hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাওহীদের মর্মকথা

লেখকঃ আব্দুর রহমান বিন নাসের সাদী

৩য় অধ্যায়: তাওহীদের উপরে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি বিনা হিসেবে জান্নাতে যাবে
১। আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেছেন,

إِنَّ إِبْرَاهِيمَ كَانَ أُمَّةً قَانِتًا لِلَّهِ حَنِيفًا وَلَمْ يَكُ مِنَ الْمُشْرِكِينَ ﴿النحل :১২০﴾

‘‘নিশ্চয়ই ইবরাহীম ছিলেন একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর হুকুম পালনকারী একটি উম্মত বিশেষ। এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।’’ (নাহলঃ১২০)

২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন,

وَالَّذِينَ هُمْ بِرَبِّهِمْ لَا يُشْرِكُونَ ﴿ إبراهيم : ৫৯﴾

‘‘আর যারা তাদের রবের সাথে শিরক করে না’’ (মুমিনুন: ৫৯)

৩। হুসাইন বিন আবদুর রহমান থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন, একবার আমি সাঈদ বিন জুবাইরের কাছে উপস্থিত ছিলাম। তিনি বললেন, গতকাল রাত্রে যে নক্ষত্রটি ছিটকে পড়েছে তা তোমাদের মধ্যে কে দেখতে পেয়েছে? তখন বললাম, ‘‘আমি’’। তারপর বললাম, ‘বিষাক্ত প্রাণী কর্তৃক দংশিত হওয়ার কারণে আমি নামাজে উপস্থিত থাকতে পারিনি’। (তিনি বললেন, ‘তখন তুমি কি চিকিৎসা করেছ?

ব্যাখ্যা

যে ব্যক্তি নিজকে তাওহীদের উপরে প্রতিষ্ঠিত করবে, সে বিনা হিসেবে জান্নাতে যাবে।

এ অধ্যায়টি পূর্বোক্ত অধ্যায়ের পরিপূরক এবং আওতাধীন। তাওহীদের উপরে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অর্থ হচ্ছে, শিরকে আকবার ও আসগার (বড় ও ছোট শিরক), আক্বীদা সংক্রান্ত যাবতীয় কথা, কাজ ও ব্যবহারিক ক্ষেত্রে যাবতীয় বেদআত ও পাপ পঙ্কিলতা থেকে তাওহীদকে পরিশুদ্ধ, পবিত্র ও নিষ্কলুষ রাখা। এটা করতে হবে যাবতীয় কথা, কাজ ও ইচ্ছার মধ্যে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ইখলাস বা একনিষ্ঠতা প্রদর্শনের মাধ্যমে, মূল তাওহীদের পরিপন্থী বিষয় তথা শিরকে আকবার থেকে মুক্ত থাকার মাধ্যমে এবং পূর্ণাঙ্গ তাওহীদের পরিপন্থী তথা শিরকে আসগার ও যাবতীয় বিদয়াত থেকে দূরে থাকার মাধ্যমে।

বললাম ‘‘ঝাড় ফুঁক করেছি’’ তিনি বললেন, কিসে তোমাকে এ কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করেছে? [অর্থাৎ তুমি কেন এ কাজ করলে?] বললাম, ‘একটি হাদিস’ [এ কাজে উদ্বুদ্ধ করেছে] যা শা’বী আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন। তিনি বললেন, তিনি তোমাদেরকে কি বর্ণনা করেছেন? বললাম ‘তিনি বুরাইদা বিন আল হুসাইব থেকে আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন যে, চোখের দৃষ্টি বা চোখ লাগা এবং জ্বর ব্যতীত অন্য কোন রোগে ঝাড়- ফুঁক নেই।’ তিনি বললেন, ‘ সে ব্যক্তিই উত্তম কাজ করেছে, যে শ্রুত জিনিস শেষ পর্যন্ত আমল করতে পেরেছে’। কিন্তু ইবনে আববাস রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,

عرضت عليّ الأمم، فرأيت النبي ومعه الرهط، والنبي ومعه الرجل والرجلان، والنبي وليس معه أحد، إذ رفع لي سواد عظيم، فظننت أنهم أمتي، فقيل لي هذا موسى وقومه، فنظرت : فإذا سواد عظيم، فقيل لي : هذه أمتك، ومعهم سبعون ألفا يدخلون الجنة بغير حساب ولا عذاب .

‘‘আমার সম্মুখে সমস্ত জাতিকে উপস্থাপন করা হলো। তখন আমি এমন একজন নবীকে দেখতে পেলাম যার সাথে অল্প সংখ্যক লোক রয়েছে। এরপর আরো একজন নবীকে দেখতে পেলাম যার সাথে মাত্র দু’জন লোক রয়েছে। আবার এমন একজন নবীকে দেখতে পেলাম যার সাথে কোন লোকই নেই। ঠিক এমন সময় আমার সামনে এক বিরাট জনগোষ্ঠী পেশ করা হলো। তখন আমি ভাবলাম, এরা আমার উম্মত। কিন্তু আমাকে বলা হলো এরা হচ্ছে মুসা আ. এবং তাঁর জাতি।

তাওহীদকে কলুষিত করে তোলে, তার পূর্ণতা অর্জনের ক্ষেত্রে অন্তরায় সৃষ্টি করে এবং তার সুফল লাভের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে এমন ধরনের যাবতীয় পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে তাওহীদকে পবিত্র করতে হবে।

ঈমান, তাওহীদ এবং ইখলাস দ্বারা যার হৃদয় ভরে যায়, আল্লাহ তাআলার যাবতীয় নির্দেশ মেনে নেয়, গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করে এবং গুণাহর পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে তাওহীদের ব্যাঘাত ঘটায় না, বর্ণিত এসব গুণাবলির মাধ্যমে তাওহীদকে যে ব্যক্তি আঁকড়ে ধরে সে ব্যক্তিই বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করে স্বীয় মর্যাদাপূর্ণ স্থান বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রবর্তী লোকদের অন্তর্ভুক্ত হবে।

এরপর আরো একটি বিরাট জনগোষ্ঠীর দিকে আমি তাকালাম। তখন আমাকে বলা হলো, এরা আপনার উম্মত। এদের মধ্যে সত্তুর হাজার লোক রয়েছে যারা বিনা হিসেবে এবং বিনা আজাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। একথা বলে তিনি দরবার থেকে উঠে বাড়ির অভ্যন্তরে চলে গেলেন। এরপর লোকেরা ঐ সব ভাগ্যবান লোকদের ব্যাপারে বিতর্ক শুরু করে দিলো। কেউ বলল, তারা বোধ হয় রাসূল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সহচার্য লাভকারী ব্যক্তিবর্গ। আবার কেউ বলল, তারা বোধ হয় ইসলাম পরিবেশে অথবা মুসলিম মাতা-পিতার ঘরে জন্মগ্রহণ করেছে আর আল্লাহর সাথে তারা কাউকে শরিক করেনি। তারা এ ধরনের আরো অনেক কথা বলাবলি করল। অতঃপর রাসূল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের মধ্যে উপস্থিত হলে বিষয়টি তাঁকে জানানো হলো। তখন তিনি বললেন,

هم الذين لا يسترقون، ولا يتطيرون، ولا يكتون، وعلى ربهم يتوكلون .

‘‘তারা হচ্ছে ঐ সব লোক যারা ঝাড়-ফুক করে না। পাখি উড়িয়ে ভাগ্যের ভাল-মন্দ যাচাই করে না। শরীরে সেক বা দাগ দেয় না। আর তাদের রবের উপর তারা ভরসা করে।’’ একথা শুনে ওয়াকাশা বিন মুহসিন দাঁড়িয়ে বলল, আপনি আমার জন্য দোয়া করুন যেন আল্লাহ তাআলা আমাকে এই সৌভাগ্যবান ব্যক্তিদের দলভুক্ত করে নেন। তিনি বললেন, আমি দোয়া করলাম, ‘‘তুমি তাদের দলভুক্ত’’। অতঃপর অন্য একজন লোক দাঁড়িয়ে বলল, আল্লাহর কাছে আমার জন্যও দোয়া করুন যেন তিনি আমাকেও তাদের দলভুক্ত করে নেন। তিনি বললেন, ‘‘তোমার পূর্বেই ওয়াকাশা সে সুযোগ নিয়ে গেছে।’’

এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায়:

১। তাওহীদের ব্যাপারে মানুষের বিভিন্ন স্তরে অবস্থান সম্পর্কিত জ্ঞান।

তাওহীদের উপর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার বিশেষ প্রমাণ হচ্ছে, আল্লাহ তাআলার প্রতি পরিপূর্ণ ভয় থাকা। তাঁর উপর এমনভাবে তাওয়াক্কুল বা ভরসা করা যার ফলে কোন বিষয়েই তার অন্তর মাখলুকের প্রতি আকৃষ্ট হয় না। অন্তর দ্বারা তার কাছে সম্মান ও মর্যাদা কামনা করে না। তার মুখ নিঃসৃত কোন কথা অথবা তার কোন অবস্থার দ্বারা মাখলুকের কাছে কিছুই চায়না বরং তার ভিতর ও বাহির, কথা ও কাজ, ভালোবাসা ও

২। তাওহীদ বাস্তবায়নের মর্মার্থ।

৩। নবী ইবরাহীম (আ:) মুশরিক ছিলেন না বলে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা।

৪। বড় বড় বুজুর্গ ব্যক্তিগণ শিরক মুক্ত ছিলেন বলে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা।

৫। ঝাড়-ফুঁক এবং আগুনের দাগ পরিত্যাগ করা তাওহীদপন্থী হওয়ার প্রকৃষ্ট প্রমাণ।

৬। আল্লাহর উপর ভরসা বা তাওয়াক্কুলই বান্দার মধ্যে উল্লেখিত গুণ ও স্বভাবসমূহের সমাবেশ ঘটায়।

৭। বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশকারী সৌভাগ্যবান লোকেরা কোন আমল ব্যতীত উক্ত মর্যাদা লাভ করতে পারেননি, এটা জানার ব্যাপারে সাহাবায়ে কেরামের জ্ঞানের গভীরতা।

৮। মঙ্গল ও কল্যাণের প্রতি তাঁদের অপরিসীম আগ্রহ।

৯। সংখ্যা ও গুণাবলরি দিক থেকে উম্মতে মুহাম্মদীর ফজিলত।

১০। নবী মুসা আ. এর সাহাবীদের মর্যাদা।

১১। সব উম্মতকে রাসূল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সম্মুখে উপস্থিত করা হবে।

১২। প্রত্যেক উম্মতই নিজ নিজ নবীর সাথে পৃথকভাবে হা শরের ময়দানে উপস্থিত হবে।

১৩। নবিগণের আহবানে সাড়া দেয়ার মত লোকের স্বল্পতা।

১৪। যে নবীর দাওয়াত কেউ গ্রহণ করেনি তিনি একাই হা শরের ময়দানে উপস্থিত হবেন।

১৫। এ জ্ঞানের শিক্ষা হচ্ছে, সংখ্যাধিক্যের দ্বারা ধোঁকা না খাওয়া আবার সংখ্যাল্পতার কারণে অবহেলা না করা।

১৬। চোখ-লাগা এবং জ্বরের চিকিৎসার জন্য ঝাড়-ফুঁকের অনুমতি।

১৭। সালাফে সালেহীনের জ্ঞানের গভীরতা।

ক্রোধ এবং তার সার্বিক অবস্থার উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আনুগত্য করা। এক্ষেত্রে মানুষ বিভিন্ন মর্যাদা ও স্তরের অধিকারী হয়ে থাকে।

قد أحسن من انتهى إلى ما سمع .

‘‘সে ব্যক্তিই ভাল কাজ করেছে যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যা শুনেছে তাই আমল করেছে’’ এ কথাই এর প্রমাণ পেশ করে। তাই প্রথম হাদিস দ্বিতীয় হাদিসের বিরোধী নয়।

১৮। মানুষের মধ্যে যে গুণ নেই তার প্রশংসা থেকে সালাফে সালেহীন বিরত থাকতেন।

১৯। أنت منهم (তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত) ওয়াকাশার ব্যাপারে একথা নবুওয়তেরই প্রমাণ পেশ করে।

২০। ওয়াকাশা রা. এর মর্যাদা ও ফজিলত।

২১। কোন কথা সরাসরি না বলে হিকমত ও কৌশল অবলম্বন করা।

ولكل درجات مما عملوا .

‘‘আমল অনুযায়ী প্রত্যেকেরই মর্যাদা রয়েছে।’’

মনের আশা- আকাঙ্ক্ষা আর বাস্তবতা বর্জিত দাবির নাম তাওহীদের বাস্তবায়ন নয়। বরং তাওহীদ প্রতিষ্ঠিত হয় অন্তরে এমন ঈমান আক্বীদা এবং এহসানের হাকিকত [মূল শিক্ষা] বদ্ধ মূল করার মাধ্যমে যা সুন্দর চরিত্র, মহৎ ও নেক কাজের দ্বারা সত্যে পরিণত হয়।

এভাবে যে ব্যক্তি তাওহীদকে অন্তরে গেঁথে নিল সেই আলোচিত অধ্যায়ে নির্দেশিত যাবতীয় ফজিলত লাভ করতে সক্ষম হলো।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন