hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাওহীদের মর্মকথা

লেখকঃ আব্দুর রহমান বিন নাসের সাদী

৩১
২৮তম অধ্যায়: কুলক্ষণ সম্পর্কীয় বিবরণ
১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন,

أَلَا إِنَّمَا طَائِرُهُمْ عِنْدَ اللَّهِ وَلَكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ ﴿ألاعراف :১৩১﴾

‘‘মনে রেখো, আল্লাহর কাছেই রয়েছে তাদের কুলক্ষণসমূহের চাবিকাঠি। কিন্তু তাদের অধিকাংশ লোকই তা বুঝে না। (আরাফ: ১৩১)

২। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন .

قالوا طائركم معكم ( يس : ১৯)

‘‘তারা বলল, তোমাদের দুর্ভাগ্য তোমাদের সাথেই রয়েছে।’’ (ইয়াসিন : ১৯)

৩। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,

لا عدوى ولا طيرة، ولا هامة ولا صفر، ( أخرحاه )

‘‘দ্বীন ইসলামে সংক্রামক ব্যাধি, কুলক্ষণ বা দুর্ভাগ্য, কথার কুলক্ষণ বলতে কিছুই নেই।’’ (বুখারী ও মুসলিম)

[মুসলিমের হাদিসে ‘নক্ষত্রের প্রভাবে বৃষ্টিপাত, রাক্ষস বা দৈত্য বলতে কিছুই নেই’ এ কথাটুকু অতিরিক্ত আছে]

ব্যাখ্যা

طيرة [তিয়ারাহ] হচ্ছে পাখি উড়িয়ে নাম, শব্দ, স্থান ইত্যাদি দ্বারা শুভা-শুভ নির্ধারণ করা। ‘‘শারে’’ অর্থাৎ শরিয়তের বিধান দাতা পাখি উড়িয়ে ভাগ্য পরীক্ষা করতে নিষেধ করেছেন। আর এ কাজ যারা করে তাদের নিন্দা করেছেন। তিনি [রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ফাল পছন্দ করতেন, আর কুলক্ষণের ধারণাকে ঘৃণা করতেন। ‘ফাল’ এবং ‘তিয়ারাহ’ এর মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে এই যে, ‘ফাল’ [ভাল কথা] দ্বারা মানুষের ঈমান আক্বীদা ও জ্ঞান-বুদ্ধির কোন ক্ষতি হয় না। এতে গাইরুল্লাহর সাথে মানব হৃদয় সম্পৃক্ত হয় না। বরং এর দ্বারা কল্যাণময় কাজে প্রাণচাঞ্চল্য আসে এবং আনন্দ অনুভূত হয়। সাথে সাথে মহৎ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য অন্তরে শক্তি সঞ্চারিত হয়। এর উদাহরণ

বুখারী ও মুসলিমে আনাস রা. থেকে আরো বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,

لا عدوى ولاطيرة ويعجبني الفأل قالوا : مالفأل؟ قال : الكلمة الطيبة .

‘‘ইসলামে সংক্রামক ব্যাধি আর কুলক্ষণ বলতে কিছুই নেই। তবে ‘ফাল’ আমাকে অবাক করে [অর্থাৎ আমার কাছে ভাল লাগে।] সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, ‘ফাল’ কি জিনিস? জবাবে তিনি বললেন, ‘উত্তম কথা’। [যে কথা শিরকমুক্ত]

৫। উকবা বিন আমের রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, কুলক্ষণ বা দূর্ভাগ্যের বিষয়টি রাসূল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দরবারে উল্লেখ করা হলো। জবাবে তিনি বললেন,

أحسنها الفأل، ولا ترد مسلما، فإذا رأى أحدكم ما يكره فليقل :

এগুলোর মধ্যে সর্বোত্তম হচ্ছে ‘ফাল’। কুলক্ষণ কোন মুসলমানকে স্বীয় কর্তব্য পালনে বাধাগ্রস্ত করতে পারে না। তোমাদের কেউ যদি অপছন্দনীয় কোন কিছু প্রত্যক্ষ করে তখন সে যেন বলে,

হচ্ছে, কোন বান্দা ভ্রমণ, বিয়ে-শাদি, কিংবা কোন চুক্তি সম্পাদন করার জন্য মনস্থির করল অথবা কোন গুরুত্বপূর্ণ অবস্থায় উপনীত হলো, এমতাবস্থায় তার উদ্দেশ্য হাসিল অথবা কর্ম সম্পাদনের ক্ষেত্রে এমন কিছু দেখতে পেলো বা শুনতে পেলো, যা তার মনকে প্রফুল্ল করে তোলে অথবা আনন্দ দেয়। যেমনঃ কেউ তাকে লক্ষ্য করে বলল, ইয়া রাশেদ [হে বুদ্ধিমান] অথবা ইয়া সালেম[ হে শান্তির প্রতীক ]অথবা ইয়া গানেম[ হে ভাগ্যবান] এ কথাকে বান্দা শুভলক্ষণ গণ্য করে এবং কাজের প্রতি তার আগ্রহকে আরো বৃদ্ধি করে। এর ফলে কাংখিত কাজটি সহজভাবে করতে প্রয়াস পায়। উপরোক্ত কথাগুলো ভাল এবং এর ফলাফলও ভাল। এতে দোষের কিছুই নেই।

আর طيرة [তিয়ারাহ] অর্থাৎ পাখি উড়িয়ে ভাগ্যের ভাল-মন্দ যাচাই করার

أللهم لا يأتي بالحسنات إلا أنت، ولا يدفع السيئات إلا أنت، ولا حول ولا قوة إلا بك،

‘‘হে আল্লাহ তুমি ছাড়া কেউ কল্যাণ দিতে পারে না। তুমি ছাড়া কেউ অকল্যাণ ও দূরাবস্থা দূর করতে পারে না। ক্ষমতা ও শক্তির আধার একমাত্র তুমিই।’’ (আবু দাউদ)

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে ‘মারফু’ হাদিসে বর্ণিত আছে, পাখি উড়িয়ে ভাগ্য গণনা করা শেরেকী কাজ, পাখি উড়িয়ে লক্ষণ নির্ধারণ করা শেরেকী কাজ, একাজ আমাদের নয়। আল্লাহ তাআলা তাওয়াক্কুলের মাধ্যমে মুসলিমের দুশ্চিন্তাকে দূর করে দেন। (আবু দাউদ, তিরমিজী)

৭। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত আছে, ‘কুলক্ষণ বা দুর্ভাগ্যের ধারণা যে ব্যক্তিকে তার স্বীয় প্রয়োজন, দায়িত্ব ও কর্তব্য থেকে দূরে রাখলো, সে মূলত: শিরক করল। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, এর কাফ্ফারা কি? উত্তরে তিনি বললেন, তোমরা এ দোয়া পড়বে,

বিষয়টি হচ্ছে এ রকম, বান্দা যখন দ্বীন কিংবা দুনিয়ার কোন কল্যাণকর কাজ করার জন্য মনস্থির করল, তখন সে [তিয়ারার মাধ্যমে] এমন কিছু লক্ষ্য করল বা শুনতে পেলো যা তার কাছে অপছন্দনীয়, এমতাবস্থায় তার অন্তরে এর দু’রকমের প্রভাব পড়তে পারে, যার একটি অপরটির চেয়ে জটিল।

এক : বান্দা [তিয়ারাহ] এর মাধ্যমে তার লক্ষণীয় কিংবা শ্রুত বিষয় দ্বারা তাড়িত হয়ে তাকে কুলক্ষণ মনে করে মনস্থিরকৃত কাজটি পরিত্যাগ করবে অথবা এর বিপরীত কোন কাজ করবে।

এমতাবস্থায় সে এটাকে কুলক্ষণ মনে করে ভয়ে-সংকোচে মনস্থিরকৃত কাজটি করতে অক্ষম হবে। এর দ্বারা এটাই প্রতীয়মান হয় যে, একটি অনাকাংখিত জিনিসের সাথে তার অন্তরকে গভীরভাবে সম্পৃক্ত করে ফেলেছে এবং এর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কাজও করেছে। তার ইচ্ছা, সংকল্প ও কাজের উপর অনাকাংখিত বিষয়টি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে। নিঃসন্দেহে এভাবে [তিয়ারাহ] তার ঈমানের উপর বিরাট ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে এবং তার তাওহীদ ও তাওয়াক্কুলকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। অতঃপর এ

أللهم لا خير إلا خيرك، ولا طير إلا طيرك، ولا إله غيرك ( أحمد )

‘‘হে আল্লাহ, তোমার মঙ্গল ব্যতীত কোন মঙ্গল নেই। তোমার অকল্যাণ ছাড়া কোন অকল্যাণ নেই। আর তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। (আহমদ)

৮। ফজল বিন আববাস থেকে বর্ণিত আছে طيرة [তিয়ারাহ] অর্থাৎ কুলক্ষণ হচ্ছে এমন জিনিস যা তোমাকে কোন অন্যায় কাজের দিকে ধাবিত করে অথবা কোন ন্যায় কাজ থেকে তোমাকে বিরত রাখে।’’ (আহমাদ)

এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায় :

১। أَلَا إِنَّمَا طَائِرُهُمْ عِنْدَ اللَّهِ [জেনে রেখো তাদের দুর্ভাগ্য আল্লাহর কাছে নিহিত] এবং طَائِرُكُمْ مَعَكُمْ [তোমাদের দুর্ভাগ্য তোমাদের সাথেই রয়েছে] এ আয়াত দু’টির ব্যাপারে সতর্কীকরণ।

২। সংক্রামক রোগের অস্বীকৃতি।

৩। কুলক্ষণের অস্বীকৃতি।

প্রশ্ন করা তোমার জন্য অবান্তর যে, উল্লেখিত বিষয়টি দ্বারা বান্দার অন্তরে দূর্বলতা, মাখলুকের প্রতি তার ভীতি, আসবাব [উপায়-উপকরণ] এবং আসবাব নয় এমন জিনিসের সাথে সম্পর্ক স্থাপন আর আল্লাহর সাথে তার সম্পর্ক কর্তনের ক্ষেত্রে কোন ধরনের অবস্থা তার মধ্যে সৃষ্টি হতে পারে? [অর্থাৎ বিনা প্রশ্নে বান্দার মধ্যে ‘তিয়ারাহর’’ প্রভাবে সব ধরনের ইসলামি আক্বীদা বিরোধী অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।]

এটা মূলত: তাওহীদ ও তাওয়াক্কুলের দূর্বলতা এবং শিরকে পতিত হওয়ার পথ ও পদ্ধতি। সাথে সাথে এটা বান্দার বুদ্ধি-বিবেক হননকারী একটি কুসংস্কার।

দুই : বান্দা তার অনাকাংখিত দৃশ্য বস্ত্ত বা শ্রুত কথা দ্বারা তাড়িত হয়ে তার ডাকে সাড়া দেবে। কিন্তু এমন অবস্থা দুশ্চিন্ত, দূর্ভাবনা ও অস্থিরতা সৃষ্টির মাধ্যমে তার অন্তরে খারাপ প্রভাব ফেলবে। এ বিষয়টি প্রথমটির নিম্ন পর্যায়ের হলেও বান্দার জন্য খুবই খারাপ ও ক্ষতিকর। সাথে সাথে এ অবস্থা নিঃসন্দেহে তার ঈমানকে দূর্বল করবে এবং তাওয়াক্কুলকে হালকা করে দেবে। আর যদি কোন অনাকাংখিত কিছু ঘটে যায়, তাহলে এর দ্বারা তার কুলক্ষণ বিষয়ক চিন্তা আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবে। এভাবে

৪। দুর্ভাগ্যের ব্যাপারে অস্বীকৃতি [অর্থাৎ দুর্ভাগ্য বলতে ইসলামে কোন কিছু নেই]

৫। কুলক্ষণ ‘সফর’ এর অস্বীকৃতি জ্ঞাপন [অর্থাৎ কুলক্ষণে ‘সফর মাস’ বলতে কিছুই নেই। জাহেলি যুগে সফর মাসকে কুলক্ষুণ মনে করা হতো, ইসলাম এ ধারণাকে বাতিল ঘোষণা করেছে।]

৬। ‘ফাল’ উপরোক্ত নিষিদ্ধ বা অপছন্দনীয় জিনিসের অন্তর্ভূক্ত নয়। বরং এটা মোস্তাহাব।

৭। ‘ফাল’ এর ব্যাখ্যা।

পর্যায়ক্রমে হয়ত সে প্রথম বিষয়টিতে [অর্থাৎ শিরকে] পৌঁছে যেতে পারে।

উপরোক্ত ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের দ্বারা এটা সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, ‘শারে’ অর্থাৎ শরিয়তের বিধানদাতা ‘তিয়ারাহ’ [পাখি উড়িয়ে ভাগ্যের ভাল-মন্দ পরীক্ষা করাকে] কে জন্য অপছন্দ ও ঘৃণা করেছেন, আর কেনইবা একে তাওহীদ এবং তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী বলেছেন।

যে ব্যক্তিই এগুলোর মধ্য থেকে খারাপ কিছু লক্ষ করবে, আর প্রকৃতির কারণসমূহ তার উপর প্রবল হয়ে উঠার আশঙ্কা করবে, তার উচিত হচ্ছে তার আশঙ্কা দূর করার জন্য নফসের সাথে জিহাদ করা এবং এর জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করা। অসুবিধা দূর করার জন্য কোন অবস্থাতেই সেদিকে মনোনিবেশ করা যাবে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন