hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাওহীদের মর্মকথা

লেখকঃ আব্দুর রহমান বিন নাসের সাদী

১০
৭ম অধ্যায়: বালা মুসীবত দূর করা অথবা প্রতিরোধ করার উদ্দেশ্যে রিং, তাগা [সূতা] ইত্যাদি পরিধান করা শিরক
১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন,

قُلْ أَفَرَأَيْتُمْ مَا تَدْعُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ إِنْ أَرَادَنِيَ اللَّهُ بِضُرٍّ هَلْ هُنَّ كَاشِفَاتُ ضُرِّهِ ( الزمر : ৩৮)

[হে রাসূল] ‘‘আপনি বলে দিন, তোমরা কি মনে করো, আল্লাহ যদি আমার কোন ক্ষতি করতে চান তাহলে তোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাদেরকে ডাকো, তারা কি তাঁর [নির্ধারিত] ক্ষতি হতে আমাকে রক্ষা করতে পারবে?’’ (ঝূমার: ৩৮)।

২। সাহাবী ইমরান বিন হুসাইন রা. থেকে বর্ণিত আছে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘এটা কি?’’ লোকটি বলল, এটা দুর্বলতা দূর করার জন্য দেয়া হয়েছে। তিনি বললেন, ‘‘এটা খুলে ফেলো। কারণ এটা তোমার দুর্বলতাকেই শুধু বৃদ্ধি করবে। আর এটা তোমার সাথে থাকা অবস্থায় যদি তোমার মৃত্যু হয়, তবে তুমি কখনো সফলকাম

ব্যাখ্যা

বালা মুসীবত দূর করা কিংবা প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে রিং, সূতা ইত্যাদি ব্যবহার করা শিরক

এ অধ্যায়টি সঠিকভাবে বুঝার বিষয়, এর বিভিন্ন উপকরণের হুকুম-আহকাম গুলো জানার উপর নির্ভরশীল। এ ব্যাপারে বিস্তারিত কথা হচ্ছে এই যে, বিভিন্ন কারণ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত তিনটি বিষয় বান্দাকে অবশ্যই জানতে হবে। আর তা হচ্ছে,

১। শরীয়ত এবং তাকদীরের দিক থেকে প্রমাণিত উপায় উপকরণ ব্যতীত কোন কিছুকেই উপকরণ মনে করা যাবে না।

২। বান্দা উপকরণের উপর নির্ভরশীল হতে পারবে না বরং সে নির্ভরশীল হবে উপকরণের স্রষ্টা ও নির্ধারিত তাকদীরের উপর। এর সাথে সাথে শরীয়ত সম্মত পন্থায় কাঙ্ক্ষিত কাজটি সম্পন্ন করবে এবং এর দ্বারা কল্যাণ লাভে আগ্রহী হবে।

৩। বান্দাকে এ কথা অবশ্যই জেনে রাখতে হবে যে, উপকরণ যত বড় আর শক্তিশালীই হোক না কেন তা সম্পৃক্ত হচ্ছে আল্লাহর এমন ফয়সালা ও তাকদীরের হতে পারবে না।’’ (আহমদ)

৩। উকবা বিন আমের রা. হতে একটি ‘‘মারফু’’ হাদিসে বর্ণিত আছে, من تعلق تميمة فلا أتم الله له، ومن تعلق ودعة فلا ودع الله له .

‘‘যে ব্যক্তি তাবিজ ঝুলায় (পরিধান করে) আল্লাহ যেন তার আশা পূরণ না করেন। যে ব্যক্তি কড়ি, শঙ্খ বা শামুক ঝুলায় তাকে যেন আল্লাহ রক্ষা না করেন।’’ অপর একটি বর্ণনায় আছে,

من تعلق تميمة فقد أشرك .

‘‘যে ব্যক্তি তাবিজ ঝুলালো সে শিরক করল।’’

৪। ইবনে আবি হাতেম হুযাইফা থেকে বর্ণনা করেছেন, ‘‘জ্বর নিরাময়ের জন্য হাতে সূতা বা তাগা পরিহিত অবস্থায় তিনি একজন লোককে দেখতে পেয়ে তিনি সে সূতা কেটে ফেললেন এবং কুরআনের এ আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন,

وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُونَ ( يوسف : ১০৬)

সাথে যেখান থেকে বের হয়ে আসার কোন পথ নেই। এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা যেমন চান তেমনই করবেন। যদি তিনি এর উপকরণ সমূহকে কার্যকর রাখতে চান তাহলে তার হেকমতের দাবি অনুযায়ী তা কার্যকর থাকবে। যাতে বান্দা মুসাবিবব (কারণ সৃষ্টিকারী) এবং কারণসমূহের মধ্যে অন্তর্নিহিত সম্পর্কের ভিত্তিতে তার পূর্ণ হিকমতের কথা জানতে পারে। আল্লাহ যদি চান তাহলে এগুলোকে তার ইচ্ছা মোতাবেক পরিবর্তন করবেন। যাতে বান্দা উপকরণ ও তদসংক্রান্ত বিষয়ের উপর নির্ভরশীল না হয় এবং আল্লাহর পূর্ণ হিকমতের কথা জানতে পারে। কার্য পরিচালনা ও সম্পাদনের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা ও ইচ্ছা একমাত্র আল্লাহ তাআলার। যাবতীয় উপায়- উপকরণ গ্রহণের ক্ষেত্রে বান্দার চিন্তা ও কর্মে উপরোক্ত ধারণা পোষণ করা ওয়াজিব।

এতটুকু জানার পর যে ব্যক্তি রিং, বালা, সূতা ইত্যাদি পরিধান করল এবং এর দ্বারা বালা-মুসীবত দূর করা কিংবা তা আসার আগেই প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে বিশ্বাস করল সে আল্লাহর সাথে শিরক করল। বান্দা যদি এ ধারণা পোষণ করে যে, রিং বালা, সূতাই মুসীবত দূর করতে এবং প্রতিরোধ করতে সক্ষম তাহলে এটা হবে শিরকে আকবার। শুধু তাই নয়, এটা আল্লাহর রুবুবিয়্যাতের মধ্যে শিরক। কেননা বান্দা এমতাবস্থায় সৃষ্টি ও বিশ্বনিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আল্লাহর অংশীদার রয়েছে বলে বিশ্বাস করে।

‘‘ তাদের অধিকাংশই মুশরিক অবস্থায় আল্লাহকে বিশ্বাস করে’’

(ইউসুফঃ ১০৬)

এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায়,

১। রিং (বালা) ও সূতা ইত্যাদি রোগ নিরাময়ের উদ্দেশ্যে পরিধান করার ব্যাপারে অধিক কঠোরতা।

২। স্বয়ং সাহাবীও যদি এসব জিনিস পরিহিত অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন তাহলে তিনিও সফলকাম হতে পারবেন না। এতে সাহাবায়ে কেরামের এ কথারই প্রমাণ পাওয়া যায় যে, ছোট শিরক কবিরা গুনাহর চেয়েও মারাত্মক।

৩। অজ্ঞতার অজুহাত গ্রহণযোগ্য নয়।

৪। لا تزيدك إلا وهنا ইহা তোমার দুর্বলতা ছাড়া আর কিছুই বৃদ্ধি করবে না।’’ এ কথা দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, রোগ নিরাময়ের উদ্দেশ্যে রিং বা সূতা পরিধান করার মধ্যে কোন কল্যাণ নেই বরং অকল্যাণ আছে।

৫। যে ব্যক্তি উপরোক্ত কাজ করে তার কাজকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।

৬। এ কথা সুস্পষ্ট যে, যে ব্যক্তি (রোগ নিরাময়ের জন্য কোন কিছু

এরকম করা আল্লাহর উবুদিয়্যাতের মধ্যে শিরক করার অন্তর্ভুক্ত। কেননা এমতাবস্থায় বান্দা পরিধানকৃত বস্ত্তকে ইলাহ হিসেবে গণ্য করে এবং কল্যাণ লাভের আশায় তার অন্তরকে উক্ত বস্ত্তর সাথে সম্পৃক্ত করে রাখে। আর সে যদি একথা বিশ্বাসও করে যে, একমাত্র আল্লাহ তাআলাই বালা-মুসীবত দূর করেন এবং উঠিয়ে নেন তবে এগুলোকে সে এমন অসিলা হিসেবে বিশ্বাস করে যার দ্বারা বালা-মুসীবত দূর করা যায়। এমতাবস্থায় সে এমন জিনিসকে মুসীবত দূর করার উপকরণ বা অছিলা হিসেবে গণ্য করল যা শরিয়তের দিক থেকে অছিলা হিসেবে আদৌ গণ্য নয়। এ রকম করা শরীয়তে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

এ ধরনের কাজকে শরীয়ত দৃঢ়ভাবে নিষেধ করে। আর শরীয়ত যে জিনিসটি নিষেধ করে তা আদৌ কল্যাণকর নয়।

তাকদীর এমন কোন প্রতিশ্রুতি কিংবা অপ্রতিশ্রুত উপকরণ নয় যার মাধ্যমে উদ্দেশ্য হাসিল করা যায়। আর উপকার সাধনকারী বৈধ কোন ঔষধের মধ্যেও গণ্য নয়।

[রিং সূতা] শরীরে লটকাবে তার কুফল তার উপরই বর্তাবে।

৭। এ কথাও সুস্পষ্ট যে, যে ব্যক্তি রোগ নিরাময়ের উদ্দেশ্যে তাবিজ ব্যবহার করল সে মূলত: শিরক করল।

৮। জ্বর নিরাময়ের জন্য সূতা পরিধান করাও শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

৯। সাহাবী হুযাইফা কর্তৃক কুরআনের আয়াত তেলাওয়াত করা দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, সাহাবায়ে কেরাম শিরকে আসগরের দলিল হিসেবে ঐ আয়াতকেই পেশ করেছেন যে আয়াতে শিরকে আকবার বা বড় শিরকের কথা রয়েছে। যেমনটি ইবনে আববাস রা. বাকারার আয়াতে উল্লেখ করেছেন।

১০। নজর বা চোখ লাগা থেকে আরোগ্য লাভ করার জন্য শামুক, কড়ি, শঙ্খ ইত্যাদি লটকানো বা পরিধান করাও শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

১১। যে ব্যক্তি তাবিজ ব্যবহার করে তার উপর বদ দোয়া করা হয়েছে, ‘আল্লাহ যেন তার আশা পূরণ না করেন।’ আর যে ব্যক্তি শামুক, কড়ি বা শঙ্খ (গলায় বা হাতে) লটকায় তাকে যেন আল্লাহ রক্ষা না করেন।

রিং ও সূতা হচ্ছে শিরকের উপকরণ মাত্র। কারণ এগুলো যে ব্যক্তি লটকাবে কিংবা ব্যবহার করবে তার অন্তর [রোগ নিরাময়ের উদ্দেশ্যে] ব্যবহৃত জিনিসের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে। এটা এক ধরনের শিরক এবং শিরকে উপনীত হওয়ার অসিলা।

যদি উপরোক্ত বিষয় অর্থাৎ রিং বা সূতা পরিধান রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাক জবানে বর্ণিত এমন কোন শরয়ী উপকরণ না হয় যা দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি ও সওয়াব হাসিল তার উপকারিতা জানা ও পরীক্ষিত, যার ফলে তার ব্যবহারকারী কল্যাণ লাভের আশায় ব্যবহৃত জিনিসের সাথে তার অন্তরকে সম্পৃক্ত করে তাহলে মোমিনের করণীয় হচ্ছে তার ঈমান ও তাওহীদকে পরিপূর্ণ করার জন্য এগুলো পরিত্যাগ করা। কেননা তাওহীদ পরিপূর্ণ হলে তাওহীদের পরিপন্থী কোন জিনিসের সাথে বান্দার অন্তর যুক্ত হবে না। তাছাড়া রিং বা সূতা লটকানোর কাজটি স্বল্প জ্ঞান- বুদ্ধির পরিচায়ক। কারণ এ ক্ষেত্রে বান্দা এমন কিছুর সাথে তার অন্তরকে সংযুক্ত করে যার সাথে দিলের সম্পৃক্তি মোটেই সমীচীন নয় বা কোন দিক থেকে কল্যাণকরও নয়। বরং নিঃসন্দেহে ক্ষতিকরণ।

শরিয়তের মূল কথা হচ্ছে, পৌত্তুলিকতার অবসান এবং সৃষ্টির সাথে মনের সম্পর্ককে বিচ্ছিন্ন করে যাবতীয় কুসংস্কার আর অন্ধত্ব থেকে জ্ঞানকে মুক্ত রাখা। বিবেক বুদ্ধির উৎকর্ষতার জন্য কল্যাণকর বিষয়ে সাধনা করা। আত্মশুদ্ধি এবং দীন ও দুনিয়ার স্বার্থ সংরক্ষণের মাধ্যমে জ্ঞান-বুদ্ধিকে পরিপূর্ণ করা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন