّ رَكَعَ ، فَلَمْ يَكَدْ يَرْفَعُ رَأْسَهٗ ، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهٗ ، فَلَمْ يَكَدْ اَنْ يَسْجُدَ ، ثُمَّ سَجَدَ فَلَمْ يَكَدْ اَنْ يَرْفَعَ رَأْسَهٗ ، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهٗ ، فَلَمْ يَكَدْ اَنْ يَسْجُدَ ، ثُمَّ سَجَدَ فَلَمْ يَكَدْ اَنْ يَرْفَعَ رَأْسَهٗ ، فَجَعَلَ يَنْفُخُ وَيَبْكِيْ ، وَيَقُوْلُ : رَبِّ اَلَمْ تَعِدْنِيْ اَنْ لَا تُعَذِّبَهُمْ وَاَنَا فِيْهِمْ ؟ رَبِّ اَلَمْ تَعِدْنِيْ اَنْ لَا تُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُوْنَ ؟ وَنَحْنُ نَسْتَغْفِرُكَ . فَلَمَّا صَلّٰى رَكْعَتَيْنِ اِنْجَلَتِ الشَّمْسُ ، فَقَامَ فَحَمِدَ اللهَ تَعَالٰى وَاَثْنٰى عَلَيْهِ ، ثُمَّ قَالَ : اِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَاٰيَتَانِ مِنْ اٰيَاتِ اللهِ لَا يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ اَحَدٍ وَلَا لِحَيَاتِهٖ ، فَاِذَا اِنْكَسَفَا فَافْزَعُوْا اِلٰى ذِكْرِ اللهِ تَعَالٰى

২৪৯. আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর যুগে একবার সূর্য গ্রহণ হয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ তখন সালাতে দন্ডায়মান হন। এতে তিনি এত বিলম্ব করলেন যে, মনে হচ্ছিল তিনি যেন আর রুকূতে যাবেন না। যখন রুকূতে গেলেন, তখন মনে হচ্ছিল, তিনি যেন আর মাথা তুলবেন না। তারপর যখন মাথা উঠালেন, তখন মনে হচ্ছিল তিনি যেন আর সিজদায় যাবেন না। তারপর তিনি যখন সিজদায় গেলেন, তখন মনে হচ্ছিল তিনি যেন আর মাথা উঠাবেন না। তারপর যখন মাথা উঠালেন, তখন মনে হচ্ছিল তিনি যেন আর সিজদায় যাবেন না। তারপর যখন সিজদায় গেলেন, তখন মনে হচ্ছিল তিনি যেন আর মাথা উঠবেন না। তিনি দীর্ঘশবাস ফেলছিলেন আর ক্রন্দন করছিলেন এবং দু‘আ পাঠ করছিলেন যে, হে আমার রব! তুমি কি এ মর্মে প্রতিশ্রুতি দাওনি যে, আমার উপস্থিতিতে আমার উম্মতকে শাস্তি দেবে না? আমরা তোমার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি। রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন ২ রাক‘আত সালাত শেষ করলেন, তখন সূর্যও বের হয়ে আসল। অতঃপর তিনি কিছু বলার জন্য দাঁড়ালেন এবং আল্লাহর হামদ ও ছানার পর বললেন, চন্দ্র ও সূর্য আল্লাহর দুটি নিদর্শন। কারো জন্ম বা মৃত্যুর সঙ্গে চন্দ্র ও সূর্য গ্রহণের কোন সম্পর্ক নেই। যখন চন্দ্র বা সূর্য গ্রহণ হয়, তখন তোমরা আল্লাহর যিকর-এ লিপ্ত হও। [সহীহ মুসলিম, হা/২১৪০; আবু দাউদ, হা/১১৯৬; সুনানে নাসাঈ, হা/১৪৮২; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/১৩৯২; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/১২২৯; বায়হাকী, হা/১৩৭৯।]

ব্যাখ্যা : রাসূলুল্লাহ ﷺ সূর্য গ্রহণের ঘটনায় জীবনে একবার সালাত আদায় করেছিলেন, তা ছিল দশম হিজরী সনে। আবার কেউ কেউ এটি নবম হিজরী সনে সংঘটিত হয়েছিল বলে মত প্রকাশ করেছেন। আর চন্দ্রগ্রহণের সালাত আদায় করেছিলেন পঞ্চম হিজরী সনে।

জাহেলী যুগে লোকেরা বিশ্বাস করত যে, কোন বড় ব্যক্তির জন্ম বা মৃত্যুর কারণে সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণ হয়। তাই রাসূলুল্লাহ ﷺ এর প্রকৃত রহস্য বর্ণনা করে বলেছেন, চন্দ্র-সূর্য আললাহ তা‘আলার নিদর্শন। কারো জীবন বা মৃত্যুর সাথে চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণের কোন সম্পর্ক নেই।

রাসূলুল্লাহ ﷺ কন্যার মৃত্যুশোকে অশ্রুসিক্ত হয়েছিলেন :

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ : اَخَذَ رَسُوْلُ اللهِ اِبْنَةً لَهٗ تَقْضِيْ فَاحْتَضَنَهَا فَوَضَعَهَا بَيْنَ يَدَيْهِ فَمَاتَتْ وَهِيَ بَيْنَ يَدَيْهِ وَصَاحَتْ أُمُّ اَيْمَنَ فَقَالَ - يَعْنِي- رَسُوْلِ اللهِ  : اَتَبْكِيْنَ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ ؟ فَقَالَتْ : اَلَسْتُ اَرَاكَ تَبْكِيْ ؟ قَالَ : اِنِّي لَسْتُ اَبْكِيْ ، اِنَّمَا هِيَ رَحْمَةٌ ، اِنَّ الْمُؤْمِنَ بِكُلِّ خَيْرٍ عَلٰى كُلِّ حَالٍ ، اِنَّ نَفْسَهٗ تُنْزَعُ مِنْ بَيْنِ جَنْبَيْهِ ، وَهُوَ يَحْمَدُ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ

২৫০. ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর এক কন্যা মূমুর্ষ অবস্থায় ছিলেন। তিনি তাকে কোলে তুলে সামনে রাখলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সামনেই সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল। তখন উম্মে আয়মান (রাঃ) চিৎকার করে কাঁদতে লাগলেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁকে বললেন, আল্লাহর রাসূলের সামনেই তুমি ক্রন্দন করছ? উম্মে আয়মান বললেন, আমি আপনাকেও কি অশ্রুসিক্ত দেখতে পাচ্ছি না? রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, আমি যে কান্না করছি তা নিষেধ নয়, তা আল্লাহর রহমত। অতঃপর তিনি বললেন, একজন মুমিন সর্বাবস্থায় মঙ্গলজনক অবস্থায় থাকে। এমনকি তার জীবন নিয়ে যাওয়ার সময়ও আল্লাহর প্রশংসা করে। [মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৭৫; সিলসিলা সহীহাহ, হা/১৬৩২।]

ব্যাখ্যা : এ হাদীস থেকে বুঝা গেল, বিলাপ করে কাঁদা নিষিদ্ধ। তবে চোখ দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত হওয়া নিষেধ নয়। এটা আল্লাহর রহমত এবং মন নরম হওয়ার লক্ষণ। সন্তানের প্রতি দয়া-মায়া নবী ﷺ এর সুন্নত।

উসমান ইবনে মাযউন (রাঃ) এর মৃত্যুতেও রাসূলুল্লাহ ﷺ কেঁদেছিলেন :

عَنْ عَائِشَةَ : اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَبَّلَ عُثْمَانَ بْنَ مَظْعُونٍ وَهُوَ مَيِّتٌ وَهُوَ يَبْكِيْ اَوْ قَالَ : عَيْنَاهٗ تَهْرَاقَانِ

২৫১. আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। উসমান ইবনে মাযউন (রাঃ) মারা গেলে রাসূলুল্লাহ ﷺ তার কপালে চুম্বন দিলেন। তিনি কাঁদছিলেন অথবা (রাবী) বলেন, তখন তাঁর চোখ হতে অশ্রু পড়ছিল। [মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/১৩৩৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/১৪৭০।]

ব্যাখ্যা : উসমান ইবনে মাযঊন (রাঃ) ছিলেন কুরাইশ বংশের লোক। আবার তিনি ছিলেন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর দুধ ভাই । ইসলামের প্রথম যুগে ১৩ জনের পর তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। আবিসিনিয়ায় হিজরতের পর মদিনায় হিজরত করেন। হিজরী দ্বিতীয় সনের শাবান মাসে ইন্তেকাল করেন এবং জান্নাতুল বাকীতে সমাহিত হন। তিনি ছিলেন মুহাজিরদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইন্তেকালকারী সাহাবী।

রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর কন্যাকে কবরের শোয়োনোর সময়ও কেঁদেছিলেন :

عَنْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ : شَهِدْنَا ابْنَةً لِرَسُوْلِ اللهِ وَرَسُوْلُ اللهِ جَالِسٌ عَلَى الْقَبْرِ فَرَاَيْتُ عَيْيَنْهِ تَدمَعَانِ ، فَقَالَ : اَفِيْكُمْ رَجُلٌ لَمْ يُقَارِفِ اللَّيْلَةَ ؟ قَالَ اَبُو طَلْحَةَ : اَنَا قَالَ : اِنْزِلْ فَنَزَلَ فِيْ قَبْرِهَا

২৫২. আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর কন্যার কবরের পার্শ্বে উপস্থিত হন। তিনি সেখানে বসেন। আমি দেখতে পেলাম, তাঁর চোখ হতে অশ্রু বেরোচ্ছে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তোমাদের মধ্যে এমন কেউ কি আছে, যে গত রাতে স্ত্রীর নিকটবর্তী হওনি? আবু তালহা (রাঃ) বললেন, আমি। রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁকে বললেন, তুমি কবরে অবতরণ করো। অতঃপর রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নির্দেশে আবু তালহা (রাঃ) কবরে অবতরণ করলেন। [সহীহ বুখারী, হা/১২৮৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/১২২৯৭; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৬৮৫৩; বায়হাকী, হা/৬৮৩৮; শারহুস সুন্নাহ, হা/১৫১৩; মুসনাদুল বাযযার, হা/৬২২৫।]

بَابُ مَا جَاءَ فِي فِرَاشِ رَسُوْلِ اللهِ

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন