hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রমযানের বিষয়ভিত্তিক হাদীস শিক্ষা ও মাসায়েল

লেখকঃ ইবরাহীম ইবন মুহাম্মাদ আল-হাকীল

৫৯
৫৬. যাকাতুল ফিতর
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«فَرَضَ رَسُولُ الله صلى الله عليه وسلم زَكَاةَ الفِطْرِ صَاعَاً مِنْ تَمرٍ أَوْ صَاعاً مِنْ شَعِيرٍ عَلَى الْعَبْدِ وَالحُرِّ وَالذَّكَرِ وَالأُنْثَى وَالصَّغِيرِ وَالكَبِيرِ مِنَ المسْلِمِينَ وَأَمَرَ بها أَنْ تُؤَدَّى قَبْلَ خُرُوجِ النَّاسِ إِلى الصَّلاةِ» .

“গোলাম, স্বাধীন, পুরুষ, নারী, ছোট, বড় সকল মুসলিমের ওপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ‘সা’ তামার (খেজুর) অথবা এক ‘সা’ গম যাকাতুল ফিতর ফরয করেছেন এবং সালাতের পূর্বে তা আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৪৩২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৮৪।]

বুখারীর অপর বর্ণনায় আছে, নাফে রহ. বলেছেন: “ইবন উমার ছোট-বড় সবার পক্ষ থেকে তা আদায় করতেন, তিনি আমার সন্তানদের পক্ষ থেকে পর্যন্ত আদায় করতেন। যারা তা গ্রহণ করত, ইবন উমার তাদেরকে তা প্রদান করতেন, তিনি ঈদুল ফিতরের একদিন অথবা দু’দিন পূর্বে তা আদায় করতেন”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৪৪০।]

আবু সায়িদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু‎ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “আমরা যাকাতুল ফিতর আদায় করতাম এক ‘সা’ খানা অথবা এক ‘সা’ গম অথবা এক ‘সা’ খেজুর অথবা এক ‘সা’ পনির অথবা এক ‘সা’ কিশমিশ দ্বারা”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৪৩৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৮৫।]

ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “সাওম পালনকারীকে অশ্লীলতা থেকে পবিত্র করা ও মিসকিনদের খাদ্যের ব্যবস্থা স্বরূপ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাকাতুল ফিতর ফরয করেছেন। সালাতের পূর্বে যে আদায় করল, তা গ্রহণযোগ্য যাকাত, যে তা সালাতের পর আদায় করল, তা সাধারণ সদকা”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ১৬০৯; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৮২৭, হাকেম বলেছেন হাদীসটি সহীহ, বুখারির শর্ত মোতাবেক: (১/৫৬৮), আলবানি সহীহ আবু দাউদে হাদীসটি হাসান বলেছেন।]

কায়স ইবন সাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু‎ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “যাকাত ফরয হওয়ার পূর্বে আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সদকাতুল ফিতর আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন, যখন যাকাত ফরয হলো, তিনি আমাদের নির্দেশ দেন নি, নিষেধও করেন নি, তবে আমরা তা আদায় করতাম”। [নাসাঈ: (৫/৪৯); ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৮২৮; আহমদ: (৬/৬/), হাফেয ইবন হাজার হাদীসটি সহীহ বলেছেন, ফাতুহল বারি: (৩/২৬৭)।]

শিক্ষা ও মাসায়েল:‎

এক. যাকাতুল ফিতর সকল মুসলিমের ওপর ফরয, যা ফরয হয়েছে যাকাতের পূর্বে। যাকাত ফরযের পর পূর্বের নির্দেশের কারণে তা এখনো ফরয।

দুই. প্রত্যেক মুসলিমের নিজ ও নিজের অধীনদের পক্ষ থেকে, যেমন স্ত্রী-সন্তান ও যাদের ভরণ-পোষণ তার ওপর ন্যস্ত, যাকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব।

তিন. স্ত্রী-সন্তান যদি কর্মজীবী অথবা সম্পদশালী হয়, তাহলে তাদের প্রত্যেকের নিজের পক্ষ থেকে যাকাতুল ফিতর আদায় করা উত্তম, কারণ, তারা প্রত্যেকে যাকাতুল ফিতর প্রদানে আদিষ্ট। হ্যাঁ, যদি তাদের অভিভাবক তাদের পক্ষ থেকে আদায় করে, তাহলে জায়েয আছে, যদিও তারা সম্পদশালী।

চার. যাকাতুল ফিতরের মূল্য দেওয়া যথেষ্ট নয়, এটা জমহুর আলিমের অভিমত। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশ দেন নি, তিনি এরূপ করেন নি, তার কোনো সাহাবী এরূপ করে নি, অথচ প্রতি বছর যাকাতুল ফিতর আসত। অধিকন্তু ফকিরকে খাদ্য দিলে সে নিজে ও তার পরিবার তার দ্বারা উপকৃত হয়, অর্থ প্রদানের বিপরীত, কারণ, সে অর্থ জমা করে পরিবারকে বঞ্চিত করতে পারে। দ্বিতীয়ত মূল্য আদায়ের ফলে শরী‘আতের এ বিধান তেমন আড়ম্বরতা পায়না।

পাঁচ. যাকাতুল ফিতর আদায়ের প্রথম সময় আটাশে রমযান, সাহাবায়ে কেরাম ঈদের একদিন অথবা দু’দিন পূর্বে তা আদায় করতেন, সর্বশেষ সময় ঈদের সালাত, যেমন হাদীসে এসেছে।

ছয়. হকদার ফকির-মিসকিনদের এ যাকাত দিতে হবে, কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “মিসকিনদের খাদ্য স্বরূপ”। প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের দেওয়া ভুল যদি তারা অভাবী না হয়, যেমন কতক লোক কুরবানি ও আকিকার গোশত-এর ন্যায় যাকাতুল ফিতর পরস্পর আদান প্রদান করে, এটা সুন্নাতের বিপরীত। কারণ, এটা যাকাত, হকদারকে দেওয়া ওয়াজিব, কুরবানি ও আকিকার গোশত-এর অনুরূপ নয়, যা হাদিয়া হিসেবে দেওয়া বৈধ। আরেকটি ভুল যে, কতক মুসলিম প্রতি বছর নির্দিষ্ট পরিবারকে যাকাতুল ফিতর আদায় করে, অথচ বর্তমান সে সচ্ছল হতে পারে, কিন্তু পূর্বের ন্যায় যাকাত দিতে থাকে, এটা ঠিক নয়।

সাত. নিজ দেশের অভাবীদের যাকাতুল ফিতর দেওয়া উত্তম, তবে অন্য দেশে দেওয়া জায়েয, বিশেষ করে যদি সেখানে অভাবের সংখ্যা বেশি থাকে, তাদের চেয়ে বেশি অভাবী নিজ দেশের কারো সম্পর্কে জানা না থাকে অথবা তার দেশের অভাবীদের দেওয়ার অন্য লোক থাকে।

আট. যাকাতুল ফিতরের কতক বিধান ও উপকারিতা:

(১) বান্দার ওপর আল্লাহর নিয়ামত প্রকাশ করা হয়, যেমন তিনি পূর্ণ মাস সিয়ামের তাওফীক ও রমযান শেষে পানাহারের অনুমতি প্রদান দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلِتُكۡمِلُواْ ٱلۡعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ ٱللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَىٰكُمۡ وَلَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ١٨٥﴾ [ البقرة : 185]

“আর যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবংতিনি তোমাদেরকে যে হিদায়াত দিয়েছেন,তার জন্য আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা কর এবংযাতে তোমরা শোকর কর”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৮৫]

(২) এটা শরীরের যাকাত, যা আল্লাহ পূর্ণ বছর সুস্থ রেখেছেন।

(৩) যাকাতুল ফিতর বান্দার সিয়ামকে অশ্লীলতা থেকে পবিত্র করে। যেমন, হাদীসে এসেছে, যাকাতুল ফিতর সাওম পালনকারীকে অশ্লীলতা থেকে পবিত্র করে।

(৪) যাকাতুল ফিতর দ্বারা ফকির-মিসকিনদের প্রতি অনুগ্রহ ও তাদেরকে ভিক্ষা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়, যেন ঈদের দিন তারাও অন্যান্য মুসলিমদের ন্যায় আনন্দ ও বিনোদন করতে পারে।

(৫) যাকাতুল ফিতর দ্বারা সাওম পালনকারীকে অনুগ্রহ ও অনুদানের প্রতি উৎসাহী করা হয় এবং তাকে লোভ ও কৃপণতা থেকে রক্ষা করা হয়।

নয়. এক মিসকিনকে এক পরিবার বা একাধিক ব্যক্তির সদকাতুল ফিতর দেওয়া বৈধ, যেমন বৈধ একজনের সদকাতুল ফিতর কয়েকজনকে ভাগ করে দেওয়া।

দশ. শেষ রমযানের সূর্যাস্তের ফলে সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব হয়, যদি কেউ তার পূর্বে মারা যায়, তার ওপর সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে না, কারণ, সে ওয়াজিব হওয়ার আগে মারা গেছে। অনুরূপ কেউ যদি সূর্যাস্তের পর জন্ম গ্রহণ করে, তার পক্ষ থেকে সদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব নয়, তবে মোস্তাহাব।

এগার. কর্মচারী ও ভাড়াটে মজুরদের পক্ষ থেকে সদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব নয়, তবে চুক্তির মধ্যে তাদের সাথে অনুরূপ শর্ত থাকলে আদায় করতে হবে। হ্যাঁ, অনুগ্রহ ও দয়া হিসেবে তাদের পক্ষ থেকে মালিকের আদায় করা বৈধ।

বারো. যদি সদকাতুল ফিতর আদায় করতে ভুলে যায়, ঈদের পর ছাড়া স্মরণ না হয়, তাহলে সে তখন সদকা আদায় করবে, এতে সমস্যা নেই। কারণ, ভুলের জন্য সে অপারগ।

তের. যদি কাউকে সদকাতুল ফিতর ফকিরের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে ঈদের আগে তার নিকট তা পৌঁছে দেওয়া জরুরি। তবে যদি কোনো ফকির কাউকে সদকাতুল ফিতর তার জন্য সংরক্ষণ করে রাখার দায়িত্ব দেয়, তাহলে ঈদের পর পর্যন্ত তার নিকট তা সংরক্ষণ করা বৈধ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন