hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শামায়েলে তিরমিযী

লেখকঃ মুহাম্মাদ বিন ঈসা আত তিরমিযী (রহ.)

৪৬
অধ্যায়-৪৩ : রাসূলুল্লাহ ﷺ এর রোযা
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ شَقِيْقٍ قَالَ : سَاَلْتُ عَائِشَةَ ، عَنْ صِيَامِ رَسُوْلِ اللهِ ، قَالَتْ : كَانَ يَصُوْمُ حَتّٰى نَقُوْلَ قَدْ صَامَ ، وَيُفْطِرُ حَتّٰى نَقُوْلَ قَدْ اَفْطَرَ . قَالَتْ : وَمَا صَامَ رَسُوْلُ اللهِ شَهْرًا كَامِلًا مُنْذُ قَدِمَ الْمَدِيْنَةَ اِلَّا رَمَضَانَ

২২৪. আবদুল্লাহ ইবনে শাকীক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর রোযা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তাতে তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ (ক্রমাগত) রোযা রাখতেন, এমনকি আমরা বলতাম, তিনি বুঝি অনবরত রোযা রেখেই যাবেন। আর যখন ইফতার করতেন, তখন আমরা বলতাম, তিনি হয়তো আর রোযা রাখবেন না। আয়েশা (রাঃ) বলেন, মদিনায় হিজরতের পর রমাযান মাস ছাড়া আর কোন সময় তিনি পূর্ণ মাস রোযা রাখতেন না। [সহীহ মুসলিম, হা/২৭৭৫; সুনানে নাসাঈ, হা/২৩৪৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫২৭৬; শারহুস সুন্নাহ, হা/১৮০৯; মুসনাদে আবু ‘আওয়ানা, হা/২৯৩৮।]

ব্যাখ্যা : রাসূলুল্লাহ ﷺ বিভিন্ন নিয়মে রোযা রেখেছেন। তিনি কখনো কখনো একটানা অনেক দিন রোযা রাখতেন আবার বিরতিও দিতেন। তবে কোন মাস নফল রোযা থেকে খালি যেত না। তিনি মধ্যমপন্থা অবলম্বন করতেন।

عَنْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، اَنَّهٗ سُئِلَ عَنْ صَوْمِ النَّبِيِّ ، فَقَالَ : كَانَ يَصُوْمُ مِنَ الشَّهْرِ حَتّٰى نَرٰى اَنْ لَا يُرِيْدَ اَنْ يُفْطِرَ مِنْهُ ، وَيُفْطِرُ مِنْهُ حَتّٰى نَرٰى اَنْ لَا يُرِيْدَ اَنْ يَصُوْمَ مِنْهُ شَيْئًا . وَكُنْتَ لَا تَشَاءُ اَنْ تَرَاهٗ مِنَ اللَّيْلِ مُصَلِّيًا اِلَّا رَاَيْتَهٗ مُصَلِّيًا ، وَلَا نَائِمًا اِلَّا رَاَيْتَهٗ نَائِمًا

২২৫. আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আনাস (রাঃ)-কে নবী ﷺ এর রোযা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, নবী ﷺ কোন মাসে এমনভাবে রোযা রাখতেন যে, আমরা মনে করতাম- তিনি হয়তো এ মাসে আর রোযা ছাড়বেন না। আবার অনেক সময় এমনভাবে রোযা ছেড়ে দিতেন যে, আমরা মনে করতাম- তিনি আর রোযা রাখবেন না। অবস্থা এমন ছিল যে, তুমি যদি তাঁকে সালাতরত অবস্থায় দেখতে চাইতে, তবে তাঁকে সালাতরত অবস্থায়-ই দেখতে পেতে। আর যদি নিদ্রিত অবস্থায় দেখতে চাইতে, তবে তাঁকে নিদ্রিত অবস্থায়-ই দেখতে পেতে। [ইবনে খুযাইমা, হা/২১৩৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৪৯৮; মুসনাদুল বাযযার, হা/৬৫৯২; বায়হাকী, হা/৪৫১১; শারহুস সুন্নাহ, হা/৯৩২; সহীহ ইবনে হিববান, হা/২৬১৮; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/৯৮৪০।]

ব্যাখ্যা : আনাস (রাঃ) এ বাক্য দ্বারা বুঝাতে চান যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ সারা রাত ঘুমিয়ে কাটাতেন না, আবার সারা রাত ইবাদাতও করতেন না; বরং মধ্যমপন্থা অবলম্বন করতেন। একাংশে ঘুমাতেন আরেকাংশে নামায পড়তেন।

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ يَصُوْمُ حَتّٰى نَقُوْلَ مَا يُرِيْدُ اَنْ يُفْطِرَ مِنْهُ ، وَيُفْطِرُ حَتّٰى نَقُوْلَ مَا يُرِيْدُ اَنْ يَصُوْمَ مِنْهُ ، وَمَا صَامَ شَهْرًا كَامِلًا مُنْذُ قَدِمَ الْمَدِينَةَ اِلَّا رَمَضَانَ

২২৬. ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ কখনো এমনভাবে রোযা রাখতেন যে, আমরা বলতাম, এ মাসে হয়তো তিনি আর রোযা ভাঙ্গবেন না। যখন রোযা ছেড়ে দিতেন, তখন (তাঁর অবস্থা দেখে) আমরা বলতাম, তিনি বুঝি আর রোযা রাখবেন না। মদিনায় হিজরতের পর রমাযান মাস ছাড়া তিনি আর কখনো পূর্ণ মাস রোযা রাখেননি। [মুসনাদে আহমাদ, হা/১৯৯৮; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/২৭৪৮।]

عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ ، قَالَتْ : مَا رَاَيْتُ النَّبِيَّ يَصُوْمُ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ اِلَّا شَعْبَانَ وَرَمَضَانَ

২২৭. উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ -কে রমাযান ও শাবান মাস ছাড়া অন্য কোন মাসে একাধিক্রমে রোযা রাখতে দেখিনি। [সুনানে নাসাঈ, হা/২১৭৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬৬০৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/১৭২০; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১০২৫।]

ব্যাখ্যা : এ কথা দ্বারা আয়েশা (রাঃ) স্পষ্টভাবে বুঝাচ্ছেন যে, সম্পূর্ণ শাবান মাস বলতে শাবানের অধিকাংশ দিন বুঝানো হয়েছে।

عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : لَمْ اَرَ رَسُوْلَ اللهِ يَصُوْمُ فِيْ شَهْرٍ اَكْثَرَ مِنْ صِيَامِهٖ لِلّٰهِ فِيْ شَعْبَانَ ، كَانَ يَصُوْمُ شَعْبَانَ اِلَّا قَلِيْلًا بَلْ كَانَ يَصُوْمُهٗ كُلَّهٗ

২২৮. আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে শাবান মাস ছাড়া আর কোন মাসে এত অধিক রোযা রাখতে দেখিনি। তিনি শাবান মাসের অধিকাংশ দিনই রোযা রাখতেন। বরং প্রায় সারা মাসই তাঁর রোযা অবস্থায় কাটত। [সুনানে নাসাঈ, হা/২১৭৮; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫৩৫৭; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৩৫১৬; বায়হাকী, হা/৮২১২; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১০২৪।]

রাসূলুল্লাহ ﷺ প্রতি মাসে ৩টি করে রোযা রাখতেন :

عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ : كَانَ رَسُوْلُ اللهِ يَصُوْمُ مِنْ غُرَّةِ كُلِّ شَهْرٍ ثَلَاثَةَ اَيَامٍ وَقَلَّمَا كَانَ يُفْطِرُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ

২২৯. আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ প্রতি মাসের প্রথমদিকে তিনটি করে রোযা রাখতেন। জুমু‘আর দিন খুব কমই ইফতার করতেন। [মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৮৬০; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৩৬৪৫; মুসনাদুল বাযযার, হা/১৮১৮; শারহুস সুন্নাহ, হা/১৮০৩; জামেউস সগীর, হা/৯১০৩।]

ব্যাখ্যা : বিভিন্ন হাদীসে প্রতি মাসে ৩ দিন রোযা রাখার প্রতি উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। যেমন- প্রত্যেক সৎ কাজের সওয়াব দশগুণ বৃদ্ধি করা হয়, এ হিসেবে ৩টি পূর্ণ রোযার সওয়াব ১ মাসের রোযার সমপরিমান হয়। এভাবে যে ব্যক্তি প্রতি মাসে ৩ দিন রোযা রাখল সে যেন সারা বছরই রোযা রাখল।

রাসূলুল্লাহ ﷺ প্রতি মাসে ৩ দিন রোযা রাখতেন। কখনো মাসের শুরুতে ৩ দিন রোযা রাখতেন, কখনো চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোযা রাখতেন।

রাসূলুল্লাহ ﷺ সোম ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখতেন :

عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : كَانَ النَّبِيُّ يَتَحَرّٰى صَوْمَ الْاِثْنَيْنِ وَالْخَمِيْسِ

২৩০. আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ সোম ও বৃহস্পতিবারের রোযার প্রতি খুবই খেয়াল রাখতেন। [সুনানে নাসাঈ, হা/২৩৬১; ইবনে মাজাহ, হা/১৭৩৯; বায়হাকী, হা/৮২৩০; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৭৯২; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১০৪৪।]

عَنْ اَبِي هُرَيْرَةَ ، اَنَّ النَّبِيَّ قَالَ : تُعْرَضُ الْاَعْمَالُ يَوْمَ الْاِثْنَيْنِ وَالْخَمِيْسِ فَأُحِبُّ اَنْ يُعْرَضَ عَمَلِيْ وَاَنَا صَائِمٌ

২৩১. আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেছেন, সোম বা বৃহস্পতিবার দিন মানুষের আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। আর রোযা অবস্থায় আমার আমল আল্লাহর কাছে পেশ করা হোক- এটা আমি পছন্দ করি। [শারহুস সুন্নাহ, হা/১৭৯৯।]

عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : كَانَ النَّبِيُّ يَصُوْمُ مِنَ الشَّهْرِ السَّبْتَ وَالْاَحَدَ وَالْاثْنَيْنَ ، وَمِنَ الشَّهْرِ الْاٰخَرِ الثُّلَاثَاءَ وَالْاَرْبَعَاءَ وَالْخَمِيْسَ

২৩২. আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ কোন মাসে শনি, রবি ও সোম এবং কোন মাসে মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার দিন রোযা রাখতেন। [তাহযীবুল আছার, হা/৯৮৪; মুসনাদে উমর ইবনে খাত্তাব, হা/১২২০।]

عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : مَا كَانَ رَسُوْلُ اللهِ يَصُوْمُ فِيْ شَهْرٍ اَكْثَرَ مِنْ صِيَامِهٖ فِي شَعْبَانَ

২৩৩. আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ শাবান মাস ছাড়া অন্য কোন মাসে এর চেয়ে বেশি রোযা রাখতেন না।

عَنْ يَزِيْدَ الرِّشْكِ قَالَ : سَمِعْتُ مُعَاذَةَ ، قَالَتْ : قُلْتُ لِعَائِشَةَ : اَكَانَ رَسُوْلُ اللهِ يَصُوْمُ ثَلَاثَةَ اَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ ؟ قَالَتْ : نَعَمْ . قُلْتُ : مِنْ اَيِّهٖ كَانَ يَصُوْمُ ؟ قَالَتْ : كَانَ لَا يُبَالِيْ مِنْ اَيِّهٖ صَامَ

২৩৪. ইয়াযীদ আর রিশক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মু‘আয (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ ﷺ কি প্রতি মাসে তিনটি করে রোযা রাখতেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, কোন কোন তারিখে রোযা রাখতেন? তিনি বললেন, কোন নির্দিষ্ট তারিখ ছিল না। সুযোগ পেলেই তিনি রোযা রাখতেন। [শারহুস সুন্নাহ, হা/১৮০২; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/১৬৭৭; মুস্তাখরাকে ইবনে ‘আওয়ানা, হা/২৩৭৩; মুসনাদে ইসহাক ইবনে রাহওয়াই, হা/১৩৯৩।]

রাসূলুল্লাহ ﷺ আশুরার রোযা রাখতেন :

عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : كَانَ عَاشُوْرَاءُ يَوْمًا تَصُوْمُهٗ قُرَيْشٌ فِي الْجَاهِلِيَّةِ ، وَكَانَ رَسُوْلُ اللهِ يَصُوْمُهٗ ، فَلَمَّا قَدِمَ الْمَدِيْنَةَ صَامَهٗ وَاَمَرَ بِصِيَامِهٖ ، فَلَمَّا افْتُرِضَ رَمَضَانُ كَانَ رَمَضَانُ هُوَ الْفَرِيْضَةُ وَتُرِكَ عَاشُوْرَاءُ ، فَمَنْ شَاءَ صَامَهٗ وَمَنْ شَاءَ تَرَكَهٗ

২৩৫. আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জাহেলী যুগে কুরাইশরা আশুরার দিন রোযা রাখত। রাসূলুল্লাহ ﷺ -ও হিজরতের পূর্বে আশুরার রোযা রাখতেন। মদিনায় হিজরতের পরও তিনি আশুরার রোযা রাখতেন এবং এ রোযা রাখার নির্দেশ দিতেন। অতঃপর রমাযানের রোযা ফরয করা হলে তা ফরযে পরিণত হয় এবং আশুরা ছেড়ে দেয়া হয়। সুতরাং যার ইচ্ছা সে তা রাখতে পারে, আবার যার ইচ্ছা ছেড়ে দিতে পারে। [মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/৬৬২; সহীহ বুখারী, হা/২০০২; সহীহ মুসলিম, হা/২৬৯৮; আবু দাউদ, হা/২৪৪৪; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৩৬২১; মুসনাদে আহমাদ, হা/৬২৯২; বায়হাকী, হা/৮১৯৫; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হা/৯৪৪৭; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৩৫৩১।]

ব্যাখ্যা : রমাযানের রোযার আগে আশুরার রোযা ফরয ছিল। রমাযানের রোযা ফরয হওয়ার পর আশুরার রোযার অপরিহার্যতা রহিত হয়ে যায়। আশুরার রোযা রাখা মুস্তাহাব। এ দিনে রাসূলুল্লাহ ﷺ নিজে রোযা রেখেছেন এবং উম্মতকে রোযা রাখতে উৎসাহ দিয়েছেন এবং ১০ তারিখের সাথে সাথে আগের দিন তথা ৯ তারিখেও রোযা রাখতে উৎসাহ দিয়েছেন। তাই মুহার্রম মাসের ৯ ও ১০ তারিখে মোট দুটি রোযা রাখা উত্তম। তবে কেবল ১০ তারিখের একটি রোযা রাখাও জায়েয আছে।

মুহার্রম মাসের কোন দিনে বা রাতে এবং আশুরার দিনে বা রাতে কোন বিশেষ নামায আদায়ের কোন প্রকার নির্দেশনা বা উৎসাহ কোন হাদীসে বর্ণিত হয়নি। এ বিষয়ক সকল কথাই বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। মিথ্যাবাদীরা এসব হাদীস নিজেরা তৈরি করে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নামে চালিয়ে দিয়েছে।

রাসূলুল্লাহ ﷺ এর আমল ছিল নিয়মিত :

عَنْ عَلْقَمَةَ قَالَ : سَاَلْتُ عَائِشَةَ ، اَكَانَ رَسُوْلُ اللهِ يَخُصُّ مِنَ الْاَيَّامِ شَيْئًا ؟ قَالَتْ : كَانَ عَمَلُهٗ دِيْمَةً ، وَاَيُّكُمْ يُطِيْقُ مَا كَانَ رَسُوْلُ اللهِ يُطِيْقُ

২৩৬. আলক্বামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ ﷺ কি ইবাদাতের জন্য কোন দিনক্ষণ নির্দিষ্ট করতেন? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর আমল ছিল সর্বকালীন। রাসূলুল্লাহ ﷺ যেমন সামর্থ্যবান ছিলেন, তোমাদের মধ্যে এমন সামর্থ্যবান কেউ আছে কি? [সহীহ বুখারী, হা/১৯৮৭; সহীহ মুসলিম, হা/১৮৬৫; আবু দাউদ, হা/১৩৭২; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/১২৮১; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৩৬৪৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫৬০৩; বায়হাকী, হা/৮২৫৫।]

عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : دَخَلَ عَلَيَّ رَسُوْلُ اللهِ وَعِنْدِيْ اِمْرَاَةٌ فَقَالَ : مَنْ هٰذِهٖ ؟ قُلْتُ : فُلَانَةُ لَا تَنَامُ اللَّيْلَ ، فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ  : عَلَيْكُمْ مِنَ الْاعْمَالِ مَا تُطِيْقُوْنَ ، فَوَاللهِ لَا يَمَلُّ اللهُ حَتّٰى تَمَلُّوْا ، وَكَانَ اَحَبَّ ذٰلِكَ اِلٰى رَسُوْلِ اللهِ الَّذِيْ يَدُوْمُ عَلَيْهِ صَاحِبُهٗ

২৩৭. আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ ﷺ আমার কাছে আসলেন। সে সময় জনৈক মহিলা আমার কাছে বসা ছিল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এ মহিলাটি কে? আমি বললাম, সে অমুক। সে সারা রাত বিনিদ্র অবস্থায় কাটায়। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আমল করা উচিত। আল্লাহর কসম! তিনি নেকী দান করতে কখনো কুন্ঠিত হন না, যতক্ষণ না তোমরা আমলে কুন্ঠিত হও। আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ এমন কাজ করতেই পছন্দ করেন, যা লোকেরা সর্বদা করতে সামর্থ্য রাখে। [ইবনে মাজাহ, হা/৪২৩৮; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/১২৮২; মুসনাদে আবু ই‘আলা, হা/৪৬৫১; বায়হাকী, হা/৪৫১৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/৯৩৩।]

عَنْ اَبِي صَالِحٍ قَالَ : سَاَلْتُ عَائِشَةَ ، وَأُمَّ سَلَمَةَ ، اَيُّ الْعَمَلِ كَانَ اَحَبَّ اِلٰى رَسُوْلِ اللهِ ؟ قَالَتَا : مَا دِيْمَ عَلَيْهِ وَاِنْ قَلَّ

২৩৮. আবু সালিহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ) ও উম্মে সালামার কাছে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে প্রিয় কাজ কোনটি ছিল? তাঁরা উভয়েই বললেন, যে আমল সব সময় করা হয়, তা যত কমই হোক না কেন। [মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/৪১৯; সহীহ বুখারী, হা/৬৪৬৫; সহীহ মুসলিম, হা/১৮৬৪; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৩২৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪০৮৯; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/১২৮৩; বায়হাকী, হা/৪৩৪২।]

রাসূলুল্লাহ ﷺ এর রাতের আমল :

عَنْ عَاصِمَ بْنَ حُمَيْدٍ قَالَ : سَمِعْتُ عَوْفَ بْنَ مَالِكٍ يَقُوْلُ : كُنْتُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ لَيْلَةً فَاسْتَاكَ ثُمَّ تَوَضَّاَ ثُمَّ قَامَ يُصَلِّيْ ، فَقُمْتُ مَعَهٗ فَبَدَاَ فَاسْتَفْتَحَ الْبَقَرَةَ فَلَا يَمُرُّ بِاٰيَةِ رَحْمَةٍ اِلَّا وَقَفَ فَسَاَلَ ، وَلَا يَمُرُّ بِاٰيَةِ عَذَابٍ اِلَّا وَقَفَ فَتَعَوَّذَ ، ثُمَّ رَكَعَ فَمَكَثَ رَاكِعًا بِقَدْرِ قِيَامِهٖ ، وَيَقُوْلُ فِيْ رُكُوْعِهٖ : سُبْحَانَ ذِي الْجَبَرُوْتِ وَالْمَلَكُوْتِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ ، ثُمَّ سَجَدَ بِقَدْرِ رُكُوْعِهٖ ، وَيَقُوْلُ فِيْ سُجُوْدِهٖ : سُبْحَانَ ذِي الْجَبَرُوْتِ وَالْمَلَكُوْتِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ ثُمَّ قَرَاَ اٰلَ عِمْرَانَ ثُمَّ سُوْرَةً سُوْرَةً يَفْعَلُ مِثْلَ ذٰلِكَ فِيْ كُلِّ رَكْعَةٍ

২৩৯. আসিম ইবনে হুমায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আওফ ইবনে মালিক (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, আমি এক রাতে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি মিসওয়াক করলেন। পরে ওযূ করলেন এবং সালাতে দাঁড়ালেন। আমিও তাঁর সঙ্গে দাঁড়ালাম। তিনি সূরা বাকারা আরম্ভ করলেন। এরপর রহমতের আয়াত পাঠ করে চুপ থাকলেন এবং রহমত প্রার্থনা করলেন। এরপর আযাবের আয়াত পাঠ করে চুপ থাকলেন এবং মুক্তি কামনা করেন। তারপর রুকূ করলেন এবং এ দু‘আ পাঠ করলেন,

سُبْحَانَ ذِي الْجَبَرُوْتِ وَالْمَلَكُوْتِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ

‘‘সুবহা-না যিল জাবারূতি ওয়াল মালাকূতি ওয়াল কিবরিয়া-ই ওয়াল ‘আযামাতি।’’

অর্থাৎ আমি পবিত্রতা ঘোষণা করছি ঐ সত্তার, যিনি মাহাত্ম্য, রাজত্ব, বড়ত্ব ও সম্মানের অধিকারী।

অতঃপর রুকূর সমপরিমাণ সময় সিজদা করেন এবং উপরোক্ত দু‘আটি আবারও পাঠ করেন। অতঃপর দ্বিতীয় রাক‘আতে সূরা আলে ইমরান পাঠ করেন। তারপর একেক রাক‘আতে একেক সূরা পাঠ করেন। [আবু দাউদ, হা/৮৭৩; সুনানে নাসাঈ, হা/১১৩২; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪০২৬; মু‘জামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/১৪৫৪০; বায়হাকী, হা/৩৫০৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/৯১২; ।]

- بَابُ مَا جَاءَ فِي قِرَاءَةِ رَسُوْلِ اللهِ

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন