মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
“অতএব, এখন তোমরা তাদের সাথে মিলিত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা লিখে দিয়েছেন, তা অনুসন্ধান কর। আর আহার কর ও পান কর যতক্ষণ না ফজরের সাদা রেখা কালো রেখা থেকে স্পষ্ট হয়”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৮৭]
আয়েশা ও উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত: “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রভাত কখনো হত এমতাবস্থায় যে, স্ত্রীগমনের কারণে তিনি নাপাক থাকতেন। অতঃপর গোসল করতেন ও সাওম রাখতেন”। [সহীহ বুখারী ও মুসলিম।]
মুসলিমের এক হাদীসে উম্মে সালামা থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্ন দোষের কারণে নয়, বরং স্ত্রীগমনের কারণে নাপাক অবস্থায় প্রভাত করতেন, অতঃপর সাওম পালন করতেন, কাযা করতেন না”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮২৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১০৯।]
মুসলিমের অপর বর্ণনায় আছে: আবু বকর ইবন আব্দুর রহমান রহ. বলেন, “আমি আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে ঘটনা বলতে শুনেছি, তিনি তার ঘটনায় বলেন, নাপাক অবস্থায় যার ভোর হয়, সে সাওম রাখবে না। আমি এ ঘটনা আবু বকরের পিতা আব্দুর রহমান ইবন হারেসকে বললাম, তিনি অস্বীকার করলেন। আব্দুর রহমান রওয়ানা করলেন, আমি তার সাথী হলাম, অবশেষে আমরা আয়েশা ও উম্মে সালামার নিকট এসে পৌঁছলাম। আব্দুর রহমান তাদেরকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলেন: তিনি বলেন, তারা উভয়ে বলেছেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্ন দোষ ব্যতীত নাপাক অবস্থায় ভোর করতেন, অতঃপর সাওম রাখতেন। তিনি বলেন, আমরা রওনা করে মারওয়ানের নিকট পৌঁছলাম, আব্দুর রহমান তাকে ঘটনা বললেন: মারওয়ান বললেন: আমি তোমাকে বলছি তুমি অবশ্যই আবু হুরায়রার কাছে গিয়ে তার কথার প্রতিবাদ কর। তিনি বলেন, আমরা আবু হুরায়রার নিকট গেলাম, আবু বকর এসব ঘটনায় উপস্থিত ছিল। তিনি বলেন, আব্দুর রহমান তাকে এ কথা বললেন। অতঃপর আবু হুরায়রা বললেন: তারা উভয়ে তোমাকে এ কথা বলেছে? তিনি বললেন: হ্যাঁ। আবু হুরায়রা বললেন: তারা আমার চেয়ে বেশি জানেন। অতঃপর আবু হুরায়রা এ বিষয়ে যা বলতেন, ফযল ইবন আব্বাসের বরাতে বলতেন। আবু হুরায়রা বলতেন: আমি ফযল ইবন আব্বাস থেকে শুনেছি, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনি নি। তিনি বলেন, আবু হুরায়রা তার পূর্বের কথা থেকে ফিরে যান। আমি আব্দুল মালেককে বললাম: তারা কি রমযানের ব্যাপারে বলেছেন? তিনি বললেন: হ্যাঁ, তিনি স্বপ্ন দোষ ব্যতীত নাপাক অবস্থায় ভোর করতেন, অতঃপর সাওম পালন করতেন”। [মুসলিম, হাদীস নং ১১০৯। নাসাঈর এক বর্ণনায় আছে, আবু হুরায়রা এ হাদীস শুনেছেন উসামা ইবন যায়েদ থেকে। দেখুন: সুনানুল কুবরা: (২৯৩১), তাই কেউ বলেছেন: তিনি উভয় থেকে শ্রবণ করেছেন। দেখুন: শারহুন নববী: (৭/২২২); আল-মুফহিম: (৩/১৬৮); শারহু ইবনল মুলাক্কিন: (৫/১৯৭)।]
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত: “এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ফতোয়া তলবের জন্য এসেছে, তিনি দরজার আড়াল থেকে শুনতে ছিলেন, সে বলল: হে আল্লাহর রাসূল, আমার নাপাক অবস্থায় সালাতের সময় হয়, আমি কি সাওম রাখব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: আমারও নাপাক অবস্থায় সালাতের সময় হয়, অতঃপর আমি সাওম রাখি। সে বলল: হে আল্লাহর রাসূল, আপনি আমাদের মত নয়, আল্লাহ আপনার অগ্র-পশ্চাতের সকল পাপ মোচন করে দিয়েছেন। তিনি বললেন: আল্লাহর শপথ আমি তোমাদের মধ্যে অধিক আল্লাহ ভীরু এবং তাকওয়া সম্পর্কে তোমাদের চাইতে অধিক জ্ঞাত”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১১০; মালেক: (১/২৮৯); ইবন হিব্বান, হাদীস নং ৩৪৯৫।]
শিক্ষা ও মাসায়েল:
এক. রমযানের রাতে স্ত্রীগমন বৈধ, তা থেকে পরহেয করা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শের বিপরীত, তবে শেষ দশকে ই‘তিকাফকারী ব্যতীত।
দুই. রমযানের রাতে সহবাস অথবা স্বপ্ন দোষের পর ফজর উদিত হওয়ার পরবর্তী সময় পর্যন্ত যে গোসল বিলম্ব করল, সে সাওম পালন করবে, তার ওপর কিছু আবশ্যক হবে না। এ ব্যাপারে সকল আলিম একমত। [শারহু ইবন বাত্তাল আলাল সহীহ বুখারী (৪/৪৯), শারহুল উমদাহ লি ইব্নিল মুলাক্কিন: (৫/১৯৫); ফাতহুল বারি লি ইবন হাজার: (৪/১৪৭); নাইলুল আওতার: (৪/৯১)।]
তিন. এ হাদীসে উম্মুল মুমিনীনদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ হয়, যারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঘর ও তার পরিবার সংশ্লিষ্ট বিশেষ জ্ঞানের ধারক ও প্রচারকারী ছিলেন।
চার. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিবার সংক্রান্ত জ্ঞানের ব্যাপারে উম্মুল মুমিনীনদের কথা অন্য সবার ঊর্ধ্বে।
পাঁচ. ফরয গোসল ভোর পর্যন্ত দেরি করা শুধু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বৈশিষ্ট্য নয়, বরং তা উম্মতের সবার জন্য প্রযোজ্য।
ছয়. উম্মে সালামার বাণী: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহবাসের কারণে নাপাক অবস্থায় ভোর করতেন, স্বপ্ন দোষের কারণে নয়”। এখানে দু’টি শিক্ষা:
(১) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বৈধতা বর্ণনা করার জন্য রমযানে সহবাস করতেন ও ফজর উদয় পর্যন্ত গোসল বিলম্ব করতেন।
(২) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহবাসের কারণে নাপাক অবস্থায় ভোর করতেন, স্বপ্ন দোষের কারণে নয়। কারণ, স্বপ্ন দোষ শয়তানের পক্ষ থেকে, তিনি ছিলেন শয়তান থেকে নিরাপদ। [দেখুন: আল-মুফহিম: (৩/১৬৭); ফাতহুল বারি: (৪/১৪৪), এ ব্যাপারে ইবন আব্বাস থেকে একটি দুর্বল বাণী বর্ণিত আছে, তিনি বলেন: “কোন নবীর স্বপ্নদোষ হয় নি, নিশ্চয় স্বপ্ন দোষ হচ্ছে শয়তানের পক্ষ থেকে”। তাবরানি ফিল কাবির: (১১/২২৫), হাদীস নং ১১৫৬৪), তাবরানি ফিল আওসাত: (৮০৬২), হায়সামি বলেছেন: আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাসের এ বাণীর সনদে আব্দুল আযিয ইবন আবু সাবেত জনৈক ব্যক্তি রয়েছেন, যার দুর্বলতার ব্যাপারে সবাই একমত, যাওয়ায়েদ: (১/২৬৭), ইমাম নববী প্রমাণ করেছেন যে, নবীদের স্বপ্নদোষ হয় না। এ হিসেবে হাদীসের অর্থ হচ্ছে যে, সহবাসের কারণে তিনি নাপাক অবস্থায় প্রভাত করতেন, তিনি স্বপ্ন দোষের কারনে নাপাক হতেন না, কারণ স্বপ্ন দোষ তার পক্ষে অসম্ভব। এ কথা মূলত আল্লাহর এ বাণীর ন্যায়: ﴿وَيَقۡتُلُونَ ٱلنَّبِيِّۧنَ بِغَيۡرِ ٱلۡحَقِّۗ﴾ [ البقرة :61] “এবং অন্যায়ভাবে নবীদেরকে হত্যা করত”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ৬১] আমরা সকলে জানি যে, নবীদের হত্যা কখনো হকভাবে হতে পারে না। শারহু মুসলিম (৭/২২২); ইবনুল মুলাক্কিন ফি শারহিল উমদাহ: (৫/২০১)।]
সাত. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিক আল্লাহ ভীরু, অধিক মুত্তাকী ও তাকওয়া সম্পর্কে অধিক জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন।
আট. এসব হাদীস থেকে বুঝা যায়, নারী যদি মাসিক ঋতু বা নিফাস থেকে ফজরের পূর্বে পবিত্র হয়, অতঃপর ফজর উদয় পর্যন্ত গোসল বিলম্ব করে, তার সাওম বিশুদ্ধ, ইচ্ছা বা অনিচ্ছা বা যে কারণে গোসল বিলম্ব করুক, যেমন নাপাক ব্যক্তি। [দেখুন: আল-ইস্তেযকার: (১০/৪৮); শারহুন নববী: (৭/২২২); শারহু ইবনল মুলাক্কিন: (৫/২০০)।]
নয়. এসব হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ অনুসরণে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে, নিন্দা জানানো হয়েছে চরম পন্থা, বৈধ বস্তু ত্যাগ করা ও লৌকিকতাপূর্ণ প্রশ্নকে। [দেখুন: আত-তামহিদ: (১৭/৪২০); ফাতহুল বারি: (৪/১৪৯)।]
দশ. রমযান বা গায়রে রমযান সর্বদা ফজরের পর নাপাক, হায়েস ও নেফাস থেকে পবিত্রতা অর্জনকারীদের সাওম বিশুদ্ধ। এ ক্ষেত্রে ওয়াজিব অথবা মানত অথবা কাযা অথবা নফল সাওমে কোনো পার্থক্য নেই।
এগার. কোনো বিষয়ে দ্বিধা বা বিরোধের সৃষ্টি হলে জ্ঞানীদের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি, যেমন আবু হুরায়রা বলেছেন: “তারা বেশি জানে” অর্থাৎ আয়েশা ও উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা। কারণ, তারা পারিবারিক ব্যাপারে অন্যদের চেয়ে অধিক জ্ঞাত।
বারো. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত বিরোধের সময় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ও অকাট্য দলীল।
তের. ভুল হলে ভুল স্বীকার করা ও ইলমের ক্ষেত্রে আমানতদারী রক্ষা করা জরুরি, যেমন আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু স্বীকার করেছেন তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শ্রবণ করেন নি, বরং অন্য কারো থেকে শ্রবণ করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/128/41
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।