hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রমযানের বিষয়ভিত্তিক হাদীস শিক্ষা ও মাসায়েল

লেখকঃ ইবরাহীম ইবন মুহাম্মাদ আল-হাকীল

৪৭
৪৪. লাইলাতুল কদরের ফযীলত
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿إِنَّآ أَنزَلۡنَٰهُ فِي لَيۡلَةٖ مُّبَٰرَكَةٍۚ إِنَّا كُنَّا مُنذِرِينَ ٣ فِيهَا يُفۡرَقُ كُلُّ أَمۡرٍ حَكِيمٍ ٤﴾ [ القدر : 3-4]

“নিশ্চয় আমরা এটি নাযিল করেছি বরকতময়রাতে। নিশ্চয় আমি সতর্ককারী। ‎ ‎ সে রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্তঅনুমোদিত হয়”। [সূরা আল-কাদ্বর, আয়াত: ৩-৪]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿إِنَّآ أَنزَلۡنَٰهُ فِي لَيۡلَةِ ٱلۡقَدۡرِ ١ وَمَآ أَدۡرَىٰكَ مَا لَيۡلَةُ ٱلۡقَدۡرِ ٢ لَيۡلَةُ ٱلۡقَدۡرِ خَيۡرٞ مِّنۡ أَلۡفِ شَهۡرٖ ٣ تَنَزَّلُ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ وَٱلرُّوحُ فِيهَا بِإِذۡنِ رَبِّهِم مِّن كُلِّ أَمۡرٖ ٤ سَلَٰمٌ هِيَ حَتَّىٰ مَطۡلَعِ ٱلۡفَجۡرِ ٥﴾ [ القدر : 1-5]

“নিশ্চয় আমরা এটি নাযিল করেছি ‘লাইলাতুলকদরে।তোমাকে কিসে জানাবে ‘লাইলাতুল কদর’ কী? ‘লাইলাতুল কদর’হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম।সে রাতে ফিরিশতারা ও রূহ (জিবরীল) তাদেররবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণকরে।‎ শান্তিময় সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত”। [সূরা আল-কাদ্বর, আয়াত: ১-৫]‎

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু‎ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«مَنْ يَقُمْ لَيْلَةَ القَدْرِ إيمَاناً واحتِسَاباً غُفِرَ لهُ مَا تَقدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ» .

“লাইলাতুল কদরে যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের নিয়তে কিয়াম করবে, তার পূর্বের সকল পাপ মোচন করা হবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৬০।]

হাদীসটি অন্য শব্দে এভাবে বর্ণিত আছে:

«مَنْ قَامَ لَيْلةَ القَدرِ إيماناً واحتِسَاباً غُفِرَ له مَا تَقَدَّمَ من ذَنبِهِ»

“লাইলাতুল কদরে যে ব্যক্তি ঈমান ও সাওয়াবের আশায় কিয়াম করবে, তার পূর্বের সকল পাপ মোচন করা হবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮০২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৬০।]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু‎ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাইলাতুল কদর সম্পর্কে বলেছেন:

«إنَّهَا لَيْلَةُ سَابعةٍ أو تَاسِعَةٍ وعِشْرِينَ إِنَّ الملائِكَةَ تِلْكَ اللَّيلةَ في الأرْضِ أَكْثَرُ مِنْ عَدَدِ الحَصَى» .

“লাইলাতুল কদর সাতাশ অথবা ঊনত্রিশের রাত, সে রাতে পৃথিবীতে ফিরিশতাদের সংখ্যা কঙ্করের চেয়ে অধিক হয়”। [আহমদ: (২/৫১৯); তায়ালিসি, হাদীস নং ২৫৪৫। ইবন খুযাইমাহ হাদীসটি সহীহ বলেছেন: (২১৯৪)।]

শিক্ষা ও মাসায়েল:‎

এক. লাইলাতুল কদরের ফযীলতের কয়েকটি দিক:

১. এ রাত আল্লাহর নিকট খুব মর্যাদাপূর্ণ।

২. এ রাত এক হাজার মাসের চেয়ে উত্তম, যেখানে লাইলাতুল কদর নেই, যা প্রায় তিরাশি বছর চার মাসের সমপরিমাণ।

৩. এ রাতে অগণিত ফিরিশতাদের অবতরণ হয়, যাদের সংখ্যা কঙ্করের চেয়ে বেশি।

৪. এ রাতে কুরআনুল কারীম নাযিল করা হয়েছে।

৫. এ রাতে অধিক পরিমাণ আযাব থেকে নিরাপত্তা নাযিল হয়। কারণ, এতে বান্দাগণ অধিক পরিমাণ ইবাদত করে, যার ফলে আল্লাহ তাদেরকে রহমত, মাগফিরাত ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির সনদ দান করেন।

৬. এ রাত বরকতময়। কারণ, এ রাতের ফযীলত অনেক।

৭. এ রাতে যে বিশ্বাস, আল্লাহর ওয়াদার ওপর আস্থা ও সাওয়াবের আশায় কিয়াম করবে, তার পূর্বের পাপ মোচন করা হবে।

৮. এ রাতে পূর্ণ বছরের তাকদীর লেখা হয়।

৯. এ রাতে যে কিয়াম করল ও জাগ্রত থাকল, সে অবশ্যই আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাতের উপযুক্ত হলো।

দুই. মুসলিমদের উচিৎ লাইলাতুল কদর তালাশ করা। এ জন্য শেষ দশকে কিয়াম, সালাত, দো‘আ ও যিকরে অধিক মশগুল থাকা। মাহরুম ও বঞ্চিত ব্যতীত কেউ ফযীলতপূর্ণ এ রাত থেকে গাফিল থাকে না। আল্লাহর নিকট দো‘আ করছি, তিনি আমাদেরকে এ ফযীলত অর্জনের তাওফীক দান করুন।

তিন. লাইলাতুল কদরের বরকতের অর্থ তাতে সম্পাদিত আমলের বরকত, কারণ, এ রাতে যে যত্নসহ আমল করবে, তার আমল হাজার মাসের আমলের চেয়ে উত্তম। এটা আল্লাহর মহান অনুগ্রহ।

চার. এ উম্মতের ওপর আল্লাহর অনুগ্রহ যে, তিনি তাদেরকে প্রতি বছর এ রাত দান করেন।

পাঁচ. লাইলাতুল কদর অন্য সকল রাত থেকে উত্তম, জুমু‘আর রাত লাইলাতুল কদর থেকে উত্তম এ কথা শুদ্ধ নয়। হ্যাঁ যদি জুমু‘আর রাতে লাইলাতুল কদর হয়, তাহলে তার ফযীলত বৃদ্ধি হয় সন্দেহ নেই।

ছয়. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ক্ষেত্রে ইসরা ও মেরাজের রাত লাইলাতুল কদর থেকে উত্তম। কারণ, এ রাতে তাকে আসমানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, এ রাতে তার সাথে তার রব কথা বলেছেন। এটা তার জন্য সবচেয়ে বড় সম্মান ও মহান মর্যাদা। তবে অন্যান্য মুসলিমের বিবেচনায় ইসরা ও মি‘রাজের রাতের তুলনায় লাইলাতুল কদর মহান ও অধিক মর্যাদাশীল। [মাজমু ফাতাওয়া ইবন তাইমিয়াহ: (২৫/২৮৬)।]

সাত. কতক আলিম উল্লেখ করেছেন লাইলাতুল কদর এ উম্মতের বৈশিষ্ট্য, কতক দুর্বল হাদীসে এ রকম বর্ণনা পাওয়া যায়। এর বিপরীতে কতক হাদীসে এসেছে আমাদের পূর্বের উম্মত বা তাদের নবীদের মধ্যেও লাইলাতুল কদর ছিল, তবে এসব হাদীস দুর্বল। [আমাদের পূর্বে লাইলাতুল কদর ছিল যেসব হাদীসে এসেছে, তার মধ্যে আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু‎র হাদীস অন্যতম, তাতে এসেছে: «قلت : تكون مع الأنبياء ما كانوا فإذا قبضوا رفعت أم هي إلى يوم القيامة؟ قال : بل إلى يوم القيامة» “আমি বললাম: লাইলাতুল কদর কি নবীদের যুগ পর্যন্ত থাকে, অতঃপর তা উঠিয়ে নেয়া হয়, না কিয়ামত পর্যন্ত থাকে? তিনি বললেন: বরং কিয়ামত পর্যন্ত থাকে”। আহমদ: (৫/১৭১; নাসাঈ ফিল কুবরা, হাদীস নং ৩৪২৭; হাকেম: (১/৩০৭), তিনি মুসলিমের শর্ত মোতাবেক হাকিম হাদীসটি সহীহ বলেছেন, ইমাম যাহাবি তার সমর্থন করেছেন। কিন্তু আলবানি ইবন খুজাইমার টিকায় তা দুর্বল বলেছেন: (২১৭০), তিনি উল্লেখ করেছেন এর সনদে মুরসিদ যামানি রয়েছে, সে মাজহুল। উকাইলি বলেছেন: তার হাদীসের কোন ‘মুতাবে’ পাওয়া যায় না।আর যেসব হাদীসে এসেছে যে, লাইলাতুল কদর এ উম্মতের সাথে খাস, যেমন ইমাম মালেক বর্ণনা করেছেন: «أن النبي أُريَ أعمار الناس قبله أو ما شاء الله من ذلك فكأنه تقاصر أعمار أمته ألا يبلغوا من العمل مثل الذي بلغ غيرهم في طول العمر فأعطاه الله ليلة القدر خيراً من ألف شهر» “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তার পূর্বের লোকের বয়স দেখানো হয়েছে, অথবা আল্লাহ যা ইচ্ছা তাকে দেখিয়েছেন, অতঃপর তিনি নিজের উম্মতের বয়স তুচ্ছ জ্ঞান করেন যে, তারা তাদের পূর্বের উম্মতের আমলের বরাবর হতে পারবে না, ফলে আল্লাহ তাকে লাইলাতুল কদর দান করেন, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম”। মালেক ফিল মুয়াত্তা: (১/৩২১), হাফেয ইবন আব্দুর বারর বলেছেন: “আমি জানি না, এ হাদীস কেউ মুসনাদ হিসেবে বর্ণনা করেছেন কি-না, আমাদের জানা মতে মুয়াত্তা ব্যতীত কেউ এ হাদীস মুরসাল বা মুসানদে বর্ণনা করেন নি”। তামহিদ: (২৪/৩৭৩)।আনাস থেকে বর্ণিত হাদীস: «إن الله عز وجل وهب لأمتي ليلة القدر ولم يعطها من كان قبلكم» “নিশ্চয় আল্লাহ আমার উম্মতকে লাইলাতুল কদর দান করেছেন, যা পূর্বের কোনো উম্মতকে দান করা হয় নি”। দায়লামি, হাদীস নং ৬৪৭; দায়িফুল জামে, হাদীস নং (১৬৬৯) গ্রন্থে রয়েছে এ হাদীসটি মওজু ও বানোয়াট। ইমাম নববী লাইলাতুল কদরের বৈশিষ্ট গণনায় বলেন: “লাইলাতুল কদর এ উম্মতের সাথে খাস, আল্লাহ এ রাতের সম্মান বৃদ্ধি করুন, এ উম্মতের পূর্বে কোনো উম্মতে লাইলাতুল ছিল না... এটা বিশুদ্ধ ও প্রসিদ্ধ, আমাদের সাথী ও জমহুর আলিমদের এটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত”। মাজমু: (৬/৪৫৭-৪৫৮)]

আট. মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে:

«مَنْ يَقُمْ لَيْلَةَ القَدْرِ فَيُوَافقُها إيمَاناً واحتِسَاباً غُفِرَ لهُ»

“যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদর জেনে ঈমান ও সওয়াবের আশায় কিয়াম করবে, তার পাপ মোচন করা হবে”। এ হাদীস তাদের দলীল, যারা বলে: লাইলাতুল কদর তার জন্যই হবে, যে জানে যে আজ লাইলাতুল কদর। কিন্তু হাদীসের বাহ্যিক শব্দ তা প্রমাণ করে না, বরং হাদীসের অর্থ হচ্ছে, যে লাইলাতুল কদরে কিয়াম করে লাইলাতুল কদরে কিয়াম করার নিয়তে, আর বাস্তবিক তা লাইলাতুল কদর হয় কিন্তু সে তা নিশ্চিত জানে না সে লাইলাতুল কদর লাভ করবে”। [দেখুন: তারহুত তাসরিব: (৪/১৬৪); যখিরাতুল উকবা: (২১/৫১-৫২)।উল্লেখ্য: আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু‎ থেকে বর্ণিত: “যে ব্যক্তি এশার সালাত জামাতে পড়ল সে লাইলাতুল কদর লাভ করল”। ইবন খুযাইমাহ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন, আলবানি তার টিকায় তা দুর্বল বলেছেন: (৩/৩৩৩), খতিবে বাগদাদি: (৫/৩৩২) এ হাদীসটি আনাস থেকে বর্ণনা করেছেন, যা বানোয়াট। দেখুন: যাওয়ায়েদে তারিখে বাগদাদ আলাল কুতুবিস সিত্তাহ লিশ শাইখ খালদুন আল-আহদাব: (৪/৫৯৪), হাদীস নং ৭৯২, মুয়াত্তায় সায়িদ ইবন মুসাইয়্যেব এর মুরসাল হাদীস হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে: (১/৩২১)।] অতএব, মুসলিমদের উচিৎ রমযানের শেষ দশকের প্রত্যেক রাতকে লাইলাতুল কদর জ্ঞান করে কিয়াম করা।, কারণ, সে রাত লাইলাতুল কদর হতে পারে, আর বাস্তবিক পক্ষে যদি সে রাত লাইলাতুল কদর হয়, তাহলে সে জেনে তাতে কিয়াম করল।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন