hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রমযানের বিষয়ভিত্তিক হাদীস শিক্ষা ও মাসায়েল

লেখকঃ ইবরাহীম ইবন মুহাম্মাদ আল-হাকীল

১৫
১২. সিয়াম পাপ মোচনকারী
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,‎

﴿إِنَّمَآ أَمۡوَٰلُكُمۡ وَأَوۡلَٰدُكُمۡ فِتۡنَةٞۚ وَٱللَّهُ عِندَهُۥٓ أَجۡرٌ عَظِيمٞ ١٥﴾ [ التغابن :15]

“তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তো ‎‎ কেবল পরীক্ষা বিশেষ। আর আল্লাহরনিকটই মহান প্রতিদান”। [সূরা আত-তাগাবুন, আয়াত: ১৫]

﴿وَنَبۡلُوكُم بِٱلشَّرِّ وَٱلۡخَيۡرِ فِتۡنَةٗۖ وَإِلَيۡنَا تُرۡجَعُونَ ٣٥﴾ [ الأنبياء :15]

“আর ভালোও মন্দ দ্বারা আমরা তোমাদেরকে পরীক্ষা করে ‎‎ থাকি এবং আমাদের কাছেই তোমাদেরকে ফিরেআসতে হবে”। [সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ৩৫] আয়াতদ্বয়ে “ফিতনা” শব্দটি পরীক্ষা অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা এর অর্থ বলেন, “আমি তোমাদেরকে সুখ-দুঃখ, সুস্থতা-অসুস্থতা, প্রাচুর্য-দারিদ্র, হালাল-হারাম, পাপ-পুণ্য এবং ‎‎ হিদায়াত ও গোমরাহির মাধ্যমে পরীক্ষা করব”। [তাফসিরে ইবন কাসির: (৩/২৮৬)।]

হুযায়ফা রাদিয়াল্লাহু আনহু‎ বলেন, উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু‎ বলেছেন:

«مَنْ يَحفَظُ حَدِيثاً عَنِ النَّبيِّ صلى الله عليه وسلم في الفِتنَة؟ قَالَ حُذَيْفَةُ : أَنا سَمِعْتُهُ يَقُولُ : فِتنَةُ الرَّجُلِ في أَهْلِهِ ومَالِهِ وجَارِهِ تُكَفِّرُهَا الصَّلاةُ والصِّيامُ والصَّدَقَةُ»

“ফিতনা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস কার মনে আছে? হুযাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু ‎ ‎ বলেন: আমি তাকে বলতে শুনেছি, ব্যক্তির ফিতনা তারপরিবার-পরিজনে, মাল-সম্পদে ও তার প্রতিবেশীর মধ্যে, যার কাফ্‌ফারা হয় সালাত,সিয়াম ও সদকা । [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৭৯৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৪৪।]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর থেকে বর্ণনা করেন:

«لِكُلِّ عَمَلٍ كَفَّارَةٌ، والصَّوْمُ لي وَأَنَا أَجْزِي به ...» .

“প্রত্যেক আমলের কাফ্‌ফারা রয়েছে, আর সাওম হচ্ছে আমার জন্য, আমি তার প্রতিদান দেব”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭১০০; আহমদ: (২/৫০৪)।]

মুসনাদে আহমাদে রয়েছে:‎

«كُلُّ العَمَلِ كَفَّارَةٌ والصَّوْمُ لي وَأَنَا أَجْزِي به ...»

“প্রত্যেক আমল কাফ্‌ফারা, আর সাওম আমার জন্য, আমি তার প্রতিদান দেব”। [আহমদ: (২/৪৫৭); তায়ালিসি, হাদীস নং ২৪৮৫।]

অপর বর্ণনায় আছে:

«كُلُّ العَمَلِ كَفَّارَةٌ إِلَّا الصَّوْمَ لي وَأَنَا أَجْزِي به ...» .

“প্রত্যেক আমল কাফ্‌ফারা, তবে সাওম আমার জন্য, আমি তার প্রতিদান ‎‎ দেব”। [এ হাদীস ইবন রাহওয়েহ থেকে বর্ণিত, মাজমাউয যাওয়ায়েদে হায়সামি তা আহমদ থেকে বর্ণনা করেছেন: (৩/১৭৯), তিনি বলেছেন: এর বর্ণনাকারীগণ সহীহ গ্রন্থের বর্ণনাকারী।]

আবু হুরায়রাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু‎ বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন:

«الصَّلَواتُ الخَمسُ، والجُمعَةُ إلى الجُمُعةِ، ورَمَضَانُ إلى رَمَضَانَ، مُكَفِّراتٌ مَا بَينَهنَّ إذا اجْتُنِبَتْ الكَبَائرُ» .

“পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, এক জুমু‘আ থেকে অপর জুমু‘আ, এক রমযান থেকে অপর রমযান,মধ্যবর্তী সময়ের জন্য কাফ্‌ফারাস্বরূপ, যদি কবীরাহ গুনাহ থেকে বিরত থাকা হয়”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৩৩।]

আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু‎ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকেবলতে শুনেছি:

«مَنْ صَامَ رَمَضَانَ وعَرَفَ حُدُودَهُ وتَحفَّظَ مما كَانَ يَنبَغِي لَه أَنْ يَتَحَفَّظَ فيهِ كَفَّرَ ما قَبْلَه» .

“যে রমযানের সাওম পালন করল, তার সীমারেখা ঠিক রাখল এবং যা থেকে বিরত থাকা দরকার তা থেকে সে বিরত থাকল, তার পূর্বের পাপ মোচন করা হবে”। [আহমদ: (৩/৫৫; আবু ইয়ালা, হাদীস নং ১০৫৮; বায়হাকি: (৪/৩০৪); সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীস নং ৩৪৩৩।]

শিক্ষা ও মাসায়েল:

‎এক. কল্যাণ-অকল্যাণ উভয় দ্বারা মানুষকে পরীক্ষা করা হয়। কল্যাণের পরীক্ষা যেমন, অধিক সম্পদ ও নি‘আমত। অকল্যাণের পরীক্ষা যেমন, বিপদ-আপদ দুঃখ -‎‎ বেদনা, রোগ-ব্যাধি লেগে থাকা।‎

‎দুই. সন্তান ও সম্পদ মানুষের জন্য পরীক্ষা। কারণ, মানুষ তাদের মহব্বত, ভালোবাসা ও হিতকামনায় আল্লাহর হক নষ্ট করে, পরকালে যা শাস্তির কারণ। তাদের দ্বারা পরীক্ষার অপর দিক হলো, শরী‘আত আমাদেরকে তাদের ওপর অনেক দায়িত্ব দিয়েছে। যেমন, তাদের শিক্ষা-দীক্ষা, ভরন -‎‎ পোষণ ইত্যাদির ব্যবস্থা করা, সেসব বিষয়ে ত্রুটি করা পরকালে শাস্তির কারণ। [শারহুন নববী আলা মুসলিম, হাদীস নং ২/১৭১)।]

‎তিন. পাপ ও নাফরমানী ফিতনার অন্তর্ভুক্ত, যেমন বেগানা নারী অথবা হারাম মালে জড়িত ব্যক্তি ফিতনায় পতিত, অনেক সময় নেককার লোকেরা এতে পতিত হয়। [আত-তামহিদ লি ইবন আব্দুল বারর: (১৭/৩৯৪)।]

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ ٱتَّقَوۡاْ إِذَا مَسَّهُمۡ طَٰٓئِفٞ مِّنَ ٱلشَّيۡطَٰنِ تَذَكَّرُواْ فَإِذَا هُم مُّبۡصِرُونَ ٢٠١﴾ [ الأعراف : 201]

“নিশ্চয় যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে যখনতাদেরকে শয়তানের পক্ষ থেকে কোনো কুমন্ত্রণা ‎‎ স্পর্শ করে তখন তারা আল্লাহকে স্মরণ করে।তখনই তাদের দৃষ্টি খুলে যায়”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ২০১]

তিনি অন্যত্র বলেন,

﴿وَٱلَّذِينَ إِذَا فَعَلُواْ فَٰحِشَةً أَوۡ ظَلَمُوٓاْ أَنفُسَهُمۡ ذَكَرُواْ ٱللَّهَ فَٱسۡتَغۡفَرُواْ لِذُنُوبِهِمۡ وَمَن يَغۡفِرُ ٱلذُّنُوبَ إِلَّا ٱللَّهُ وَلَمۡ يُصِرُّواْ عَلَىٰ مَا فَعَلُواْ وَهُمۡ يَعۡلَمُونَ ١٣٥﴾ [ آل عمران : 135]

“আর যারা কোনো অশ্লীল কাজ করলে অথবানিজদের প্রতি যুলম করলে আল্লাহকে স্মরণকরে, অতঃপর তাদের গুনাহের জন্য ক্ষমাচায়। আর আল্লাহ ছাড়া কে গুনাহ ক্ষমা করবে? আর তারা যা করেছে, জেনে শুনে তা তারাবার বার করে না”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৩৫]

চার. কোনো গুনাহে যে বারবার লিপ্ত হয়, তার উচিৎ অধিক সওয়াবের কাজ করা, ‎‎ কেননা নেক কাজ গুনাহ মুছে দেয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,‎

﴿إِنَّ ٱلۡحَسَنَٰتِ يُذۡهِبۡنَ ٱلسَّيِّ‍َٔاتِۚ ١١٤﴾ [ هود : 114]

“নিশ্চয়ই ভালোকাজ মন্দকাজকে মিটিয়ে দেয়।এটি উপদেশ গ্রহণকারীদের জন্য উপদেশ”। [সূরা হুদ, আয়াত: ১১৪] সন্দেহ নেই, অধিক পরিমাণ নেক কাজ গুনাহের শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করে। অতঃপর আল্লাহ তার নেক আমলের কারণেতাকে খালেস তাওবা করার তাওফীক দান করেন।

পাঁচ. এসব হাদীস প্রমাণ করে সিয়াম কাফ্‌ফারা। সুতরাং আবু হুরায়রার হাদীসে বর্ণিত ‘সিয়াম কাফ্‌ফারা নয়’ এর অর্থ হচ্ছে, সাধারণ আমল শুধু কাফ্‌ফারা, কিন্তু সিয়াম কাফ্‌ফারা হওয়ার সাথে সাথে অতিরিক্ত সওয়াবও আছে। একনিষ্ঠ-ভাবে আল্লাহর জন্য সম্পাদিত সিয়ামে এ ফযীলত লাভ হবে। [ফাতহুল বারি: (৪/১১১)।]

ছয়. ইমাম নববী রহ. বলেন, “কখনো বলা হয়: অযু যদি গোনাহের কাফ্‌ফারা হয় তাহলে সালাত কিসের কাফ্‌ফারা? আর সালাত যদি কাফ্‌ফারা হয়, তাহলে জামা‘আতের সালাত,রমযানের সাওম, আরাফার সাওম, আশুরার সাওম এবং ফিরিশতাদের আমীনের সাথে বান্দারআমীনের মিল কিসের কাফ্‌ফারা? কারণ, এসব আমল সম্পর্কে বর্ণিত আছে এগুলো কাফ্‌ফারা। আলিমগণ এর উত্তরদিয়েছেন: এসব আমল কাফ্‌ফারার যোগ্য, যদি কাফ্‌ফারা করার জন্য ছোট পাপ থাকে, তাহলে তার কাফ্‌ফারা করে, যদি ছোট-বড় পাপ না থাকে, তাহলে এর দ্বারা নেকী লিখা হয় ও মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়। আর যদি কোনো কবিরা গোনাহে লিপ্ত হয়, আশা করি এ কারণে তা হালকা হবে। [শারহুন নববী: (৩/১১৩); আদ-দিবায আলা মুসলিম, হাদীস নং ২/১৭)।]

সাত. এসব আমল দ্বারা বান্দার হক মাফ হয় না, ছোট বা বড় নেক আমলের কারণে কোনো হক মাফ হয় না, বরং তা থেকে অবশ্যই মুক্ত হতে হবে অথবা তার থেকে হালাল করে নিতে হবে। [তানবিরুল হাওয়ালেক: (২/৪২); তুহফাতুল আহওয়াযি: (১/৫৩৫)।]‎

আট. সিয়ামের ফলে পাপ মোচন হয়।

নয়. সিয়ামের এসব ফযীলত সে লাভ করবে, যে সাওম বিনষ্টকারী বস্তু থেকে স্বীয় সাওম হিফাযত করবে, যেমন আবু সাঈদ খুদরীর হাদীসে এসেছে:

«وعَرَفَ حُدُدَهُ وتَحَفَّظَ ممَا كَانَ ينْبَغِي لهُ أنْ يتَحَفَّظَ فِيه»

“সওমের সীমারেখা ঠিক রাখল ও সেসব বস্তু থেকে নিরাপদ থাকল, যা থেকে নিরাপদ থাকা জরুরি”।

সারকথা, মুসলিমদের উচিৎ রমযানের রাত-দিন হারাম কথা যেমন গীবত, পরনিন্দা ও হারাম দৃষ্টি থেকে নিজেকে হিফাযত করা, যা টেলিভিশন-ইন্টারনেট ও বিভিন্ন প্রচার যন্ত্রে প্রচার করা হয়, যার কুফল অন্যান্য সময়ের চেয়ে রমযানে বেড়ে যায়। আল্লাহ আমাদেরকে হিদায়াত ও সঠিক পথে থাকার তাওফীক দান করুন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন