hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাওহীদের মর্মকথা

লেখকঃ আব্দুর রহমান বিন নাসের সাদী

৩৪
৩১তম অধ্যায়
১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন,

وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَتَّخِذُ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَنْدَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ . ( البقرة : ১৬৫)

‘‘মানুষের মধ্যে এমন মানুষও রয়েছে যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে সদৃশ স্থির করে, আল্লাহকে ভালোবাসার ন্যায় তাদেরকে ভালোবাসে।’’। (বাকারা : ১৬৫)

২। আল্লাহ তা আলা আরো এরশাদ করেছেন,

قُلْ إِنْ كَانَ آَبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُمْ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ ( التوبة : ২৪)

‘‘হে রাসূল, আপনি বলে দিন, ‘যদি তোমাদের মাতা-পিতা, সন্তান-সন্ততি, ভাই-বোন, তোমাদের স্ত্রী, আত্মীয়-স্বজন, তোমাদের অর্জিত ধন-সম্পদ, তোমাদের ঐ ব্যবসা যার লোকসান হওয়াকে তোমরা অপছন্দ করো, তোমাদের পছন্দনীয় বাড়ি-ঘর, তোমাদের নিকট আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং তাঁরই পথে জিহাদ করার চেয়ে বেশি প্রিয় হয়, তাহলে তোমরা আল্লাহর চূড়ান্ত ফয়সালা আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করো।’’ (তাওবা : ২৪)

ব্যাখ্যা

আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন

وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَتَّخِذُ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَنْدَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ

‘‘মানুষের মধ্যে এমন মানুষও রয়েছে যারা আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে শরিক করে, আর তোমাদেরকে আল্লাহর মতো ভালোবাসে।’’

তাওহীদের মর্মবাণী ও প্রাণ সত্তা হচ্ছে, একমাত্র আল্লাহর জন্যই ভালোবাসাকে একনিষ্ঠ করা [অর্থাৎ খুলুসিয়াতের সাথে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আল্লাহকে ভালোবাসা] আর এটাই হচ্ছে তাঁর উলুহিয়্যাত এবং উবুদিয়্যাতের মূল ভিত্তি মূলত:

৩। সাহাবী আনাস রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,

لا يؤمن أحدكم حتى أكون أحب إليه من والده وولده والناس أجمعين . ( أخرجاه )

‘‘তোমাদের মধ্যে ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার সন্তান-সন্ততি, পিতা-মাতা এবং সমস্ত মানুষের চেয়ে অধিক প্রিয় হই।’’ (বুখারী ও মুসলিম)

৪। আনাস রা. থেকে আরো বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,

ثلاث من كن فيه وجدبهن حلاوة الإيمان : أن يكون الله ورسوله أحب إليه مما سواهما، وأن يحب المرء لا يحبه إلا لله، وأن يكره أن يعود فى الكفر بعد إذا أنقذه الله منه، كما يكره أن يقذف فى النار .

‘‘যার মধ্যে তিনটি জিনিস বিদ্যমান আছে সে ব্যক্তি এগুলো দ্বারা

এটাই হচ্ছে ইবাদতের হাকিকত বা মর্মকথা। স্বীয় রবের প্রতি বান্দার ভালোবাসা যতক্ষণ পর্যন্ত পরিপূর্ণ না হবে, সকল বস্ত্তর উপর তাঁর [আল্লাহর] ভালোবাসা প্রবল, অধিক এবং শক্তিশালী না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বান্দার তাওহীদ পরিপূর্ণ হবে না। বান্দার যাবতীয় ভালোবাসার বিষয় আল্লাহর ভালোবাসার অধীন হতে হবে। এ ভালোবাসার মধ্যেই নিহিত আছে বান্দার শান্তি ও সফলতা।

বিভিন্ন প্রকার ভালোবাসার মধ্যে সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ ভালোবাসা হচ্ছে, আল্লাহর জন্য ভালোবাসা। অতএব বান্দা এমন কার্যাবলী পছন্দ করবে, যা আল্লাহ পছন্দ করেন, এমন ব্যক্তিকে ভালোবাসবে, যাকে আল্লাহ ভালোবাসেন, এমন কাজকে ঘৃণা করবে যা আল্লাহ ঘৃণা করেন, এমন ব্যক্তিদেরকে ঘৃণা করবে, যাদেরকে আল্লাহ ঘৃণা করেন। অনুরূপভাবে সে আল্লাহর বন্ধুদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, এবং তাঁর শত্রুদের শত্রু মনে করবে। এর দ্বারাই বান্দার ঈমান ও তাওহীদ পরিপূর্ণ হবে।

আল্লাহর সাথে কোন সৃষ্টিকে শরিক করা, আল্লাহকে ভালোবাসার মতই তাকে।

ঈমানের স্বাদ অনুভব করতে পেরেছে। এক : তার কাছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সর্বাধিক প্রিয় হওয়া। দুই : একমাত্র আল্লাহ তাআলার [সন্তুষ্টি লাভের] জন্য কোন ব্যক্তিকে ভালোবাসা। তিন : আল্লাহ তাআলা তাকে কুফরি থেকে উদ্ধার করার পর পুনরায় কুফরির দিকে প্রত্যাবর্তন করা তার কাছে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মতই অপছন্দনীয় হওয়া।

অন্য একটি বর্ণনায় আছে لا يجد أحد حلاوة الإيمان حتى ........

অর্থাৎ কেউ ঈমানের স্বাদ পাবে না যতক্ষণ না ........ (হাদিসের শেষ পর্যন্ত।]

৬। আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালোবাসে, আল্লাহর উদ্দেশ্যেই ঘৃণা করে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে বন্ধুত্ব স্থাপন করে, আল্লাহর জন্যই শত্রুতা পোষণ করে; সে ব্যক্তি এ বৈশিষ্ট্যের দ্বারা নিশ্চয়ই আল্লাহর বন্ধুত্ব লাভ করবে। আর এ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হওয়া ব্যতীত নামাজ রোজার পরিমাণ যত বেশিই হোক না কেন, কোন বান্দাই ঈমানের স্বাদ অনুভব করতে পারবে না।

ভালোবাসা, আল্লাহর আনুগত্যের ঊর্ধ্বে তাদের আনুগত্যকে প্রাধান্য দেয়া, জিকির ও দোয়ার মাধ্যমে সৃষ্টির প্রতি ধ্যান-মগ্ন হওয়া শিরকে আকবারের অন্তর্ভূত। এ শিরক আল্লাহ তাআলা [তাওবা ব্যতীত] মাফ করবেন না। এ ধরনের শিরকে লিপ্ত ব্যক্তির অন্তর মহা-পরাক্রমশালী ও গুণধর আল্লাহর জিম্মা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং ক্ষমতাহীন দুর্বল গাইরুল্লাহর সাথে তার সম্পর্ক স্থাপিত হয়, এ দুর্বল ও অর্থহীন বিষয়টির সাথেই মুশরিকদের সম্পর্ক। কেয়ামতের দিন এ সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে। [অথচ তাদের ধারণা মতে জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য] এ সম্পর্ক তাদের জন্য সেদিন খুবই প্রয়োজন হবে। কিন্তু শিরক সম্পর্কিত দুনিয়ার ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব সেদিন ঘৃণা ও শত্রুতায় পর্যবসিত হবে।

মুহাববত ও ভালোবাসা তিন প্রকার :

এক : আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা। এ ভালোবাসা হচ্ছে ঈমান ও তাওহীদের মূল ভিত্তি।

দুই : আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালোবাসা। এ ভালোবাসা হচ্ছে আল্লাহ তাআলার নবী- রাসূল এবং তাদের অনুসারীদেরকে ভালোবাসা। এমনিভাবে আল্লাহ তাআলা যে

সাধারণত: মানুষের মধ্যে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বের ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে পার্থিব স্বার্থ। এ জাতীয় ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বের দ্বারা কোন উপকার সাধিত হয় না। (ইবনে জারির)

আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন وتقطعت بهم الأسباب

অর্থাৎ তাদের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এ সম্পর্ক হচ্ছে বন্ধুত্ব ও ভালোবাসার সম্পর্ক।

এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায় :

১& সূরা বাকারার ১৬ নং আয়াতের তাফসীর।

২। সূরা তাওবার ২৪ নং আয়াতের তাফসীর।

৩। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি ভালোবাসাকে জীবন, পরিবার ও ধন-সম্পদের উপর অগ্রাধিকার দেয়া ওয়াজিব।

৪। কোন কোন বিষয় এমন আছে যা ঈমানের পরিপন্থী হলেও এর দ্বারা ইসলামের গন্ডি থেকে বের হয়ে যাওয়া বুঝায় না। [এমতাবস্থায় তাকে অপূর্ণাঙ্গ মোমিন বলা যেতে পারে]।

৫। ঈমানের একটা স্বাদ আছে। মানুষ কখনো এ স্বাদ অনুভব করতেও পারে, আবার কখনো অনুভব নাও করতে পারে।



সব কার্যকলাপ, কাল [ যুগ-জমানা] ও স্থানকে ভালোবাসেন বা পছন্দ করেন, সেগুলোকে ভালোবাসা। এ ভালোবাসা আল্লাহর [প্রতি] ভালোবাসার অধীন এবং পরিপূরক।

তিন : আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে ভালোবাসা, যেমন গাছ, পাথর, মানুষ, ফিরিস্তি প্রভৃতির প্রতি মুশরিকদের ভালোবাসা। এ ভালোবাসাই হচ্ছে শিরকের মূল ভিত্তি।

চার : আরো এক প্রকার ভালোবাসা আছে যা স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক। যেমন খাদ্য, পানীয়, বিয়ে-শাদি, পোশাক-পরিচ্ছদ, বন্ধু-বান্ধব ইত্যাদির প্রতি বান্দার সংগতিপূর্ণ এবং স্বাভাবিক ভালোবাসা। এ ভালোবাসা শরীয়ত সম্মত। এটা যদি আল্লাহর

৬। অন্তরের এমন চারটি আমল আছে যা ছাড়া আল্লাহর বন্ধুত্ব ও নৈকট্য লাভ করা যায় না, ঈমানের স্বাদ ও অনুভব করা যায় না।

৭। একজন প্রখ্যাত সাহাবী দুনিয়ার এ বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পেরেছিল যে, পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব সাধারণত গড়ে উঠে পার্থিব বিষয়ের ভিত্তিতে।

৮। وتقطعت بهم الأسباب এর তাফসীর।

৯। মুশরিকদের মধ্যেও এমন লোক রয়েছে যারা আল্লাহকে খুব ভালোবাসে [কিন্তু শিরকের কারণে এ ভালোবাসা অর্থহীন।]

১০। যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করে এবং ঐ শরিককে আল্লাহকে ভালোবাসার মতই ভালোবাসে সে শিরকে আকবার অর্থাৎ বড় ধরনের শিরক করল।

এবং তাঁর আনুগত্যের জন্য সহায়ক হয়, তাহলে ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে। আর যদি আল্লাহর আনুগত্যের পথে এ ভালোবাসা প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায় এবং আল্লাহর অপছন্দনীয় কোন কাজের ওসীলা [উপায়] হয়ে যায়, তাহলে তা শরীয়ত নিষিদ্ধ বা অবৈধ ভালোবাসা হিসেবে গণ্য হবে। অন্যথায় তা মোবাহ বা বৈধ বলে বিবেচিত হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন