hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সুন্নাত

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২০
ঘুমানোর সময় যেসব যিকির ও দু‘আ সুন্নাত
১. ৩৪ বার আল্লাহু আকবার, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৩ সুবহানাল্লাহ :

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর নিকট কিছু সংখ্যক যুদ্ধবন্দী আনা হয়েছে- এ মর্মে ফাতিমা (রাঃ) এর কাছে সংবাদ পৌঁছলে তিনি নবী ﷺ-এর কাছে উপস্থিত হয়ে (আটা তৈরির জন্য) যাঁতা পিষাজনিত শ্রম ও কষ্টের কথা জানিয়ে খাদিম হিসেবে একজন যুদ্ধবন্দিনী চাইতে গেলেন। কিন্তু তাঁর দেখা পেলেন না। তাই সে সম্পর্কে আয়িশা (রাঃ)-কে বলে ফিরে আসলেন। পরে নবী ﷺ আসলে আয়িশা (রাঃ) তাকে বিষয়টি জানালেন এবং নবী ﷺ তখনই আমাদের ঘরে এলেন। আমরা তখন শুয়ে পড়েছি। আমরা বিছানা হতে উঠতে চাইলে তিনি বললেন, তোমরা যেভাবে আছো থাকো। (তারপর তিনি আমাদের মাঝখানে বসলেন) আলী (রাঃ) বলেন, আমি তাঁর ঠান্ডা পদযুগলের শীতলতা আমার বুকে অনুভব করলাম। তিনি তখন বললেন, তোমরা আমার কাছে যে জিনিস প্রার্থনা করেছ তার চাইতে কল্যাণকর বস্তুর সন্ধান কি আমি তোমাদেরকে দেব না? যখন তোমরা শয়ন করবে তখন চৌত্রিশবার ‘আল্লাহু আকবার’, তেত্রিশবার ‘আলহামদুলিল্লাহ্’ এবং তেত্রিশবার ‘সুবহানাল্লাহ্’ পড়বে। তোমরা যা প্রার্থনা করেছ তার চাইতে এ কাজটি বেশি কল্যাণকর। [সহীহ বুখারী, হা/৩১১৩; সহীহ মুসলিম, হা/২৭২৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/১১৪১; আবু দাউদ, হা/৫০৬৪; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৬০৪।]

২. আয়াতুল কুরসী পাঠ করা :

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ আমাকে বলেছেন, তুমি শয়নকালে ‘আয়াতুল কুরসী’ পাঠ করবে, তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার সাথে একজন হেফাযতকারী (ফেরেশতা) থাকবে এবং সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার নিকটবর্তী হবে না। [সহীহ বুখারী, হা/৩২৭৫; মিশকাত, হা/২১২৩।]

﴿اَللهُ لَاۤ إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّوْمُ، لَا تَأْخُذُه سِنَةٌ وَّلَا نَوْمٌ، لَه مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْاَرْضِ، مَنْ ذَا الَّذِيْ يَشْفَعُ عِنْدَهٗۤ إِلَّا بِإِذْنِه يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ، وَلَا يُحِيْطُوْنَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهۤ إِلَّا بِمَا شَآءَ، وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضَ وَلَا يَئُوْدُه حِفْظُهُمَا، وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيْمُ﴾

আল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যূম, লা তা’খুযুহূ সিনাতুওঁ ওয়ালা নাঊম লাহূ মা ফিস্সামা-ওয়া-তি ওয়ামা ফিলআর্যি, মানযাল্লাযী ইয়াশ্ফা‘উ ‘ইনদাহূ ইল্লা বিইয্নিহ্, ইয়া‘লামু মা বাইনা আইদীহিম ওয়ামা খাল্ফাহুম ওয়ালা ইউহীতূনা বিশায়ইম মিন ‘ইলমিহী ইল্লা বিমা শা-আ, ওয়াসি‘আ কুরসিয়্যুহুস সামা-ওয়া-তি ওয়াল্ আর্যা ওয়ালা ইয়াঊদুহূ হিফযুহুমা ওয়াহুয়াল ‘আলিয়্যুল ‘আযীম।

অর্থ : আল্লাহ, তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই, তিনি চিরঞ্জীব ও সবার রক্ষণা-বেক্ষণকারী, তন্দ্রা ও নিদ্রা তাঁকে স্পর্শ করে না, আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সব তাঁরই; এমন কে আছে, যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর নিকট সুপারিশ করতে পারে? তাদের সামনের ও পেছনের সবই তিনি জানেন; তিনি যা ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত তাঁর অনন্ত জ্ঞানের কোন বিষয়ই কেউ আয়ত্ব করতে পারে না; তাঁর কুরসী আকাশ ও পৃথিবীকে পরিবেষ্টিত করে আছে এবং এতদুভয়ের সংরক্ষণ তাঁকে ক্লান্ত করে না এবং তিনি সমুন্নত ও সুমহান। (সূরা বাক্বারা- ২৫৫)

৩. সূরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত পাঠ করা :

আবু মাসঊদ আনসারী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে কেউ রাতে সূরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত পাঠ করবে, তার জন্য তা যথেষ্ট হবে। অর্থাৎ উক্ত ব্যক্তি সারা রাত বিপদমুক্ত থাকবে। [সহীহ বুখারী, হা/৪০০৮; সহীহ মুসলিম, হা/১৯১৪; আবু দাঊদ, হা/১৩৯৯; তিরমিযী, হা/২৮৮১; ইবনে মাজাহ, সহীহ ইবনে হিববান, হা/৭৮১; মিশকাত, হা/২১২৫।]

﴿اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَاۤ أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَّبِّه وَالْمُؤْمِنُوْنَ كُلٌّ اٰمَنَ بِاللهِ وَمَلَآئِكَتِه وَكُتُبِه وَرُسُلِه لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِه وَقَالُوْا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيْرُ - لَا يُكَلِّفُ اللهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ- وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَاۤ إِنْ نَّسِيْنَاۤ أَوْ أَخْطَأْنَا، رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَاۤ إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَه عَلَى الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِنَا، رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِه وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَاۤ أَنْتَ مَوْلَانَا فَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِيْنَ﴾

আ-মানার রাসূলু বিমা উনযিলা ইলাইহি মির্রাবিবহী ওয়ালমু’মিনূন, কুলস্নুন আ-মানা বিল্লা-হি ওয়া মালা-ইকাতিহী ওয়া কুতুবিহী ওয়া রম্নসুলিহ্, লা নুফাররিকু বাইনা আহাদিম মিররুসুলিহ্, ওয়াক্বা-লূ সামি‘না ওয়াআত্বা‘না গুফ্রা-নাকা রাববানা ওয়া ইলাইকাল মাসীর। লা ইউকালিস্নফুল্লা-হু নাফসান ইল্লা উস‘আহা, লাহা মা কাসাবাত ওয়া‘আলাইহা মাকতাসাবাত, রাববানা লা তুআ-খিযনা ইননাসীনা আও আখত্বা’না, রাববানা ওয়ালা তাহ্মিল ‘আলাইনা ইসরান কামা হামালতাহূ ‘আলাল্লাযীনা মিন ক্বাবলিনা, রাববানা ওয়ালা তুহাম্মিলনা মা-লা ত্বা-ক্বাতালানা বিহ্, ওয়া‘ফু ‘আন্না ওয়াগ্ফির লানা ওয়ার্হামনা আনতা মাওলা-না ফানসুরনা ‘আলাল ক্বাওমিল কা-ফিরীন।

অর্থ : রাসূল তার প্রতিপালকের পক্ষ হতে তার উপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে ঈমান এনেছে এবং মুমিনগণও। তারা সবাই আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাবসমূহ এবং রাসূলগণের উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে, (তারা বলে), ‘আমরা রাসূলগণের মধ্যে কারো ব্যাপারে তারতম্য করি না’ এবং তারা এ কথাও বলে যে, ‘আমরা শুনেছি এবং মেনে নিয়েছি। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে ক্ষমা করম্নন, আর প্রত্যাবর্তন আপনারই দিকে’। হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা যদি ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তাহলে আমাদেরকে পাকড়াও করবেন না। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর যেমন গুরম্ন-দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন, আমাদের উপর তেমন দায়িত্ব অর্পণ করবেন না। হে আমাদের প্রতিপালক! যে ভার বহনের ক্ষমতা আমাদের নেই, এমন ভার আমাদের উপর চাপিয়ে দেবেন না, (ভুল-ত্রুটি উপেক্ষা করে) আমাদেরকে রেহাই দিন, আমাদেরকে ক্ষমা করম্নন এবং আমাদের প্রতি দয়া করম্নন। আপনিই আমাদের অভিভাবক, কাজেই আমাদেরকে কাফিরদের উপর বিজয় দান করম্নন।

৪. সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব, সূরা নাস পাঠ করা :

আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন ঘুমানোর জন্য নিজের বিছানায় যেতেন, তখন দু’হাত মিলিয়ে তাতে ফুঁক দিতেন এবং মাথা থেকে আরম্ভ করে যতটুকু সম্ভব নিজের শরীরে হাত বুলাতেন এবং সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব, ও সূরা নাস পাঠ করতেন। [সহীহ বুখারী, হা/৫০১৭; আবু দাঊদ, হা/৫০৫৮; তিরমিযী, হা/৩৪০২; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৮৯৭; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৫৫৪৪; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৩১০৪; মিশকাত, হা/২১৩২।]

সূরা ইখলাস :

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ

قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ اَللهُ الصَّمَدُ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُوْلَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَّه كُفُوًا أَحَدٌ

বিসমিল্লা-হির রাহ্মা-নির রাহীম। কুল হুওয়াল্লা-হু আহাদ। আল্লা-হুস সামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউ-লাদ। ওয়ালাম ইয়াকুল্লা-হূ কুফুওয়ান আহাদ।

অর্থ : আল্লাহর নামে শুরম্ন করছি, যিনি পরম করম্নণাময় ও অতি দয়ালু। বলো, আল্লাহ এক। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাকেও কেউ জন্ম দেয়নি। আর তার সমকক্ষ কেউ নেই।

সূরা ফালাক্ব :

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ

قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ -‐ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ - وَمِنْ شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ - وَمِنْ شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ -‐ وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ

বিসমিল্লা-হির রাহ্মা-নির রাহীম। কুল আ‘ঊযু বিরাবিবল ফালাক্ব। মিন শার্রি মা খালাক্ব। ওয়ামিন শার্রি গা-সিক্বিন ইযা ওয়াক্বাব। ওয়া মিন শার্রিন্নাফ্ফা-সা-তি ফিল ‘উক্বাদ। ওয়ামিন শার্রি হা-সিদিন ইযা হাসাদ।

অর্থ : আল্লাহর নামে শুরম্ন করছি, যিনি পরম করম্নণাময় ও অতি দয়ালু। বলো, আমি আশ্রয় চাচ্ছি সকাল বেলার রবের নিকট। তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট হতে। অন্ধকার রাতের অনিষ্ট হতে, যখন তা আচ্ছন্ন হয়ে যায়। গিরায় ফুঁৎকারকারিণীদের অনিষ্ট হতে। আর হিংসুকের অনিষ্ট হতে, যখন সে হিংসা করে।

সূরা নাস :

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ

قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ النَّاسِ مَلِكِ النَّاسِ إِلٰهِ النَّاسِ مِنْ شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ اَلَّذِيْ يُوَسْوِسُ فِيْ صُدُوْرِ النَّاسِ مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ

বিসমিল্লা-হির রাহ্মা-নির রাহীম। কুল আ‘ঊযু বিরাবিবন্না-স। মালিকিন্না-স। ইলা-হিন্না-স। মিন শার্©র্রল ওয়াসওয়া-সিল খান্না-স। আল্লাযী ইউওয়াসবিসু ফী সুদূরিন্না-স। মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্না-স।

অর্থ : আল্লাহর নামে শুরম্ন করছি, যিনি পরম করম্নণাময় ও অতি দয়ালু। বলো, আমি আশ্রয় চাচ্ছি মানুষের প্রতিপালকের কাছে। মানুষের অধিপতির কাছে। মানুষের প্রকৃত ইলাহের কাছে। তার অনিষ্ট হতে যে কুমন্ত্রণা দিয়েই গা ঢাকা দেয়। যে মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয়। জিনদের মধ্য থেকে হোক অথবা মানুষদের মধ্য থেকে।

৫. ঘুমানোর সময় ১ম দু‘আ :

হুযায়ফা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন ঘুমাতে যেতেন, তখন এ দু‘আ পড়তেন।

اَللّٰهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوْتُ وَ أَحْيَا

আল্লা-হুম্মা বিস্মিকা আমূতু ওয়া আহ্ইয়া।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার নামে মৃত্যুবরণ করি ও আপনার নামে জাগ্রত হই। [সহীহ বুখারী, হা/৬৩১২; তিরমিযী, হা/৩৪১৭; আদাবুল মুফরাদ, হা/১২০৫; মিশকাত, হা/২৩৮২।]

৬. ঘুমানোর সময় ২য় দু‘আ :

হুযায়ফা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন ঘুমানোর ইচ্ছা করতেন তখন গালের নিচে নিজের ডান হাত রাখতেন এবং এ দু‘আ বলতেন।

اَللّٰهُمَّ قِنِيْ عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَكَ

আল্লা-হুম্মা ক্বিনী ‘আযা-বাকা ইয়াওমা তাব্‘আসু ‘ইবা-দাক।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমাকে আপনার শাস্তি থেকে রক্ষা করম্নন, যেদিন আপনার বান্দাদেরকে পুনরায় জীবিত করবেন। [আবু দাঊদ, হা/৫০৪৭; তিরমিযী, হা/৩৩৯৮; মিশকাত, হা/২৪০০।]

৭. ঘুমানোর সময় ৩য় দু‘আ :

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যখন নিজের বিছানায় আসে, তখন সে যেন এ দু‘আ পড়ে।

بِاسْمِكَ رَبِّيْ وَضَعْتُ جَنْبِيْ وَبِكَ أَرْفَعُه ، اِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِيْ فَارْحَمْهَا،وَاِنْ أَرْسَلْتَهَا، فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِه عِبَادَكَ الصَّالِحِيْنَ

বিসমিকা রাববী ওয়াযা‘তু জাম্বী, ওয়াবিকা আরফা‘উহূ। ইন আমসাক্তা নাফ্সী ফারহামহা, ওয়াইন আরসাল্তাহা ফাহ্ফায্হা বিমা তাহ্ফাযু বিহী ‘ইবা-দাকাস সা-লিহীন।

অর্থ : হে আমার রব! আপনার নামে আমি পিঠ রাখলাম এবং আপনার সাহায্যে তা উঠাব। যদি আপনি আমার জীবন নিয়ে নেন, তাহলে তার প্রতি রহম করম্নন। আর যদি ছেড়ে দেন, তাহলে তাকে হেফাযত করম্নন সেই বস্তু থেকে, যা থেকে আপনার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদেরকে আপনি হেফাযত করে থাকেন। [সহীহ বুখারী, হা/৬৩২০; সহীহ মুসলিম, হা/৭০৬৭।]

৮. ঘুমানোর সময় ৪র্থ দু‘আ :

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন বিছানায় যেতেন তখন এ দু‘আটি পাঠ করতেন।

اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِىْ اَطْعَمَنَا وَسَقَانَا وَكَفَانَا وَاٰوَانَا فَكَمْ مِمَّنْ لَا كَافِىَ لَهٗ وَلَا مُئْوِىَ

আল্হামদু লিল্লা-হিল্লাযী আত্ব‘আমানা ওয়া সাক্বা-না ওয়া কাফা-না ওয়া আ-ওয়া-না, ফাকাম মিম্মান লা-কা-ফিয়া লাহূ ওয়ালা মু’বিয়া।

অর্থ : সকল প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য যিনি আমাদেরকে আহার করিয়েছেন, পান করিয়েছেন, আমাদের প্রয়োজন পূর্ণ করেছেন এবং আমাদের আশ্রয় প্রদান করেছেন। অথচ এমন বহুলোক রয়েছে, যাদেরকে পরিতৃপ্ত করার কেউ নেই এবং যাদেরকে আশ্রয়দানকারী কেউ নেই। [সহীহ মুসলিম, হা/৭০৬৯; আবু দাঊদ, হা/৫০৫৫; তিরমিযী, হা/৩৩৯৬; মিশকাত, হা/২৩৮৬।]

৯. ঘুমানোর সময় ৫ম দু‘আ :

বারা ইবনে আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাকে বললেন, তুমি যখন বিছানায় শয়ন করার ইচ্ছা করো, তখন সালাতের ওযুর মতো ওযু করবে, তারপর ডান কাতে শয়ন করে এ দু‘আ পড়বে, এতে তুমি যদি ঘুমের মধ্যে মারা যাও তাহলে স্বভাব ধর্মের (ইসলামের) উপর মারা যাবে। আর এ দু‘আটি তোমার শেষ বাক্যে পরিণত করো।

اَللّٰهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفْسِيْ إِلَيْكَ، وَوَجَّهْتُ وَجْهِيْ إِلَيْكَ، وَفَوَّضْتُ أَمْرِيْ إِلَيْكَ ، وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِيْ إلَيْكَ ، رَغْبَةً وَّرَهْبَةً إِلَيْكَ ، لَا مَلْجَأَ وَلَا مَنْجَا مِنْكَ إِلَّا إِلَيْكَ ، اٰمَنْتُ بِكِتابِكَ الَّذِيْ أَنْزَلْتَ، وَبِنَبِيِّكَ الَّذِيْ أَرْسَلْتَ

আল্লা-হুম্মা আসলামতু নাফ্সী ইলাইক, ওয়াওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজ্হী ইলাইক, ওয়াফাওওয়ায্তু আমরী ইলাইক, ওয়া আলজা’তু যাহ্রী ইলাইক, রাগ্বাতাও ওয়ারাহ্বাতান ইলাইক, লা মালজাআ ওয়ালা মানজা মিন্কা ইল্লা ইলাইক, আ-মানতু বিকিতা-বিকাল্লাযী আনযালতা, ওয়া বিনাবিয়্যিকাল্লাযী আরসালতা।

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনার কাছে আমার জীবন সমর্পণ করলাম, আপনার দিকে আমার চেহারা নিবদ্ধ করলাম, আপনার উদ্দেশ্যে আমার কাজ-কর্ম নিবেদন করলাম এবং আপনার দিকে আমার পিঠ লাগালাম অর্থাৎ আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি)। আপনার প্রতি আগ্রহে ও শাস্তির ভয়ে এসব কাজ করছি। আপনার নিকট ছাড়া আর আশ্রয় পাওয়ার ও (নিজেকে) রক্ষা করার স্থান নেই। আপনি যে কিতাব নাযিল করেছেন তার উপর এবং যে নবী পাঠিয়েছেন তার উপর আমি ঈমান এনেছি। [সহীহ বুখারী, হা/২৪৭, ৭৪৮৮; সহীহ মুসলিম, হা/৭০৫৮; আবু দাঊদ, হা/৫০৪।]

১০. পার্শ্ব পরিবর্তনের দু‘আ :

আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন পার্শ্ব পরিবর্তন করতেন, তখন এই দু‘আ বলতেন।

لَا إلٰهَ إِلَّا اللهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا الْعَزِيْزُ الْغَفَّارُ

লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হুল ওয়া-হিদুল ক্বাহ্হা-র, রাববুস্সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ওয়ামা বাইনাহুমাল ‘আযীযুল গাফ্ফা-র।

অর্থ : আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নেই, তিনি একক ও শক্তিশালী। আসমান-জমিন এবং এতদুভয়ের মাঝে যা কিছু রয়েছে, সবকিছুর প্রতিপালক তিনি। তিনি পরাক্রমশালী ও ক্ষমাশীল। [মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/১৯৮০; সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৭৬৪১; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৫৫৩০; জামেউস সগীর, হা/৮৮২২; সিলসিলা সহীহাহ, হা/২০৬৬।]

১১. নিদ্রাবস্থায় ভয় পেলে দু‘আ :

আমর ইবনে শু‘আইব (রাঃ) তার পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ ঘুমের মধ্যে ভয় পায়, তখন সে যেন এ দু‘আ পড়ে।

أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِه وَعِقَابِه وَشَرِّ عِبَادِه وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ وَأَنْ يَّحْضُرُوْنِ

আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত্ তা-ম্মা-তি মিন গাযাবিহী ওয়া‘ইক্বা-বিহী ওয়া শার্রি ‘ইবা-দিহী ওয়া মিন হামাযা-তিশ শায়া-ত্বী-নি ওয়াআই ইয়াহ্যুরূন।

অর্থ : আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালিমাসমূহের মাধ্যমে আশ্রয় চাচ্ছি তার ক্রোধ ও শাস্তি হতে, তার বান্দার অনিষ্ট হতে এবং শয়তানের খটকা হতে, আর সে যেন আমার নিকট উপস্থিত হতে না পারে। [মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/১৭০৪; আবু দাঊদ, হা/৩৮৯৫; তিরমিযী, হা/৩৫২৮; মুসনাদে আহমাদ, হা/৬৬৯৬; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/২০১০; সিলসিলা সহীহাহ, হা/২৬৪; মিশকাত, হা/২৪৭৭।]

১২. নিদ্রাবস্থায় ভালো বা খারাপ স্বপ্ন দেখলে করণীয় :

আবু ক্বাতাদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, উত্তম স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়। আর খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়। কাজেই তোমাদের যে কেউ ভালো স্বপ্ন দেখে, সে যেন এমন ব্যক্তির নিকট প্রকাশ করে যাকে সে ভালোবাসে। আর যদি কেউ মন্দ স্বপ্ন দেখে, তাহলে সে যেন এর ক্ষতি থেকে এবং শয়তানের অনিষ্ট থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চায় এবং তিন বার বাম দিকে থুথু ফেলে। আর স্বপ্নটি যেন কারো কাছে না বলে, তাহলে তা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। [মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/১৭১৬; সহীহ বুখারী, হা/৩২৯২; সহীহ মুসলিম, হা/৬০৩৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/২২৬১৭; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১৫৯৯; মিশকাত, হা/৪৬১২।]

ঘুমের মধ্যে মন্দ স্বপ্ন দেখলে তিন বার বাম দিকে থুথু ফেলবে, তারপর তিন বার ‘‘আ‘ঊযু বিল্লা-হি মিনাশ্শাইত্বা-নির রাজীম’’ পাঠ করে পার্শ্ব পরিবর্তন করবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন