hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রমযানের বিষয়ভিত্তিক হাদীস শিক্ষা ও মাসায়েল

লেখকঃ ইবরাহীম ইবন মুহাম্মাদ আল-হাকীল

৪. ‎রমযানের ফযীলত
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু‎ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«إذا دَخَلَ شَهرُ رَمَضَانَ فُتِحَتْ أَبْوَابُ السَّمَاءِ، وَغُلِّقَتْ أَبوَابُ جَهَنَّمَ، وسُلْسِلَتِ الشَّيَاطِينُ» .

“যখন রমযান মাস আগমন করে, তখন আসমানের দরজাসমূহ খুলা হয়, জাহান্নামের ‎‎ দরজাসমূহ বদ্ধ করা হয় এবং শয়তানগুলো শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮০০; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৭৯।]‎

অপর বর্ণনায় আছে:‎

«إذا كَانَ أَوَّلُ ليْلَةٍ من شَهرِ رَمَضَانَ صُفِّدَتِ الشَّياطِينُ ومَرَدَةُ الجِنِّ، وغُلِّقَتْ أبوَابُ النَّارِ فَلَمْ يُفْتَحْ منْهَا بَابٌ، وفُتِحَتْ أَبوَابُ الجَنَّةِ فلمْ يُغْلَقْ منْها بَابٌ، ويُنَادِي مُنَادٍ : يا بَاغِيَ الخَيرِ : أَقْبِلْ، ويا بَاغِيَ الشَّر : أَقْصِرْ، ولله عُتَقَاءُ مِنَ النَّار وذَلكَ كُلَّ لَيْلَةٍ» .

‎“যখন রমযানের প্রথম রাত হয়, শয়তান ও অবাধ্য জিন্নগুলো শৃঙ্খলিত করাহয়, জাহান্নামের সকল দরজা বন্ধ করা হয়; খোলা হয় না তার কোনো দ্বার, জান্নাতের ‎‎ দুয়ারগুলো খুলে দেওয়া হয়; বদ্ধ করা হয় না তার কোনো তোরণ এবং একজন ঘোষক ‎‎ ঘোষণা করে: হে পুণ্যের অন্বেষণকারী! অগ্রসর হও। হে মন্দের অন্বেষণকারী! ক্ষান্ত হও। আর আল্লাহর জন্য রয়েছে জাহান্নাম থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত অনেক বান্দা, এটা প্রত্যেক রাতে হয়”। [তিরমিযী, হাদীস নং ৬৮২; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৬৪২; সহীহ ইবন খুযাইমাহ, হাদীস নং ১৮৮৩; সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীস নং ৩৪৪৩৫; হাকেম: (১/৫৮২), তিনি বুখারী ও মুসলিমের শর্ত মোতাবেক হাদীসটি সহীহ বলেছেন। আলবানি সহীহ জামে তিরমিযীতে এ হাদীস সহীহ বলেছেন।]

হাদীসে বর্ণিত “হে পুণ্যের অন্বেষণকারী অগ্রসর হও, হে মন্দের অন্বেষণকারী ক্ষান্ত হও”। অর্থ: ‎‎ হে কল্যাণ অনুসন্ধানকারী, তুমি আরো কল্যাণ অনুসন্ধান কর। এটা তোমার মুখ্য সময়, এতে অল্প আমলে তোমাকে অধিক প্রদান করা হবে। আর হে মন্দের প্রত্যাশী,তুমি ক্ষান্ত হও, তাওবা কর, এটা তাওবা করার মোক্ষম সময়।

অপর বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাহাবীদেরসুসংবাদ প্রদান করে বলেছেন:

«أَتَاكُمْ رَمَضَانُ شَهرٌ مُبارَكٌ فَرَضَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ صِيَامَهُ، تُفَتَّحُ فيه أَبوَابُ السَّمَاءِ، وتُغْلَّقُ فِيهِ أَبْوَابُ الجَحِيمِ، وتُغَلُّ فيه مَرَدَةُ الشَّياطِينِ، لله فيهِ لَيلَةٌ خَيرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ، مَنْ حُرِمَ خَيرَهَا فَقَدْ حُرِم» .

“তোমাদের নিকট বরকতময় মাস রমযান এসেছে, আল্লাহ এর সাওম ফরয করেছেন। এতে জান্নাতের দ্বারসমূহ খোলা হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বদ্ধ করাহয়, শিকলে বেঁধে রাখা হয় শয়তানগুলো। এতে একটি রজনীরয়েছে যা সহস্র মাস থেকে উত্তম। যে তার কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো, সে প্রকৃত অর্থে বঞ্চিত হলো”। [নাসাঈ: (৪/১২৯; আহমদ: (২/২৩০), আব্দু ইবন হুমাইদ: (১৪২৯)।]

আবু হুরায়রা অথবা আবু সাইদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহুমা‎ থেকে বর্ণিত, তারা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«إِنَّ لله عُتَقَاءَ في كُلِّ يَوْمٍٍ ولَيلَةٍ، لكُلِّ عَبدٍ مِنْهُم دَعوَةٌ مُستَجَابَةٌ» .

“প্রত্যেক দিনে ও রাতে আল্লাহর মুক্তিপ্রাপ্ত বান্দা রয়েছে, তাদের প্রত্যেকের জন্য রয়েছে দো‘আ কবুলের প্রতিশ্রুতি”। [আহমদ: (২/২৫৪), তাবরানি ফিল আওসাত: (৬/২৫৭), বিশুদ্ধ সনদে।]

জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু‎ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«إنَّ لله عِنْدَ كُلِّ فِطْرٍ عُتَقَاءَ، وذَلكَ كُلَّ لَيلَة» .

“প্রত্যেক ইফতারের সময় আল্লাহর মুক্তি প্রাপ্ত বান্দা রয়েছে, আর তা প্রত্যেকরাতে”। [ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৬৪৩, আলবানি ইবন মাজাহ’য় হাদীসটি হাসান ও সহীহ বলেছেন।।]‎

শিক্ষা ও মাসায়েল:

‎এক. রমযান মাসের ফযীলত যে, এতে জান্নাতের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করা হয়,জাহান্নামের দরজাসমূহ বদ্ধ করা হয় ও শয়তানগুলো শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা হয়। রমযানের প্রত্যেক রাতে তা সংঘটিত হয়, শেষ রমযান পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

দুই. এসব হাদীস প্রমাণ করে যে, জান্নাত-জাহান্নাম আল্লাহর সৃষ্ট দু’টি বস্তু, এগুলোর দরজাসমূহপ্রকৃত অর্থে খোলা ও বদ্ধ করা হয়। [দেখুন: শারহু ইবন বাত্তাল: (৪/২০); আল-মুফহিম: (৩/১৩৬)।]

তিন. ফযীলতপূর্ণ মৌসুম ও তাতে সম্পাদিত আমল আল্লাহর সন্তুষ্টির কারণ, যে কারণে জান্নাতের দরজাসমূহ খোলা ও জাহান্নামের দরজাসমূহ বদ্ধ করা হয়।

চার. রমযানের সুসংবাদ প্রদান ও তার শুভেচ্ছা বিনিময় বৈধ। কারণ,সাহাবীদের সুসংবাদ প্রদান ও তাদেরকে আমলের প্রতি উদ্বুদ্ধ করার জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের এসব বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা দিতেন। অনুরূপ প্রত্যেক কল্যাণের সুসংবাদ প্রদানবৈধ।‎

পাঁচ. অবাধ্য শয়তানগুলোকে এ মাসে আবদ্ধ করা হয়। ফলে তাদের প্রভাব কমে যায় ও মানুষ অধিক আমল করার সুযোগ পায়।

ছয়. বান্দার ওপর আল্লাহর অনুগ্রহ যে, তিনি তাদের সিয়াম হিফাজত করেন, তাদের থেকে অবাধ্য শয়তানের প্রভাব দূর করেন, যেন সে তাদের ইবাদত বিনষ্ট করার সুযোগ না পায়। [যাখিরাতুল উকবা: (২০/২৫৫)।]

সাত. এসব হাদীস থেকে শয়তানের অস্তিত্বের প্রমাণ মিলে। তাদের শরীর রয়েছে, যা শিকলে বাঁধা যায়। তাদের কতিপয় অবাধ্য, রমযানে যাদেরকে শৃঙ্খলবদ্ধ করা হয়।‎ [যাখিরাতুল উকবা: (২০/২৫৫)।]

‎আট. রমযানের বিশেষ মর্যাদা সেসব মুমিনগণ অর্জন করবে, যারা এর যথাযথ মর্যাদায় দেয় ও এতে আল্লাহর বিধান পালন করে। পক্ষান্তরে কাফির, যারা এতে পানাহার করে, এর কোনো মর্যাদা দেয় না, তাদের জন্য জান্নাতের দরজাসমূহ খোলা ও জাহান্নামের দরজাসমূহ বদ্ধ করা হয় না। তাদের শয়তানগুলো বন্দি করা হয় না, তারা জাহান্নাম থেকে মুক্তির যোগ্য নয়। [দেখুন: ফাতাওয়া শায়খুল ইসলাম: (৫/১৩১-৪৭৪)।] অতএব, এ মাসে তাদের মৃতরা আল্লাহর শাস্তি থেকে মুক্তি পাবে না।

নয়. যে মুসলিম কাফিরদের সঙ্গে মিল রাখল, যেমন রমযানের মূ‌ল্য দিল না, এতে পানাহার করল, সাওম ভঙ্গকারী কাজ করল অথবা সাওমের সাওয়াব হ্রাসকারী কর্মে লিপ্ত হলো, যেমন গীবত, চোগলখুরী, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া ও এসব বৈঠকে উপস্থিত হওয়া, বলা যায় সে রমযানেরফযীলত থেকে বঞ্চিত হবে, তার জন্য জান্নাতের দরজাসমূহ উন্মুক্ত ওজাহান্নামের দরজাসমূহ বদ্ধ করা হবে না, তার শয়তানগুলো শৃঙ্খলাবদ্ধ থাকবে না।

দশ. সুরায়ে ‘সাদ’-এর ৫০নং আয়াতে জান্নাতের প্রশংসায় বলা হয়েছে:

﴿جَنَّٰتِ عَدۡنٖ مُّفَتَّحَةٗ لَّهُمُ ٱلۡأَبۡوَٰبُ ٥٠﴾ [ص: 50]

“চিরস্থায়ী জান্নাত, যার দরজাসমূহ থাকবেতাদের জন্য উন্মুক্ত”। [সূরা সাদ, আয়াত: ৫০] এ আয়াত রমযানের উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যের বিপরীত নয়। কারণ, এ আয়াত জান্নাতের দরজাসমূহ সর্বদা উন্মুক্ত থাকার দাবি করে না। দ্বিতীয়ত এ আয়াত কিয়ামতের দিন সম্পর্কে।

অনুরূপ জাহান্নাম সম্পর্কে সুরা আয-যুমার ৭১নং আয়াত:

﴿حَتَّىٰٓ إِذَا جَآءُوهَا فُتِحَتۡ أَبۡوَٰبُهَا ٧١﴾ [ الزمر : 71]

“অবশেষে তারা যখন জাহান্নামের কাছে এসে ‎‎ পৌঁছবে তখন তার দরজাগুলো খুলে দেওয়াহবে”। [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৭১] হতে পারে এর পূর্বে জাহান্নামের দরজাসমূহ বদ্ধ থাকবে। [যাখিরাতুল উকবা: (২০/২৫৩)।]

‎এগার. লাইলাতুল কদর ফযীলতপূর্ণ। এ রাত লাইলাতুল কদর বিহীন হাজার মাস থেকে উত্তম। এ রাতের বরকত থেকে যে মাহরুম হলো, সে অনেক কল্যাণ থেকে মাহরুম হলো।‎

‎বারো. রমযানের প্রত্যেক রাতে আল্লাহর মুক্ত করা কতিপয় বান্দা থাকে। যারা আল্লাহর মহব্বত, সাওয়াবের আশা ও শাস্তির ভয়ে সাওম রাখে, সাওম হিফাযত করে, কিয়াম করে, ইহসানের প্রতি যত্নশীল থাকে ও অধিক নেক আমল করে, তারা মুক্তির বেশি হকদার।

‎তের. জাহান্নাম থেকে মুক্ত এসব বান্দার জন্য আল্লাহর নিকট দো‘আ কবুলেরওয়াদা রয়েছে। তারা দু’টি কল্যাণ লাভ করেছে: জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও দো‘আ কবুলের প্রতিশ্রুতি।‎

‎চৌদ্দ. মুসলিমদের উচিৎ সাওয়াব বিনষ্ট বা হ্রাসকারী কর্ম থেকে সাওম হিফাযত করা। যেমন, চোখ, কান ও জবান সংরক্ষণ করা, তাহলে ইনশাআল্লাহ জাহান্নাম থেকে মুক্তির সনদ মিলবে।

‎পনের. সাওম পালনকারীর উচিৎ অধিক দো‘আ করা। কারণ, তার দো‘আ কবুলের সম্ভাবনা রয়েছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন