hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাওহীদের মর্মকথা

লেখকঃ আব্দুর রহমান বিন নাসের সাদী

২২
১৯তম অধ্যায়: নেককার পীর-বুজুর্গ লোকদেও ব্যাপারে সীমা লঙ্ঘন করা আদম সন্তানের কাফের ও বেদ্বীন হওয়ার অন্যতম কারণ
১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন,

يَا أَهْلَ الْكِتَابِ لَا تَغْلُوا فِي دِينِكُمْ . ( ألنساء : ১৭১)

‘‘হে আহলে কিতাব, তোমরা তোমাদের দ্বীনের ব্যাপারে সীমা লঙ্ঘন করো না।’’ (নিসা . ১৭১)

২। সহীহ হাদিসে ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, আল্লাহ তাআলার বাণী :

وَقَالُوا لَا تَذَرُنَّ آَلِهَتَكُمْ وَلَا تَذَرُنَّ وَدًّا وَلَا سُوَاعًا وَلَا يَغُوثَ وَيَعُوقَ وَنَسْرًا ﴿نوح : ২৩﴾

‘‘কাফেররা বলল, ‘তোমরা নিজেদের মাবূদগুলোকে পরিত্যাগ

ব্যাখ্যা

নেককার, পীর, বুজুর্গ লোকদের ব্যাপারে সীমা লঙ্ঘন করা আদম সন্তানের কাফের ও বেদ্বীন হওয়ার অন্যতম কারণ غلو (গুলু) হচ্ছে, সীমা লঙ্ঘন করা। অর্থাৎ একমাত্র আল্লাহর সাথে ‘‘খাস’’ কোন হকের মধ্যে কোন নেককার ব্যক্তি বা পীর বুজুর্গকে হকদার বানানো। কেননা আল্লাহর হকের মধ্যে কোন অংশীদারই শরিক হতে পারে না। আল্লাহ তাআলা সর্বদিক থেকেই নিরঙ্কুশ কামালিয়াত বা পূর্ণতার অধিকারী। তিনি নিরঙ্কুশভাবে সমৃদ্ধশালী এবং কার্য পরিচালনার একচ্ছত্র মালিক। তিনি ব্যতীত আর কেউ উবুদিয়্যাত এবং উলুহিয়্যাতের অধিকারী হতে পারে না। তাই কোন ব্যক্তি যদি কোন মাখলুককে উপরোক্ত বিষয়ে আল্লাহর সামান্যতম অংশীদার মনে করে, তাহলে সে রবের সাথে মাখলুককে সমান করে ফেললো। আর এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় শিরক।

করো না। বিশেষ করে ‘ওয়াদ’, ‘সুআ’, ‘ইয়াগুছ’ ‘ইয়াঊক’ এবং ‘নসর’ কে কখনো পরিত্যাগ করো না। (নূহ : ২৩)- এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘এগুলো হচ্ছে নূহ আ. এর কওমের কতিপয় নেককার ও বুজুর্গ ব্যক্তিদের নাম, তারা যখন মৃত্যু বরণ করল, তখন শয়তান তাদের কওমকে কুমন্ত্রণা দিয়ে বলল, ‘যেসব জায়গায় তাদের মজলিস বসতো সে সব জায়গাগুলোতে তাদের [বুজুর্গ ব্যক্তিদের] মুর্তি স্থাপন করো এবং তাদের সম্মানার্থে তাদের নামেই মুর্তিগুলোর নামকরণ করো। তখন তারা তাই করল। তাদের জীবদ্দশায় মুর্তির পূজা করা হয়নি ঠিকই; কিন্তু মূর্তি স্থাপন কারীরা যখন মৃত্যু বরণ করল এবং মুর্তি স্থাপনের ইতিকথা ভুলে গেলো, তখনই মুর্তিগুলোর ইবাদত শুরু হলো।

ইবনুল কাইয়্যিম রহ.) বলেন, একাধিক আলেম ব্যক্তি বলেছেন, ‘যখন নেককার ও বুজুর্গ ব্যক্তিগণ মৃত্যু বরণ করলেন, তখন তাঁদের কওমের লোকেরা তাঁদের কবরের পাশে ধ্যান-মগ্ন হয়ে বসে থাকতো। এরপর তারা তাঁদের প্রতিকৃতি তৈরী করল। এভাবে বহুদিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর তারা তাঁদের ইবাদতে লেগে গেলো।

৩। ওমর রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

হক তিন প্রকার। এক : আল্লাহ তাআলার খাস হক। এ হকের মধ্যে কোন অংশীদারই শরিক হতে পারে না। আর তা হচ্ছে, আল্লাহ তাআলার উলুহিয়্যাত এবং উবুদিয়্যাত। এক্ষেত্রে তিনি একক, তাঁর কোন শরিক নেই। ভয়-ভীতি এবং আশা- আকাংখার দিক থেকে ‘রুগবত’ ও ‘ইনাবত’ একমাত্র তাঁরই জন্য নির্ধারিত।

দুই: নবীগণের খাস হক। আর তা হচ্ছে, তাঁদের প্রতি ভক্তি, শ্রদ্ধা ও সম্মান এবং তাঁদের সাথে সংশ্লিষ্ট অধিকার সমূহ আদায় করা।

তিন : যৌথ অধিকার। আর তা হচ্ছে, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনা। আল্লাহ ও রাসূলগণের আনুগত্য করা। আল্লাহর প্রতি মুহাববত ও তাঁর রাসূল গণের প্রতি মহাববত আল্লাহর হকের অধীন।

আহলে হক বা হক পন্থীগণ উপরোক্ত তিন প্রকার অধিকারের মধ্যে নিহিত

لا تطروني كما أطرت النصارى ابن مريم، إنما أنا عبده، فقولوا : عبد الله ورسوله ( أخرجاه )

‘‘তোমরা আমার মাত্রাতিরিক্ত প্রশংসা করো না যেমনিভাবে প্রশংসা করেছিলো নাসারারা মরিয়ম তনয় ঈসা আ. এর। আমি আল্লাহ তাআলার বান্দা মাত্র। তাই তোমরা আমাকে আল্লাহর বান্দা এবং তাঁরই রাসূল বলবে।’’ (বুখারী ও মুসলিম)

৪। ওমর রা. আরো বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,

إياكم والغلو فإنما أهلك من كان قبلكم الغلو

‘‘তোমরা বাড়া-বাড়ি ও সীমা অতিক্রমের ব্যাপারে সাবধান থাকো। কেননা, তোমাদের পূর্ববর্তী জাতিগুলো (দ্বীনের ব্যাপারে) সীমা লঙ্ঘন করার ফলে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।’’

৫। মুসলিম শরীফে ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত এক হাদিসে, রাসূল এরশাদ করেছেন,

هلك المتنطعون . قالها ثلاثا

‘‘দ্বীনের ব্যাপারে সীমা লঙ্ঘন কারীরা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।’’ এ কথা তিনি তিনবার বলেছেন।

এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায়ঃ

১। যে ব্যক্তি এ অধ্যায়টি সহ পরবর্তী দু’টি অধ্যায় উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে, ইসলাম সম্পর্কে মানুষ কতটুকু অজ্ঞ, তার কাছে তা সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে। সাথে সাথে আল্লাহ তাআলার কুদরত এবং মানব অন্তরের আশ্চর্য জনক পরিবর্তন ক্ষমতা লক্ষ্য করতে পারবে।

২। পৃথিবীতে সংঘটিত প্রথম শিরকের সূচনা, যা নেককার ও বুজুর্গ ব্যক্তিদের প্রতি সংশয় ও সন্দেহ থেকে উৎপত্তি হয়েছে।

পার্থক্য সম্পর্কে অবগত আছেন। তাই তাঁরা আল্লাহর উবুদিয়াতের শিক্ষাকে বাস্তবায়ন করেন এবং তাঁরই উদ্দেশ্যে দ্বীনকে একনিষ্ঠ করেন। এর সাথে সাথে আন্বিয়া ও আওলিয়ায়ে কেরামের হক, তাঁদের মান ও মর্যাদা অনুযায়ী আদায় করেন।

৩। সর্বপ্রথম যে জিনিসের মাধ্যমে নবীগণের দ্বীনে পরিবর্তন সাধিত হয়েছিল এবং এর কারণ সম্পর্কে জ্ঞান লাভের সাথে সাথে একথাও জেনে নেয়া যে, আল্লাহ তাআলাই তাদেরকে [দ্বীন কায়েমের জন্য] পাঠিয়েছেন।

৪। ‘শরীয়ত’ এবং ফিতরাত’ ‘বিদআতকে’ প্রত্যাখ্যান করা সত্তেও বেদআত গ্রহণ করার কারণ সম্পর্কে অবগতি লাভ।

৫। উপরোক্ত সকল গোমরাহীর কারণ হচ্ছে, হকের সাথে বাতেলের সংমিশ্রন, এর প্রথমটি হচ্ছে, সালেহীন বা নেককার ও বুজুর্গ লোকদের প্রতি [মাত্রাতিরিক্ত] ভালোবাসা।

আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে, কতিপয় জ্ঞানী ধার্মিক ব্যক্তিদের এমন কিছু আচরণ, যার উদ্দেশ্য ছিল মহৎ, কিন্তু পরবর্তীতে কিছু লোক উক্ত কাজের উদ্দেশ্য ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে ‘বেদআত ও শিরকে লিপ্ত হয়।

৬। সূরা নূহের ২৩ নং আয়াতের তাফসীর।

৭। মানুষের অন্তরে হকের প্রতি ঝোক প্রবণতার পরিমাণ কম। কিন্তু বাতিলের প্রতি ঝোক প্রবণতার পরিমাণ অপক্ষোকৃত বেশি।

৮। কোন কোন সালাফে-সালেহীন থেকে বর্ণিত আছে যে, বেদআত হচ্ছে কুফরির কারণ। তাছাড়া ইবলিস অন্যান্য পাপের চেয়ে এটাকেই বেশি পছন্দ করে। কারণ পাপ থেকে তওবা করা সহজ হলেও বেদআত থেকে তওবা করা সহজ নয়। [কারণ বিদয়াত তো সওয়াবের কাজ মনে করে করা হয় বলে পাপের অনুভূতি থাকে না, তাই তাওবারও প্রয়োজন অনুভুত হয় না]

৯। আমলকারীর নিয়ত যত মহৎই হোক না কেন, বিদআতের পরিণতি কি, তা শয়তান ভাল করেই জানে। এ জন্যই শয়তান আমল কারীকে বিদআতের দিকে নিয়ে যায়।

১০। ‘‘দ্বীনের ব্যাপারে সীমা লঙ্ঘন করা না করা’’ এ নীতি সম্পর্কে এবং সীমা লংঘনের পরিণতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা।

১১। নেক কাজের নিয়তে কবরের পাশে ধ্যান-মগ্ন হওয়ার ক্ষতি সম্পর্কে অবগত হওয়া।

১২। মূর্তি বানানো বা স্থাপনের নিষেধাজ্ঞা এবং তা অপসারণের কল্যাণ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা।

১৩। উপরোল্লিখিত কিসসার অপরিসীম গুরুত্ব অনুধাবন করা এবং এর অতীব প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানা।

১৪। সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হলো এই যে, বেদআত পন্থীরা তফসীর হাদিসের কিতাব গুলোতে শিরক বিদআতের কথাগুলো পড়েছে এবং আল্লাহর কালামের অর্থও তারা জানতো, শিরক ও বিদআতের ফলে আল্লাহ তাআলা এবং তাদের অন্তরের মাঝখানে বিরাট প্রতিবন্ধকের সৃষ্টি হয়েছিল, তারপরও তারা বিশ্বাস করতো যে, নূহ আ. এর কওমের লোকদের কাজই ছিল শ্রেষ্ঠ ইবাদত। তারা আরো বিশ্বাস করতো যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যা নিষেধ করেছিলেন সেটাই ছিল এমন কুফরি যার ফলে জান-মাল পর্যন্ত বৈধ হয়ে যায়। [অর্থাৎ হত্যা করে ধন-সম্পদ দখল করা যায়]।

১৫। এটা সুস্পষ্ট যে, তারা শিরক ও বেদআত মিশ্রিত কাজ দ্বারা সুপারিশ ছাড়া আর কিছুই চায়নি।

১৬। তাদের ধারণা এটাই ছিল যে, যেসব পন্ডিত ব্যক্তিরা ছবি মুর্তি তৈরী করেছিল তারাও শাফাআত লাভের আশা পোষণ করতো।

১৭। ‘‘তোমরা আমার মাত্রাতিরিক্ত প্রশংসা করো না যেমনিভাবে খৃষ্টানরা মরিয়ম তনয়কে করতো।’’ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর এ মহান বাণীর দাওয়াত তিনি পূর্ণাঙ্গ ভাবে পৌঁছিয়েছেন।

১৮। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে উপদেশ দিয়েছেন যে দ্বীনের ব্যাপারে সীমা লংঘনকারীদের ধ্বংস অনিবার্য।

১৯। এ কথা সুস্পষ্ট যে, ইলমে দ্বীন ভুলে না যাওয়া পর্যন্ত মুর্তি পুজার সূচনা হয়নি। এর দ্বারা ইলমে দ্বীন থাকার মর্যাদা আর না থাকার পরিণতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ।

২০। ইলমে দ্বীন উঠে যাওয়ার কারণ হচ্ছে আলেমগণের মৃত্যু।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন