মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আব্দুর রহমান ইবন আব্দুল কারি রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: “আমি উমার ইবন খাত্তাবের সাথে রমযানের রাতে মসজিদে যাই, তখন মানুষেরা পৃথকভাবে নিজ নিজ সালাত আদায় করছিল। আবার কেউ কতক লোকের সাথে জামা‘আতসহ সালাত আদায় করছিল। উমার বললেন: আমার মনে হয় এক ইমামের পিছনে তাদের সকলের সালাত আদায়ের ব্যবস্থা করলে, খুব সুন্দর হবে। অতঃপর তিনি উবাই ইবন কাবের পিছনে সবাইকে সালাত আদায়ের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে কোনো রাতে আমি তার সাথে বের হয়ে দেখি লোকেরা এক ইমামের পিছনে সালাত আদায় করছে, তখন উমার বললেন: এটা খুব সুন্দর বিদআত। তবে যারা এ সালাতে অনুপস্থিত, তারা উত্তম এদের থেকে, অর্থাৎ শেষ রাতে সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে প্রথম রাতে যারা ঘুমাচ্ছে, তারা এদের চেয়ে উত্তম। তখন মানুষেরা প্রথম রাতে সালাত আদায় করত”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০৬; মালেক: (১/১১৪); আব্দুর রায্যাক, হাদীস নং ৭৭২৩; ইবন আবি শায়বাহ: (২/১৬৫)।]
ইমাম মালেকের এক বর্ণনায় আছে: “উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু উবাই ইবন কা‘ব ও তামিমুদ দারি রাদিয়াল্লাহু আনহুমাকে সবার সাথে এগারো রাকাত সালাত আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ইমাম সাহেব শত আয়াতের অধিক বিশিষ্ট সূরাসমূহ তিলাওয়াত করতেন, আমরা দীর্ঘ কিয়ামের কারণে লাঠির উপর ভর করতাম, আমরা ফজরের আগ মুহূর্ত ব্যতীত বাড়ি ফিরতাম না”। [মালেক: (১/১১৫; আব্দুর রায্যাক, হাদীস নং ৭৭৩০; ইবন আবি শায়বাহ: (২/১৬২)।]
ইবন খুযাইমার এক বর্ণনায় আছে: উমার বলেন, “আল্লাহর শপথ, আমার ধারণা আমি যদি এক ইমামের পিছনে তাদের সবাইকে একত্র করি, তাহলে খুব ভালো হবে। অতঃপর উমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি উবাই ইবন কা‘বকে সবার সাথে সালাত আদায়ের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে উমার তাদের দেখতে যান, তখন সবাই এক ইমামের পিছনে সালাত আদায় করছিল, তিনি বলেন, এটা খুব সুন্দর বিদআত। যারা এ সালাত থেকে ঘুমিয়ে আছে তারা উত্তম, (অর্থাৎ প্রথম রাতে ঘুমিয়ে যারা শেষ রাতে সালাত আদায় করে)। তখন লোকেরা প্রথম রাতে সালাত আদায় করত। তারা রমযানের শেষার্ধে কাফিরদের ওপর লা‘নত করত:
“হে আল্লাহ, তুমি কাফিরদের ধ্বংস কর, যারা তোমার রাস্তা থেকে মানুষদের বিরত রাখে, তোমার রাসূলকে মিথ্যারোপ করে, তোমার প্রতিশ্রুতির ওপর ঈমান আনে না। তুমি তাদের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি কর, তাদের অন্তরে ভীতির সঞ্চার কর। হে সত্য ইলাহ, তুমি তাদের ওপর তোমার আযাব ও শাস্তি নাযিল কর”। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দুরূদ ও সালাম পাঠ করে মুসলিমদের জন্য কল্যাণের দো‘আ ও ইস্তেগফার করবে। তিনি বলেন, তারা কাফিরদের ওপর লা‘নত, নবীর ওপর দুরূদ ও মুমিনদের জন্য দো‘আ-ইস্তেগফার শেষে বলতেন:
“হে আল্লাহ আমরা একমাত্র তোমার ইবাদত করি, তোমার জন্য সালাত আদায় করি ও সাজদাহ করি। আমরা তোমার নিকট দৌড়ে যাই ও তোমার নিকট দ্রুত ধাবিত হই। তোমার রহমত প্রত্যাশা করি হে আমাদের রব, তোমার আযাব ভয় করি, নিশ্চয় তোমার আযাব তোমার শত্রুদের নিশ্চিত স্পর্শ করবে”। অতঃপর তাকবীর বলবে ও সাজদার জন্য ঝুঁকবে”। [ইবন খুযাইমা, হাদীস নং ১১০০, আলবানি সহীহ ইবন খুযাইমার টিকায় হাদীসটি সহীহ বলেছেন।]
শিক্ষা ও মাসায়েল:
এক. তারাবীর সালাত সুন্নাত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সূচনা করেন, কিন্তু মুসলিমদের ওপর ফরয হওয়ার আশঙ্কায় তিনি তা ত্যাগ করেন। লোকেরা এ সালাত একা একা আদায় করত তার ও আবু বকরের যামানায়, যখন উমারের যুগ আসে তিনি সবাইকে এক ইমামের পিছনে একত্র করেন। এভাবে তিনি নবীর সুন্নাত জীবিত করেন। তার যামানা ও তার পরবর্তী যামানার মুসলিমগণ একমত যে, তারাবীর জামা‘আত মুস্তাহাব। [একাধিক আলিম এ মতের ওপর ইজমা বর্ণনা করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম ইমাম নববী, দেখুন: তাহযিবুল আসমা ওয়াল লুগাত: (২/৩৩২)।]
দুই. কম মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তি কখনো এমন সুন্নাত জীবিত করেন, অধিক মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তি যা করতে পারেন নি। যেমন মহান এ সুন্নাত জীবিত করার তাওফীক আল্লাহ উমারকে দিয়েছেন, আবু বকরকে দেন নি, অথচ তিনি উমারের চেয়ে উত্তম। সকল কল্যাণের ক্ষেত্রে তিনি উমারের চেয়ে অগ্রগামী ছিলেন। উমার বলেছেন: “আল্লাহর শপথ আমি কোনো জিনিসে তার অগ্রগামী হতে পারব না”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ১৬১৮; তিরমিযী, হাদীস নং ৩৬৭৫, তিনি হাদীসটি হাসান ও সহীহ বলেছেন।]
রমযানে আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু যখন মসজিদের পাশ দিয়ে অতিক্রম করতেন, তাতে বাতি জ্বালানো দেখে বলতেন: “আল্লাহ উমারের কবরকে নূরান্বিত করুন, যেমন তিনি আমাদের মসজিদগুলো নূরান্বিত করেছেন”। [ইবন আসাকের তার তারিখে বর্ণনা করেছেন: (৪৪/২৮০), এবং ইবন আব্দুল বার তার তামহিদ গ্রন্থে: (৮/১১৯)।] অর্থাৎ সালাতে তারাবী দ্বারা। তাই মুসলিম কোনো কল্যাণের ব্যাপারে নিজেকে ছোট বা হীন মনে করবে না, আল্লাহ তার থেকে এমন খিদমত নিতে পারেন, যা তার চেয়ে উত্তম ব্যক্তিদের থেকে নেননি। এটা আল্লাহর অনুগ্রহ, তিনি যাকে ইচ্ছা এ অনুগ্রহ দান করেন।
তিন. মুসলিমদের জামা‘আত ও তাদের একতা বিচ্ছিন্নতা থেকে উত্তম। ইমামের কর্তব্য মুসলিমদের মাঝে একতা প্রতিষ্ঠা করা।
চার. সুন্নাতের ব্যাপারে ইমামের ইজতিহাদ মেনে নেওয়া অন্যদের ওপর অবশ্য জরুরি, এতে তার আনুগত্য করা ওয়াজিব। যেমন, উমার যখন তাদের সবাইকে এক ইমামের পিছনে একত্র করেন, সাহাবায়ে কেরাম তা মেনে নেন ও উমারের আনুগত্য করেন।
পাঁচ. সবাই মিলে সুন্নাত জীবিত করা ও একসাথে ইবাদত আদায় করা বরকতপূর্ণ। কারণ, জমা‘আতে প্রত্যেকের দো‘আ প্রত্যেককে অন্তর্ভুক্ত করে। এ জন্য জমা‘আতের সালাত একাকী সালাতের চেয়ে সত্তরগুণ বেশি ফযীলত রাখে। সায়িদ ইবন জুবাইর রহ. বলেছেন: “আমার নিকট সূরা গাশিয়াহ পাঠকারী ইমামের পিছনে সালাত আদায় করা অধিক উত্তম, একাকী সালাতে আমার একশ আয়াত তিলাওয়াত করার চেয়ে”। [ইবন আব্দুল বার ফিত তামহিদ: (৮/১১৮)।]
ছয়. কারণবশতঃ কোনো আমল ত্যাগ করলে, কারণ শেষে তা পুনরায় আরম্ভ করা দুরস্ত আছ। যেমন, উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু রমযানের তারাবীর জামা‘আত পুনরায় আরম্ভ করেন।
সাত. কুরআনের হাফেয ও কুরআনের অধিক জ্ঞানের অধিকারী ব্যক্তি যথাসম্ভব ইমামতি করবেন, যেমন উমার তাদের মধ্যে বড় ক্বারী উবাই ইবন কা‘বকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এটা উত্তম কিন্তু ওয়াজিব নয়। কারণ, উমার তামিমে দারিকেও ইমামতির দায়িত্ব দিয়েছেন, অথচ তার চেয়ে বড় ক্বারী সাহাবীদের মধ্যে বিদ্যমান ছিল।
আট. তারাবীর সালাতে অন্যান্য মুসলিমদের ন্যায় নারীরা মসজিদে উপস্থিত হতে পারবে, অনুরূপ ফিতনার আশঙ্কা না থাকলে শুধু নারীদের পুরুষ ইমামতি করতে পারবে।
নয়. ইমাম যদি ইমামতের নিয়ত না করে, তবু মুসল্লি তার পিছনে ইকতিদা করতে পারবে।
দশ. দুই সালাম অথবা চার সালাম অথবা কিয়ামের পর যদি ইমামের বিরতি নেওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে এ বিরতিতে মুক্তাদির নফল পড়া বৈধ নয়। ইমাম আহমদ এটা মাকরূহ বলেছেন, তিনজন সাহাবী থেকে তিনি তা বর্ণনা করেন: উবাদাহ ইবন সামেত, আবু দারদাহ ও উকবাহ ইবন আমের রাদিয়াল্লাহু আনহুম। [আল-ইস্তেযকার: (২/৭২)।]
এগার. এক ইমামের পিছনে তারাবী শেষ করে, যদি অন্য ইমামের পিছনে তারাবীর জমা‘আতে শরীক হয়, এতে দোষ নেই। [আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু এটা বৈধ বলেছেন, ইমাম আহমদ বলেছেন এতে কোন সমস্যা নেই। দেখুন: মুগনি: (১/৪৫৭)।]
বারো. রমযানের নফল ব্যতীত অন্য নফলের জন্য ক্রমান্বয়ে একত্র হওয়া বৈধ নয়, বরং অন্যান্য নফল একসাথে আদায় করা বিদ‘আত, যেমন রাতের নফলের জন্য একত্র হওয়া অথবা নির্দিষ্ট রাতে নফল আদায়ের জন্য একত্র হওয়া ইত্যাদি। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান ব্যতীত কোনো নফলে সাহাবীদের একত্র করেন নি। তিনি যেহেতু ফরয হওয়ার আশঙ্কায় ত্যাগ করেছেন, তাই পরবর্তীতে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু তা জীবিত করেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/128/11
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।