মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আবু সালামা ইবন আব্দুর রহমান থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “আমরা লাইলাতুল কদর সম্পর্কে আলোচনা করলাম, অতঃপর আমি আবু সায়িদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহুর নিকট যাই, তিনি আমার একান্ত বন্ধু ছিলেন। আমি তাকে বললাম: চলুন না খেজুর বাগানে যাই? তিনি বের হলেন, গায়ে উলের কালো চাদর। আমি তাকে বললাম: আপনি কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে লাইলাতুল কদর সম্পর্কে বলতে শুনেছেন? তিনি বললেন: হ্যাঁ,। আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে রমযানের মধ্য দশক ই‘তিকাফ করলাম। তিনি একুশের সকালে বের হয়ে আমাদেরকে খুতবা দিলেন। তিনি বললেন:
إني أُرِيتُ لَيلَةَ القَدرِ، وإنِّي نَسِيتُها أو أُنْسِيتُها، فَالتَمِسُوهَا في العَشْرِ الأَوَاخِرِ من كُلِّ وِتْرٍ، وإنِّي أُرِيتُ أَنِّي أَسْجُدُ في ماءٍ وطِين فَمن كَانَ اعْتَكَفَ مع رَسُولِ الله صلى الله عليه وسلم فَليَرجِع .
“আমি লাইলাতুল কদর দেখেছি, কিন্তু আমি তা ভুলে গেছি অথবা আমাকে তা ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। অতএব তোমরা তা শেষ দশকের প্রত্যেক বেজোড় রাতে তালাশ কর। আমাকে দেখানো হয়েছে আমি মাটি ও পানিতে সাজদাহ করছি, যে রাসূলের সাথে ই‘তিকাফ করেছিল সে যেন ফিরে আসে”। তিনি বলেন, আমরা ফিরে গেলাম, কিন্তু আসমানে কোনো মেঘ দেখি নি। তিনি বলেন, মেঘ আসল ও আমাদের উপর বর্ষিত হলো, মসজিদের ছাদ টপকে বৃষ্টির পানি পড়ল, যা ছিল খেজুর পাতার। সালাত কায়েম হলো, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখলাম পানি ও মাটিতে সাজদাহ করছেন। তিনি বলেন, আমি তার কপালে পর্যন্ত মাটির দাগ দেখেছি”। [দেখুন: সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯১২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬৭।]
আবু সায়িদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত অপর বর্ণনায় আছে, তিনি বলেন, “আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে মধ্যম দশক ই‘তিকাফ করেছি, যখন বিশ রমযানের সকাল হলো আমরা আমাদের বিছানা-পত্র স্থানান্তর করলাম, অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট আসলেন, তিনি বললেন: যে ই‘তিকাফ করছিল সে যেন তার ই‘তিকাফে ফিরে যায়, কারণ, আমি আজ রাতে (লাইলাতুল কদর) দেখেছি, আমি দেখেছি আমি পানি ও মাটিতে সেজদা করছি। যখন তিনি তার ই‘তিকাফে ফিরে যান, বলেন, আসমান অশান্ত হলো, ফলে আমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষিত হলো। সে সত্ত্বার কসম, যে তাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছে, সেদিন শেষে আসমান অশান্ত হয়েছিল, তখন মসজিদ ছিল চালাঘর ও মাচার তৈরি, আমি তার নাক ও নাকের ডগায় পানি ও মাটির আলামত দেখেছি”। [দেখুন: মুসলিম, হাদীস নং ১১৬৭; আরো দেখুন: সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৩৫।]
অপর বর্ণনায় আছে, আবু সায়িদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের মধ্যম দশক ই‘তিকাফ করতেন, যখন তিনি প্রস্থানরত বিশের রাতে সন্ধ্যা করে একুশের রাতে পদার্পন করতেন, নিজ ঘরে ফিরে যেতেন। যে তার সাথে ই‘তিকাফ করত সেও ফিরে যেত। তিনি কোনো এক রমযান মাসে যে রাতে সাধারণত ই‘তিকাফ থেকে ফিরে যেতেন সে রাতে ফিরে না গিয়ে কিয়াম (অবস্থান) করলেন, অতঃপর খুতবা প্রদান করলেন, আল্লাহর যা ইচ্ছা ছিল তাই তিনি লোকদের নির্দেশ করলেন। অতঃপর বললেন:
«كُنْتُ أُجَاوِرُ هَذِهِ العَشْرَ، ثُمَّ قَدْ بَدَا لي أَنْ أُجَاوِرَ هَذِهِ العَشْرَ الأَوَاخِرَ، فَمَنْ كَانَ اعْتَكَفَ مَعِيَ فَلْيَثْبُتْ في مُعْتَكَفِهِ، وَقَدْ أُريتُ هَذَهَ الَّليْلَةَ ثُمَّ أُنْسيتُهَا فَابْتَغُوهَا في العَشْرِ الأَوَاخِرِ، وابْتَغُوهَا في كُلِّ وِتْرٍ، وَقَدْ رَأَيْتُني أَسْجُدُ في مَاءٍ وَطِينٍ»
“আমি এ দশক ই‘তিকাফ করতাম, অতঃপর আমার নিকট স্পষ্ট হলো যে আমি ই‘তিকাফ করব এ শেষ দশক। অতএব, যে আমার সাথে ই‘তিকাফ করেছে, সে যেন তার ই‘তিকাফে বহাল থাকে। আমাকে এ রাত দেখানো হয়েছিল, অতঃপর তা ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে, তোমরা তা তালাশ কর শেষ দশকে। আর তা তালাশ কর প্রত্যেক বেজোড় রাতে। আমি দেখেছি, আমি পানি ও মাটিতে সাজদাহ করছি”। সে রাতে আসমান গর্জন করে সৃষ্টি বর্ষণ করল। একুশের রাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সালাতের জায়গায় মসজিদ ফোটা ফোটা বৃষ্টির পানি ফেলল। আমার দু’চোখ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছে, আমি তার দিকে দৃষ্টি দিলাম, তিনি সকালের সালাত থেকে ফিরলেন, তখন তার চেহারা মাটি ও পানি ভর্তি ছিল”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯১৪।]
শিক্ষা ও মাসায়েল [আত-তামহিদ: (২৩/৫১-৬৬), শারহুন নববী আলা মুসলিম (৮/৬১); ফাতহুল বারি লি ইবন হাজার: (৪/২৫৭-২৫৯); উমদাতুল কারি: (১১/১৩৩); হাশিয়া সিনদি আলান নাসাঈ: (৩/৮০); আউনুল মাবুদ: (৪/১৮২); মিরকাতুল মাফাতিহ: (৪/৫১২-৫১৩)।]:
এক. ইলম অন্বেষণের জন্য সফর করা এবং উপযুক্ত স্থান ও সময়ে আলিমদের জিজ্ঞাসা করা।
দুই. শিক্ষকদের কর্তব্য ছাত্রদের সুযোগ দেওয়া, যেন তারা সুন্দরভাবে প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারে।
তিন. মুসল্লির চেহারায় সেজদার সময় যে ধুলা-মাটি লাগে তা দূর করা উচিৎ নয়, তবে তা যদি কষ্টের কারণ হয়, সালাতের একাগ্রতা নষ্ট করে, তাহলে মুছতে সমস্যা নেই। [বুখারী হুমাইদি থেকে বর্ণনা করেন, মুসল্লির জন্য সুন্নত হচ্ছে সালাতে চেহারা না মুছা। ইমাম নববী বলেছেন: আলিমগণ অনুরূপ বলেছেন: সালাতে চেহারা না মোছা মুস্তাহাব। শারহু মুসলিম (৮/৬১), ইবন মুলাক্কিন বলেছেন: এ ব্যাপারে কারো দ্বিমত নেই। শারহুল উমদাহ: (৫/৪২৩); দেখুন; ইকমালুল মুয়াল্লিম: (৪/১৪৮)।] মাটিতে সেজদা দেওয়া ও সালাত আদায় করা বৈধ। [শারহু ইবনল মুলাক্কিন আলাল উমদাহ: (৫/৪২৫)।]
চার. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষ, তিনি মানুষের ন্যায় ভুলে যান, তবে আল্লাহ তাকে যা পৌঁছানোর নির্দেশ দিয়েছেন তা ব্যতীত। কারণ, সে ক্ষেত্রে আল্লাহ তাকে ভুল থেকে হিফাযত করেন। নবীদের স্বপ্ন সত্য, তারা যেভাবে দেখেন সেভাবে তা ঘটে।
পাঁচ. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের লাইলাতুল কদর দেখার অর্থ তিনি তা জেনেছেন অথবা তার আলামত দেখেছেন। আবু সায়িদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে ইমাম বুখারী বর্ণনা করেন: জিবরীল তাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, লাইলাতুল কদর শেষ দশকে। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭৮০; মুনতাকা লিল বাজি: (২/৮২)।]
ছয়. আলিম যদি কোনো বিষয় জানার পর ভুলে যায়, তাহলে সাথীদের বলে দেওয়া ও তা স্বীকার করা। [শারহু ইবনল মুলাক্কিন আলাল উমদাহ: (৫/৪২৪)।]
সাত. এ হাদীস প্রমাণ করে যে, রমযানে ই‘তিকাফ করা মোস্তাহাব। তবে প্রথম দশক থেকে মধ্যম দশক উত্তম, আবার মধ্যম দশক থেকে শেষ দশক উত্তম। [শারহু ইবনল মুলাক্কিন আলাল উমদাহ: (৫/৪২২)।]
আট. জনসাধারণের উদ্দেশ্যে ইমামের খুতবা দেওয়া ও তাদের জরুরি বিষয় বর্ণনা করা বৈধ।
নয়. এ হাদীস প্রমাণ করে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতকে তাদের কল্যাণের বস্তু জানানোর জন্য উদগ্রীব ছিলেন। লাইলাতুল কদর তালাশে তিনি ও তার সাহাবীগণ সচেষ্ট থাকতেন।
দশ. রমযানের শেষ দশকে ই‘তিকাফ করার ফযীলত, বরং সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ, যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো তা ত্যাগ করেন নি।
এগার. লাইলাতুল কদর শেষ দশকে, বিশেষ করে বেজোড় রাতগুলোতে, আরো বিশেষ একুশের রাত।
বারো. সাজদায় কপাল ও নাক স্থির রাখা ওয়াজিব, যেরূপ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রেখেছেন।
তের. এ হাদীস প্রমাণ করে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে মুসলিমগণ দুনিয়ার সামান্য বস্তু ও সাধারণ জীবন-যাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। তাদের মসজিদ ছিল খেজুর পাতার, যখন বৃষ্টি হত, সালাতে থাকাবস্থায় তাদের উপর বৃষ্টির পানি ঝরে পড়ত।
চৌদ্দ. একুশে রমযানের ফযীলত, এটা সম্ভাব্য লাইলাতুল কদরের রা। অতএব, এ রাতে অবহেলা করা মুসলিমদের উচিৎ নয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/128/43
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।