hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রমযানের বিষয়ভিত্তিক হাদীস শিক্ষা ও মাসায়েল

লেখকঃ ইবরাহীম ইবন মুহাম্মাদ আল-হাকীল

২৫
‎‎‎২২. সাওম পালনকারীর চুম্বন ও আলিঙ্গন করার বিধান
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كَانَ رَسُولُ الله صلى الله عليه وسلم يُقَبِّلُ وهوَ صَائِمٌ، ويُبَاشِرُ وَهُوَ صَائِمٌ، ولَكنَّهُ أَمْلَكُكُمْ لأَرَبِهِ» أَيْ : أَمْلَكُكُمْ لِحَاجَتِهِ» .

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম অবস্থায় চুম্বন করতেন, আলিঙ্গনকরতেন, কিন্তু তিনি তোমাদের চেয়ে তার চাহিদা অধিকনিয়ন্ত্রণকারী ছিলেন। অর্থাৎ স্ত্রীগমনের চাহিদা।

অপর বর্ণনায় আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানে সাওম অবস্থায় চুম্বন করতেন”। [সহীহ মুসলিম।]

মুসলিমের অপর বর্ণনায় আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন,

«وَأَيُّكُمْ يَمْلِكُ أَرَبَهُ كَما كَانَ رَسُولُ الله صلى الله عليه وسلم يَمْلِكُ أَرَبَهُ» .

“তোমাদের মধ্যে কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মতো নিজের প্রবৃত্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখে”।

আবু দাউদের এক বর্ণনায় আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كَانَ رَسُولُ الله صلى الله عليه وسلم يُقَبِّلُنِي وهُو صَائِمٌ وأَنا صَائِمَةٌ» .

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে চুম্বন করতেন, অথচ তিনি ও আমি সাওম অবস্থায় থাকতাম”।

ইবন হিব্বানের এক বর্ণনায় এসেছে, আবু সালমা ইবন আব্দুর রহমান আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণনা করেন,তিনি বলেছেন:

«كَانَ رَسُولُ الله صلى الله عليه وسلم يُقَبِّلُ بَعضَ نِسائِهِ وهوَ صَائِمٌ، قُلتُ لعائِشَةَ : في الفَريضَةِ والتَّطوُّعِ؟ قَالَتْ عَائِشَةُ : في كُلِّ ذَلكَ في الفَريضَةِ والتَّطَوُّع» .

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কতক স্ত্রীদের সাওম অবস্থায় চুম্বন করতেন। আমি আয়েশাকে জিজ্ঞেসকরলাম: ফরয ও নফলে? তিনি বললেন: উভয়ে”।‎ [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮২৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১০৬; আবু দাউদ, হাদীস নং ২৩৮৪; আহমদ: (৬/৪৪), তৃতীয় বর্ণনা মুসলিমের, চতুর্থ বর্ণনা আবু দাউদ ও আহমদের, পঞ্চম বর্ণনা ইবন হিব্বানের: (৩৫৪৫)।]

হাফসা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত:

«أَنَّ النَّبيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُقبِّلُ وَهُوَ صَائِم» .

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম অবস্থায় চুম্বন করতেন”। [মুসলিম, হাদীস নং ১১০৭; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৬৮৫; আহমদ: (৬/২৮৬)।]

উমার ইবন আবু সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেন: “সাওম পালনকারী কি চুম্বন করবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তাকে (উম্মে সালমা) জিজ্ঞাসা কর। উম্মে সালমাতাকে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ করেন। সে বলল: হে আল্লাহর রাসূল,আল্লাহ আপনার অগ্র-পশ্চাতের সবগুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন: জেনে রেখ, আল্লাহর শপথ! আমি তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক পরহেযগার ও আল্লাহভীরু”। [মুসলিম, হাদীস নং ১১০৮; মালেক: (১/২৯১)।]

উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “সাওম অবস্থায় বিনোদনের ছলে আমি চুম্বন করি। আমি বললাম: হে আল্লাহর রাসূল, আজ এক জঘন্য অপরাধ করে ফেলেছি, সাওম অবস্থায় চুম্বন করেছি। তিনি বললেন: বল দেখি সাওম অবস্থায় পানি দ্বারা কুলি করলে কী হয়? আমি বললাম: কিছু হয় না। তিনি বললেন: তাহলে কী অপরাধ করেছ”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ২৩৮৫), দারামি, হাদীস নং ১৭২৪), আব্দ ইবন হুমাইদ: হাদীস নং ২১, হাদীসটি সহীহ বলেছেন ইবন হিব্বান, হাদীস নং ৩৫৪৪। হাকেম, তিনি বলেছেন বুখারী ও মসলিমের শর্ত মোতাবেক, ইমাম যাহাবি তার সমর্থন করেছেন: (১/৫৯৬) ও আলবানি, সহীহ আবু দাউদে।]‎

শিক্ষা ও মাসায়েল:

এক. সাওম পালনকারীর চুম্বন ও আলিঙ্গন করা বৈধ, সাওম ফরয হোক বা নফল, সাওম পালনকারী বৃদ্ধ হোক বা যুবক, রমযান বা গায়রে রমযান সর্বাবস্থায়, যদি স্ত্রীগমন অথবা বীর্যপাত থেকে নিরাপদ থাকে ও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়।

দুই. হাদীসে আলিঙ্গন দ্বারা উদ্দেশ্য শরীরের সাথে শরীরের স্পর্শ,স্ত্রী সহবাস নয়। কারণ, স্ত্রী সহবাস সাওম ভঙ্গকারী। [তাবারি তার তাফসির গ্রন্থে বলেছেন: “আরবদের ভাষায় মোবাশারা হচ্ছে চামড়ার সাথে চামড়া মিলানো, আর পুরুষের চামড়া হচ্ছে তার বাহ্যিক শরীর”: (২/১৬৮); দেখুন: ফাতহুল বারি: (৪/১৪৯)।]

তিন. সাওম পালনকারীর স্ত্রী চুম্বন অথবা স্পর্শ অথবা আলিঙ্গনের ফলে যদি বীর্যস্খলন হয়, সাওম ভেঙ্গে যাবে, তার অবশিষ্ট দিন পানাহার থেকে বিরত থাকা, তাওবা, ইস্তেগফার ও পরবর্তীতে কাযা করা জরুরি। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা হাদীসেকুদসীতে বলেন,

«يَدَعُ شهْوَتَه وأَكْلَهُ وشُرْبَهُ مِنْ أَجْلي» وفي رِوايةٍ «ويَدَعُ لَذَّتَه مِنْ أَجْلي، ويَدَعُ زَوجَتَه مِنْ أَجْلي» .

“সে আমার জন্য তার প্রবৃত্তি ও পানাহার ত্যাগ করে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭০৫৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৫১।] অপর বর্ণনায় আছে: “সে আমার জন্য স্বাদ ও স্ত্রীগমন ত্যাগ করে”। [সহীহ ইবন খুযাইমাহ, হাদীস নং ১৮৯৭; দেখুন: ফাতাওয়া ইবন বায: (২/১৬৪) এবং তার মাজমু ফাতাওয়া ও রাসায়েল: (১৫/৩১৫)।]

‘মজি’ বের হলে সাওম ভাঙ্গবে না, বিশুদ্ধ মতানুসারে এ কারণে তারওপর কিছু ওয়াজিব হবে না। [ফাতাওয়া ইবন বায: (২/১৬৪); তার মাজমু ফাতাওয়া ও রাসায়েল: (১৫/২৬৮-৩১৫); ফাতাওয়াস সিয়াম লি ইবন জাবরিন: (৫৪)।]

সাওম পালনকারীর জন্য উচিৎ যৌন উত্তেজক আচরণ থেকে বিরত থাকা, যা হারাম পর্যন্ত নিয়ে যায়।

চার. হাদীস প্রমাণ করে যে, চুম্বন শুধু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বৈশিষ্ট্য নয়, বরং সমগ্রউম্মতের জন্য তা বৈধ, যদি সহবাস বা বীর্যপাতের আশঙ্কা না ‎‎ থাকে।‎ [শারহু ইবন বাত্তাল: (৪/৫৬); মিনহাতুল বারি: (৪/৩৬৪); তুহফাতুল আহওয়াযি: (৩/৩৫০)।]

পাঁচ. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সবচেয়ে আল্লাহ ভীরু। কারণ, তিনি আল্লাহকে সবচেয়ে বেশি জানতেন। [আল-মুফহিম: (৩/১৬৫)।]

ছয়. হাদীস প্রমাণ করে যে, দীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি ও কঠোরতা নিষেধ অথবা এ বিশ্বাস করা যে, শুধু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য স্ত্রী চুম্বন বৈধ, উম্মতের কারো জন্য তা বৈধ নয়। কারণ, এ ব্যাপারে যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি স্বাভাবিকভাবে তা নেন নি, বরং তিনি বলেন,

«أمَا والله إنِّي لأَتْقَاكُم لله وأَخْشَاكُم له» وفي الحَدِيثِ الآخَرِ : «وَأَعْلَمُكُم بِحُدُودِ الله» .

“জেনে রেখ, আমি ‎‎ তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে পরহেযগার ও আল্লাহ ভীরু”। [শারহুন নববী আলা মুসলিম (৭/২১৯)।]

অপর হাদীসে এসেছে: “আমি তোমাদের চেয়ে আল্লাহর বিধান অধিক জানি”।‎

সাত. হাদীস থেকে সাহাবীদের হালাল-হারাম জানার আগ্রহ ও আল্লাহ ভীতি প্রমাণ হয়, তারা ইবাদত বিনষ্টকারী বা সাওয়াব হ্রাসকারী বস্তু থেকে সতর্কতা অবলম্বন করতেন।

আট. এ হাদীসে সেসব সূফীদের প্রতিবাদ করা হয়েছে, যারা বিশ্বাস করে যে, ঈমান ও আমলে যাদের পূর্ণতা অর্জন হয়েছে, তারা শরী‘আতের বিধানের বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্ত! এখানে আমরা দেখি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শরী‘আতের বিধানে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করেন, অথচ তার ঈমান ও আমল সবার চেয়ে কামেল ও পরিপূর্ণ ছিল। এতে তাদেরও প্রতিবাদ রয়েছে, যাদের ধারণা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পূর্বাপর পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে, তাই নিষিদ্ধ কতক কাজ তার জন্য বৈধ। [অনুরূপ আরও ভুল বুঝার সম্ভাবনা রয়েছে, তৃতীয়বার পাপ থেকে তওবাকারীর হাদীস ও আল্লাহর বাণী থেকে: اعمل ما شئت فقد غفرت لك “তুমি যা ইচ্ছা কর, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছি”। মূলত: এ ভুল বুঝার সম্ভাবনা বাতিল। এর দলীল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী: “আমি তোমাদের মধ্যে অধিক পরহেযগার ও আল্লাহ ভীরু”। উপরন্তু এ ব্যাপারে উম্মতের ইজমা রয়েছে যে, ব্যক্তি বুযুর্গী ও মর্যাদার যে স্তরে উপনীত হোক, শরী‘আতের বিধান তার থেকে মওকুফ হবে না”। আল-মুফহিম: (৩/১৬৪-১৬৫)।]

নয়. উমার ইবনুল খাত্তাবের হাদীসে এক বিধানের ক্ষেত্রে দু’টি বস্তুর তুলনা করা ও কিয়াসের বৈধতা প্রমাণিত হয়, যদি বস্তুদ্বয়ে সাদৃশ্য থাকে। যেমন, পানি দ্বারা গড়গড়ার ফলে গলায় ও পেটে পানি প্রবেশের সম্ভাবনা থাকে, যে কারণে সাওম ভেঙ্গে যায়, অনুরূপ চুম্বনের ফলে স্ত্রীগমনের সম্ভাবনা থাকে, যে কারণে সাওম ভেঙ্গে যায়, কিন্তু যেহেতু গড়গড়ার ফলে সাওম ভাঙ্গে না, তাই চুম্বনের ফলে সাওম ভাঙ্গবে না। [আবু দাউদের টিকায় মা‘আলেমুস সুনান: (২/৭৮০)।]‎

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন