hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তরবিয়ত ও চারিত্রিক উৎকর্ষ সাধন

লেখকঃ শামছুল হক ছিদ্দিক, নোমান আবুল বাশার, আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান

১২৯
খারাপ পরিণতিতে মৃত্যু
খারাপ পরিণতির মৃত্যু হল আল্লাহ রাববুল আলামীনের আদেশ-নিষেধ থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকা অবস্থায় মৃত্যু বরণ করা। এমতাবস্থায় সে আল্লাহ তাআলার অসন্তুষ্টি নিয়ে তার কাছে হাজিরা দিতে রওয়ানা দেয়। কত বড় দুর্ভাগ্য সেই ব্যক্তির যে বিভিন্ন পাপাচারে লিপ্ত থাকাকালীন সময়ে আল্লাহর কাছে উপস্থিত হওয়ার জন্য যাত্রা করে। মানুষের দুনিয়ার জীবনটা একটা মূল্যবান সম্পদ। যদি সে এ সম্পদকে কাজে লাগিয়ে আখিরাতের জন্য ভাল ব্যবসা করতে পারে এবং সেটা যদি লাভজনক হয় তবে তার উভয় জীবন সফল। আর যদি এর ব্যতিক্রম হয় তবে সে এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হল যা আর কখনো পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না। এটাই হল খারাপ পরিণতির মৃত্যু।

বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি যে আমৃত্যু তাকওয়া ও আল্লাহর এবাদত-বন্দেগীর মধ্যে সময় কাটিয়েছে।

এমন অনেক মানুষ দেখা যায় যারা সাড়া জীবন আল্লাহর এবাদত-বন্দেগীতে সময় কাটিয়েছে, সকল পাপাচার থেকে মুক্ত থেকেছে কিন্তু মৃত্যুর পুর্বে সে তার এ অবস্থা থেকে ফিরে গিয়েছে। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন—

وإن الرجل ليعمل بعمل أهل الجنة حتى ما يكون بينه وبينها إلا ذراع فيسبق عليه الكتاب ، فيعمل بعمل أهل النار فيدخلها . رواه البخاري (3332) ، ومسلم (2643)

‘এক ব্যক্তি সাড়া জীবন জান্নাতের আমল করেছে। জান্নাত ও তার মধ্যে দূরত্ব ছিল মাত্র এক হাত। এমন সময় তার তাকদীর চলে আসল, সে জাহান্নামের কাজ করে বসল, ফলে সে জাহান্নামের অধিবাসী হয়ে গেল।’ [বোখারি : ৩৩৩২। মুসলিম : ২৬৪৩।] এর একটা দৃষ্টান্ত অন্য হাদিসে এসেছে এভাবে—

عن سهل بن سعد رضى الله عنه أن رجلا من المسلمين في إحدى المعارك مع رسول الله صلى الله عليه وسلم أبلى بلاء شديدا، فأعجب الصحابة بذلك، وقالوا : ما أجزأ منا اليوم كما أجزأ فلان، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ( أما أنه من أهل النار ) فقال بعض الصحابة : أينا من أهل الجنة إن كان هذا من أهل النار؟ فقال رجل من القوم : أنا صاحبه، سأنظر ماذا يفعل، فتبعه، قال فجرح الرجل جرحا شديدا فاستعجل الموت، فوضع سيفه في الأرض وذبابه بين ثديـيه، ثم تحامل على نفسه فقتل نفسه، فرجع الرجل إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال : أشهد أنك رسول الله، قال : وما ذاك ؟ الرجل الذي ذكرت آنفا أنه من أهل النار، فأعظم الناس ذلك،فقلت أنا لكم به،فخرجت في طلبه، حتى جرح جرحا شديدا فاستعجل الموت، فوضع نصل سيفه بالأرض وذبابه بين ثديـيه، ثم تحامل على نفسه فقتل نفسه،فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ( إن الرجل ليعمل عمل أهل الجنة فيما يبدو للناس وهو من أهل النار، وإن الرجل ليعمل عمل أهل النار فيما يبدو للناس وهو من أهل الجنة وفي بعض الروايات زيادة : ( وإنما الأعمال بالخواتيم ). رواه البخاري (6128)

সাহাবী সাহাল বিন সাআদ বলেন, রাসূলুল্লাহর উপস্থিতিতে একবার এক যুদ্ধে দেখলাম এক ব্যক্তি অত্যন্ত বীরত্ব ও বে-পরোয়াভাবে শত্রু বাহিনীর উপর আক্রমন করছে ও তাতে নিজেও প্রচন্ডভাবে আহত হচ্ছে। তার বীরত্ব ও ত্যাগে সাহাবায়ে কেরাম মুগ্ধ হয়ে বললেন, আমাদের কারো পুরস্কার কি এ ব্যক্তির পুরস্কারের মত হবে ? এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ‘কিন্তু সে তো জাহান্নামী।’ এ কথা শুনে অনেক সাহাবী বললেন, এই ব্যক্তি যদি জাহান্নামী হয় তা হলে জান্নাতে যাবে কে? দলের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি বলল, আমি তার সাথে থাকব, দেখব সে কি করে? সে কথা মত তার সাথে থাকল। দেখা গেল সে খুব মারাত্মক ভাবে আহত হল। ধৈর্য ধারণ করে নিজেকে আর সামলাতে পারল না। নিজের তরবারী মাটিতে পুঁতে তার অগ্রভাগ নিজের পেটে ঢুকিয়ে আত্মহত্যা করল। সাহাবী এ ঘটনা প্রত্যক্ষ করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এসে বলল ইয়া রাসূলাল্লাহ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আপনিই সত্যিকার রাসূল। তিনি বললেন সে কি? সাহাবী বললেন- কিছু আগে আপনি যে ব্যক্তির কথা বললেন যে সে জাহান্নামী ঠিকই সে জাহান্নামী। সাহাবারা বিস্ময় প্রকাশ করল। তখন তিনি বললেন আমি তোমাদেরকে এর কারণ বলছি। তারপর তিনি সংঘটিত ঘটনাটি সবিস্তারে বললেন তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন ‘কোন কোন মানুষ জান্নাতের আমল করে মানুষ তা দেখে মনে করে সে জান্নাতী, অথচ সে জাহান্নামী। এমনিভাবে কোন কোন মানুষ জাহান্নামের আমল করে, মানুষ মনে করে সে জাহান্নামী, অথচ সে জান্নাতী।’’ কোন কোন বর্ণনায় এ বাক্যটি ও এসেছে তিনি বলেছেন: ‘আমল (কর্ম) গ্রহণযোগ্য হবে শেষ পরিণতির বিচারে।’ [বোখারি : ৬১২৮।] সাহাল বিন আস-সায়েদি বলেছেন—

نظر النبي صلى الله عليه وسلم إلى رجل يقاتل المشركين، وكان من أعظم المسلمين غناء عنهم، فقال من أحب أن ينظر إلى رجل من أهل النار فلينظر إلى هذا، فتبعه رجل فلم يزل على ذلك، حتى جرح فاستعجل الموت فقال بذبابة سيفه فوضعه بين ثدييه فتحامل عليه حتى خرج من بين كتفيه، فقال النبي ...( إن العبد ليعمل فيما يرى الناس عمل أهل الجنة وإنه لمن أهل النار، ويعمل فيما يرى الناس عمل أهل النار وهو من أهل الجنة وإنما الأعمال بخواتيمها ).

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, কাফেরদের সাথে যুদ্ধেরত এক ব্যক্তির দিকে তাকালেন-যে লোকটি অন্যান্য মুসলমানদের তুলনায় ঐশ্বর্যবান ছিল-অত:পর বললেন, যে জাহান্নামি দেখতে চাও, সে একে দেখে নাও। একথা শুনে একজন লোক শেষ পযর্ন্ত তার পিছু নিচ্ছিল, সে লক্ষ্য করল, লোকটি আহত হল, আর দ্রুত সেচ্ছায় মৃত্যু বরণ করল। অর্থাৎ তলোয়ারের অগ্রভাগ বক্ষমাঝে বিদ্ধ করে, তার উপর ভর দিয়ে মাটিতে ওপুর হয়ে পড়ল, আর তলোয়ার তার দু’কাধের মধ্য দিয়ে পিষ্ঠবেধ করে বের হয়ে আসল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর কতক বান্দা এমন আমল করে, মানুষ যা দেখে বাহ্যত মনে করে, সে জান্নাতবাসী, অথচ সে জাহান্নামী। আবার কতক বান্দা এমন আমল করে, মানুষ যা দেখে বাহ্যত মনে করে, সে জাহান্নামী। অথচ সে জান্নাতী। তবে নিশ্চিত, শেষ পরিণতির ভিত্তিতেই সকল আমল বিবেচ্য ও বিচার্য হয়।

আল্লাহ রাববুল আলামীন ঐ সকল মুমিনদের প্রশংসা করেছেন যারা আল্লাহকে ভয় করার সাথে সাথে সুন্দরভাবে নেক আমল করে থাকে। তিনি বলেন :

إِنَّ الَّذِينَ هُمْ مِنْ خَشْيَةِ رَبِّهِمْ مُشْفِقُونَ . وَالَّذِينَ هُمْ بِآَيَاتِ رَبِّهِمْ يُؤْمِنُونَ . وَالَّذِينَ هُمْ بِرَبِّهِمْ لَا يُشْرِكُونَ . وَالَّذِينَ يُؤْتُونَ مَا آَتَوْا وَقُلُوبُهُمْ وَجِلَةٌ أَنَّهُمْ إِلَى رَبِّهِمْ رَاجِعُونَ . أُولَئِكَ يُسَارِعُونَ فِي الْخَيْرَاتِ وَهُمْ لَهَا سَابِقُونَ ﴿المؤمنون : 57-61﴾

‘নিশ্চয় যারা তাদের প্রতিপালকের ভয়ে সন্ত্রস্ত, যারা তাদের প্রতিপালকের নিদর্শনাবলীতে ঈমান আনে, যারা তাদের প্রতিপালকের সাথে শরীক করে না, এবং যারা তাদের প্রতিপালকের নিকট প্রত্যাবর্তন করবে এই বিশ্বাসে তাদের যা দান করবার তা দান করে ভীত-কম্পিত হৃদয়ে। তারাই দ্রুত সম্পাদন করে কল্যাণকর কাজ এবং তারা তাতে অগ্রগামী। [সূরা আল-মুমিনূন : ৫৭-৬১।]

যখন কোন ব্যক্তির মৃত্যু উপস্থিত হয় তার জন্য উচিত হবে আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাবে এ আশা পোষণ করা। যেমন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন—

لا يموتن أحدكم إلا وهو يحسن الظن بالله عز وجل . رواه مسلم (2877)

‘আল্লাহর প্রতি ভাল ধারণা না নিয়ে তোমাদের মধ্যে কেহ যেন মৃত্যু বরণ না করে।’ [মুসলিম : ২৮৭৭।]

অনেক মানুষ এমন আছেন যারা আল্লাহর সীমাহীন দয়া ও ক্ষমা লাভের আশায় পাপ করতে থাকেন, তা থেকে ফিরে আসা যে প্রয়োজন তা অনুধাবন করতে চান না। এটা এক ধরনের মুর্খতা। আল্লাহ তাআলা বলেন :—

نَبِّئْ عِبَادِي أَنِّي أَنَا الْغَفُورُ الرَّحِيمُ . وَأَنَّ عَذَابِي هُوَ الْعَذَابُ الْأَلِيمُ . ﴿الحجر :50﴾

‘আমার বান্দাদের বলে দাও যে, আমি তো পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু, এবং আমার শাস্তি- সে অতি মর্মন্তুদ শাস্তি ! [সূরা আল-হিজর : ৪৯-৫০।] তিনি আরো বলেন—

حم . تَنْزِيلُ الْكِتَابِ مِنَ اللَّهِ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ . غَافِرِ الذَّنْبِ وَقَابِلِ التَّوْبِ شَدِيدِ الْعِقَابِ ذِي الطَّوْلِ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ إِلَيْهِ الْمَصِيرُ ﴿الغافر : 1-3﴾

‘হা-মীম এ কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর নিকট হতে- যিনি পাপ ক্ষমা করেন, তাওবা কবুল করেন, যিনি শাস্তি দানে কঠোর শক্তিশালী। [সূরা আল-গাফির : ১-৩।]

অতএব আল্লাহ শুধু ক্ষমাশীল এ ধারনার ভিত্তিতে নিজের আমলগুলো দেখলে হবে না বরং তিনি যে কাঠোর শাস্তিদাতা এটা সর্বদা মনে রাখতে হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন