hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রমযানের বিষয়ভিত্তিক হাদীস শিক্ষা ও মাসায়েল

লেখকঃ ইবরাহীম ইবন মুহাম্মাদ আল-হাকীল

৪৫
৪২. লাইলাতুল কদরের আলামত
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿تَنَزَّلُ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ وَٱلرُّوحُ فِيهَا بِإِذۡنِ رَبِّهِم مِّن كُلِّ أَمۡرٖ ٤ سَلَٰمٌ هِيَ حَتَّىٰ مَطۡلَعِ ٱلۡفَجۡرِ ٥﴾ [ القدر : 4-5]

“‎সে রাতে ফিরিশতারা ও রূহ (জিবরীল) তাদেররবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণকরে।‎ শান্তিময় সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত”। [সূরা আল-কাদ্বর, আয়াত: ৪-৫]

যির ইবন হুবাইশ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “আমি উবাই ইবন কা‘বকে বলতে শুনেছি: তাকে বলা হয়েছিল: আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ বলেন, যে ব্যক্তি সারা বছর রাত জাগ্রত থাকবে, সে লাইলাতুল কদর লাভ করবে। উবাই বলেন, আল্লাহর শপথ করে বলছি, যিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই, সন্দেহ নেই লাইলাতুল কদর রমযানে। তিনি নির্দিষ্টভাবে কসম করে বলেন, আল্লাহর শপথ আমি জানি তা কোনো রাত, এটা সে রাত, যার কিয়ামের নির্দেশ আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রদান করেছেন, তা হচ্ছে সাতাশের সকালের রাত, তার আলামত হচ্ছে সেদিন সকালে সূর্য উদিত হবে সাদা, তার কোনো কিরণ থাকবে না”। [সহীহ মুসলিম।]

ইবন হিব্বানের এক বর্ণনায় আছে: “তার আলামত হচ্ছে সেদিন সকালে সূর্য উদিত হবে সাদা, তার কোনো কিরণ থাকবে না, যেন তার আলো মুছে দেওয়া হয়েছে। [মুসলিম, হাদীস নং ৭৬২; ইবন হিব্বান, হাদীস নং ৩৬৯০।]

ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«إِنَّ لَيْلَةَ القَدْرِ في النِّصْفِ مِنَ السَّبْع الأَوَاخِرِ من رَمَضَانَ تَطْلُعُ الشَّمْسُ غَدَاةَ إِذْ صَافِيَةً لَيْسِ لها شُعَاعٌ، قَالَ ابنُ مَسْعُودٍ : فَنَظَرْتُ إِلَيها فَوَجَدْتُها كَما قَالَ رَسُولُ الله صلى الله عليه وسلم» .

“নিশ্চয় লাইলাতুল কদর হচ্ছে রমযানের শেষ সাতের মাঝখানে, সেদিন সকালে শুভ্রতা নিয়ে সূর্য উদিত হবে, তার মধ্যে কোনো কিরণ থাকবে না। ইবন মাসউদ বলেন, আমি সূর্যের দিকে তাকিয়ে সেরূপ দেখেছি, যেরূপ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন”। [আহমদ: (১/৪০৬); ইবন আবি শায়বাহ: (২/২৫০)। আহমদ শাকির হাদীসটি সহীহ বলেছেন: (৩৮৫৭)।]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাইলাতুল কদর সম্পর্কে বলেছেন:

«إِنَّها لَيْلَةُ سَابِعَةٍ أَوْ تَاسِعَةٍ وعِشْرينَ، إِنَّ المَلائِكَةَ تِلْكَ الَّليلَةَ في الأَرْضِ أَكْثَرُ مِنْ عَدَدِ الحَصَى» .

“এটা হচ্ছে সাতাশ অথবা ঊনত্রিশের রাত, সে রাতে কঙ্করের চেয়ে অধিক সংখ্যায় ফিরিশতারা পৃথিবীতে অবস্থান করেন”। [আহমদ: (২/৫১৯); তায়ালিসি, হাদীস নং ২৫৪৫; সহীহ ইবন খুযাইমাহ, হাদীস নং ২১৯৪; ইবন কাসির তার তাফসিরে বলেন, এর সনদে সমস্যা নেই: (৪/৫৩৫)। হায়সামি বলেছেন: এ হাদীসটি আহমদ, বায্‌যার ও তাবরানি আওসাত গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন, এর বর্ণনাকারী সবাই নির্ভরযোগ্য: (৩/১৭৫-১৭৬)। সহীহ ইবন খুজাইমার টিকায় আলবানি হাদীসটি হাসান বলেছেন: (৩/৩৩২), আরো দেখুন: সিলসিলাতুল আহাদিসিস সাহীহা: (২২০৫)।]

উবাদা ইবন সামেত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«إِنَّ أَمَارَةَ لَيْلَةِ القَدْرِ أَنَّها صَافِيَةٌ بَلْجَةٌ - أَيْ مُسْفِرَةٌ مُشْرِقَةٌ- كَأَنَّ فِيهَا قَمَراً سَاطِعاً، سَاكِنَةٌ سَاجِيَةٌ - أَيْ فيهَا سُكُونٌ- لا بَرْدَ فيهَا وَلا حَرَّ، وَلا يَحِلُّ لِكَوْكَبٍ أَنْ يُرْمَى به فيهَا حَتى يُصْبِحَ، وإِنَّ أَمَارَتَها أَنَّ الشَّمْسَ صَبيحَتَهَا تَخْرُجُ مُسْتَويَةً لَيسَ لها شُعَاعٌ مِثْلَ القَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ، لا يَحِلُّ لِلشَّيْطَانِ أَنْ يَخْرُجَ مَعَهَا يَوْمَئِذٍ» .

“নিশ্চয় লাইলাতুল কদরের আলামত, তা হবে সাদা ও উজ্জ্বল, যেন তাতে আলোকিত চাঁদ রয়েছে, সে রাত হবে স্থির, তাতে ঠাণ্ডা বা গরম থাকবে না, তাতে সকাল পর্যন্ত কোনো তারকা দ্বারা ঢিল ছোঁড়া হবে না। তার আরো আলামত, সেদিন সকালে সূর্য উদিত হবে সমানভাবে, চৌদ্দ তারিখের চাঁদের ন্যায়, তার কোনো কিরণ থাকবে না, সেদিন শয়তানের পক্ষে এর সাথে বের হওয়া সম্ভব নয়”। [আহমদ: (৫/৩২৪); তাবরানি ফি মুসনাদিশ শামিয়্যিন: (১১১৯); দিয়া ফিল মুখতারাহ: (৩৪২); হায়সামি ফিয যাওয়ায়েদ: (৩/১৭৫)। এ হাদীসের বর্ণনাকারীগণ নির্ভরযোগ্য।]

জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু‎ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«إِنِّي كُنْتُ أُريتُ لَيْلَةَ القَدْرِ ثُم نَسيتُهَا وَهِيَ في العَشْرِ الأَوَاخِرِ، وَهِيَ طَلْقَةٌ بَلْجَةٌ لا حَارَّةٌ ولا بَارِدَةٌ، كَأَنَّ فيهَا قَمَراً يَفْضَحُ كَوَاكِبَهَا لا يَخْرُجُ شَيْطَانُها حَتى يَخْرُجَ فَجْرُهَا» .

“আমাকে লাইলাতুল কদর দেখানো হয়েছিল, অতঃপর তা ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে, আর তা হচ্ছে শেষ দশকে। সে রাত হবে সাদা-উজ্জ্বল, না-গরম, না-ঠাণ্ডা, যেন আলোকিত চাঁদ নক্ষত্রগুলোকে আড়াল করে আছে, ফজর উদিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সে রাতের শয়তান বের হতে পারে না”। [ইবন খুযাইমাহ, হাদীস নং ২১৯০; ইবন হিব্বান, হাদীস নং ৩৬৮৮। আলবানি অন্যান্য শাহেদের কারণে হাদীসটি সহীহ বলেছেন।]

ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু‎ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে লাইলাতুল কদর সম্পর্কে বলেন,

«لَيْلَةٌ طَلْقَةٌ لا حَارَّةٌ ولا بَارِدَةٌ تُصْبِحَ الشَّمْسُ يَوْمَهَا حَمْرَاءُ ضَعِيفَة»

“লাইলাতুল কদর সাদা-উজ্জ্বল, না গরম না ঠাণ্ডা, সে দিন ভোরে সূর্য উদিত হবে দুর্বল রক্তিম আভা নিয়ে”। [ইবন খুযাইমাহ, হাদীস নং ২১৯২।]

শিক্ষা ও মাসায়েল:‎

এক. আলিম যদি ভালো মনে করেন, তবে জানা ইলম গোপন করা বৈধ, যেমন ইবন মাসউদ লাইলাতুল কদর গোপন করেছেন, যেন মানুষেরা অলসতা না করে ও পুরো দশ রাতের কিয়াম থেকে বিরত না থাকে।

দুই. আলিমগণ মানুষের জরুরি বিষয়গুলো বর্ণনা করবেন, যেমন উবাই ইবন কা‘ব লাইলাতুল কদর বর্ণনা করেছেন।

তিন. মুসলিমদের স্বার্থ নিরূপণে আলিমদের ইজতিহাদ ও ইখতিলাফ বৈধ, এটা নিষিদ্ধ নয়, যদি সঠিক পদ্ধতি ও সত্য অন্বেষণের জন্য হয়।

চার. লাইলাতুল কদর শেষ দশকে, এতে অধিক সম্ভাব্য রাত হচ্ছে বেজোড় রাতগুলো, এতেও অধিক সম্ভাব্য রাত হচ্ছে সাতাশের রাত, যেমন উবাই ইবন কা‘ব কসম করে বলেছেন।

পাঁচ. লাইলাতুল কদরের অনেক আলামত রয়েছে:

(১) অধিক সংখ্যায় ফিরিশতা নাযিল হন। তাদের শুরুতে থাকে জিবরিল আলাইহিস সালাম, তারা মুসল্লিদের সাথে মসজিদের জমা‘আতে অংশ গ্রহণ করেন। তাদের সংখ্যা কঙ্করকে পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়, তবে এ আলামত মানুষের নিকট প্রকাশ পায় না।

(২) সে রাতে আল্লাহর পক্ষ থেকে অধিক পরিমাণ সালাম বর্ষিত হয়, যেহেতু বান্দাগণ তাতে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকে।

(৩) সে দিন সকালে সাদা ও উজ্জ্বলতাসহ সূর্য উদিত হয়, তার কিরণ থাকে না। ওলামায়ে কেরাম এর কারণ সম্পর্কে বলেন, ফিরিশতাগণ আসমানে চড়তে থাকেন, ফলে তাদের নূর ও পাখা সূর্যের কিরণের আড়াল হয়। [দেখুন: ইকমালুল মুয়াল্লিম: (৪/১৪৮); শারহুন নববী আলা মুসলিম, হাদীস নং ৮/৬৫); আল-মুফহিম: (২/৩৯১); দিবায: (৩/২৫৯); ফায়যুল কাদির: (৫/৩৯৬)।] কারণ, সে রাতে বহু ফিরিশতা অবতরণ করেন।

(৪) এ রাত সাদা-উজ্জ্বল ও স্থির, না-গরম, না-ঠাণ্ডা, এটা তুলনামূলক বিষয়, বিভিন্ন দেশের ভিত্তিতে ঠাণ্ডা-গরম ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। অর্থাৎ লাইলাতুল কদর পূর্বাপর রাতের তুলনায় বেশি ঠাণ্ডা বা বেশি গরম হবে না।

(৫) শায়তান লাইলাতুল কদরের ভোরে সূর্যের সাথে বের হতে পারে না, লাইলাতুল কদর ব্যতীত সূর্য শয়তানের দুই শিঙের মধ্য দিয়ে উদিত হয়।

ছয়. লাইলাতুল কদরের অধিকাংশ আলামত লাইলাতুল কদর শেষে জানা যায়। এর উপকারিতা হচ্ছে: যারা লাইলাতুল কদর পেয়েছে, তারা আল্লাহর শোকর আদায় করবে, আর যারা পায় নি তারা অনুতপ্ত হবে ও আগামী বছরের জন্য প্রস্তুতি নিবে।

সাত. এসব আলামত প্রত্যেক বছর লাইলাতুল কদরে প্রকাশ পায়, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগের সাথে খাস নয়। [আল-মুফহিম: (২/৩৯১)।]

আট. মুসলিমদের উচিৎ লাইলাতুল কদর তালাশ করা, যেহেতু তাতে অনেক কল্যাণ বিদ্যমান।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন