hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রমযানের বিষয়ভিত্তিক হাদীস শিক্ষা ও মাসায়েল

লেখকঃ ইবরাহীম ইবন মুহাম্মাদ আল-হাকীল

৩৩
৩০. রমযানের দিনে সহবাস করা
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু‎ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বসে ছিলাম, এমতাবস্থায় তার নিকট এক ব্যক্তি আগমন করল, সে বলল: হে আল্লাহর রাসূল, আমি তো ধ্বংস হয়ে গেছি। তিনি বললেন: কী হয়েছে? সে বলল: সাওম অবস্থায় আমি আমার স্ত্রীর ওপর উপগত হয়েছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তোমার কি গোলাম আছে? সে বলল: না, তিনি বললেন: তুমি কি দু’মাস লাগাতার সাওম রাখতে পারবে? সে বলল: না, তিনি বললেন: তুমি কি ষাটজন মিসকিনকে খাওয়াতে পারবে? সে বলল: না, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিরতি নিলেন। আমরা আমাদের অবস্থানে ছিলাম, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একপাত্র খেজুর নিয়ে হাযির হলেন, অতঃপর বললেন: প্রশ্নকারী কোথায়? সে বলল: আমি। বললেন: তুমি এটা গ্রহণ করে সদকা করে দাও। সে বলল: আমার চেয়ে গরিব কাউকে হে আল্লাহর রাসূল? আল্লাহর শপথ আমার পরিবারের চেয়ে অধিক গরিব মদিনার আশ-পাশে আর কোনো পরিবার নেই। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে দিলেন, তার দাঁত পর্যন্ত দেখা গেল, অতঃপর বললেন: এটা তোমার পরিবারকে খাওয়াও”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৩৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১১১।]

শিক্ষা ও মাসায়েল:‎

এক. রমযানের দিনে ওযর ব্যতীত যে স্ত্রী সহবাস করল, যেমন সফর, ভুল ও বলপ্রয়োগ, সে পাপ ও গুনাহ করল, অবশিষ্ট দিন বিরত থাকাসহ তার তাওবা করা ওয়াজিব, সে দিনের সাওম নষ্ট হয়ে যাবে, তার ওপর কাফ্‌ফারা ওয়াজিব। [ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম লি ইবন উসাইমিন: (৪৭৪), শারহুল মুমতি: (৬/৪০১), জমহুর ও অধিকাংশ আলিমগণ বলেন কাফ্ফারার সাথে কাযা করতে হবে। দেখুন: আল-মুফহিম: (৩/১৭২) শাইখুল ইবন তাইমিয়াহ রহ. বলেছেন তার কাযা করতে হবে না, যদি কাযা ওয়াজিব হত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবশ্যই তাকে তার নির্দেশ দিতেন।]

দুই. কাফ্‌ফারা ক্রমান্বয়ে ওয়াজিব হয়, প্রথমে গোলাম আযাদ, অতঃপর লাগাতার দু’মাস সাওম পালন, যদি সামর্থ্য না থাকে তাহলে ষাটজন মিসকিনকে খাদ্য দান করা।

তিন. স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঘটে যাওয়া ঘটনা প্রয়োজনে বলা বৈধ। [ফাতহুল বারি লি ইবন হাজার: (৪/১৭৩)।]

চার. পাপীর পাপ সম্পর্কে ফতোয়া তলব করা, পাপ প্রকাশ করার অপরাধ হবে না। [শারহু ইবনল মুলাক্কিন আলাল উমদাহ: (৫/২১৫)।]

পাঁচ. ছাত্রদের সাথে নরম ব্যবহার করা, শিক্ষার ক্ষেত্রে বিনয়ী হওয়া, দীনের প্রতি লোকদের আগ্রহী করা, পাপের অনুশোচনা ও আল্লাহর ভয় অন্তরে জাগ্রত রাখা জরুরি। [ফাতহুল বারি: (৪/১৭৩)।]

ছয়. এক পরিবারকে পুরো কাফ্‌ফারা দেওয়া বৈধ। [ফাতহুল বারি: (৪/১৭৪)।]

সাত. এ হাদীসে সাহাবীদের অন্তরের পবিত্রতা ও অন্তরকে আযাব থেকে মুক্ত করার ব্যাকুলতা প্রমাণ হয়। [আল-ফিরইয়াবি কর্তৃক বুলুগুল মারামের ব্যাখ্যা গ্রন্থ: (১/৪২৬)।]

আট. গরিব ব্যক্তি কাফ্‌ফারার খানা নিজে খাওয়া ও নিজ পরিবারের ওপর সদকা করা বৈধ। [আল-ফিরইয়াবি কর্তৃক বুলুগুল মারামের ব্যাখ্যা গ্রন্থ: (১/৪২৬)।]

নয়. স্বামীর ওপর পরিবারের খরচ ওয়াজিব, যদিও সে গরিব হয়। এ হাদীস দ্বারা ইমাম বুখারী একটি অধ্যায়ের নামকরণ করেছেন। [সহীহ বুখারী (৫/২০৫৩); দেখুন: শারহু ইবনল মুলাক্কিন: (৫/২৫৪)।]

দশ. স্ত্রীগমন করে সাওম ভঙ্গকারীর ওপর কাফ্‌ফারা ওয়াজিব, পানাহার করে সাওম ভঙ্গকরীর ওপর কাফ্‌ফারা ওয়াজিব নয়, এটাই ফাতওয়া। [হানাফি ও মালেকি মাজহাবের আলিমগণ পানাহার করে সাওম ভঙ্গকারীর ওপর কাফ্‌ফারা ওয়াজিব করেন। দেখুন: আল-মুফহিম: (৩/১৭৩)।]

এগার. অধীনদের দুনিয়াবি ও দীনি প্রয়োজন পূরণ করে ইমামের খুশি প্রকাশ করা বৈধ। [আল-ফিরইয়াবি কর্তৃক বুলুগুল মারামের ব্যাখ্যা গ্রন্থ: (১/৪২৬)।]

বারো. মানুষ নিজের অভাবের কথা এমন ব্যক্তির নিকট প্রকাশ করতে পারে, যে তাকে সাহায্য করতে সক্ষম, যদি সে অভাব অভিযোগ আকারে পেশ না করে।

তের. যদি কাফ্‌ফারা আদায় না করে একাধিকবার দিনে সহবাস করে, তাহলে তার ওপর এক কাফ্‌ফারা ওয়াজিব হবে, এতে কারো দ্বিমত নেই। [আল-মাজমু: (৬/৩৪৯); আল-আশবাহ ওয়ান নাজায়ের লিস সুয়ূতি: (১২৭)।]

চৌদ্দ. যদি রমযানের দু’দিন অথবা তার চেয়ে অধিক সহবাস করে, তাহলে প্রত্যেক দিনের মোকাবেলায় একটি করে কাফ্‌ফারা দিতে হবে। [আল-মুগনি: (৪/৩৮৬); আল-মাজমু: (৬/৩৪৬); লাজনায়ে দায়েমার এটাই ফাতাওয়া। ফাতাওয়া নং ১৩৫৪৮।]

পনেরো. রমযানের কাযায় যদি সহবাস করে, তাহলে শুধু কাযা ওয়াজিব হবে কাফ্‌ফারা নয়, কারণ, বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী কাফ্‌ফারা শুধু রমযানের সম্মান বিনষ্টের কারণে ওয়াজিব হয়। [দেখুন: আল-উম্ম: (২/১০০); তাফসিরুল কুরতুবি: (২/২৮৪); আল-মুগনি: (৪/৩৭৮), লাজনায়ে দায়েমার ফাতাওয়া অনুরূপ। ফাতাওয়া নং ১৩৪৭৫।]

ষোল. সহবাস অবস্থায় যার উপর ফজর উদিত হয়, সে যদি সাথে সাথে উঠে যায়, তাহলে তার ওপর কিছু ওয়াজিব হবে না। আর যদি সে তাতে লিপ্ত থাকে, তাহলে সে গুনাহগার হবে, তার ওপর তওবা ও কাফ্‌ফারাসহ অবশিষ্ট দিন বিরত থাকা ওয়াজিব। [দেখুন: মাজমুউল ফাতাওয়া: (৬/৩১৬); রওযাতুত তালেবিন: (২/৩৬৫), আল-মুগনি: (৪/৩৭৯); কাশ্শাফুল কানা: (২/৩২৫); ইমাম বায়হাকি তার সুনান গ্রন্থে ইবন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু‎ থেকে বর্ণনা করেন: “যদি সালাতের আযান দেয়া হয়, আর ব্যক্তি তার স্ত্রীর ওপর থাকে, তাকে সে দিনের সাওম থেকে বিরত রাখা হবে না, যদি সে সাওম রাখতে চায় উঠে গোসল করবে ও তার সাওম পুর্ণ করবে”। ইনশাআল্লাহ এটা বিশুদ্ধ।]

সতের. যদি কেউ স্ত্রীগমনের জন্য পানাহার করে সাওম ভঙ্গ করে, তাহলে সে গুনাহগার হবে। কারণ, সে বিনা কারণে ইফতার করেছে ও শরী‘আতের বিপরীতে বাহানার আশ্রয় নিয়েছে, এ জন্য তার থেকে কাফ্‌ফারা মওকুফ হবে না। [মাজমুউল ফাতাওয়া: (২৫/২৬০); ইলামুল মুয়াক্কিয়িন: (৩/২৪৭)।]

আঠারো. উপরোক্ত ব্যক্তির ওপর ইসলামের উদারতা ও শিথিলতার প্রমাণ মিলে। সে রমযানে কবিরা গুনাহ করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ভীতাবস্থায় এসে বলেছে: “আমি ধ্বংস হয়ে গেছি”, অন্য বর্ণনায় এসেছে: “আমি তো দেখছি আমি ধ্বংস হয়ে গেছি”। এটা তার অনুশোচনা ও তওবার প্রমাণ, ফলে আল্লাহ তার তওবা কবুল করেছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে কাফ্‌ফারা প্রদান করেন, সে তা নিজের পরিবারে খরচ করে, তাদের অভাবের কারণে। এ জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসেছেন। [মিনহাতুল বারি: (৪/৩৭৯); ফাতহুল বারি: (৪/১৭১)।]

উনিশ. রমযান না জেনে যদি স্ত্রীগমন করে, তাহলে কাফ্‌ফারা ওয়াজিব হবে না। [ফাতাওয়া ইবন তাইমিয়াহ: (২৫/২২৮); ইবন ইবরাহিম এর ফাতাওয়া: (৪/১৯৫)]

বিশ. ভুলে যদি কেউ সহবাস করে, তার সাওম বিশুদ্ধ, তার ওপর কাযা-কাফ্‌ফারা কিছু ওয়াজিব হবে না। [দেখুন: আল-উম্ম: (২/৯৯); আল-ইস্তেযকার: (১০/১১১); আল-মুফহিম: (৩/১৬৯); শারহু ইবন মুলাক্কিন আলাল উমদাহ: (৫/২১৭)।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন