মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
বিভিন্ন হাদীসের আলোকে জানা যায় যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ কোন কোন কবির কবিতার অংশ বিশেষ আবৃত্তি করেছেন। কিন্তু তিনি কখনো নিজে কোন কবিতা রচনা করেননি। তবে মাঝে মধ্যে তাঁর কোন কোন কথা ছন্দযুক্ত হয়েছে।
বিষয়বস্তুর আলোকে কখনো কবিদের নিন্দা করা হয়েছে আবার কখনো প্রশংসা করা হয়েছে। এটা নির্ভর করে সৃজনতার উপর। যে মন্দভাবে রচনা করবে সেটা অবশ্যই নিন্দাযোগ্য। তবে লক্ষণীয় হলো অধিকাংশ কবি আল্লাহর যিক্র থেকে গাফিল থাকে।
১৮০. আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ কাব্যের ছন্দে কথাবার্তা বলেন কিনা সে ব্যাপারে তাঁকে একবার জিজ্ঞেস করা হলো। তিনি বললেন, নবী ﷺ ইবনে রাওয়াহার কবিতা আবৃত্তি করতেন। আবার কখনো বলতেন-
وَيَأْتِيْكَ بِالْاَخْبَارِ مَنْ لَمْ تُزَوَّدِ
অর্থাৎ তোমার কাছে এমন ব্যক্তি সুসংবাদ নিয়ে আসেন, যাকে তুমি মজুরী দাও না। [সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/১০৭৬৯; আদাবুল মুফরাদ, হা/৮৬৭; বায়হাকী, হা/২০৯০৩।]
একবার আঙ্গুল রক্তাক্ত হয়ে গেলে এ কবিতা পাঠ করেছিলেন :
১৮২. বারা ইবনে আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি তাঁকে জিজ্ঞেস করল, আপনারা কি নবী ﷺ কে রণক্ষেত্রে রেখে পালিয়ে গিয়েছিলেন? উত্তরে তিনি বললেন, না- নবী ﷺ কখনো পালিয়ে যাননি। বরং দলের কিছুসংখ্যক তাড়াহুড়াপ্রবণ লোক হাওয়াযিনের তীরের আঘাতে টিকতে না পেরে পিছু হটে এসেছিল। (বেশিরভাগ ছিল বনু সুলায়ম-এর লোক এবং মক্কার নও মুসলিম) তখন নবী ﷺ স্বীয় খচ্চরের উপর আরোহী ছিলেন। আর লাগাম ছিল আবু সুফ্ইয়ানের হাতে। তখন নবী ﷺ আবৃত্তি করছিলেন-
অর্থাৎ হে কাফির সন্তানরা! তাঁর চলার পথ ছেড়ে দাও। আজ তাঁকে বাধা দিলে তোমাদেরকে এমন শায়েস্তা করব যে, কাঁধ থেকে মস্তক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং বন্ধুর কথা ভুলে যাবে।
উমর (রাঃ) তাকে বললেন, ইবনে রওয়াহা! আল্লাহর হারামে এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সম্মুখে কবিতা আবৃত্তি করছ? নবী ﷺ বললেন, উমর! তাকে বলতে দাও। কারণ, তার কবিতা ওদের জন্য তীরের আঘাতের চেয়েও অধিক কার্যকর। [সুনানে নাসাঈ, হা/২৮৭৩; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৪০৪।]
সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সামনে কবিতা আবৃত্তি করতেন :
১৮৪. জাবির ইবনে সামুরা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺএর মজলিসে শতাধিক বার বসেছি। আর তাতে তাঁর সাহাবীগণ কবিতা আবৃত্তি করতেন এবং জাহেলি যুগের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করতেন। আর তিনি কখনো চুপ থাকতেন। আবার কখনো তাদের সাথে মুচকি হাসতেন। [ইবনে হিববান, হা/৫৭৮১।]
১৮৫. আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী ﷺ হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, আরব কবিদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম বাণী হচ্ছে লাবীদের এই চরণ :
اَلَا كُلُّ شَيْءٍ مَا خَلَا اللهَ بَاطِلٌ
অর্থাৎ সাবধান! আল্লাহ ছাড়া সব কিছুই ধ্বংসশীল। [সহীহ মুসলিম, হা/৬০২৫; ইবনে হিববান, হা/৫৭৮৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/১০২৩৫; জামেউস সগীর, হা/১০০৬।]
ব্যাখ্যা : আরবের একজন সুবিখ্যাত কবি ছিলেন লাবীদ ইবনে রাবিয়া আল-আমিরী। তিনি তার গোত্রের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট এসে ইসলাম কবুল করেন। ইসলাম কবুলের পর তিনি আর কবিতা রচনা করেননি। তিনি বলতেন, আমার জন্য কুরআনই যথেষ্ট।
লাবীদের এ উক্তিকে রাসূলুল্লাহ ﷺ সবচেয়ে সত্য বলেছেন এজন্য যে, এটি কুরআনের নিচের আয়াতটির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
﴿ كُلُّ شَيْءٍ هَالِكٌ إِلَّا وَجْهَهٗ﴾
অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া সবকিছুই ধ্বংসশীল। [সূরা ফুরকান- ৮৮।]
১৮৬. আমর ইবনে শারীদ (রাঃ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একবার আমি বাহনে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর পেছনে বসা ছিলাম। তারপর আমি তাঁকে উমাইয়্যা ইবনে আবূ-সাল্ত বিরচিত একশ’ চরণ বিশিষ্ট একটি কবিতা আবৃত্তি করে শোনালাম। কবিতা শেষ হলে তিনি আমাকে বললেন, আরো শোনাও। এরপর তিনি বললেন, সে ইসলাম গ্রহণের কাছাকাছি এসে গেছে। [সুনানে কুবরা লিল বায়হাকী, হা/২১৫৬০; সহীহ মুসলিম, হা/৬০২২।]
ব্যাখ্যা : উমাইয়া ইবনে আবু সালত জাহিলী যুগের একজন স্বনামধন্য বিখ্যাত কবি ছিলেন। তাঁর কবিতাতে হক্ব ও সত্য কথা ফুটে উঠত। তিনি জাহেলী যুগেও ইবাদাত-বন্দেগী করতেন এবং পুনরুত্থানে বিশ্বাস রাখতেন। তাই রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তিনি ইসলাম গ্রহণের দার প্রান্তে এসেছিলেন। তিনি ইসলামের যুগ পেয়েছিলেন; কিন্তু ইসলাম গ্রহণের তাওফীক হয়নি।
নবী ﷺ কবিতা আবৃত্তি করার উদ্দেশ্যে হাস্সান (রাঃ) [হাস্সান ইবনে সাবিত (রাঃ) ছিলেন বিখ্যাত একজিন সাহাবী কবি। তার উপাধি ছিল شَاعِرُ النَّبِيِ তথা নবী ﷺ এর কবি।] এর জন্য মসজিদে একটি মিম্বার তৈরি করেছিলেন :
১৮৭. আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ হাস্সান ইবেন সাবিত (রাঃ)-এর জন্য মসজিদে একটি মিম্বার স্থাপন করেছিলেন যেন তিনি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর প্রশংসার কবিতা পাঠ করেন অথবা তিনি বলেছেন, যেন তিনি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর পক্ষ হতে কাফিরদের নিন্দাবাদের উত্তর দেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ! রূহুল কুদ্স [জিবরীল (আঃ)] দ্বারা হাস্সানকে সাহায্য করেন যতক্ষণ সে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর প্রশংসা করবে কিংবা কাফিরদের নিন্দার উত্তর দেবে। [আবু দাউদ, হা/৫০১৭; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৬০৫৮; মু‘জামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/৩৫০১; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৪০৮; সিলসিলাহ সহীহাহ, হা/১৬৫৭।]
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।