hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাওহীদের মর্মকথা

লেখকঃ আব্দুর রহমান বিন নাসের সাদী

৬ষ্ঠ অধ্যায়: তাওহীদ এবং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর সাক্ষ্য দানের ব্যাখ্যা
১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন,

أُولَئِكَ الَّذِينَ يَدْعُونَ يَبْتَغُونَ إِلَى رَبِّهِمُ الْوَسِيلَةَ أَيُّهُمْ أَقْرَبُ ( الاسراء : ৫৭)

‘‘এসব লোকেরা যাদেরকে ডাকে তারা নিজেরাই তাদের রবের নৈকট্য লাভের আশায় অসীলার অনুসন্ধান করে (আর ভাবে) কোনটি সবচেয়ে বেশি নিকটবর্তী।’’ (ইসরাঃ ৫৭)

২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন,

وَإِذْ قَالَ إِبْرَاهِيمُ لِأَبِيهِ وَقَوْمِهِ إِنَّنِي بَرَاءٌ مِمَّا تَعْبُدُونَ ﴿২৬﴾ إِلَّا الَّذِي فَطَرَنِي ( الزخرف : ২৬-২৭)

‘‘সে সময়ের কথা স্মরণ করো যখন ইবরাহীম তার পিতা ও কওমের লোকদেরকে বলেছিলেন, তোমরা যার ইবাদত করো তার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। আর আমার সম্পর্ক হচ্ছে কেবল মাত্র তাঁরই সাথে যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন।’’ (যুখরুফ : ২৬)

৩। আল্লাহ তাআলা অন্য আয়াতে ঘোষণা করেছেন,

اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ ( التوبة : ৩১)

ব্যাখ্যা

লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর সাক্ষ্যদান ও তাওহীদের তাফসীর লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর সাক্ষ্য প্রদান এবং তাওহীদ মূলত: একই অর্থবোধক বিষয়। তবে সমার্থবোধক দু’টি বিষয়কে ‘আতফ’ বা সংযুক্ত করা হয়েছে। এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। লেখক নিজেই একথা উল্লেখ করেছেন। তাওহীদের মর্মকথা হচ্ছে আল্লাহর যাবতীয় সীফাতে কামালকে জানা ও মানা ও একনিষ্ঠভাবে তারই ইবাদত করা।

এখানে দুটি বিষয় নিহিত রয়েছে। প্রথম বিষয়টি হচ্ছে, আল্লাহ ছাড়া বাকি সবকিছুর [গাইরুল্লাহ] মধ্যে উলুহিয়্যাতের গুণকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করা। আল্লাহর নৈকট্য লাভকারী কোন নবী হোক আর ফিরিশতা হোক, আল্লাহর সৃষ্টি জগতের কেউ উলুহিয়্যাত ও উবুদিয়্যাত অর্থাৎ মা’বুদ হওয়ার অধিকারী হতে পারে না। এ ব্যাপারে সৃষ্টি জগতের কারো কোন হিসসা বা অংশ নেই। এ কথাগুলো জানা এবং এর প্রতি দৃঢ়

‘‘তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে নিজেদের আলেম ও দরবেশ লোকদেরকে নিজেদের রব বানিয়ে নিয়েছে’’ (তাওবা: ৩১)

وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَتَّخِذُ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَنْدَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ ( البقرة :১৬৫)

‘‘মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে যারা আল্লাহ ছাড়া অপর কোন শক্তিকে আল্লাহর অংশীদার বা সমতুল্য হিসেবে গ্রহণ করে এবং তাকে এমনভাবে ভালোবাসে যেমনিভাবে একমাত্র আল্লাহকেই ভালোবাসা উচিত।’’ (বাকারা : ১৬৫)

৫। সহীহ বুখারীতে বর্ণিত রয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন,

من قال لا إله إلا الله، وكفر بما يعبد من دون الله حرم ماله ودمه، وحسابه على الله عز وجل .

‘‘যে ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ [আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই] বলবে, আর আল্লাহ ব্যতীত যারই ইবাদত করা হয় তাকেই অস্বীকার করবে তার জান ও মাল হারাম [অর্থাৎ মুসলমানদের কাছে সম্পূর্ণ নিরাপদ] গোপন তৎপরতা ও অন্তরের কুটিলতা বা মুনাফিকির জন্য] তার শাস্তি আল্লাহর উপরই ন্যস্ত।’’

পরবর্তী অধ্যায়গুলোতে এর ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। আর তা হচ্ছে তাওহীদ এবং

বিশ্বাস স্থাপন করার মাধ্যমেই গাইরুল্লাহর উলুহিয়্যাতের গুণকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করতে হয়ে।

আর দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে, এক ও একক লা-শরিক আল্লাহর জন্যই উলুহিয়্যাতকে নিশ্চিত করা এবং উলুহিয়্যাতের সব অর্থ তথা কামালিয়াতের পূর্ণ গুণাবলিকে এক আল্লাহর জন্যই সাব্যস্ত করা। বান্দার জন্য শুধুমাত্র এ আক্বীদাই যথেষ্ট নয়, যতক্ষণ না সে দ্বীনের কলেমা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহকে ইখলাসের সাথে বাস্তবায়িত করবে। সে একমাত্র আল্লাহরই জন্য ঈমান, ইসলাম, ইহসান, আল্লাহর হক এবং সৃষ্টির হক প্রতিষ্ঠিত করবে। এর দ্বারা তাঁরই সন্তুষ্টি এবং সওয়াব হাসিলের প্রত্যাশা করবে।

বান্দাহকে একথা জানতে হবে যে, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর চূড়ান্ত তাফসীর এবং তা বাস্তবায়নের মূল কথা হচ্ছে, গাইরুল্লাহর ইবাদত থেকে মুক্তি ও পবিত্রতা অর্জন করা।

আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করা, আল্লাহকে ভালোবাসার মতই শরিকগুলোকে

শাহাদাতের তাফসীর। কয়েকটি সুস্পষ্ট বিষয়ের মাধ্যমে এর বর্ণনা দেয়া হয়েছে। যেমন :

(ক) সূরা ইসরার আয়াত, এ আয়াতে সে সব মুশরিকদের সমুচিত জওয়াব দেয়া হয়েছে যারা বুজুর্গ ও নেক বান্দাদেরকে (আল্লাহকে ডাকার মত] ডাকে। আর এটা যে ‘শিরকে আকবার’ এ কথার বর্ণনাও এখানে রয়েছে।

(খ) সূরা তাওবার আয়াত। এতে আহলে কিতাব অর্থাৎ ইহুদি খ্রিস্টানরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাদের আলেম ও দরবেশ ব্যক্তিদেরকে রব হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছে। আরো বর্ণনা করা হয়েছে যে, এক আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করার জন্য তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়নি। এর সুস্পষ্ট ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, অন্যায় ও পাপ কাজে আলেম ও আবিদদের আনুগত্য করা যাবে না। তাদের কাছে দোয়াও করা যাবে না।

(গ) কাফেরদেরকে লক্ষ্য করে ইবরাহীম খলীল আ. এর কথা

إِنَّنِي بَرَاءٌ مِمَّا تَعْبُدُونَ ﴿২৬﴾ إِلَّا الَّذِي فَطَرَنِي ( الزخرف : ২৬-২৭)

দ্বারা তাঁর রবকে যাবতীয় মা’বুদ থেকে আলাদা করেছেন। আল্লাহ তা’আলা এখানে এটাই বর্ণনা করেছেন যে [বাতিল মা’বুদ থেকে] পবিত্র থাকা আর প্রকৃত মাবুদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করাই হচ্ছে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর ব্যাখ্যা। তাই আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন,

وَجَعَلَهَا كَلِمَةً بَاقِيَةً فِي عَقِبِهِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ ﴿الزخرف :28﴾

‘‘আর ইবরাহীম এ কথাটি পরবর্তীতে তার সন্তানের মধ্যে রেখে গেলো,

ভালোবাসা, তাঁর আনুগত্যের মতই তাদের আনুগত্য করা, তাঁর জন্য যা করা হয় তাদের জন্য তাই করা হচ্ছে কলেমা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর প্রকৃত অর্থের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

লেখক বর্ণনা করেছেন যে, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর অর্থ প্রকাশের জন্য শ্রেষ্ঠ বর্ণনা হচ্ছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এ বাণী-

من قال لا إله إلا الله وكفر بما يعبد من دون الله حرم ماله ودمه وحسابه على الله

‘‘যে ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’’ বলবে আর গাইরুল্লাহর ইবাদতকে অস্বীকার করবে। তার জান-মাল পবিত্র অর্থাৎ মুসলমানদের কাছে নিরাপদ। তার গোপন তৎপরতা ও অন্তরের কুটিলতার হিসাব আল্লাহর উপর ন্যস্ত।’’

যেন তারা তার দিকে ফিরে আসে।’’

(ঘ) সূরা বাকারার কাফেরদের বিষয় সম্পর্কিত আয়াত। যাদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন,

وَمَا هُمْ بِخَارِجِينَ مِنَ النَّارِ ﴿القرة :১৬৭﴾

‘‘তারা কখনো জাহান্নাম থেকে বের হতে পারবে না।’’

এখানে আল্লাহ তাআলা উল্লেখ করেছেন যে, মুশরিকরা তাদের শরিকদেরকে [যাদেরকে তারা আল্লাহর সমকক্ষ বা অংশীদার মনে করে] আল্লাহকে ভালোবাসার মতই ভালোবাসে।

এর দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, তারা আল্লাহকে ভালোবাসে, কিন্তু এ ভালোবাসা তাদেরকে ইসলামে দাখিল করতে পারেনি। তাহলে আল্লাহর শরিককে যে ব্যক্তি আল্লাহর চেয়েও বেশি ভালোবাসে সে কীভাবে ইসলামকে গ্রহণ করবে। আর যে ব্যক্তি শুধুমাত্র শরিককেই ভালোবাসে। আল্লাহর প্রতি তার কোন ভালোবাসা নেই তার অবস্থাই বা কি হবে?

(ঙ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী .

من قال لا إله إلا الله، وكفر بما يعبد من دون الله حرم ماله ودمه وحسابه على الله .

‘‘যে ব্যক্তি লা- ইলাহ ইল্লাল্লাহু বলবে আর আল্লাহ ব্যতীত যারই

কেবল মাত্র কালিমার শাব্দিক উচ্চারণকেই জান-মালের নিরাপত্তার কারণ বলা হয়নি এমনকি শব্দসহ এর অর্থ জানাকেও নয়, এর স্বীকৃতি প্রদানকেও নয়। এমনকি লা-শরিক এক আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত না করাকেও জান-মালের নিরাপত্তার কারণ বলা হয়নি। জান-মালের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ঠিক তখনই দেয়া হবে যখন আল্লাহ ব্যতীত যাবতীয় মাবুদকে অস্বীকার করার বিষয়টি কালিমার সাথে সম্পৃক্ত হবে। এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ, সংশয় ও দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থাকলে জান-মালের নিরাপত্তার কোন নিশ্চয়তা নেই।

উপরোক্ত বক্তব্য দ্বারা এটাই সুস্পষ্ট রূপে প্রমাণিত হয় যে, লা-শরিক এক আল্লাহর ইবাদত অপরিহার্য, এ বিশ্বাস অবশ্যই থাকতে হবে। আক্বীদাগত দিক এবং মৌখিক উচ্চারণ, উভয় দিক থেকে এর স্বীকৃতি দিতে হবে। আনুগত্য ও আত্মসমর্পণের মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদত করতে হবে। ধ্যান-ধারণা, কথা-বার্তা এবং কাজ কর্মের মাধ্যমে তাওহীদের পরিপন্থী যাবতীয় বিষয় থেকে মুক্ত থাকতে হবে। যারা তাওহীদকে প্রতিষ্ঠিত করার কাজে নিয়োজিত তাদেরকে ভালোবাসা, তাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করা এবং তাদেরকে সাহায্য করা ব্যতীত তাওহীদ পরিপূর্ণ হবে না।

ইবাদত করা হয় তাকেই অস্বীকার করবে, তার ধন-সম্পদ ও রক্ত পবিত্র।’’ [অর্থাৎ জান, মাল, মুসলমানের কাছে নিরাপদ] এ বাণী হচ্ছে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যাখ্যা। কারণ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর শুধুমাত্র মৌখিক উচ্চারণ, শব্দসহ এর অর্থ জানা, এর স্বীকৃতি প্রদান, এমনকি শুধুমাত্র লা- শারীক আল্লাহকে ডাকলেই জান-মালের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে না যতক্ষণ পর্যন্ত উক্ত কালেমা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর সাথে গাইরুল্লাহর ইবাদত তথা মিথ্যা মা’বুদগুলোকে অস্বীকার করার বিষয়টি সংযুক্ত না হবে। এতে যদি কোন প্রকার সন্দেহ, সংশয় কিংবা দ্বিধা সংকোচ পরিলক্ষিত হয় তাহলে জান-মাল ও নিরাপত্তার কোন নিশ্চয়তা নেই। অতএব, এটাই হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ বিষয়, সুস্পষ্ট বর্ণনা ও অকাট্য দলিল।

কাফের মুশরিকদের প্রতি ঘৃণা পোষণ তাদের বিরোধিতার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র মুখের কথা আর অর্থহীন দাবির কোন মূল্য নেই। বরং বান্দার জ্ঞান-বুদ্ধি, আক্বীদা-বিশ্বাস, কথা-বার্তা, এবং কাজ-কর্ম তার দাবির সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যশীল হতে হবে।

উপরোক্ত বিষয়গুলোর একটি অপরটির জন্য অপরিহার্য। এগুলোর কোন একটি বাদ পড়লে অবশিষ্ট বিষয়গুলো স্বাভাবিক ভাবেই বাদ পড়ে যাবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন