hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রমযানের বিষয়ভিত্তিক হাদীস শিক্ষা ও মাসায়েল

লেখকঃ ইবরাহীম ইবন মুহাম্মাদ আল-হাকীল

৬১
৫৮. চন্দ্র মাসের অবস্থা
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«الشَّهْرُ هَكَذا وَهَكَذا وَهَكَذا، يَعْني : ثَلاثينَ، ثُمَّ قَالَ : وَهَكَذا وَهَكَذا وَهَكَذا، يَعْني : تِسْعاً وعِشْرينَ، يَقُولُ : مَرَّةً ثَلاثينَ، ومَرَّةً تِسْعاً وعِشْرينَ» .

“মাস এরূপ, এরূপ ও এরূপ। অর্থাৎ ত্রিশ দিন। অতঃপর তিনি বলেন, এরূপ, এরূপ ও এরূপ। অর্থাৎ ঊনত্রিশ দিন। তিনি বলেন, কখনো ত্রিশ দিন, কখনো ঊনত্রিশ দিন”। [সহীহ বুখারী ও মুসলিম।]

সহীহ বুখারীর অপর বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«إِنَّا أُمَّةٌ أُمِّيةٌ لا نَكْتُبُ وَلا نَحْسُبُ، الشَّهْرُ هَكَذا وَهَكَذا، يَعْني : مَرَّةً تِسْعَةً وَعِشْرينَ، وَمَرَّةً ثَلاثينَ» .

“আমরা উম্মী উম্মত, লেখা ও হিসাব জানি না, মাস হচ্ছে এরূপ ও এরূপ। অর্থাৎ কখনো ঊনত্রিশ ও কখনো ত্রিশ”।

সহীহ মুসলিমের অপর বর্ণনায় আছে:

«الشَّهْرُ كَذَا وكَذَا وكَذَا، وصَفَّقَ بِيَدَيْهِ مَرَّتَين بِكُلِّ أَصَابِعْهما، ونَقَصَ في الصَّفْقَةِ الثَّالِثَةِ إِبْهَامَ اليُمْنَى أَوْ اليُسْرَى» .

“মাস এরূপ, এরূপ ও এরূপ। দুইবার উভয় হাতের পুরো আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করলেন, তৃতীয়বার ডান বা বাম হতের বৃদ্ধাঙ্গুলি কম দেখালেন”।

সহীহ মুসলিমের অপর বর্ণনায় আছে: ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু‎ এক ব্যক্তিকে বলতে শুনেন:

«الَّليْلَةُ النِّصْفُ . فَقَالَ لَهُ : مَا يُدْرِيكَ أَنَّ الَّليْلَةَ النِّصْفُ؟ سَمِعْتُ رَسُولَ الله صلى الله عليه وسلم يَقُولُ : الشَّهْرُ هَكَذا وَهَكَذا، وَأَشِارَ بِأَصَابِعِهِ العَشْرِ مَرَّتَينِ، وَهَكَذا في الثّالِثَةِ، وَأَشَارَ بِأَصَابِعِهِ كُلِّهَا، وَحَبَسَ أَوَ خَنَسَ إِبْهَامَهُ» .

“আজকের রাত মাসের অর্ধেক। তিনি তাকে বললেন: কিভাবে বললে আজকের রাতটি মাসের অর্ধেক? আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: মাস এরূপ ও এরূপ, তিনি দুই বার হাতের দশ আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করেন, তৃতীয়বার এভাবে ইশারা করেন, তিনি সব আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করেন, শুধু তার বৃদ্ধাঙ্গুলি বদ্ধ রাখেন”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৯৯৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৮০। দ্বিতীয় বর্ণনা বুখারির: (১৮১৪), তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ণনা মুসলিমের: (১০৮০)।]

সাদ ইবন আবি ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু‎ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একহাত দ্বারা অপর হাতের ওপর আঘাত করলেন, অতঃপর বলেন, “মাস এরূপ ও এরূপ, অতঃপর তৃতীয়বার এক আঙ্গুল কম দেখান”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৮৬; নাসাঈ: (৪/১৩৮)।]

ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা‎ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন:

«أَتَاني جِبْريلُ عَلَيْهِ السَّلامُ فَقَالَ : الشَّهْرُ تِسْعٌ وعِشْرُونَ يَوْماً» .

“জিবরীল আলাইহিস সালাম আমার নিকট এসে বলেন, মাস ঊনত্রিশ দিন”। [নাসাঈ: (৪/১৩৮), আলবানি সহীহ নাসাঈতে হাদীসটি সহীহ বলেছেন।]

ইবন মাসউদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«لَما صُمْنَا مَعَ النَّبيِّ صلى الله عليه وسلم تِسْعاً وعِشْرينَ أَكْثَرَ مما صُمْنَا مَعَهُ ثَلاثينَ»

“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে আমরা অধিক সময় ঊনত্রিশ দিন সাওম পালন করেছি, ত্রিশ দিনের তুলনায়”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৩২২; তিরমিযী, হাদীস নং ৬৮৯; আহমদ: (১/৩৯৭); বায়হাকি: (৪/২৫০)। আলবানি সহীহ আবু দাউদে হাদীসটি সহীহ বলেছেন।]

ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, এ অধ্যায়ে ইবন উমার, আবু হুরায়রা, আয়েশা, সাদ ইবন আবি ওয়াক্কাস, ইবন আব্বাস, ইবন উমার, আনাস, জাবের, উম্মে সালামা ও আবু বাকরা থেকে হাদীস বর্ণিত আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “মাস হয় ঊনত্রিশ দিনে”। [জামে তিরমিযী (৩/৭৩)।]

শিক্ষা ও মাসায়েল:‎

এক. চন্দ্র মাস, শরী‘আতের বিধান যার ওপর নির্ভরশীল, তা কখনো ত্রিশ, আবার কখনো ঊনত্রিশ দিনের হয়।

দুই. মাস যখন অসম্পূর্ণ হয়, সাওয়াব পরিপূর্ণ হয়। ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু‎ সংবাদ দিয়েছেন: তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে অধিক সময় ঊনত্রিশ সাওম পালন করেছেন, ত্রিশ দিনের তুলনায়।

তিন. এ হাদীস জ্যোতিষ্ক ও গণকদের প্রত্যাখ্যান করে। এ হাদীস আরো প্রমাণ করে যে, শর‘ঈ বিধান সিয়াম, ফিতর ও হজ ইত্যাদি চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল, গণনার ওপর নয়।

চার. ইশারা ব্যবহার করা বৈধ, বরং এটা শিক্ষা ও ব্যাখ্যার একটি মাধ্যম। [ফাতহুল বারি: (৪/১২৭)।]

পাঁচ. দুই মাস, তিন মাস ও চার মাস পর্যায়ক্রমে ঊনত্রিশে মাস হতে পারে, তবে চার মাসের বেশি লাগাতার ঊনত্রিশ দিনে মাস হয় না। [শারহুন নববী আলাল মুসলিম (৭/১৯১)।]

ছয়. এ উম্মত উম্মী, কারণ, এদের মধ্যে শিক্ষার হার কম, অনুরূপ তাদের নবী ছিলেন উম্মী। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿هُوَ ٱلَّذِي بَعَثَ فِي ٱلۡأُمِّيِّ‍ۧنَ رَسُولٗا مِّنۡهُمۡ﴾ [ الجمعة : 2]

“তিনিই উম্মীদের মাঝে একজন রাসূলপাঠিয়েছেন তাদের মধ্য থেকে”। [সূরা আর-জুমু‘আ, আয়াত: ২]

অন্যত্র তিনি বলেন,

﴿وَمَا كُنتَ تَتۡلُواْ مِن قَبۡلِهِۦ مِن كِتَٰبٖ وَلَا تَخُطُّهُۥ بِيَمِينِكَۖ إِذٗا لَّٱرۡتَابَ ٱلۡمُبۡطِلُونَ ٤٨﴾ [ العنكبوت : 48]

“আর তুমি তো এর পূর্বে কোনো কিতাব তিলাওয়াতকর নি এবং তোমার নিজের হাতে তা লিখ নি যে,বাতিলপন্থীরা এতে সন্দেহ পোষণ করবে”। [সূরা আল-‘আনকাবূত, আয়াত: ৪৮]

এ উম্মতের ওপর আল্লাহর মহান নি‘আমত যে, তিনি তাদেরকে এ মহান দীন দান করেছেন। তারা অপর থেকে এ কিতাব গ্রহণ করে নি, বরং তারা রাসূলের মাধ্যমে আল্লাহর পক্ষ থেকে গ্রহণ করেছে। [উমদাতুল কারি: (১০/২৮৬)।]

সাত. এ উম্মত নিজেদের ইবাদত ও ইবাদতের সময় নির্ধারণে শিক্ষা ও গণকদের মুখাপেক্ষী নয়। কারণ, শরী‘আত তা ধার্য করেছে দেখার ওপর, যা সবার নিকট সমান। [তাফসির ইবন কাসির: (১/১১৭)।]

আট. আমাদেরকে সিয়াম, সালাত ও অন্যান্য ইবাদত সম্পাদনে শিক্ষা ও গণকের মুখাপেক্ষী হতে বলা হয় নি, তার নির্দেশ দেওয়া হয় নি, বরং আমাদের ইবাদতের সম্পর্ক প্রকাশ্য নিদর্শনের সাথে, যেখানে শিক্ষিত-অশিক্ষিত সবাই সমান। [শারহু ইবন বাত্তাল আলাল বুখারী (৪/৩১-৩২); আল-মুফহিম: (৩/১৩৯); উমদাতুল কারি: (১০/২৮৭)।]

নয়. যে একমাস সিয়াম পালন করার মানত বা কসম করল, যেমন রজব বা শাবান, অতঃপর যখন সিয়াম আরম্ভ করল, মাস ঊনত্রিশে শেষ হলো, তাহলে সে মানত বা কসম পুরো করল। [মাআলিমুস সুনান আলা হামিশি আবু দাউদ (২/৭৪০)।]

দশ. কেউ যদি মানত করে অথবা কসম করে একমাস সিয়াম পালন করবে, কিন্তু সে নির্দিষ্ট করেনি, সে যদি ঊনত্রিশ দিন সিয়াম পালন করে, ইনশাআল্লাহ যথেষ্ট হবে। কারণ, মাস সাধারণত এরূপ হয়। [আল-মুফহিম: (৩/১৩৮); খাত্তাবি মাআলিমুস সুনান: (২/৭৪০) উল্লেখ করেছেন। তার ত্রিশ দিন পুরো করতে হবে, তবে আমার নিকট কুরতুবির অভিমত অধিক বিশুদ্ধ মনে হয়। তিনি কেন ত্রিশ বললেন সেটা আমার নিকট স্পষ্ট নয়, অথচ মাস হয় ঊনত্রিশ দিনে।]

এগার. সন্দেহের দিন শাবানের মধ্যে গণ্য, তাকে রমযান গণ্য করা ঠিক নয়। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাঁদ দেখার সাথে রমযান সম্পৃক্ত করেছেন। [আল-মুফহিম: (৩/১৪০)।]

বারো. হাদীস থেকে বুঝা যায়, চাঁদের জায়গা নির্ধারণের জন্য আধুনিক যন্ত্র যেমন দূরবীন ইত্যাদির সাহায্য নেওয়া দোষের নেই, চাঁদ দেখার সুবিধার্থে। এটা হাদীসে নিষিদ্ধ গণনার অন্তর্ভুক্ত নয়, তবে চোখে দেখা অধিক গ্রহণ যোগ্য। [শাইখ ইবন বায রহ. কে দূরবীন দ্বারা দেখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি বলেন এটা ব্যবহার করা দোষের নয়, কারণ এটাও দেখার অন্তর্ভুক্ত, গণনার অন্তর্ভুক্ত নয়। মাজমু ফাতাওয়া ও রাসায়েল: (১৫/৬৯-৭০)।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন