hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাওহীদের মর্মকথা

লেখকঃ আব্দুর রহমান বিন নাসের সাদী

৩৭
৩৪তম অধ্যায়
১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন,

أَفَأَمِنُوا مَكْرَ اللَّهِ فَلَا يَأْمَنُ مَكْرَ اللَّهِ إِلَّا الْقَوْمُ الْخَاسِرُونَ . ﴿الاعراف : ৯৯

‘‘তারা কি আল্লাহর পাকড়াও থেকে বাঁচার ব্যাপারে নিশ্চিন্ত [নির্ভয়] হয়ে গেছে? বস্ত্তত: আল্লহর পাকড়াও থেকে বাঁচার ব্যাপারে একমাত্র

ব্যাখ্যা

আল্লাহ তাআলার বাণী : أَفَأَمِنُوا مَكْرَ اللَّهِ

‘‘তারা কি আল্লহর পাকড়াও এর ব্যাপারে নিরাপদ হয়ে গিয়েছে।’’

এ অধ্যায়ের উদ্দেশ্য হচেছ, একটি মহা সূত্রকে উপলব্ধি করা। আর তা হচ্ছে, ‘আল্লহকে ভয় করা বান্দার অপরিহার্য কর্তব্য।’ আশা- আকাঙ্ক্ষা এবং ভয়-ভীতি; এ উভয় গুণের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর দয়া ও করুণা প্রত্যাশা করবে। বান্দা যদি স্বীয় গুনাহর দিকে লক্ষ করে এবং সাথে সাথে আল্লহর ন্যায় বিচার ও কঠিন শাস্তির প্রতি খেয়াল করে তাহলে সে তার রবকে ভয় করবেই। আবার বান্দা যদি আল্লহর সাধারণ ও বিশেষ করুণা, দয়া, ব্যাপক ক্ষমা ও মার্জনার দিকে তাকায় তাহলে তাঁর কাছে পাওয়ার জন্য আশান্বিত ও লালায়িত হবেই। আল্লাহ তাআলা যদি তাকে আনুগত্যের শক্তি দেন, তাহলে সে তার আনুগত্যের মাধ্যমে পরিপূর্ণ অনুগ্রহ ও করুণা লাভের আশঙ্কা করবে। আবার স্বীয় ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে উক্ত নেয়ামত চলে যাওয়ার আশঙ্কাও করবে। যদি কোন গুনাহর দ্বারা সে পরীক্ষিত হয় [অর্থাৎ শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে কোন গুনাহর কাজ করেই ফেলে] তাহলে আল্লহর কাছে তাওবা কবুল হওয়া এবং গুনাহ মাফ হওয়ার আশা ও আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে। আবার তাওবা করতে অবহেলা করার কারণে এবং স্বীয় গুনাহর কারণে তাকে শাস্তি দেয়া হবে, এ ভয়ও করে। এমনিভাবে নেয়ামতও স্বাচ্ছন্দ্যের সময় আল্লহর কাছে নেয়ামতের স্থায়িত্ব ও আধিক্যের আশা করে। সাথে সাথে এর শুকরিয়া জ্ঞাপনের জন্য তাঁর তাওফীক কামনা করে। আবার স্বীয় অবহেলা ও না-শুকরী করার কারণে আল্লহর নেয়ামত থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কাও করে। দুঃখ-দুর্দশার সময় বান্দা আল্লহর কাছে এর অবসান কামনা করে এবং দূরাবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রহর গুণতে থাকে। বিপদে ধৈর্য ধারণ করার সময় [মোমিন বান্দা] আল্লহর কাছে এ কামনাই করে, তিনি যেন তাকে বিপদের মধ্যে অটল ও অবিচল রাখেন। আবার বিপদে ধৈর্য ধারণে অক্ষম হলে কাঙ্ক্ষিত পুরস্কার

হতভাগ্য ক্ষতিগ্রস্ত ছাড়া অন্য কেউ ভয়-হীন হতে পারে না।’’ (আরাফ: ৯৯)।

২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন,

وَمَنْ يَقْنَطُ مِنْ رَحْمَةِ رَبِّهِ إِلَّا الضَّالُّونَ . ( ألحجر :৫৬)

‘‘একমাত্র পথভ্রষ্ট লোকেরা ছাড়া স্বীয় রবের রহমত থেকে আর কে নিরাশ হতে পারে? (সূরা হিজর : ৫৬)

থেকে বঞ্চিত হওয়া এবং অনাকাঙিক্ষত দুঃখে পতিত হওয়ার আশঙ্কাও করে, তাই তাওহীদবাদী মোমিন বান্দা সর্বাবস্থায় ভয় এবং আশা এ দুটি জিনিসের মধ্যেই বেঁচে থাকে। মুলত: এটাই তার করণীয়, এটাই তার জন্য কল্যাণকর। এর মাধ্যমেই তার শান্তি আসবে।

দু’টি খারাপ স্বভাব বান্দার জন্য ভয়ের কারণ। একটি হচ্ছে, আল্লহর ভয় বান্দাহকে এমনভাবে পেয়ে বসা, যার কারণে সে তাঁর রহমত ও দয়া থেকে নিরাশ ও হতাশ হয়ে পড়ে।

আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে, আল্লাহর প্রতি বান্দা এত বেশি মাত্রায় আশাবাদী হয়ে পড়া, যার ফলে তাঁর শাস্তি ও পাকড়াও থেকে নিজেকে নিরাপদ মনে করে।

যখন বান্দা উপরোক্ত অবস্থায় উপনীত হয় তখন আশা ও ভয়ের দাবি অনুযায়ী বান্দার দায়িত্ব ও কর্তব্যের অনুভূতি বিলুপ্ত হয়ে যায়। অথচ এ দুটি বিষয়ই তাওহীদের সব চেয়ে বড় ভিত্তি এবং ঈমানের জন্য অপরিহার্য বিষয়।

আল্লহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া এবং তাঁর দয়া, ক্ষমা ও করুণা থেকে বঞ্চিত হওয়ার দুটি কারণ আছে। প্রথমটি হচ্ছে, বান্দা অত্যধিক গুনাহর দ্বারা নিজের উপর জুলুম করা, বেপরোয়াভাবে অন্যায় ও পাপাচারিতায় লিপ্ত থাকা এবং সাথে সাথে

আল্লহর রহমতের পরিপন্থী কারণগুলোর উপর অনঢ় থাকা। ফলে তাঁর রহমত থেকে নিরাশ হয়ে যাওয়া। এমতাবস্থা চলতে থাকার কারণে পাপাচারিতাই তার স্বভাব ও চরিত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়। আর এটাই হচ্ছে বান্দার কাছ থেকে শয়তান যা চায় তার চূড়ান্তরূপ। বান্দা যখন এরকম অবস্থায় পৌঁছে যায় তখন ‘তাওবা নসূহা’ ব্যতীত অর্থাৎ পাপাচারিতা সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করা ব্যতীত তার জন্য কোন রকমের কল্যাণ ও মঙ্গল আশা করা যায় না।

আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে, বান্দার মধ্যে আল্লহর প্রতি মাত্রাতিরিক্ত ভয়। বান্দা তার অত্যধিক অন্যায়, অপরাধ ও পাপাচারিতার কারণে তার মধ্যে আল্লহর ভয় এত বেশি হয়ে যায় যে, তাঁর অপরিসীম রহমত ও মাগফিরাতের ব্যাপকতা ও বিস্তৃতি সম্পর্কে

৩। ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালমকে কবিরা গুনাহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জবাবে বলেছেন, ‘কবিরা গুনাহ হচ্ছে .

الشرك بالله، واليأس من روح الله، والأمن من مكر الله .

‘‘আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করা, আল্লহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া এবং আল্লাহর পাকড়াও থেকে নিজেকে নিরাপদ মনে করা।’’

৪। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেছেন,

বান্দা উদাসীন ও অজ্ঞ হয়ে যায়। এর ফলে বান্দার মধ্যে এমন হতাশা ও নিরাশার উদ্ভব ঘটে যে, সে মনে করে তাওবা করলে এবং আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করলে তিনি তাকে ক্ষমা করবেন না, কোন দয়াও করবেন না। এমতাবস্থায় পাপের পথ থেকে ফিরে আসার ইচ্ছা খুব দুর্বল ও ক্ষীণ হয়ে পড়ে। এর ফলে আল্লাহর রহমত থেকে সে বঞ্চিত হয়ে। এ অবস্থা তার জন্য নিঃসন্দেহে ক্ষতিকর। এটা সৃষ্টি হয়েছে আল্লাহ সম্পর্কে এবং তার নিজের অধিকার সম্পর্কে জ্ঞানের স্বল্পতা, মনের দুর্বলতা, অপারগতা এবং অবহেলার কারণে।

বান্দা যদি এসব বিষয় [অর্থাৎ আল্লাহর ক্ষমা ও অপরিসীম রহমতের কথা জানতো, আর অলসতা ও অবহেলায় পড়ে না থাকতো, তাহলে অবশ্যই তার সামান্য প্রচেষ্টা তাকে রবের অপরিসীম রহমত, করুণা ও দয়ার কাছে পৌঁছে দিতে পারতো।

আল্লাহর পাকড়াও বা শাস্তি থেকে নিজেকে নিরাপদ মনে করার দুটি মারাত্মক কারণ রয়েছে।

একটি হচ্ছে , বান্দা দীন থেকে বিমুখ থাকা। স্বীয় রবের পরিচয় এবং তাঁর হকের ব্যাপারে সম্পূর্ণরূপে উদাসীন থাকা এবং বিষয়টিকে অবজ্ঞা করা। অব্যাহত ভাবে স্বীয় রব থেকে বিমুখ থাকা, অবহেলা করা, ও হারাম কাজে লিপ্ত থাকার মাধ্যমে নিজের অত্যবশ্যকীয় আমল তথা ফরজ ইবাদতসমূহ আদায় না করা। যার ফলে আল্লহর উপর বান্দার ঈমান নির্ভর করে আল্লহর ভয় এবং দুনিয়া ও আখেরাতে তাঁর শাস্তির ভয়ের উপর।

দ্বিতীয়টি হচ্ছে . বান্দা মূর্খ আবেদ হওয়া। স্বীয় আমল দ্বারা প্রতারিত হয়ে নিজের আমলে নিজেই মুগ্ধ হওয়া। তার অব্যাহত মূর্খতার কারণে আমলের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়া। যার ফলে তার কাছ থেকে আল্লাহর ভয় দূর হয়ে যায় এবং সে মনে করতে থাকে যে, আল্লাহর কাছে তার উচ্চ মর্যাদা রয়েছে। এভাবে স্বীয় শক্তিহীন ও দুর্বল হৃদয়ের উপর নির্ভরশীল হয়ে আল্লাহর শাস্তি থেকে নিজেকে নিরাপদ মনে করে পাপ পঙ্কিলতা দ্বারা বান্দা কলুষিত হয়। এর ফলে নেক কাজের পথে তাওফীক

أكبر الكبائر : الإشراك بالله، والأمن من مكر الله، والقنوط من رحمة الله، واليأس من روح الله . ( رواه عبد الرزاق )

‘‘সবচেয়ে বড় গুনাহ হচ্ছে : আল্লাহর শাস্তি হতে নিজেকে নিরাপদ মনে করা, আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হওয়া এবং আল্লাহর করুণা থেকে নিজেকে বঞ্চিত মনে করা।’’

এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায় .

১। সূরা আ’রাফের ৯৯নং আয়াতের তাফসীর।

২। সূরা হিজরের ৫৬ নং আয়াতের তাফসীর।

৩। আল্লহর পাকড়াও থেকে ভয়হীন ব্যক্তির জন্য কঠোর শাস্তির ভয় প্রদর্শন।

না হয়ে বরং প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। এভাবেই বান্দা তার নিজের উপর জুলুম ও অত্যাচার করে।

আলোচিত অধ্যায়ের বিশদ ব্যাখ্যার মাধ্যমে এটাই জানা যায় যে, উপরোক্ত কাজগুলো তাওহীদের পরিপন্থী।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন