মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের শেষ দশকে ই‘তিকাফ করার কথা বলেন, আয়েশা তার কাছে অনুমতি চান। তিনি তাকে অনুমতি প্রদান করেন। হাফসা আয়েশার কাছে তার জন্য অনুমতি নেওয়ার অনুরোধ করেন, তিনি তাই করেন। এ দেখে যয়নব বিনতে জাহাশ তাঁবু তৈরির নির্দেশ দেন, তার জন্য তাঁবু তৈরি করা হলো। আয়েশা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত শেষে তার তাঁবুতে যান, তিনি সেখানে অনেক তাঁবু দেখতে পান। জিজ্ঞেস করেন, এগুলো কী? তারা বলল: আয়েশা, হাফসা ও যয়নবের তাঁবু। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “এর দ্বারাই কি তোমরা নেকির আশা করেছ?! আমি ই‘তিকাফই করব না”। তিনি ফিরে যান। অতঃপর রমযান শেষে শাওয়ালের দশ দিন ই‘তিকাফ করেন”। [সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম।]
মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ই‘তিকাফ করার ইচ্ছা করতেন, ফজর সালাত আদায় করে ই‘তিকাফের স্থানে প্রবেশ করতেন। একদা তিনি মসজিদে তার জন্য তাঁবু টানাতে আদেশ করলেন, তাঁবু টানানো হলো, তিনি রমযানের শেষ দশকে ই‘তিকাফ করার ইচ্ছা করে ছিলেন। যয়নব তার জন্য তাঁবু টানাতে নির্দেশ করলেন, টানানো হলো, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অন্যান্য স্ত্রীগণ তাঁবু টানাতে নির্দেশ করলেন, তাদের জন্য তাঁবু টানানো হলো। তিনি যখন ফজর সালাত আদায় করলেন, দেখলেন অনেকগুলো তাঁবু। তিনি বললেন: তোমরা কি নেকির আশা করেছ? তিনি তার তাঁবু খুলে ফেলার নির্দেশ দেন ও রমযানের ই‘তিকাফ ত্যাগ করেন, অতঃপর শাওয়ালের প্রথম দশে ই‘তিকাফ করেন”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৪০; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৭২।]
শিক্ষা ও মাসায়েল:
এক. মহিলাদের মসজিদে ই‘তিকাফ করা বৈধ, যদি ফিতনার আশঙ্কা না থাকে। [শারহুন নববী: (৮/৭০); আল-মুফহিম: (৩/২৪৮), শারহু ইবনল মুলাক্কিন আলাল উমদাহ: (৫/৪২৯); ইবন আব্দিল বার আসরাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: আমি শুনেছি আহমদ ইবন হাম্বলকে ইতিকাফকারী নারীদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে? তিনি বলেন: হ্যাঁ, নারীরা ইতিকাফ করেছে”। দেখুন: আত-তামহিদ: (১/১৯৫)।]
দুই. নারী তার স্বামীর অনুমিত ব্যতীত ই‘তিকাফ করবে না, এতে কারো ইখতিলাফ নেই। [ইবনল মুলাক্কিন শারহুল উমদাহ গ্রন্থে এ ইজমা নকল করেছেন: (৫/৪২৯)।] যদি সে স্বামীর অনুমতি ব্যতীত ই‘তিকাফ করে, তাহলে স্বামীর অধিকার রয়েছে তার ই‘তিকাফ ভঙ্গ করানো। ই‘তিকাফের অনুমতি দেওয়ার পর স্বামী যদি কোনো কারণে তার ই‘তিকাফ ভাঙ্গতে চায়, তাহলে তার অধিকার রয়েছে। [শারহুন নববী: (৮/৭০); আল-মুফহিম: (৩/২৪৫); ফাতহুল বারি: (৪/২৭৭)।]
তিন. ই‘তিকাফ আরম্ভ করে প্রয়োজন হলে তা ভঙ্গ করা বৈধ। [ইবন বায রহ. বলেছেন: “বিশুদ্ধ মতে ইতিকাফ আরম্ভ করলে ওয়াজিব হয় না এবং জুমার কারণে তা ভঙ্গ হয় না”।]
চার. মসজিদ ব্যতীত ই‘তিকাফ শুদ্ধ নয়, যদি অন্য কোথাও ই‘তিকাফ বৈধ হত, তাহলে নারীর জন্য বৈধ হত তার সালাতের জায়গায় ই‘তিকাফ করা। [শারহুন নববী: (৮/৬৮); ফাতহুল বারি: (৪/২৭৭)।]
পাঁচ. স্বামীর জন্য নিজ স্ত্রী ও পরিবারকে আদব শিক্ষা দেওয়া, তাদের সংশোধন করা জায়েয। যেমন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্ত্রীদের ই‘তিকাফের অনুমতি দেন, অতঃপর তাদের মধ্যে অনাকাঙ্খিত ঈর্ষার আশংকায় তাদেরকে তা থেকে বারণ করেন। [শারহুন নববী: (৮/৬৯); আল-মুফহিম: (৩/২৪৫); মিনহাতুল বারি: (৪/৪৬৪); হাশিয়াতুস সিনদি আলান নাসাঈ: (২/৪৫)।]
ছয়. নফল ছুটে গেলে তা কাযা করা বৈধ। [মিনহাতুল বারি: (৪/২৭৭)।]
সাত. অতিরিক্ত ঈর্ষা খারাপ। কারণ, তা হিংসার ফল, যা নিন্দনীয়।
আট. ভালো কাজ ত্যাগ করা বৈধ, যদি তাতে কল্যাণ থাকে। [শারহু ইবন বাত্তাল: (৪/১৮২); ফাতহুল বারি: (৪/২৭৭)।]
নয়. শুধু নিয়তের কারণে ই‘তিকাফ ওয়াজিব হয় না। [ইমাম নববী শারহে মুসলিমে এ ব্যাপারে ঐক্যমত নকল করেছেন: (৮/৬৮)।]
দশ. ই‘তিকাফকারী ই‘তিকাফের জন্য মসজিদের একটা অংশ নিজের জন্য খাস করে নিতে পারবে, যদি তাতে মুসল্লিদের সমস্যা না হয়। জায়গাটি নির্ধারণ করা চাই মসজিদের খালি অংশে বা শেষ প্রান্তে, যেন অন্যদের কষ্ট না হয় এবং তার নির্জনতা ও একাকীত্ব অর্জন হয়। [শারহুন নববী: (৮/৬৯)।]
এগার. স্ত্রীদের সাথে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্দর আখলাক ও তাদের সঙ্গে চমৎকার হৃদ্যতা। যেমন, তাদেরকে তিনি ই‘তিকাফ থেকে বারণ করে, নিজেও তা ত্যাগ করেন, অথচ তিনি নিজে ই‘তিকাফ করতে পারতেন, কিন্তু আন্তরিকতা, সহমর্মিতা ও তাদের আনন্দে শেয়ার করার জন্য তা করেন নি। [এটা ইমাম কুরতুবি উল্লেখ করেছেন, অতঃপর তিনি বলেছেন: “অথবা তার ইতিকাফে বহাল থাকলে এ আশঙ্কার জন্ম হত যে, ইতিকাফ শুধু তার জন্য খাস, নারীদের জন্য নয়”। আল-মুফহিম: (৩/২৪৬), ইবন বাত্তাল রহ. বলেছেন: “তিনি তাদের অন্তরকে খুশি করার জন্য ইতিকাফ পিছিয়ে দেন, যেন এমন না হয় তিনি ইতিকাফ করবেন, আর তারা ইতিাকাফ করবে না”। শারহুল সহীহ বুখারী (৪/১৬৯), শাইখ যাকারিয়া আনসারি উল্লেখ করেছেন, তিনি তাদেরকে কঠোরভাবে নিষেধ করার জন্য ইতিকাফ ত্যাগ করেছেন, অথবা মসজিদ সংকীর্ণ হয়ে যাবে আশঙ্কায়। দেখুন: মিনহাতুল বারি: (৪/৪৪)।] অনুরূপ প্রত্যেক মুসলিমের উচিৎ স্ত্রীদের আদব শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে সীমালঙ্ঘন না করা, যা প্রতিশোধ ও জেদ দমনের পর্যায় পড়ে।
বারো. যদি ই‘তিকাফকারী নারীর ঋতুস্রাব হয়, তাহলে ঋতুস্রাব তার ই‘তিকাফ ভেঙ্গে দিবে, সে মসজিদ ত্যাগ করবে, অতঃপর পবিত্র হয়ে পূর্বের ই‘তিকাফ শুরু করবে। [এটা জমহুরের অভিমত। যেমন, যুহরি, রাবিয়াহ, মালেক, আওযায়ি, আবু হানিফা ও শাফি, ইবন বাত্তাল তাদের থেকে এ বাণী নকল করেছেন: (৪/১৭৪); ইমাম আহমদ অনুরূপ বলেছেন: (৪/৪৮৭)।]
তের. যদি কেউ নফল ইবাদতের নিয়ত করে, কিন্তু এখনো তা শুরু করেনি, তাহলে সে তা একেবারে ত্যাগ করতে পারে, আবার ইচ্ছা করলে পরবর্তীতে আদায় করা বৈধ। [শারহু ইবন বাত্তাল: (৪/১৮৩)।]
চৌদ্দ. যার মধ্যে কোনো ইবাদতের রিয়া নিশ্চিত জানা যায়, তাকে সে ইবাদত থেকে নিষেধ করা বৈধ। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লাম বলেছেন: “তোমরা কি নেকি ইচ্ছা করেছ”। অর্থাৎ তোমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নৈকট্য ও তাকে পাওয়ার আশা করেছ। এ জন্য তাদের ই‘তিকাফ নিষেধ করেন ও নিজের ই‘তিকাফ পিছিয়ে দেন। [শারহু ইবন বাত্তাল: (৪/১৮৩)।]
পনের. ই‘তিকাফে স্ত্রী, লোকজন ও অন্যদের থেকে নির্জনতা অবলম্বন করা মোস্তাহাব, তবে যখন প্রয়োজন হয় তা ব্যতীত যেমন সালাত, খানা ইত্যাদি। [শারহু ইবনুল মুলাক্কিন আলাল উমদাহ: (৫/৪৩৫)।]
ষোল. রমযানে ইতিফাক করা সুন্নাত, এটা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ, এ হাদীস থেকে বুঝা যায় গায়রে রমযানে ই‘তিকাফ করা বৈধ, যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাওয়ালে ই‘তিকাফ করেছেন। [দেখুন: ফিকহুল ইবাদাত লি ইবন উসাইমিন: (২০৮)।]
সতের. মসজিদের ভেতরের রুমে ই‘তিকাফ করা বৈধ, যার দরজা মসজিদের দিকে খোলা, তার হুকুম মসজিদের হুকুম, আর যদি মসজিদের বাইরে হয়, তাহলে সেটা মসজিদের অংশ নয়, যদিও তার দরজা মসজিদের দিকে। [ফাতাওয়াল লাজনাহ: (৬৭১৮)।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/128/49
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।