hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাওহীদের মর্মকথা

লেখকঃ আব্দুর রহমান বিন নাসের সাদী

২০
১৭তম অধ্যায়: শাফাআত [সুপারিশ]
১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন,

وَأَنْذِرْ بِهِ الَّذِينَ يَخَافُونَ أَنْ يُحْشَرُوا إِلَى رَبِّهِمْ لَيْسَ لَهُمْ مِنْ دُونِهِ وَلِيٌّ وَلَا شَفِيعٌ ( الأنعام : ৫১)

‘‘তুমি কুরআনের মাধ্যমে সে সব লোকদের ভয় দেখাও, যারা তাদের রবের সামনে উপস্থিত হওয়াকে ভয় করে। সেদিন তাদের অবস্থা এমন হবে যে, আল্লাহ ছাড়া তাদের কোন সাহায্যকারী বন্ধু এবং কোন শাফাআতকারী থাকবে না।’’ (আনআ’মঃ ৫১)

২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেন,

قُلْ لِلَّهِ الشَّــفَاعَةُ جَمــِيعًا ( الزمر : ৪৪)

‘‘বলুন, সমস্ত শাফাআত কেবলমাত্র আল্লাহরই ইখতিয়ার ভুক্ত’’। (ঝুমার: ৪৪)

৩। আল্লাহ তাআলা অন্য আয়াতে এরশাদ করেছেন,

ব্যাখ্যা

শাফাআত [বা সুপারিশ]

লেখক আলোচিত অধ্যায় গুলোকে সুস্পষ্ট করে তোলার জন্য ‘‘শাফাআত’’ অধ্যায়টি আলোচনা করেছেন। কারণ, মুশরিকরা তাদের শিরক করার ব্যাপারে ফিরিস্তা, আম্বিয়া, এবং অলীদের কাছে তাদের দোয়া করার পক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করে। তারা বলে, ‘‘আমরা তাদেরকে ডাকি ও তাদের কাছে দোয়া করি, সাথে সাথে এটাও আমরা জানি যে তারা মাখলুক, তারা আল্লাহর অধীন। যেহেতু আল্লাহ তাআলার কাছে তাদের মর্যাদাপূর্ণ স্থানে পৌঁছে দেয়ার উদ্দেশ্যে এবং আল্লাহর কাছে আমাদের জন্য শাফাআত করার জন্য আমরা তাদেরকে ডাকি, যেমনিভাবে উদ্দেশ্য হাসিল, প্রয়োজন মিটানো এবং কাংখিত লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য মর্যাদাবান ব্যক্তিরা মধ্যস্থতা করে রাজা-বাদশাহদের সান্নিধ্যে পৌঁছে দেয়। তাদের এ যুক্তি একেবারেই বাতিল এবং

مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ ( البقرة : ২৫৫)

‘‘তাঁর [আল্লাহর] অনুমতি ব্যতীত তাঁর দরবারে কে শাফাআত [সুপারিশ] করতে পারে?’’ (বাকারাহ . ২৫৫)

৪। আল্লাহ তাআলা অন্যত্র এরশাদ করেছেন,

وَكَمْ مِنْ مَلَكٍ فِي السَّمَاوَاتِ لَا تُغْنِي شَفَاعَتُهُمْ شَيْئًا إِلَّا مِنْ بَعْدِ أَنْ يَأْذَنَ اللَّهُ لِمَنْ يَشَاءُ وَيَرْضَى ﴿ألنجم :২৬﴾

‘‘আকাশ মন্ডলে কতইনা ফিরিস্তা রয়েছে। তাদের শাফাআত কোন কাজেই আসবে না, তবে হ্যাঁ, তাদের শাফাআত যদি এমন কোন ব্যক্তির পক্ষে হয় যার আবেদন শুনতে তিনি ইচ্ছা করবেন এবং তা পছন্দ করবেন।’’ (নাজম : ২৬)

৫। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেন,

قُلِ ادْعُوا الَّذِينَ زَعَمْتُمْ مِنْ دُونِ اللَّهِ لَا يَمْلِكُونَ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ فِي السَّمَاوَاتِ وَلَا فِي الْأَرْضِ ( سبأ : ২২)

‘‘[হে মুহাম্মদ, মুশরিকদেরকে] বলো, তোমরা তোমাদের সেই সব

অন্তঃসারশূণ্য। তাদের উপরোক্ত বক্তব্য রাজাধিরাজ মহান আল্লাহ তাআলা যাকে সবাই ভয় করে, সমস্ত সৃষ্টি জগৎ যার করতলগত, তাঁর সাথে দুনিয়ার পর মুখাপেক্ষী রাজাদের তুলনা করারই নামান্তর। দুনিয়ার রাজা-বাদশাহরা নিজেদের কাজ পরিপূর্ণভাবে সমাধা করার জন্য এবং প্রভাব ও শক্তি খাটানোর জন্য মন্ত্রীবর্গের মুখাপেক্ষী হয়।

মুশরিকদের উপরোক্ত দাবি আল্লাহ তাআলা বাতিল ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ তাআলা যেমনি ভাবে গোটা বিশ্বের মালিক এবং স্বার্বভৌমত্বের অধিকারী, তেমনি ভাবে সব ধরনের শাফাআতও তাঁরই এখতিয়ারভূক্ত বলে ঘোষণা করেছেন। তাঁরই অনুমতি ব্যতীত কেউ তাঁর কাছে শাফাআত করতে পারবে না। যার কথা ও কাজে তিনি সন্তুষ্ট, তাকে ছাড়া আর কাউকে তিনি শাফাআতের অনুমতি দিবেন না। আর তাওহীদ এবং ইখলাস পূর্ণ কাজ ব্যতীত তিনি অন্য কিছুতে সন্তুষ্ট হন না।

মা’বুদদেরকে ডেকে দেখো, যাদেরকে তোমরা আল্লাহ ব্যতীত নিজেদের মা’বুদ মনে করে নিয়েছো, তারা না আকাশের, না জমিনের এক অনু পরিমাণ জিনিসের মালিক।’’ (সাবা : ২২)

আবুল আববাস ইবনে তাইমিয়াহ রহ. বলেন, মুশরিকরা আল্লাহ ছাড়া যার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করেছে, তার সবই আল্লাহ তাআলা অস্বীকার করেছেন।

গাইরুল্লাহর জন্য রাজত্ব অথবা আল্লাহর ক্ষমতায় গাইরুল্লাহর অংশীদারিত্ব অথবা আল্লাহর জন্য কোন গাইরুল্লাহ সাহায্যকারী হওয়ার বিষয়কে তিনি অস্বীকার করেছেন। বাকি থাকলো শাফাআতের বিষয়। এ ব্যাপারে কথা হচ্ছে এই যে, ‘‘আল্লাহ তাআলা শাফাআত [সুপারিশ] এর জন্য যাকে অনুমতি দিবেন তার ছাড়া আর কারো শাফাআত কোন কাজে আসবে না।’’

আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন,

وَلَا يَشْفَعُونَ إِلَّا لِمَنِ ارْتَضَى ( الأنبياء : ২৮)

‘‘তিনি [আল্লাহ] যার ব্যাপারে সন্তুষ্ট হবে, কেবলমাত্র তার পক্ষেই তারা শাফাআত [সুপারিশ] করবে।’’ (আম্বিয়া : ২৮)

আল্লাহ তাআলা বলে দিয়েছেন যে, মুশরিকদের ভাগ্যে কোন ধরনের শাফাআতই নেই। সাথে সাথে এটাও বলে দিয়েছেন যে, তাঁর অনুমতি সাপেক্ষে যে শাফাআত কুরআন ও সুন্নায় স্বীকৃত রয়েছে, তা তাঁরই পক্ষ থেকে রহমত স্বরূপ মুখলিস বান্দাদের জন্যই বিশেষভাবে নির্ধারিত। এর দ্বারা তিনি তাঁর করুণা হিসেবে শাফাআতকারীকে সম্মাণিত করবেন। আর সুপারিশকৃত ব্যক্তির প্রতি ক্ষমতা প্রদর্শন করবেন। প্রকৃত পক্ষে এরজন্য তিনিই হচ্ছে একমাত্র প্রশংসিত সত্তা। তিনিই মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে শাফাআতের জন্য অনুমতি প্রদান করবেন এবং ‘মাকামে মাহমুদ প্রদান করে ভাগ্যবান করবেন। এটাই হচ্ছে শাফাআতের ব্যাপারে বিস্তারিত কথা, যার প্রমাণাদি কুরআন ও সুন্নায় পাওয়া যায়। এখানে গ্রন্থকার শাইখ তাকীউদ্দীন (রহ.) এর কথা উল্লেখ করেছেন, যা আলোচিত বিষয়টি অনুধাবন করার জন্য যথেষ্ট।

এ অধ্যায়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে, কুরআন ও সুন্নাহর এমন দলিল প্রমাণাদি উল্লেখ করা,

মুশরিকরা যে শাফাআতের আশা করে, কেয়ামতের দিন তার কোন অস্তিত্বই থাকবে না। কুরআনে কারীমও এধরনের শাফাআতকে অস্বীকার করেছে। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানিয়েছেন,

أنه يأتي فيسجد لربه ويحمده ـ لا يبدأ بالشفاعة أولا ـ ثم يقال له : ارفع رأسك، وقل يسمع، وسل تعط، واشقع تشفّع .

‘‘তিনি অর্থাৎ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হবেন। অতঃপর তাঁর রবের উদ্দেশ্যে তিনি সেজদায় লুটিয়ে পড়বেন এবং আল্লাহর প্রশংসায় মগ্ন হবেন। প্রথমেই তিনি শাফাআত বা সুপারিশ করা শুরু করবেন না। অতঃপর তাঁকে বলা হবে, ‘‘হে মুহাম্মদ, তোমার মাথা উঠাও। তুমি তোমার কথা বলতে থাকো, তোমার কথা শ্রবন করা হবে। তুমি চাইতে থাকো, তোমাকে দেয়া হবে। তুমি সুপারিশ করতে থাকো, তোমার সুপারিশ গ্রহণ করা হবে।’’

আবু হুরাইয়ারা রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনার শাফাআত লাভে সবচেয়ে সৌভাগ্যবান ব্যক্তি কে? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জবাবে বললেন, ‘যে ব্যক্তি খালেস দিলে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে।’’

এ হাদিসে উল্লেখিত শাফাআত [বা সুপারিশ] আল্লাহ তাআলার অনুমতি প্রাপ্ত এবং নেককার মুখলিস বান্দাদের জন্য নির্দিষ্ট। আল্লাহর সাথে যে ব্যক্তি কাউকে শরিক করবে তার ভাগ্যে এ শাফাআত জুটবে না।

যা দ্বারা মুশরিকদের সাথে তাদের যাবতীয় উপাস্য গুলোর সম্পর্ক ও ওসীলা বাতিল প্রমাণিত হয়। আল্লাহর রাজত্ব ও কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে তাদের কোন অধিকার নেই। এ অধিকার স্বতন্ত্রভাবে ও নেই, সামষ্টিকভাবেও নেই, সাহায্যকারী হিসেবেও নেই; এমনকি তার ক্ষমতা প্রকাশকারী হিসেবেও নেই। শাফাআতের ব্যাপারেও তাদের কিছুই করার নেই। এর সব কিছুই একমাত্র আল্লাহর মালিকানা ও কর্তৃত্বাধীন। অতএব এটাই প্রমাণিত ও সাব্যস্ত হলো যে, একমাত্র আল্লাহই মা’বুদ হওয়ার যোগ্য।

এ আলোচনার মর্মার্থ হচ্ছে এই যে, আল্লাহ তাআলা মুখলিস বান্দাগণের প্রতি অনুগ্রহ করবেন এবং শাফাআতের জন্য অনুমতি প্রাপ্ত ব্যক্তিদের প্রার্থনায় তাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, শাফাআতকারীকে সম্মানিত করা এবং মাকামে মাহমূদ অর্থাৎ প্রশংসিত স্থান দান করা।

কুরআনে কারীম যে শাফাআতকে অস্বীকার করেছে, তাতে শিরক বিদ্যমান রয়েছে। এ জন্যই আল্লাহ তাআলার অনুমতি সাপেক্ষে শাফাআত এর স্বীকৃতির কথা কুরআনে বিভিন্ন জায়গায় এসেছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্ণনা করেছেন যে, শাফাআত একমাত্র তাওহীদবাদী নিষ্ঠাবানদের জন্যই নির্দিষ্ট।

এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয় গুলো জানা যায়ঃ

১। উল্লেখিত আয়াতসমূহের তাফসীর।

২। যে শাফাআতকে অস্বীকার করা হয়েছে তার প্রকৃতি।

৩। স্বীকৃত শাফাআতের গুণ ও বৈশিষ্ট্য।

৪। সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ শাফাআতের উল্লেখ। আর তা হচ্ছে ‘‘মাকামে মাহমুদ’’

৫। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম [শাফাআতের পূর্বে] যা করবেন তার বর্ণনা। অর্থাৎ তিনি প্রথমেই শাফাআতের কথা বলবেন না, বরং তিনি সেজদায় পড়ে যাবেন। তাঁকে অনুমতি প্রদান করা হলেই তিনি শাফাআত করতে পারবেন।

৬। শাফাআতের মাধ্যমে সবচেয়ে সৌভাগ্যবান ব্যক্তির উল্লেখ।

৭। আল্লাহর সাথে শিরককারীর জন্য কোন শাফাআত গৃহীত হবে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন