hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাওহীদের মর্মকথা

লেখকঃ আব্দুর রহমান বিন নাসের সাদী

৫২
৪৯তম অধ্যায়
১। আল্লহ তাআলার বাণী .

وَلَئِنْ أَذَقْنَاهُ رَحْمَةً مِنَّا مِنْ بَعْدِ ضَرَّاءَ مَسَّتْهُ لَيَقُولَنَّ هَذَا لِي ( فصلت :৫০)

‘‘দুঃখ- দুর্দশার পর যদি আমি মানুষকে আমার রহমতের আস্বাদ গ্রহণ করাই, তাহলে সে অবশ্যই বলে, এ নেয়ামত আমারই জন্য হয়েছে।’’ (ফুসসিলাত . ৫০) বিখ্যাত মুফাসসির মুজাহিদ বলেন, ‘ইহা আমরই জন্য’ এর অর্থ হচ্ছে, ‘আমার নেক আমলের বদৌলতেই এ নেয়ামত দান করা হয়েছে, আমিই এর হকদার।’ ইবনে আববাস রা. বলেন, সে এ কথা বলতে চায়, ‘নেয়ামত আমার আমলের কারণেই’ এসেছে অর্থাৎ এর প্রকৃত হকদার আমিই।

আল্লহ তাআলা আরো বলেছেন,

قَالَ إِنَّمَا أُوتِيتُهُ عَلَى عِلْمٍ عِنْدِي ( القصص :৭৮)

ব্যাখ্যা

আল্লাহ তাআলার বাণী

وَلَئِنْ أَذَقْنَاهُ رَحْمَةً مِنَّا مِنْ بَعْدِ ضَرَّاءَ مَسَّتْهُ

এখানে আলোচিত অধ্যায়টির উদ্দেশ্য হচ্ছে, যে ব্যক্তি দাবি করে, যেসব নেয়ামত ও রিজিক সে প্রাপ্ত হয়েছে, তার সবই হচ্ছে স্বীয় পরিশ্রম, দক্ষতা এবং বিচক্ষণতার ফসল। অথবা যে ব্যক্তি মনে করে, আল্লহর উপর তার প্রাপ্য হক হিসেবেই সে [এসব] প্রাপ্ত নেয়ামতের হকদার, তাকে এ কথা জানিয়ে দেয়া যে, এরকম ধারণা তাওহীদের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। কেননা ঐ ব্যক্তিই সত্যিকারের মোমিন যে আল্লহ তাআলার যাবতীয় জাহেরী ও বাতেনী নেয়ামতের স্বীকৃতি দেয়, এর জন্য আল্লাহর প্রশংসা করে এবং নেয়ামতগুলোকে আল্লাহর তাআলার দয়া ও করুণা মনে করে। সাথে সাথে এসব

‘‘ সে বলে, ‘নিশ্চয়ই এ নেয়ামত আমার ইলম ও জ্ঞানের জন্য আমাকে দেয়া হয়েছে।’’ (কাসাসঃ৭৮)

কাতাদাহ রা. বলেন, ‘উপার্জনের রকমারি পন্থা সম্পর্কিত জ্ঞান থাকার কারণে আমি এ নেয়ামত প্রাপ্ত হয়েছি।’ অন্যান্য মুফাসসিরগণ বলেন ‘আল্লাহ তাআলার ইলম মোতাবেক আমি এর [নেয়ামতের] হকদার। আমার মর্যাদার বদৌলতেই এ নেয়ামত প্রাপ্ত হয়েছি।’

মুজাহিদের এ কথার অর্থই উপরোক্ত বক্তব্য দ্বারা বুঝানো হয়েছে।

২। আবু হুরাইয়রা রা. হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি রাসূল সাল্লল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লমকে এ কথা বলতে শুনেছেন,

ثلاثة من بنى إسرائيل : أبرص وأقرع و أعمى فأراد الله أن يبتليهم فبعث إليهم ملكا فأتى الأبرص ... إلى آخر الحديث .

‘‘বর্ণিত ইসরাইল বংশে তিনজন লোক ছিল . যাদের একজন ছিল কুষ্টরোগী, আরেকজন টাক পড়া, অপরজন ছিল অন্ধ। এমতাবস্থায় আল্লহ তাআলা তাদেরকে পরীক্ষা করতে চাইলেন। তখন তাদের কাছে তিনি ফেরেস্তা পাঠালেন। কুষ্টরোগীর কাছে ফেরেস্তা এসে জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার সবচেয়ে প্রিয় জিনিস কি? সে বলল, ‘সুন্দর চেহারা এবং সুন্দর ত্বক [শরীরের চামড়া]। আর যে রোগের কারণে মানুষ আমাকে ঘৃণা করে তা থেকে মুক্তি আমার কাম্য। তখন ফেরেস্তা তার শরীরে হাত বুলিয়ে দিল। এতে তার রোগ দূর হয়ে গেলো তাকে সুন্দর রং আর

নেয়ামত দ্বারা তাঁর আনুগত্য করার জন্য তাঁরই কাছে সাহায্য কামনা করে। আল্লাহর উপর তার কোন অধিকার আছে বলে সে মনে করে না। বরং তার উপরই আল্লহর সকল অধিকার রয়েছে। সকল বিবেচনায় সে কেবল আল্লহরই বান্দা। এ বিশ্বাসের মাধ্যমেই বান্দার ঈমান ও তাওহীদ শক্তিশালী হয়। এর বিপরীত ধারণা ও বিশ্বাসের মাধ্যমে আল্লহর নেয়ামতের কুফরিই প্রমাণিত হয়। আরো প্রমাণিত হয় বান্দার আত্ম-অহংকার ও আত্ম প্রশংসা যা মানুষের জন্য খুবই দোষের বিষয়।

সুন্দর ত্বক দেয়া হলো। তারপর ফেরেস্তা তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘‘তোমার প্রিয় সম্পদ কি? সে বলল, ‘‘উট অথবা গরু’’। [ইসহাক অর্থাৎ হাদিস বর্ণনাকারী উট কিংবা গরু এ দুয়ের মধ্যে সন্দেহ করছেন] তখন তাকে দশটি গর্ভবতী উট দেয়া হলো। ফিরিস্তা তার জন্য দোয়া করে বলল, ‘‘আল্লহ এ সম্পদে তোমাকে বরকত দান করুন।’’

তারপর ফেরেস্তা টাক পড়া লোকটির কাছে গিয়ে বলল, ‘‘তোমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় জিনিস কি?’’ লোকটি বলল, ‘‘আমার প্রিয় জিনিস হচ্ছে সুন্দর চুল। আর লোকজন আমাকে যার জন্য ঘৃণা করে তা থেকে মুক্ত হতে চাই।’’ ফেরেস্তা তখন তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিল। এতে তার মাথার টাক দূর হয়ে গেলো। তাকে সুন্দর চুল দেয়া হলো। অতঃপর ফেরেস্তা তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘‘কোন সম্পদ তোমার কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয়? সে বলল, ‘‘উট অথবা গরু।’’ তখন তাকে গর্ভবতী গাভি দেয়া হলো। ফেরেস্তা তার জন্য দোয়া করে বলল, ‘‘আল্লহ এ সম্পদে তোমাকে বরকত দান করুন। ’’

তারপর ফেরেস্তা অন্ধ লোকটির কাছে এসে বলল, ‘‘তোমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় বস্ত্ত কি?’’ লোকটি বলল, ‘‘আল্লহ যেন আমার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেন। যার ফলে আমি লোকজনকে দেখতে পাব, এটাই আমার প্রিয় জিনিস।’’ ফেরেস্তা তখন তার চোখে হাত বুলিয়ে দিল। এতে লোকটির দৃষ্টিশক্তি আল্লহ তাআলা ফিরিয়ে দিলেন। ফেরেস্তা তাকে বলল, ‘‘কি সম্পদ তোমার কাছে প্রিয়? সে বলল, ‘‘ছাগল আমার বেশি প্রিয়।’’ তখন তাকে একটি গর্ভবতী ছাগল দেয়া হলো। তারপর ছাগল বংশ বৃদ্ধি করতে লাগলো। এমনিভাবে উট ও গরু বংশ বৃদ্ধি করতে লাগলো। অবশেষে অবস্থা এই দাঁড়াল যে, একজনের উট দ্বারা মাঠ ভরে গেলো, আরেকজনের গরু দ্বারা মাঠ পূর্ণ হয়ে গেলো এবং আরেকজনের ছাগল দ্বারা মাঠ ভর্তি হয়ে গেলো।

এমতাবস্থায় একদিন ফেরেস্তা তার স্বীয় বিশেষ আকৃতিতে কুষ্ঠ রোগীর কাছে উপস্থিত হয়ে বলল, ‘‘আমি একজন মিসকিন।’’ আমার সফরের সম্বল শেষ হয়ে গেছে [আমি খুবই বিপদগ্রস্ত] আমার গন্তব্যে পৌঁছার জন্য প্রথমে আল্লহর তারপর আপনার সাহায্য দরকার। যে আল্লহ আপনাকে এত সুন্দর রং এবং সুন্দর ত্বক দান করেছেন, তাঁর নামে আমি আপনার কাছে একটা উট সাহায্য চাই, যাতে আমি নিজ গন্তব্যস্থানে পৌঁছতে পারি। তখন লোকটি বলল, ‘দেখুন, আমার অনেক দায়-দায়িত্ব আছে, হকদার আছে।’ ফেরেস্তা বলল, ‘আমার মনে হয়, আমি আপনাকে চিনি।’ আপনি কি কুষ্ঠ রোগী ছিলেন না? আপনি খুব গরিব ছিলেন? লোকজন আপনাকে খুব ঘৃণা করতো। তারপর আল্লাহ আপনাকে এ সম্পদ দান করেছেন। তখন লোকটি বলল, ‘এ সম্পদ আমার পূর্ব পুরুষ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। ফেরেস্তা তখন বলল, ‘‘তুমি যদি মিথ্যাবাদী হয়ে থাকো তাহলে আল্লহ যেন তোমাকে পূর্বের অবস্থা ফিরিয়ে দেন।’’

তারপর ফেরেস্তা মাথায় টাক- পড়া লোকটির কাছে গেল এবং ইতিপূর্বে কুষ্ঠ রোগীর সাথে যে ধরনের কথা বলেছিল, তার [টাক পড়া লোকটির] সাথেও সে ধরনের কথা বলল। প্রতি উত্তরে কুষ্ঠ রোগী যে ধরনের জবাব দিযেছিল, এ লোকটিও সেই একই ধরনের জবাব দিল। তখন ফেরেস্তাও আগের মতই বলল, ‘যদি তুমি মিথ্যাবাদী হও তাহলে আল্লহ তাআলা যেন তোমাকে তোমার পূর্বের অবস্থা ফিরিয়ে দেন।’ অতঃপর ফেরেস্তা স্বীয় আকৃতিতে অন্ধ লোকটির কাছে গিয়ে বলল, ‘আমি এক গরিব মুসাফির। আমার পথের সম্বল নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে। প্রথম আল্লহর তারপর আপনার সাহায্য কামনা করছি। যিনি আপনার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন, তাঁর নামে একটি ‘ছাগল’ আপনার কাছে সাহায্য চাই, যাতে আমার সফরে নিজ গন্তব্যস্থানে পৌছতে পারি।’ তখন লোকটি বলল, ‘আমি অন্ধ ছিলাম। আল্লহ তাআলা আমার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন। আপনার যা খুশি নিয়ে যান, আর যা খুশি রেখে যান। আল্লহর কসম, আল্লহর নামে আপনি আজ যা নিয়ে যাবেন, তার বিন্দুমাত্র আমি বাধা দেব না।’ তখন ফেরেস্তা বলল, ‘আপনার মাল আপনি রাখুন। আপনাদেরকে শুধুমাত্র পরীক্ষা করা হলো। আপনার আচরণে আল্লহ সন্তুষ্ট হয়েছেন, আপনার সঙ্গী দ্বয়ের আচরণে অসন্তুষ্ট হয়েছেন।’’ (বুখারী ও মুসলিম)

এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায় .

১। সূরা ফুসসিলাতের ৫০ নং আয়াতের তাফসীর।

২। لَيَقُولَنَّ هَذَا لِي এর অর্থ।

৩। إِنَّمَا أُوتِيتُهُ عَلَى عِلْمٍ عِنْدِي এর অর্থ।

৪। আশ্চর্য ধরনের কিসসা এবং তাতে নিহিত উপদেশাবলী।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন