hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাওহীদের মর্মকথা

লেখকঃ আব্দুর রহমান বিন নাসের সাদী

ভূমিকা
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার। আমরা তাঁরই গুণ গাই এবং তাঁরই কাছে সাহায্য চাই। তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তাঁরই কাছে তাওবা করি। আমাদের নফ্সের অনিষ্টতা এবং আমাদের বদ-আমল থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই। তিনি যাকে হেদায়েত করেন তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারে না। আবার যাকে পথভ্রষ্ট করেন তাকে কেউ হেদায়েত দান করতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরিক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁরই বান্দা এবং রাসূল।

শাইখুল ইসলাম মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহ্হাব রহ. কর্তৃক প্রণীত গ্রন্থ ‘কিতাবুত্তাওহীদ’ এর উপর ইতিপূর্বে একটি বিষয় ভিত্তিক পর্যালোচনামূলক বই লিখেছি। এর দ্বারা কর্মব্যস্ত মানুষ এবং শিক্ষকতায় নিয়োজিত লোকদের যথেষ্ট উপকার ও কল্যাণ সাধিত হয়েছে। কারণ এতে ছিল বিষয়বস্ত্তর বিস্তারিত বিবরণ ও সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা। অতঃপর এর চাহিদার দ্রুত বৃদ্ধির ফলে এ বই পূণর্মূদ্রণ ও প্রচার অত্যাবশ্যক হয়ে পড়ে। এবার ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের’ সংক্ষিপ্ত আক্বীদা এবং এর মৌলিক ও আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো ভূমিকায় পেশ করার বিষয়টি আমার কাছে সমীচীন বলে মনে হচ্ছে। তাই আল্লাহর সাহায্য কামনার মাধ্যমে তা পেশ করছি।

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আক্বীদা এই যে, তারা আল্লাহ, তাঁর সকল ফেরেশ্তা তাঁর ঐশী গ্র‎ন্থাবলী, সকল রাসূল, পরকাল এবং তাক্দীরের ভাল-মন্দের উপর ঈমান রাখে।

তারা স্বাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহই হচ্ছেন একমাত্র রব, ইলাহ এবং মা’বুদ। পূর্ণাঙ্গ কামালিয়াতের দ্বারা তিনি একক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। তাই নিষ্ঠার সাথে তারা একমাত্র আল্লাহরই ইবাদত করে।

তারা বলে, একমাত্র আল্লাহই হচ্ছেন সবকিছুর স্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপকার, রিজিকদাতা, সকল কিছুর দানকারী, নিষেধকারী এবং পরিকল্পনাকারী। তিনিই ইলাহ এবং আকাঙ্ক্ষিত একক মা’বুদ। তিনিই সেই প্রথম সত্তা যার পূর্বে কোন কিছুর অস্তিত্ব ছিল না। তিনিই সর্বশেষ সত্তা যার পরে কোন কিছুরই অস্তিত্ব থাকবে না। তিনিই ‘যাহের’ যার উর্ধে কোন কিছুর অস্তিত্ব নেই। তিনিই ‘বাতেন’ যিনি ছাড়া চিরন্তন কোন সত্তা নেই।

তিনি সকল অর্থ ও বিবেচনায় শ্রেষ্ঠ জাত, মর্যাদা ও শক্তির দিক থেকে সর্বোচ্চ আসনের অধিকারী। তিনি মহান আরশে এমনিভাবে সমাসীন যেমনটি তাঁর আজমত, জালালত এবং উচ্চ মর্যাদার জন্য শোভনীয় ও সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাঁর জ্ঞান জাহের, বাতেন এবং ঊর্ধ্বলোক ও অধঃজগতকে বেষ্টন করে রেখেছে। জ্ঞানের দ্বারা তিনি বান্দার সাথেই রয়েছেন। বান্দাদের সকল অবস্থা তিনি জানেন। তিনি বান্দাদের অতি নিকটে রয়েছেন। তাদের ডাকে তিনি সাড়া দেন।

তিনি সর্বতভাবে সমস্ত সৃষ্টি জগতের কাছে মুখাপেক্ষী হওয়া থেকে মুক্ত। কিন্তু সদা-সর্বদা সৃষ্টি জগতের সবকিছুই নিজের অস্তিত্বের ব্যাপারে এবং প্রয়োজন মিটানোর ব্যাপারে তাঁর মুখাপেক্ষী। কেউ কোন মুহূর্তের জন্যও তাঁর দৃষ্টির বাইরে থাকতে পারে না। তিনি ক্ষমাশীল, দয়াবান। দ্বীন ও দুনিয়ার যে কোন নেয়ামত তাঁরই কাছ থেকে আগমন করে। আবার যে কোন দুঃখ তিনিই দূর করেন। তিনিই কল্যাণ দানকারী এবং দুঃখ লাঘবকারী।

তাঁর করুণার নিদর্শন স্বরূপ তিনি রাতের শেষ তৃতীয়াংশ দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং বান্দাদেরকে তাদের প্রয়োজনের কথা তাঁর কাছে পেশ করতে বলেন। তিনি বলতে থাকেন, আমাকে ডাকার মত কে আছে? আমি তার ডাকে সাড়া দেব। আমার কাছে চাওয়ার মত কে আছে? আমি তাকে দান করব। আমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার মত কে আছে? আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। ফজর পর্যন্ত এভাবে তিনি ডাকতে থাকেন। তিনি তাঁর মর্জি মোতাবেক আকাশে অবতরণ করেন এবং নিজ ইচ্ছা মোতাবেক কাজ করেন। ‘‘কোন কিছুই তাঁর মত নয়, তিনি সব কিছুই দেখেন এবং শুনেন।’’

তারা বিশ্বাস করে যে, তিনিই একমাত্র হাকিম [মহা কৌশলি]। তাঁর ‘‘শরীয়ত’’ ও নির্ধারিত ‘তাকদীর’ উভয় ক্ষেত্রে মহা কৌশল নিহিত আছে। কোন কিছুই তিনি অনর্থক সৃষ্টি করেননি। একমাত্র কল্যাণ ও কৌশলের স্বার্থেই শরিয়তের বিধান দান করেছেন।

তিনি তাওবা কবুলকারী, মার্জনাকারী এবং ক্ষমাশীল। বান্দাদের তাওবা তিনি কবুল করেন এবং তাদের অন্যায়গুলোকে ক্ষমা করে দেন। যারা তাওবা করেন, ক্ষমা চায় এবং তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তন করে তাদের বড় বড় গুনাহকে তিনি ক্ষমা করে দেন। যে ব্যক্তি সামান্য আমলের মাধ্যমেও তাঁর শুকরিয়া জ্ঞাপন করে তার শুকরিয়া তিনি গ্রহণ করেন। আর শুকরিয়া জ্ঞাপনকারীদের জন্য তিনি তাঁর করুণা আরো বৃদ্ধি করে দেন।

তারা আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা এমনভাবে করে, যেভাবে আল্লাহ নিজে তাঁর প্রশংসা করেছেন এবং রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেভাবে তাঁর জাত-সত্তা সম্পর্কে প্রশংসা করেছেন। যেমন:

(১) হায়াতে কামেলা [অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ জীবন], শ্রবণশক্তি, দৃষ্টি শক্তি, পরিপূর্ণ কুদরত, মহত্ত্ব, বড়ত্ব, মাজদ, জালালত, সৌন্দর্য ও নিরঙ্কুশ প্রশংসার অধিকারী হওয়া।

(২) কর্মগুণ : যা তাঁর ইচ্ছা ও কুদরতের সাথে সম্পৃক্ত। যেমন: রহমত, সন্তুষ্টি, অসন্তুষ্টি এবং কথা বলার গুণ। তিনি কথা বলেন। যা ইচ্ছা তাই করেন, যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে করেন। তাঁর কথা নিঃশেষ হয় না, ধ্বংস হয় না। কুরআন আল্লাহর কালাম কিন্তু ‘‘মাখলুক’’ নয়। এ কালামের সূচনা হয়েছে তাঁরই কাছ থেকে। আবার তাঁরই কাছে ফিরে যাবে।

(৩) আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা করেই ছাড়েন। তাঁর এ সিফাত বা গুণ ছিল, আছে এবং থাকবে। যা ইচ্ছা করেন তাই বলেন, ‘কুদরী’ ‘শরয়ী’ এবং ‘জাযায়ী’ অর্থাৎ তাকদীর, শরীয়ত ও ‘পরিণামের’ বিধান মোতাবেক তিনি তার বান্দাদের উপর হুকুম জারি করেন। একমাত্র তিনিই হচ্ছেন হুকুমদাতা প্রভু। তিনি ছাড়া সবাই চাকর ও হুকুমের তাঁবেদার। তাই তাঁর রাজত্ব ও হুকুমের বাইরে যাওয়ার কোন অবকাশ বান্দার নেই।

তারা কুরআনে করিমে নাজিলকৃত সব কিছুই বিশ্বাস করে। এর সাথে সাথে সহীহ সুন্নতকেও বিশ্বাস করে। মুমিনগণ আখেরাতে প্রকাশ্যে আল্লাহ তা‘আলাকে দেখতে পাবে। তাঁর দর্শন লাভের নেয়ামত এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে যে বিজয় অর্জিত হবে তার চেয়ে বড় নেয়ামত, ও সুখানুভূতি আর কিছুই নেই।

যারা ঈমান ও তাওহীদ ব্যতীত মৃত্যু বরণ করবে তারা চির জাহান্নামি হবে। পক্ষান্তরে ইমানদার ব্যক্তি যদি কবিরা গুনাহ করে বিনা তওবায় মৃত্যু বরণ করে, গুনাহ মাফ ও শাফাআ‘তের কোন উপায় না থাকে, তবে জাহান্নামে গেলেও সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে না। বিন্দু পরিমাণ ঈমান অন্তরে থাকলেও একদিন না একদিন জাহান্নাম থেকে বের হবেই।

অন্তরের আক্বীদা ও আমল ঈমানের অন্তর্ভুক্ত। এমনকি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কার্যকলাপ এবং মুখের কথাও এর মধ্যে শামিল। পরিপূর্ণরূপে যে ব্যক্তি অঙ্গ- প্রত্যঙ্গকে কাজে লাগাবে সেই সত্যিকারের মোমিন, সেই সওয়াবের অধিকারী হবে এবং শাস্তি থেকে মুক্তি পাবে। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের হক আদায়ের ব্যাপারে যে যতটুকু কম দায়িত্ব পালন করবে তার ঈমানও ততটুকু হ্রাস পাবে। এ কারণেই আনুগত্য ও কল্যাণমূলক কাজের দ্বারা ঈমান বৃদ্ধি পায় পক্ষান্তরে নাফরমানি ও অন্যায়মূলক কাজের মাধ্যমে ঈমান হ্রাস পায়।

তাদের মৌলিক নীতি হলো দ্বীন ও দুনিয়ার কল্যাণমূলক কাজে চেষ্টা সাধনা করা এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া। তাই কল্যাণমূলক কাজে তারা খুবই আগ্রহ রাখে এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য চায়।

এমনিভাবে তারা তাদের যাবতীয় আচার-আচরণে পূর্ণ ইখলাসের পরিচয় দেয়। ইখলাসের ক্ষেত্রে তারা আল্লাহর রাসূলের আনুগত্য করে। মা‘বুদের সন্তুষ্টি লাভের জন্য এবং রাসূলের অনুসরণের জন্য উক্ত ইখলাস আল্লাহর জন্যই নিবেদন করে। মোমিনদেরকে তারা নসিহত করে সঠিক পথ অনুসরণ করার জন্য।

তারা আরো সাক্ষ্য দেয় যে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা এবং তাঁরই রাসূল। হেদায়াত এবং দ্বীনে হক দিয়ে তাঁকে আল্লাহ পাঠিয়েছেন সমগ্র দ্বীনের উপর বিজয় অর্জন করার জন্য। তিনি সর্বশেষ নবী। মানুষ ও জিন জাতির কাছে সুসংবাদ দাতা এবং ভয় প্রদর্শনকারী হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন। আল্লাহর নির্দেশেই তিনি ‘দায়ী ইলাল্লাহ’ হিসেবে এবং উজ্জ্বল প্রদীপ হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন। দ্বীন ও দুনিয়ার কল্যাণের জন্য তাঁকে পাঠানো হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে সৃষ্টি জগৎ যেন একমাত্র আল্লাহরই ইবাদত করে এবং তাঁর রিজিকের মাধ্যমে তাঁর ইবাদতের জন্য তাঁর কাছে সাহায্য কামনা করে।

তারা জানে যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামই হচ্ছেন সৃষ্টিকুলের মধ্যে সবচেয়ে জ্ঞানী, সবচেয়ে সত্যবাদী, সর্বোত্তম উপদেশ দাতা, এবং সর্বশ্রেষ্ঠ বাগ্মী। তারা তাঁকে সম্মান করে এবং ভালোবাসে। সমগ্র সৃষ্টিকুলের মুহববতের উপর তাঁর মুহববতকে অগ্রাধিকার দেয়। দ্বীনের মৌলিক ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ে তারা তাঁর আনুগত্য করে।

তারা যে কোন মানুষের কথা ও হিদায়াতের উপর তাঁর কথা ও হিদায়াতকে অগ্রাধিকার দেয়।

তারা আরো বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে যে মর্যাদা, বৈশিষ্ট্য, কামালিয়াত বা পূর্ণাঙ্গতা দান করেছেন অন্য কারো জন্য তা দান করেননি। তিনি মান ও মর্যাদার দিক থেকে গোটা সৃষ্টিকুলের মধ্যে সর্বোচ্চ আসনের অধিকারী। সকল মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যে তিনি পরিপূর্ণ। উম্মতের জন্য এমন কোন কল্যাণ নেই যা তিনি দেখিয়ে যাননি। এমন কোন অকল্যাণও নেই যার ব্যাপারে তিনি তাদেরকে সতর্ক করে দেননি।

এমনিভাবে আল্লাহর নাজিলকৃত সকল আসমানি কিতাবকে তারা বিশ্বাস করে। আল্লাহর প্রেরিত সকল রাসূলকে তারা বিশ্বাস করে। কোন নবীর মধ্যে তারা পার্থক্য করে না। [কাউকে খাট করে দেখে না]।

তারা তাকদীরের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রাখে। তারা বিশ্বাস করে যে, বান্দার ভাল-মন্দ যাবতীয় কাজ আল্লাহর জ্ঞানের আওতাধীন। তারা মনে করে যে তাকদীরের লিখন সংঘটিত সকল কাজের উপর প্রয়োগ হয়েছে। তাঁর ইচ্ছা এতে কাজ করেছে। কোন না কোন হিকমত এর সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে। বান্দার জন্য তাকদীর এবং ইচ্ছা উভয়টাই সৃষ্টি করা হয়েছে। এর দ্বারাই তাদের ইচ্ছা মোতাবেক তাদের কথা-বার্তা ও কর্ম-কান্ড সংঘটিত হয়। কোন ব্যাপারেই তাদেরকে জবরদস্তি করা হয় না। বরং তারা এ ব্যাপারে স্বাধীন। মোমিনদের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা ইমানকে ভালোবাসার বস্ত্ত বানিয়ে দিয়েছেন, এবং ঈমানকে তাদের অন্তরে সৌন্দর্যমন্ডিত করে দিয়েছেন। পক্ষান্তরে কুফরি, অশ্লীলতা, নাফরমানিকে তাদের অন্তরে ঘৃণার বস্ত্ত বানিয়ে দিয়েছেন। এটা মূলত তাঁরই ন্যায় নীতি ও হিকমতের অংশ।

আহলে সুন্নাতের আরো একটি মৌলিক নীতি হচ্ছে, তারা বিশ্বাস করে, নসিহত হচ্ছে আল্লাহ, তাঁর কিতাব, তাঁর রাসূল, মুসলমানদের ইমাম ও সাধারণ মুসলমানদের জন্য। তারা শরিয়তের পক্ষ থেকে আরোপিত দায়িত্বানুযায়ী ‘আমর বিল মা’রূফ’ এবং ‘নাহি আনিল মুনকার’ এর কাজ করে। তারা পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষার নির্দেশ দেয়। প্রতিবেশী, অধীনস্থ চাকর-বাকর ও কর্মচারী এবং তাদের উপর যারই অধিকার আছে তাদের প্রতি সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দেয়। এমন কি গোটা সৃষ্টিকুলের প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দেয়।

তারা উন্নত ও মহৎ চরিত্রের আহবান জানায়। খারাপ ও দুশ্চরিত্রের অনিষ্টতা থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ দেয়। তারা আরো বিশ্বাস করে যে, ঈমান ও ইয়াক্বীনের দিক থেকে পূর্ণাঙ্গ মোমিন হচ্ছে তারা, যারা আমল ও আখলাকের দিক থেকে সবচেয়ে উত্তম, কথায় সবচেয়ে সত্যবাদী, কল্যাণ ও মর্যাদার দিক থেকে বেশি নিকটবর্তী আর দুশ্চরিত্র থেকে দূরবর্তী।

তারা শরিয়তের বিধান জারি করার ব্যাপারে তাদের রাসূলের কাছ থেকে যে নির্দেশ প্রাপ্ত হয়েছে তার পূর্ণ বৈশিষ্ট্যের দাবি অনুযায়ী অপরকে আদেশ দেয় এবং তার বিভ্রান্তি ও ত্রুটির ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়।

তারা মনে করে ‘জিহাদ ফি সাবীলিল্লাহ’ হচ্ছে দ্বীনের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। জিহাদ হতে হবে কখনো জ্ঞান ও দলিল প্রমাণের মাধ্যমে আবার কখনো অস্ত্রের মাধ্যমে। স্বীয় সামর্থ্য ও শক্তি অনুযায়ী দ্বীনের পক্ষে জিহাদ করা প্রতিটি মুসলমানের উপর ফরজ।

তাদের আরো একটি মৌলিক নীতি হচ্ছে মুসলমানদের ঐক্যের প্রতি মানুষকে উৎসাহিত করা এবং মুসলমানদের পারস্পরিক আন্তরিকতা ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে জোরদার করার জন্য প্রচেষ্টা করা। সাথে সাথে পারস্পরিক বিচ্ছিন্নতা, হানা-হানি, হিংসা-বিদ্বেষ এবং এমন সব কর্মকান্ডের ব্যাপারে সতর্ক থাকা যেগুলো নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে নিয়ো যায়।

তাদের মূলনীতির আরো একটি দিক হচ্ছে, মানুষের জান-মাল, ইজ্জত- সম্মান ও অধিকার ইত্যাদি ক্ষেত্রে কাউকে কষ্ট না দেয়া, আর যাবতীয় আচার- আচরণের মধ্যে ন্যায়-নীতি ও সুবিচার কায়েম করা। এতেই নিহিত রয়েছে সৃষ্টির প্রতি এহসান ও মর্যাদা।

তারা আরো বিশ্বাস করে, সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত বা জাতি হচ্ছে ‘উম্মতে মুহাম্মদী’। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী হচ্ছেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবায়ে কেরাম। বিশেষ করে খোলাফায়ে রাশেদীন, জান্নাতের শুভ সংবাদপ্রাপ্ত সাহাবায়ে কেরাম, বদর যুদ্ধে এবং বাইয়া‘তে রেদওয়ানে অংশগ্রহণকারী সাহাবায়ে কেরাম, মুহাজির ও আনসারগণের মধ্যে অগ্রবর্তী সাহাবায়ে কেরাম। তারা সাহাবায়ে কেরামকে ভাল বাসে। তারা তাঁদের ভাল কাজের জন্য প্রশংসা করে এবং তাঁদের দোষ ত্রুটির ব্যাপারে চুপ থাকে।

হিদায়াতের কাজে নিয়োজিত উলামায়ে কেরাম এবং ন্যায়- পরায়ণ ইমামদেরকে সম্মান করার বিষয়টিকে তারা দ্বীনের কাজ মনে করে। মুসলমানদের মধ্যে যাদের উচ্চ মর্যাদা ও সম্মান রয়েছে তাদেরকেও তারা ইজ্জত করে। তারা তাঁদের জন্য আল্লাহর কাছে এই দোয়া করে, তাদেরকে যেন সংশয়, শিরক, বিচ্ছিন্নতা, মোনাফিকী, এবং চারিত্রিক অনিষ্টতা থেকে তিনি হেফাজত করেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত তাঁদেরকে যেন তাঁদের নবীর দ্বীনের উপর অটল অবিচল রাখেন।

এই মৌলিক নীতিমালাকে তারা বিশ্বাস করে। এগুলোকেই তাদের আক্বীদার অংশ মনে করে এবং এগুলোর প্রতিই মানুষকে আহবান জানায়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন