hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রমযানের বিষয়ভিত্তিক হাদীস শিক্ষা ও মাসায়েল

লেখকঃ ইবরাহীম ইবন মুহাম্মাদ আল-হাকীল

১৩
১০. সিয়াম ফরযের ধাপসমূহ
বারা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদের অভ্যাস ছিল, তাদের সিয়াম শেষে যখন খানা উপস্থিত হত, আর তারা খানা না খেয়ে যদি ঘুমিয়ে যেতেন, তাহলে সে রাত ও পরবর্তী দিনে তারা খেতেন না। কাইস ইবন সিরমা আল-আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু সাওম শেষে খানার সময় স্ত্রীর কাছে এসে বললেন: তোমার নিকট খাবার আছে? উত্তরে স্ত্রী বলল: নেই, তবে আমি তোমার জন্য ব্যবস্থা করছি। সে ছিল দিনের কর্মক্লান্ত, তার দু’চোখে ঘুম এসে গেল। তার স্ত্রী এসে তাকে দেখে বলল: আফসোস আপনি বঞ্চিত হলেন। পরদিন যখন দুপুর হলো, তিনি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিষয়টি অবগত করানো হলো। অতঃপর আল্লাহতা‘আলা নাযিল করলেন:

﴿أُحِلَّ لَكُمۡ لَيۡلَةَ ٱلصِّيَامِ ٱلرَّفَثُ إِلَىٰ نِسَآئِكُمۡۚ ١٨٧﴾ [ البقرة :187]

“সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য তোমাদের ‎‎ স্ত্রীদের নিকট গমন হালাল করা হয়েছে”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৮৭] তারা এ আয়াতের কারণে খুব খুশি হলেন, অতঃপর নাযিল হলো:

﴿وَكُلُواْ وَٱشۡرَبُواْ حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكُمُ ٱلۡخَيۡطُ ٱلۡأَبۡيَضُ مِنَ ٱلۡخَيۡطِ ٱلۡأَسۡوَدِ مِنَ ٱلۡفَجۡرِۖ ١٨٧﴾ [ البقرة : 187]

“আর আহার কর ও পান করযতক্ষণ না ফজরের সাদা রেখা কালো রেখা ‎‎ থেকে স্পষ্ট হয়”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৮৭] [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮১৬; আবু দাউদ, হাদীস নং ২৩১৪; তিরমিযী, হাদীস নং ২৯৬৮; আহমদ: (৪/২৯৫)।]

মুয়ায ইবন জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “সালাতের তিনটি ধাপ অতিক্রম করেছে, অনুরূপ সিয়ামের তিনটি ধাপ অতিক্রম করেছে... তিনি সালাতের তিন ধাপ উল্লেখ করেন। অতঃপর সিয়ামের ব্যাপারে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক মাসের তিন দিন ও আশুরার সাওম পালন করতেন। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা নাযিল করেন:

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ١٨٣﴾ إِلى قَولِه : ﴿طَعَامُ مِسۡكِينٖۖ ١٨٤﴾ [ البقرة :183-184]

“‎হে মুমিনগণ, তোমাদের উপর সিয়াম ফরযকরা হয়েছে, যেভাবে ফরয করা হয়েছিল ‎‎ তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে তোমরাতাকওয়া অবলম্বন কর...একজন দরিদ্রকে খাবার প্রদান করা”। সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৮৩-১৮৪] তখন যার ইচ্ছা সাওম পালন করত, যার ইচ্ছা ইফতার করত ও প্রত্যেক দিনের বিনিময়ে একজন মিসকিনকে খাদ্য দিত। এটা তখন হালাল ছিল, অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা নাযিল করেন:

﴿شَهۡرُ رَمَضَانَ ٱلَّذِيٓ أُنزِلَ فِيهِ ٱلۡقُرۡءَانُ﴾ إِلى ﴿أَيَّامٍ أُخَرَۗ ١٨٥﴾ [ البقرة :185]

“রমযান মাস, যাতে কুরআন নাযিল করাহয়েছে... অন্যান্যদিবসে সংখ্যা পূরণ করে নেবে”। এরপর থেকে যে রমযান পায়, তার ওপর সাওম ওয়াজিব হয়, মুসাফির সফর শেষে কাযা করবে, যারা বৃদ্ধ- সাওম পালনে অক্ষম, তাদের ব্যাপারে ফিদিয়া তথা খাদ্য দান বহাল থাকে”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৮৫]

মুসনাদে আহমদের অপর বর্ণনায় আছে: “আর সিয়ামের ধাপ হচ্ছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমন করে প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম পালন আরম্ভ করেন। ইয়াযিদ ইবন হারুন বলেন, “তিনি নয় মাস তথা রবিউল আউয়াল থেকে রমযান পর্যন্ত প্রত্যেক মাসে তিন দিন ও আশুরার সাওম পালন করেন। অতঃপর আল্লাহ তার উপর সিয়ামের ফরয নাযিল করেন:

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣﴾ إِلى هَذِهِ الآيةِ : ﴿وَعَلَى ٱلَّذِينَ يُطِيقُونَهُۥ فِدۡيَةٞ طَعَامُ مِسۡكِينٖۖ ١٨٤﴾ [ البقرة : 183-184]

“‎হে মুমিনগণ, তোমাদের ওপর সিয়াম ফরযকরা হয়েছে, যেভাবে ফরয করা হয়েছিল ‎‎ তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর... আরযাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদয়া,একজন দরিদ্রকে খাবার প্রদান করা”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৮৩-১৮৪] তিনি বলেন, তখন যার ইচ্ছা সাওম পালন করত, যার ইচ্ছা খাদ্য প্রদান করত, খাদ্যদান যথেষ্ট ছিল। তিনি বলেন, অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা অপর আয়াত নাযিল করেন:

﴿شَهۡرُ رَمَضَانَ ٱلَّذِيٓ أُنزِلَ فِيهِ ٱلۡقُرۡءَانُ﴾ إِلى قَوْلِهِ ﴿فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ ٱلشَّهۡرَ فَلۡيَصُمۡهُۖ ١٨٥﴾ [ البقرة : 185]

“রমযান মাস, যাতে কুরআন নাযিল করাহয়েছে... সুতরাং তোমাদেরমধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেনতাতে সিয়াম পালন করে”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৮৫] তিনি বলেন, আল্লাহ তা‘আলা মুকিম ও সুস্থ ব্যক্তির ওপর সিয়াম জরুরি করে দেন, অসুস্থ ও মুসাফিরকে তাতে শিথিলতা প্রদান করেন। আর যে সিয়াম পালনে অক্ষম, তার ব্যাপারে খাদ্যদান বহাল থাকে। এ হলো দু’টি ধাপ। তিনি বলেন, তারা ঘুমের আগ পর্যন্ত পানাহার ও স্ত্রীগমন করত, যখন তারা ঘুমাইত তা থেকে বিরত থাকত। তিনি বলেন, কায়েস ইবন সিরমাহ নামক জনৈক আনসারী সাওম অবস্থায় সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করেন, অতঃপর স্ত্রীর নিকট এসে এশার সালাত আদায় করেন। অতঃপর পানাহার না করে ঘুমিয়ে পড়েন, অবশেষে সকালে উঠেন ও সাওম রাখেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দেখেন যে, সে খুব ক্লান্ত হয়ে গেছে। তিনি বললেন: কী হয়েছে, তোমাকে এতো ক্লান্ত দেখছি কেন? সে বলল: হে আল্লাহর রাসূল, আমি গতকাল কাজ করেছি, অতঃপর বাড়িতে এসে শুয়ে পড়ি ও ঘুমিয়ে যাই, যখন ভোর করেছি, সাওম অবস্থায় ভোর করেছি। তিনি বলেন, উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু ঘুম থেকে উঠে স্ত্রীগমন করে ছিলেন। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে বলেন, অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা নাযিল করেন:

﴿أُحِلَّ لَكُمۡ لَيۡلَةَ ٱلصِّيَامِ ٱلرَّفَثُ إِلَىٰ نِسَآئِكُمۡۚ﴾ إِلى قَوْلِه : ﴿ثُمَّ أَتِمُّواْ ٱلصِّيَامَ إِلَى ٱلَّيۡلِۚ ] ١٨٧﴾ [ البقرة : 187]

“সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য তোমাদের ‎‎ স্ত্রীদের নিকট গমন হালাল করা হয়েছে... অতঃপর রাত পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর”। [সূরা বাকারাহ, আয়াত: ১৮৭]

শিক্ষা ও মাসায়েল:

‎এক. ইবাদতের এ সহজ রূপ বান্দার উপর আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ। কারণ, সিয়াম ফরযের ধাপগুলোতে দেখা যায়: সূর্যাস্তের পর যে ঘুমিয়ে পড়ত অথবা এশা থেকে ফারেগ হত, সে আগামীকালের সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকত, এ জন্য তারা খুব কষ্ট ও ক্লান্তির সন্মুখীন হত, যেমন উপরে এক সাহাবীর ঘটনা থেকে জানলাম। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা রমযানের রাতে পানাহার ও স্ত্রীগমন বৈধ করে তাদের ওপর সহজ করলেন, সূর্যাস্তের পর ঘুমিয়ে যাক বা জাগ্রত থাক। এটা ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে রুখসত। সকল প্রশংসা আল্লাহর।

দুই. স্বামীর খেদমত করা একজন ভালো স্ত্রীর বৈশিষ্ট্য ও একান্ত হিতাকাঙ্ক্ষী হওয়ার আলামত।‎

‎তিন. এতে সাহাবীদের ধর্মপরায়ণতা, আল্লাহর আদেশের কাছে নতি স্বীকার করা, তাঁরবিরোধিতাকে ভয় করা এবং প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে আল্লাহকে স্মরণ করার দৃষ্টান্ত রয়েছে। কতক বর্ণনায় এসেছে: “স্ত্রী আসতে দেরী করেন, ফলে সে ঘুমিয়ে যায়। স্ত্রী এসে তাকে জাগ্রত করেন, কিন্তু সে আল্লাহ ও তার রাসূলের নাফরমানী অপছন্দ করে খানা থেকে বিরত থাকেন ও সাওম অবস্থায় সকাল করেন”। [তাবারি: (২/১৬৭)।] অপর বর্ণনায় আছে: “তিনি মাথা রেখে তন্দ্রায় যান, তার স্ত্রী খানা নিয়ে এসে বলে: খান, সে বলে: আমি তো ঘুমিয়ে ছিলাম। সে বলল: আপনি ঘুমান নি। অতঃপর সে অভুক্ত অবস্থায় প্রত্যুষ করে”। [তাবারি: (২/১৬৮)।]

‎চার. আল্লাহর পক্ষ থেকে রুখসত তথা শিথিল বিধান পেয়ে আনন্দ প্রকাশ করা বৈধ, এটা আযীমতের বিপরীত নয়। কারণ, উভয় আল্লাহর পক্ষ থেকে, তিনি যেরূপ রুখসত পছন্দ করেন, অনুরূপ আযীমত পছন্দ করেন।

পাঁচ. আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার ওপর রহমত যে, তিনি তাদের জন্য এমন ইবাদত রচনা করেন, যাতে রয়েছে তাদের অন্তর ও আত্মার পরিশুদ্ধতা।

ছয়. আল্লাহ অনভ্যস্ত বিষয়ে বিধান দানে বিভিন্ন ধাপ গ্রহণ করেন, যেমন তিনি সালাত ও সিয়াম তিন ধাপে ফরয করেন। অনুরূপ মদ নিষেধাজ্ঞার বিধান বিভিন্ন ধাপে এসেছে, যেন তারা ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়।

সাত. সাওম ক্রমান্বয়ে ফরয হয়েছে, কারণ, ইসলামের সূচনাকালে তারা রোযায় অভ্যস্ত ছিলনা। যেমন মুয়ায থেকে বর্ণিত হাদীসের দ্বিতীয় বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন, “তারা সিয়ামে অভ্যস্ত ছিল না, তাদের উপর সিয়াম খুব কষ্টকর ছিল”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৫০৬; বায়হাকি ফিস সুনান: (৪/২০১); ফাযায়েলুল আওকাত: (৩০), আলবানি সহীহ আবু দাউদে হাদীসটি সহীহ বলেছেন।]

‎আট. তিন ধাপে সিয়াম ফরয হয়েছে:‎

১. প্রতিমাসে তিন দিন ও আশুরার সাওম।

২. রমযানে সাওম পালন বা খাদ্য দান, সিয়াম পালনে অনিচ্ছুকদের কোনো একটি বেছে নেওয়ার ইখতিয়ার।

৩. রমযানের সাওম সুস্থ ব্যক্তির ওপর ফরয, সাউমার পরিবর্তে খাদ্য দানের বিধান শুধু বৃদ্ধ ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য, যে সাওম পালনে সক্ষম নয়, সে রোগী এর অন্তর্ভুক্ত, যার আরোগ্য লাভের সম্ভাবনা নেই।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন