hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাওহীদের মর্মকথা

লেখকঃ আব্দুর রহমান বিন নাসের সাদী

৭০
৬৭তম অধ্যায়: মানুষ আল্লাহ তাআলার পূর্ণাঙ্গ মর্যাদা নিরূপণে অক্ষম
১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন,

وَمَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ وَالْأَرْضُ جَمِيعًا قَبْضَتُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ( الزمر : ৬৮)

‘‘তারা আল্লাহর যথার্থ মর্যাদা নিরূপণ করতে পারেনি। কেয়ামতের দিন সমগ্র পৃথিবী তাঁর হাতের মুঠোতে থাকবে।’’ (ঝুমার : ৬৭)

২। ইবনে মাস উদ রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, একজন ইহুদি পন্ডিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাম এর নিকট এসে বলল, ‘হে মুহাম্মদ, আমরা [তাওরাত কিতাবে] দেখতে পাই যে, আল্লাহ তাআলা সমস্ত আকাশ মন্ডলীকে এক আঙুলে, সমস্ত জমিনকে এক আঙুলে, বৃক্ষরাজিকে এক আঙুলে, পানি এক আঙুলে ভূতলের সমস্ত জিনিসকে এক আঙুলে এবং সমস্ত সৃষ্টি জগৎকে এক আঙুলে রেখে বলবেন, আমিই সম্রাট।’

এ কথা শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লম ইহুদি পন্ডিতের কথার সমর্থনে এমন ভাবে হেসে দিলেন যে তাঁর দন্ত মোবারক দেখা যাচ্ছিল। অতপর তিনি

ব্যাখ্যা

আল্লাহর বাণী - وَمَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ ‘‘তারা আল্লাহ তাআলার যথাযথ মর্যাদা নিরূপণে সক্ষম হয়নি। গ্রন্থকার এ অধ্যায়ের মধ্য দিয়ে এ বইটির ইতি টেনেছেন। মহান আল্লাহ তাআলার মহত্ত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব, তার মর্যাদা, জালালত এবং তাঁরই মহাশক্তির কাছে গোটা সৃষ্টিকুল মস্তকাবনত, এ বাস্তবতার উপর অনেক প্রামাণাদি এখানে উলেখ করেছেন। কেননা তাঁর এসব মহৎ ও পূর্ণাঙ্গ গুণাবলিই হচ্ছে, তিনি যে একক মা’বুদ তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ।

তিনি এককভাবে সমস্ত প্রশংসার অধিকারী। চূড়ান্ত কাকুতি, শ্রদ্ধা, তাজিম এবং চূড়ান্ত ভালোবাসা ও ইবাদত একমাত্র তাঁরই জন্য নিবেদন করতে হবে। একমাত্র তিনিই

এ আয়াতটুকু পড়লেন। وَمَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ وَالْأَرْضُ جَمِيعًا قَبْضَتُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ

সহীহ মুসলিমের হাদিসে বর্ণিত আছে, পাহাড়- পর্বত এবং বৃক্ষরাজি এক হাতে থাকবে তারপর এগুলোকে ঝাঁকুনি দিয়ে তিনি বলবেন, ‘আমি রাজাধিরাজ, আমিই আল্লাহ।’

সহীহ বুখারীর এক বর্ণনায় আছে, সমস্ত আকাশ মন্ডলীকে এক আঙুলে রাখবেন। পানি এবং ভূতলে যা কিছু আছে তা এক আঙুলে রাখবেন। আরেক আঙুলে রাখবেন সমস্ত সৃষ্টি। (বুখারী ও মুসলিম)

ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত মারফু হাদিসে আছে, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা সমস্ত আকাশ মন্ডলীকে ভাঁজ করবেন। অতঃপর সাত তবক জমিনকে ভাঁজ করবেন এবং এগুলোকে বাম হাতে নেবেন। তারপর বলবেন, ‘‘আমি হচ্ছি রাজাধিরাজ। অত্যাচারীরা কোথায়? অংহকারীরা কোথায়? (মুসলিম)

৩। ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, সাত তবক আসমান ও জমিন আল্লাহ তাআলার হাতের তালুতে ঠিক যেন তোমাদের কারো হাতে এটা সরিষার দানার মত।

৪। ইবনে যায়েদ বলেন, ‘‘আমার পিতা আমাকে বলেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লম এরশাদ করেছেন,

ما السموات السبع فى الكرسى إلا كدراهم سبعة ألقيت فى ترس .

হক: আর সবই বাতিল। এটাই তাওহীদের হাকিকত। এটাই তাওহীদের প্রাণ ও জীবনী শক্তি এবং ইখলাসের গোপন রহস্য।

অতএব মহান আল্লাহর কাছে এই প্রার্থনা তিনি যেন আমাদের অন্তর তারই মা'রেফাত ও মুহাববতে ভরপুর করে দেন। তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তনের তাওফীক দেন। তিনি মহান দাতা ও কৃপাশীল।

‘‘কুরসীর মধ্যে সপ্তাকাশের অবস্থান ঠিক যেন, একটি ঢালের মধ্যে নিক্ষিপ্ত সাতটি দিরহামের [মুদ্রার] মত।’’ তিনি বলেন, ‘আবুযর রা. বলেছেন, ‘আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালমকে এ কথা বলতে শুনেছি,

ما الكرسى فى العرش إلا كحلقه من حديد ألقيت بين ظهرى فلاة من الأرض .

‘‘আরশের মধ্যে কুরসির অবস্থান হচ্ছে ঠিক ভূপৃষ্ঠের কোন উন্মুক্ত স্থানে পড়ে থাকা একটি আংটির মত।

৫। ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, ‘দুনিয়ার আকাশ এবং এর পরবর্তী আকামের মধ্যে দূরত্ব হচ্ছে পাঁচশো’ বছরের পথ। আর এক আকাশ থেকে অন্য আকাশের দূরত্ব হচ্ছে পাঁচশো বছরের। এমনিভাবে সপ্তমাকাশের মধ্যে দূরত্ব হচ্ছে পাঁচশো বছরের পথ। একই ভাবে কুরসি এবং পানির মাঝখানে দূরত্ব হচ্ছে পাঁচশো বছরের। আরশ হচ্ছে পানির উপরে। আর আল্লাহ তাআলা সমাসীন রয়েছেন আরশের উপর। তোমাদের আমলের কোন কিছুই তাঁর কাছে গোপন নেই। (ইবনে মাহদী হাম্মাদ বিন সালামা হতে তিনি আসেম হতে, তিনি জ্বরীর হ'তে, এবং জরির আবদুলহ হতে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।

(অনুরূপ হাদিস মাসউদী আসেম হতে তিনি আবি ওয়ায়েল হতে, এবং তিনি আবদুলহ হতে বর্ণনা করেছেন।)

৬। আববাস বিন আবদুল মোত্তালিব রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লম এরশাদ করেছেন,

هل تدرون كم بين السماء والارض . ؟ قلنا : الله ورسوله أعلم، قال بينهما مسيرة خمسمائة سنة، من كل سماء إلى سماء مسيرة خمسمائة سنة، وكثف كل سماء مسيرة خمسمائة سنة، وبين السماء السابعة والعرش بحر بين أسفله وأعلاه كما بين السماء والأرض، والله سبحانه و تعالى فوق ذالك وليس يخفى عليه شيئ من أعمال بني آدم . ( أخرجه أبوداود وغيره )

‘‘তোমরা কি জানো, আসমান ও জমিনের মধ্যে দূরত্ব কত?’’ আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই সবচেয়ে ভাল জানেন। তিনি বললেন, ‘‘আসমান ও জমিনের মাঝে দূরত্ব হচ্ছে পাঁচশো বছরের পথ। এক আকাশ থেকে অন্য আকাশের দূরত্ব হচ্ছে পাঁচশো’ বছরের পথ। প্রতিটি আকাশের ঘনত্বও (পুরু ও মোটা) পাঁচশো’ বছরের পথ। সপ্তমাকাশ ও আরশের মধ্য খানে রয়েছে একটি সাগর। যার উপরিভাগ ও তলদেশের মাঝে দূরত্ব হচ্ছে আকাশ ও জমিনের মধ্যকার দূরত্বের সমান। আল্লাহ তাআলা এর উপরে সমাসীন রয়েছেন। আদম সন্তানের কোন কর্মকান্ডই তাঁর অজানা নয়।’’ (আবু দাউদ)

এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায় .

১। وَالْأَرْضُ جَمِيعًا قَبْضَتُهُ এর তাফসীর

২। এ অধ্যায়ে আলোচিত জ্ঞান ও এতদসংশিষ্ট জ্ঞানের চর্চা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লম এর যুগের ইহুদীদের মধ্যেও বিদ্যমান ছিল। তারা এ জ্ঞানকে অস্বীকার ও কর তো না।

৩। ইহুদি পন্ডিত ব্যক্তি যখন কেয়ামতের দিনে আল্লাহর ক্ষমতা সংক্রান্ত কথা বলল, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কথাকে সত্যায়িত করলেন এবং এর সমর্থনে কোরআনের আয়াতও নাজিল হলো।

৪। ইহুদি পন্ডিত কর্তৃক আল্লাহর ক্ষমতা সম্পর্কিত মহাজ্ঞানের কথা উল্লেখ করা হলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লম এর হাসির উদ্রেক হওয়ার রহস্য।

৫। আল্লাহ তাআলার দু’হস্ত মোবারকের সুস্পষ্ট উল্লেখ্য। আকাশ মন্ডলী তাঁর ডান হাতে, আর সমগ্র জমিন তাঁর অপর হাতে নিবদ্ধ থাকবে।

৬। অপর হাতকে বাম হাত বলে নাম করণ করার সুস্পষ্ট ঘোষণা।

৭। কেয়ামতের দিন অত্যাচারী এবং অহংকারীদের প্রতি আল্লাহর শাস্তির উল্লেখ।

৮। আকাশের তুলনায় আরশের বিশালতার উল্লেখ।

৯। ‘‘তোমাদের কারো হাতে একটা সরিষা দানার মত’’ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লম এর এ কথার তাৎপর্য।

১০। কুরসির তুলনায় আরশের বিশালতার উল্লেখ।

১১। কুরসি এবং পানি থেকে আরশ সম্পূর্ণ আলাদা।

১২। প্রতিটি আকাশের মধ্যে দূরত্ব ও ব্যবধানের উল্লেখ।

১৩। সপ্তমাকাশ ও কুরসির মধ্যে ব্যবধান।

১৪। কুরসি এবং পানির মধ্যে দূরত্ব।

১৫। আরশের অবস্থান পানির উপর।

১৬। আল্লাহ তাআলা আরশের উপরে সমাসীন।

১৭। আকাশ ও জমিনের দূরত্বের উল্লেখ।

১৮। প্রতিটি আকাশের ঘনত্ব (পুরো) পাঁচশো বছরের পথ।

১৯। আকাশ মন্ডলীর উপরে যে সমুদ্র রয়েছে তার ঊর্ধ্ব দেশ ও তলদেশের মধ্যে দূরত্ব হচ্ছে পাঁচশো’ বছরের পথ।

والحمد لله رب العلمين، وصلى الله على سيدنا محمد، وعلى آله وصحبه أجمعين .

কারণ, কাপুরুষতা হচ্ছে হীন চরিত্রের লক্ষণ। এ কারণেই পরিপূর্ণ ঈমান, তাওয়াক্কুল এবং বীরত্ব এ ধরনের ভয়কে দূরীভূত করে দেয়। এমনকি ঈমানী বলে বলীয়ান বিশেষ ঈমানদার ব্যক্তিগণ ভয়-ভীতির ক্ষেত্রগুলোকে ঈমানী শক্তি, বীরত্ব দুর্বার সাহসিকতা আর পূর্ণ তাওয়াক্কুল দ্বারা শান্তি ও নিরাপত্তায় পরিণত করেছেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন