hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আসরের সলাতের সঠিক ওয়াক্ত

লেখকঃ কামাল আহমাদ

৬০
সৌদি প্রবাসী হানাফী আলেম-৬:
ইজতিহাদ বা গবেষণার কারণে যদি কেউ এক ঘণ্টা বা পৌনে এক ঘণ্টা পরে সলাত আদায় করেন এবং তাদের দেশে ঐ সময় সলাত শুরু হয়, তা হলে সেক্ষেত্রে তিনি আল্লাহর কাছে সওয়াব পাবেন। তিনি এর কারণে গোনাহগার হবেন না। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি উদাসীনতা করে সলাতকে দেরি করবে পড়বে ইচ্ছাকৃত, সে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে গোনাহগার হবেন। অতএব হাদীসে যে একাকি সলাতের অনুমোদন দেয়া হয়েছে সেটি একটি প্রসঙ্গে, আর আমাদের দেশের পরিস্থিতিটা হলো সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রসঙ্গে।

পর্যালোচনা-৬: শাসকদের ব্যস্ততা ও উদাসীনতা যেভাবে সলাতকে দেরি করার জন্য দায়ি, একইভাবে আলেমদের ফাতাওয়াতে আসরের সলাত দেরিতে আদায় করাকে মুস্তাহাব বলাটাও সমানভাবে দায়ী। যেমন বলা হয়েছে:

وَيُسْتَحَبُّ تَأْخِيرُ الْعَصْرِ فِيْ كُلِّ زَمَانٍ مَا لَمْ تَتَغَيَّرْ الشَّمْسُ .

‘‘সবসময় আসরের সলাত বিলম্বে আদায় করা মুস্তাহাব, যতক্ষণ না সূর্যের রং বিবর্ণ হয়।’’ [. ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী (ইফা) ১/১৪৫ পৃ.। অনুরূপ হানাফী ফিক্বহ ‘আল-হিদায়া’ (ইফা) ১/৬১ পৃ., আশরাফুল হিদায়া ১/২৭৪ পৃ.।]

পক্ষান্তরে সহীহ ইবনু খুযায়মাতে এ সম্পর্কিত দুটি অনুচ্ছেদ নিম্নরূপ:

ﺑَﺎﺏُ اﺳْﺘِﺤْﺒَﺎﺏِ ﺗَﻌْﺠِﻴﻞِ ﺻَﻼَﺓِ اﻟْﻌَﺼْﺮِ.

‘‘অনুচ্ছেদ: আসরের সলাত তাড়াতাড়ি আদায় করা মুস্তাহাব।’’

بَا ﺏُ ﺫِﻛْﺮِ اﻟﺘ َّ ﻐْﻠِﻴﻆِ ﻓِﻲ ﺗَﺄْﺧِﻴﺮِ ﺻَﻼَﺓِ اﻟْﻌَﺼْﺮِ ﺇِﻟَﻰ اﺻْﻔِﺮ َا ﺭِ اﻟﺸ َّ ﻤْﺲِ.

‘‘অনুচ্ছেদ: আসরের সলাতকে সূর্য হলুদ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা সম্পর্কে কঠোরতার বর্ণনা।’’

উক্ত মর্মে সহীহ ইবনু হিব্বানেও কয়েকটি অনুচ্ছেদ এসেছে। ইমাম নাসাঈ (রহ) এ সম্পর্কে অনুচ্ছেদ এনেছেন: تَعْجِيْلِ الْعَصْرِ ‘আসরের সলাত শীঘ্রই আদায় করা।’

এ ছাড়া সূর্যের তাপ ঠান্ডা হওয়ার পূর্বে হানাফী মাযহাবে আসরের সলাতের ওয়াক্ত শুরু হয় না। এই শর্তটিও নবী (স) ও সাহাবীদের আমলের বিরোধী। সুতরাং আমরা কীভাবে হানাফীদের আসরের সলাতে দেরি করাকে মুস্তাহাব হিসেবে মেনে নিতে পারি?

নিচের আয়াতে শাসক ও আলেম উভয়কে একই দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যেমন- আল্লাহ তাআলা বলেন:

يا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ .

‘‘হে মু’মিনগণ! তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহ’র, আনুগত্য কর তাঁর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে উলূল আমরের (নির্দেশদাতাদের)।’’ [সূরা নিসা : ৫৯ আয়াত]

তাফসীর ইবনু কাসির, তাফসীর কুরতুবী, তাফসীর বাগাভী, তাফসীর ফতহুল ক্বাদীর, তাফসীর আহসানুল বায়ান, তাফসীরে আবূ বাকার যাকারিয়া (সৌদি সরকার প্রকাশিত) প্রভৃতি তাফসীরে ‘উলূল আমর’ বলতে শাসক ও আলেম উভয়কে বুঝানো হয়েছে। ইমাম নাওয়াবী (নববী রহ.) বলেছেন :

فى عبد الله بن حذافة أمير السرية قال العلماء المراد بأولي الأمر من أوجب الله طاعته من الولاة والأمراء هذا قول جماهير السلف والخلف من المفسرين والفقهاء وغيرهم وقيل هم العلماء وقيل الأمراء والعلماء وأما من قال الصحابة خاصة فقط فقد أخطأ .

‘‘আলেমগণ বলেছেন: ‘উলূল আমর’ দ্বারা রাষ্ট্র ও শাসককে বুঝানো উদ্দেশ্য- যার আনুগত্য ওয়াজিব। এটাই অধিকাংশ সালাফ, খালাফ, মুফাসসির, ফক্বীহ প্রমুখের মত। কেউ কেউ বলেছেন: এর অর্থ আলেমগণ। অনেকে বলেছেন: শাসক ও আলেম উভয়। তবে যারা এর অর্থ কেবল সাহাবীদের জন্য খাস করেছেন, তারা ভুল করেছেন।’’ [. শরহে মুসলিম নাওয়াবী - কিতাবুল ইমারাত [ باب وجوب طاعة الامراء ...]। আলেমগণ এই জন্যই ‘উলূল আমর’ যে - তারা আমর বিল মা‘রুফ (সৎ কাজের আদেশ) ও নাহি আনিল মুনকারের (অসৎ কাজের নিষেধ) বিষয়ে সবচেয়ে বেশী সমঝদার। আর এ কারণেই তারা শাসনযন্ত্রের অধিকারী না হওয়া সত্ত্বেও এই পদবীর অধিকারী (দ্র. সূরা নিসা: ৮৩, সূরা ফাতির ৩৫: ২৮ আয়াত, সূরা তাওবা: ১২২ আয়াত, সূরা আলে-ইমরান: ১১৪ আয়াত)। অবশ্য শাসক ও আলেমের মূল্যায়ন তাদের স্ব স্ব অবস্থান থেকেই করতে হবে।]

ইজতিহাদ সম্পর্কিত হাদীসটির অবস্থা অনুরূপ। রসূলুল্লাহ (স) বলেছেন:

إِذَا حَكَمَ الْحَاكِمُ فَاجْتَهَدَ ثُمَّ أَصَابَ فَلَهُ أَجْرَانِ وَإِذَا حَكَمَ فَاجْتَهَدَ ثُمَّ أَخْطَأَ فَلَهُ أَجْرٌ .

‘‘যখন হাকিম বিচারের সময় ইজতিহাদ করে, তখন বিচার সহীহ হলে সে দুটি সওয়াব পায়। আর যখন বিচারের সময় ইজতিহাদ করে, তখন ভুল হলে সে একটি সওয়াব পায়।’’ [. সহীহ বুখারী হা/৭৩৫২।]

আরবিতে ‘হাকিম’ অর্থ : বিচারক, শাসক, নির্দেশদাতা প্রভৃতি। [. ড. মুহাম্মাদ ফজলুর রহমান, আল-মু‘জামুল ওয়াফি।]

অথচ হাদীসটি আলেমদের ইজতিহাদের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কেননা, আলেমরাও সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের অন্যতম নির্দেশদাতা। তা ছাড়া আল্লাহ তাআলা-ও শরিআতি ফায়সালার ক্ষেত্রে নবী-রসূলদের সাথে আলেমদেরকেও শরিআতি হুকুম-আহকামের ফায়সালাকারী ও সংরক্ষক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এ মর্মে আল্লাহ তাআলা বলেন: [সূরা মায়িদা: ৪৪ আয়াত]

إِنَّا أَنزَلْنَا التَّوْرَاةَ فِيهَا هُدًى وَنُورٌ ج يَحْكُمُ بِهَا النَّبِيُّونَ الَّذِينَ أَسْلَمُوا لِلَّذِينَ هَادُوا وَالرَّبَّانِيُّونَ وَالْأَحْبَارُ بِمَا اسْتُحْفِظُوا مِن كِتَابِ اللَّهِ وَكَانُوا عَلَيْهِ شُهَدَاءَ  ج.

‘‘নিশ্চয় আমরা তাওরাত নাযিল করেছিলাম; এতে ছিল হেদায়াত ও আলো; নবীগণ, যারা ছিলেন অনুগত, তারা ইয়াহুদীদেরকে তদনুসারে হুকুম দিতেন। আর রব্বানী ও বিদ্বানগণও, কারণ তাদেরকে আল্লাহর কিতাবের রক্ষক করা হয়েছিল।’’

লক্ষণীয়, এখানে নবীদের সাথে ইয়াহুদী আলেমদেরকেও হাকিম বা হুকুমদাতা ও কিতাবের রক্ষক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অতঃপর আয়াতটি শেষ হয়েছে এভাবে:

فَلَا تَخْشَوُا النَّاسَ وَاخْشَوْنِ وَلَا تَشْتَرُوا بِآيَاتِي ثَمَنًا قَلِيلًا   ج وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ .

‘‘কাজেই তোমরা মানুষকে ভয় করো না, বরং আমাকেই ভয় ভয় কর। আর আমার আয়াতসমূহের বিনিময়ে তুচ্ছ বস্তু ক্রয় করো না। আল্লাহ যা নাযিল করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিধান দেয় না, তারাই কাফির।’’ [সূরা মায়িদা: ৪৪ আয়াত]

বুঝা যাচ্ছে, এ সমস্ত আয়াত শাসক, বিচারক ও আলেম- সবার উদ্দেশ্যেই প্রযোজ্য। সাথে সাথে আলোচ্য আয়াতের আলোকে মূল ওহীর বিরোধী ফায়সালাকারীকে ‘কাফির’ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। আর সূরা নিসার ৫৯ নং আয়াতের আলোকে উলূল-আমরের সাথে বিরোধ হলে, কুরআন ও সুন্নাহর দিকে ফিরতে বলা হয়েছে।

আফসোস! মুজতাহিদ ইমামের মতামত আমরা কুরআন ও সুন্নাহ বিরোধী পাওয়া সত্ত্বেও ‘ইজতিহাদী’ হুকুম গণ্য করে- সেগুলো মেনে চলাটা জায়েয করে চলছি। আল্লাহ তাআলা-ই প্রকৃত হিদায়াতদাতা।

ইজতেহাদী মাসআলায় মুজতাহিদ গুনাহগার হন না তার অর্থ এই নয় যে, ‘‘হক্ব তালাশ করবে না বরং তিনি যে ফাতওয়া দিয়েছেন তার উপর অটল থাকবে।’’ বরং হক্ব তালাশ করতে হবে এবং ভুলকে অনুসরণ করা যাবে না। ইবনু তাইমিয়াহ (রহ) বলেন:

إن إثمها قد يزول عن بعض الأشخاص لاجتهاد أو غيره، كما يزول إثم النبيذ والربا المختلف فيهما عن المجتهدين من السلف، ثم مع ذلك يجب بيان حالها، وأن لا يقتدى بمن استحلها، وأن لا يقصر في طلب العلم المبين لحقيقتها .

‘‘তার (বিদআতের) গুনাহ ইজতিহাদ বা অন্যান্য কারণে ব্যক্তি-বিশেষের ক্ষেত্রে মাফ হতে পারে। যেমন- নাবীয ও সূদের নাম দূর হয়ে যাওয়া। কেননা এ ব্যাপারে মুজতাহিদ সালাফদের মধ্যে ইখতিলাফ রয়েছে। এরপরেও ওয়াজিব হল, বিদআতের অবস্থা তুলে ধরা, যারা তা হালাল মনে করেন তার অনুসরণ না করা এবং সঠিক জিনিস উদঘাটনকারী ইলম অনুসন্ধানে কার্পণ্য না করা। [. ইকতিযাউ সিরাতিল মুস্তাকীম ২/৬১০।]

কোনো মুজতাহিদ কোনো মাসআলায় ভুল ফাতওয়া দিলে তার গুনাহ মাফ হওয়ার অর্থ এ নয় যে, উক্ত কাজটি হালাল হয়ে যায়। বরং সেই শরিআত পরিপন্থী কাজটি সর্বদা শরিআত পরিপন্থী হিসেবেই গণ্য হবে।

সাঈদ বিন নাসের আল-গামেদী বলেন:

فزوال الإثم عن المجتهد في هذه المسائل الفرعية، وحصول الأجر له لا يدل على جواز فعله ولا على جواز الاقتداء به .

‘‘এসব ফিকহী মাসায়েলে মুজতাহিদের গুনাহ মাফ ও নেকির ভাগিদার হওয়া প্রমাণ করে না যে, সে কাজ বৈধ এবং তার অনুসরণ বৈধ।’’ [. হাকীকাতুল বিদআহ ওয়া আহকামুহা ২/৬৭ পৃ.।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন