hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আসরের সলাতের সঠিক ওয়াক্ত

লেখকঃ কামাল আহমাদ

৬৯
সৌদি প্রবাসী হানাফী আলেম-১৫:
আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা)-এর যুগে ওয়ালিদ বিন উক্ববাহ নামক একজন পাপিষ্ঠ, যালিম এক ফাসিক্ব শাসক মাতাল হয়ে এসে সে ইমামতি করত। ফজরের সলাত প্রায়ই সে চার রাকআত আদায় করাতো। একবার চার রাকআত পড়ার পরে সে বলল, আরো পড়ব? তখন আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রা) বললেন: তুমি তো প্রতিদিনই আমাদেরকে বেশি করে- চার রাকআত সলাত আদায় করাও। তা হলে আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রা)-এর মতো এত বড় আলেম সাহাবী- একজন মাতাল, ফাসেক্ব লোক সলাত পড়াচ্ছে ইমামতি করে- তবুও তিনি জামাআত ছেড়ে একাকি সলাত আদায় করতেন না।

পর্যালোচনা-১৫: উক্ত হাদীসটি থেকে বুঝা যায়, নিয়মিতভাবে সাহাবী ওয়ালিদ বিন উক্ববাহ মাতাল অবস্থায় চার রাকআত ফজরের সলাত আদায় করাতেন। এরপরেও ইবনু মাসউদ (রা) তার পিছনে সলাত আদায় করতেন। কিন্তু সহীহ মুসলিমের হাদীস বলছে সাহাবী মাতাল ছিলেন বটে, কিন্তু তিনি দুই রাকআতই আদায় করেছিলেন। বর্ণনাটি নিম্নরূপ:

عن حُضَيْنُ بْنُ الْمُنْذِرِ أَبُو سَاسَانَ، قَالَ : شَهِدْتُ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ وَأُتِيَ بِالْوَلِيدِ قَدْ صَلَّى الصُّبْحَ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ قَالَ : أَزِيدُكُمْ، فَشَهِدَ عَلَيْهِ رَجُلَانِ أَحَدُهُمَا حُمْرَانُ أَنَّهُ شَرِبَ الْخَمْرَ، وَشَهِدَ آخَرُ أَنَّهُ رَآهُ يَتَقَيَّأُ، فَقَالَ عُثْمَانُ : إِنَّهُ لَمْ يَتَقَيَّأْ حَتَّى شَرِبَهَا، فَقَالَ : يَا عَلِيُّ، قُمْ فَاجْلِدْهُ

‘‘হুসাইন বিন মুনযির আবূ সাসান বর্ণনা করেন: আমি উসমান বিন আফফান (রা)-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তখন ওয়ালিদকে তার কাছে আনা হলো। সে ফজরের দুই রাকআত সলাত আদায় করে বলেছিল, তোমাদের জন্য আরও পড়ব? তখন দুই ব্যক্তি ওয়ালিদের ব্যাপারে সাক্ষ্য দিল। তন্মধ্যে একজনের নাম হুমরান। সে বলল: সে মদ খেয়েছে। দ্বিতীয় ব্যক্তি সাক্ষ্য দিল যে, সে তাকে বমি করতে দেখেছে। তখন উসমান (রা) বললেন: সে মদ খাওয়ার পরই বমি করেছে। অতএব তিনি বললেন: হে আলী (রা) ! আপনি উঠুন এবং তাকে বেত্রাঘাত করুন।’’ [. সহীহ মুসলিম হা/৪৩৪৯ (৩৮/১৭০৭)।]

সহীহ মুসলিমের ঘটনাটি থেকে বুঝা যায়,

১) ওয়ালিদ বিন উকবাহ’র মদ খেয়ে ইমামতি করার ঘটনাটি বারংবার ঘটেনি।

২) ওয়ালিদ (রা) দুই রাকআতই পড়িয়েছিলেন, আরও রাকআত পড়ানোর কথা উত্থাপন করেছিলেন।

৩) সাহাবীদের সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধের দায়িত্ববোধ এতটাই বেশি ছিল যে, তারা এ ধরনের অপরাধের বিচার অতি দ্রুত সম্পন্ন করতেন। দিনের পর দিন এ ধরনের প্রকাশ্য পাপকে জিইয়ে রাখতেন না। এ পর্যায়ে আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ ও ওয়ালিদ বিন উক্ববাহ (রা)-এর নিম্নোক্ত ঘটনাটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য:

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُثْمَانَ عَنِ الْقَاسِمِ عَنْ أَبِيهِ أَنَّ الْوَلِيدَ بْنَ عُقْبَةَ أَخَّرَ الصَّلَاةَ مَرَّةً فَقَامَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ فَثَوَّبَ بِالصَّلَاةِ فَصَلَّى بِالنَّاسِ فَأَرْسَلَ إِلَيْهِ الْوَلِيدُ مَا حَمَلَكَ عَلَى مَا صَنَعْتَ أَجَاءَكَ مِنْ أَمِيرِ الْمُؤْمِنِينَ أَمْرٌ فِيمَا فَعَلْتَ أَمْ ابْتَدَعْتَ قَالَ لَمْ يَأْتِنِي أَمْرٌ مِنْ أَمِيرِ الْمُؤْمِنِينَ وَلَمْ أَبْتَدِعْ وَلَكِنْ أَبَى اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلَيْنَا وَرَسُولُهُ أَنْ نَنْتَظِرَكَ بِصَلَاتِنَا وَأَنْتَ فِي حَاجَتِكَ .

‘‘আব্দুল্লাহ বিন উসমান থেকে বর্ণিত, তিনি কাসিম থেকে তিনি তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন: একবার ওয়ালিদ বিন উক্ববা সলাতকে বিলম্বিত করলেন এমতাবস্থায় আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা) দাঁড়িয়ে গেলেন এবং নিজে নিজেই ইক্বামত দিলেন। অতঃপর তিনি ইমামতি করলেন, এরপর ওয়ালিদ তাঁর (ইবনু মাসউদের) কাছে (লোক) পাঠালেন। (তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো) তুমি যা করলে তাতে কিসে তোমাকে প্ররোচিত করল? তোমার কাছে আমীরুল মু’মিনীন বা রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশ আছে কি? নাকি তুমি বিদআত করছ? তিনি জবাব দিলেন, রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশ আমার কাছে আসেনি এবং আমি বিদআতও করছি না। বরং আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রসূলের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে অস্বীকৃতি এসেছে যে, তোমার ব্যস্ততার কারণে আমরা তোমার জন্য সালাতের অপেক্ষা করব।।’’ [. মুসনাদু আহমাদ (ইফা) ২/২৬৬ পৃ. হা/১৪০৬। মুহাক্কিক্ব শুআয়েব আরনাউত হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। [তাহক্বীক্ব মুসনাদু আহমাদ হা/৪২৯৮]]

বুঝা যাচ্ছে, দিনের পর দিন মাতাল অবস্থায় একজন সাহাবী চার রাকআত ফজরের সলাত পড়াতে থাকবেন এবং এক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে অন্য সাহাবীরা তার আনুগত্য করার মধ্যে দিয়ে একটি মাসআলা প্রবর্তন করবেন- এমনটি ভাবাও অন্যায়। শীআরা যতগুলো ঘটনা সাহাবীদের বিরুদ্ধে প্রচার করে থাকে- তার মধ্যে আলোচ্য প্রবাসী বক্তা বর্ণিত ‘ফজরের সলাত চার রাকআত পড়ার’ ঘটনাটি অন্যতম। এ কারণে সনদগত দিকে থেকে সাহাবী ওয়ালিদ বিন উক্ববাহ (রা) সম্পর্কিত বর্ণনাটিকে সহীহ গণ্য করা হলেও এর মতনগত আপত্তি চলে আসে। তা ছাড়া হাফেয ইবনু হাজার (রহ) ইমাম তাবারী (রহ)-এর সূত্রে লিখেছেন, কুফাবাসী শত্রুতাবশত তাঁর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিল, ইবনু আব্দুল বার সেটা অস্বীকার করেন। [. হাফেয ইবনু হাজার (রহ), আল-ইসাবাহ ৬/৬১৭পৃ. (উর্দু ৬/৬০৩): ويقال ان بعض أهل الكوفة تعصبوا عليه فشهدوا عليه بغير الحق حكاه الطبري واستنكره بن عبد البر .] পক্ষান্তরে ইমাম ইবনু কাসির (রহ)-ও ইমাম তাবারী (রহ)-এর মতো একই কথা উল্লেখ করেছেন। [. হাফেয ইবনু কাসির, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া (ইফা) ৭/২৮১ পৃ.।] শাইখ ইরশাদুল হক্ব আসারীও উক্ত ইমামদ্বয়ের মতো বিষয়টির প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। [. ইরশাদুল হক্ব আসারী, মাক্বামে সাহাবা (ফয়সালাবাদ: ইদারাতুল উলূম আল-আসারিয়্যা) পৃ. ৮২।] ফলে উক্ত বিচারে প্রদত্ত সাক্ষ্যগুলো সন্দেহের সৃষ্টি করে। আর হাদীস মানার ক্ষেত্রে সবাধিক সহীহ ও সন্দেহমুক্ত হাদীসটিই মানতে হবে। তা ছাড়া সাহাবীদের বিরুদ্ধে কটুক্তি নির্ভর বর্ণনার মোকাবেলায় কটুক্তিহীন সহীহ বর্ণনা পাওয়া গেলে সেটাই উল্লেখ করা উচিৎ।

আমরা শেষোক্ত আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা)-এর আমলটিতে দেখেছি, তিনি শাসক কর্তৃক সলাতে দেরি করাতে, তার অপেক্ষায় বসে থাকেননি। তেমনি ইবনু মাসউদ (রা) এমন হাদীস বর্ণনা করেছেন যেখানে রসূলুল্লাহ (স) কর্তৃক সলাতের ওয়াক্ত পিছিয়ে দেয়া, সুন্নাতকে বিলুপ্ত করা ও বিদআতী শাসকের পিছনে সলাত আদায় করতে নিষেধ করা হয়েছে। [দ্র. হা/৪২]

আর আমাদের আলোচনাও সলাত দেরিতে আদায় করাকে কেন্দ্র করে। ফাসেক ও জালিম শাসকের আনুগত্য নিয়ে নয়। এ পর্যায়ে সলাত দেরিতে আদায়ের ক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কিত হাদীস উল্লেখ না করে, জালিম-ফাসকের আনুগত্য সম্পর্কিত দলিল উপস্থাপন অগ্রহণযোগ্য। যারা উপস্থাপন করেছেন- তারা আলোচনা ভিন্ন প্রসঙ্গের দিকে নিয়ে গেছেন। আর এটা নিশ্চিত ভুল সিদ্ধান্ত। তা ছাড়া আমরা আগেই উল্লেখ করেছি, বক্তার এটা ‘‘ক্বিয়াস মা‘আল ফারেক্ব’’। তাই বক্তার এ দাবি মূল্যহীন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন