hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সুন্নাত

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৫৭
কুরআন তিলাওয়াতের ফযীলত
কুরআন শিক্ষা করা এবং অপরকে শিখানো এমন একটি মহৎ কাজ যে, এর মাধ্যমে বান্দা সকল মানুষের উপর শ্রেষ্ঠ মর্যাদার আসনে উন্নীত হতে পারে। এ কথা আল্লাহর নবী ﷺ বলেছেন। উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেন, ‘‘তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সর্বোত্তম যে নিজে কুরআন শিক্ষা করে এবং অপরকেও শিক্ষা দেয়।’’ [সহীহ বুখারী, হা/৫০২৭; আবু দাউদ, হা/১৪৫৪; তিরমিযী, হা/২৯০৭; মিশকাত, হা/২১০৯।]

কুরআন পাঠকারীর জন্য কিয়ামতের দিন এই কুরআনই শাফায়াত করবে, যাতে করে পাঠকারী জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেয়ে জান্নাত লাভ করতে পারে। কুরআন পাঠ অন্তরের ময়লা দূর করে। আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বার বার কুরআন নিয়ে গবেষণা করার জন্য আহবান জানিয়েছেন। আত্মার প্রশান্তিতে কুরআন তেলাওয়াতের ভূমিকা অপরিসীম। কুরআনে বর্ণিত হয়েছে-

أَلَا بِذِكْرِ اللهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوْبُ

‘‘সাবধান! আল্লাহর স্মরণেই আত্মা প্রশান্তি লাভ করে।’’ (সূরা রাদ- ২৮)

কুরআন তিলাওয়াত একটি উত্তম ইবাদাত। কুরআন ও হাদীসে কুরআন তেলাওয়াতের প্রতি খুবই উৎসাহ দেয়া হয়েছে এবং এর যথেষ্ট ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছে। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-

اِنَّ الَّذِيْنَ يَتْلُوْنَ كِتَابَ اللهِ وَاَقَامُوا الصَّلَاةَ وَاَنْفَقُوْا مِمَّا رَزَقْنَاهُمْ سِرًّا وَّعَلَانِيَةً يَّرْجُوْنَ تِجَارَةً لَّنْ تَبُوْرَ

‘‘নিশ্চয় যারা কুরআন তেলাওয়াত করে, নামায কায়েম করে এবং আমার দেয়া রিযিক হতে গোপনে ও প্রকাশ্যে কিছু অংশ দান করে তারা এমন ব্যবসার আশা করে যাতে কখনো লোকসান হবে না।’’ (সূরা ফাতির- ২৯)

এ আয়াতে কুরআন পড়াকে একটি লাভজনক ব্যবসা বলা হয়েছে। নবী ﷺ বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি কুরআনের একটি অক্ষর পড়বে সে একটি নেকী পাবে আর একটি নেকী হবে দশটি নেকীর সমান। আমি বলছি না আলিফ, লাম, মীম সবমিলিয়ে একটি হরফ; বরং আলিফ একটি অক্ষর, লাম একটি অক্ষর, মীম একটি অক্ষর।’’ [তিরমিযী হা/২৯১০।]

কুরআন পাঠ করলে বা শুনলে ঈমান বাড়ে :

اِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ الَّذِيْنَ اِذَا ذُكِرَ اللهُ وَجِلَتْ قُلُوْبُهُمْ وَاِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ اٰيَاتُهٗ زَادَتْهُمْ اِيْمَانًا وَّعَلٰى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُوْنَ

মুমিন তো তারাই, যখন আল্লাহকে স্মরণ করা হয় তখন তাদের হৃদয় প্রকম্পিত হয়, আর যখন তাঁর আয়াতসমূহ তাদের নিকট পাঠ করা হয় তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং তারা তাদের প্রতিপালকের উপরই ভরসা করে। (সূরা আনফাল- ২)

কুরআন পাঠকারীর মর্যাদা :

আয়েশা (রাঃ) নবী ﷺ হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, কুরআন পাঠকারী হাফেয উচ্চমর্যাদার অধিকারী ফেরেশতাদের সাথে থাকবে। আর যে কুরআন পাঠ করে আর তা হিফয করা তার জন্য অতীব কষ্টকর হলেও তা হিফয করতে চেষ্টা করে, সে দ্বিগুণ পুরষ্কার লাভ করবে। [বুখারী হা/ ৪৯৩৭।]

কুরআন পাঠকারী ও আমলকারীর দৃষ্টান্ত :

আবূ মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, যে মুমিন কুরআন পাঠ করে এবং সে অনুযায়ী আমল করে, তার উদাহরণ ঐ লেবুর ন্যায়, যা খেতে সুস্বাদু এবং তার ঘ্রাণও মন মাতানো সুগন্ধযুক্ত। পক্ষান্তরে যে মুমিন কুরআন পাঠ করে না, কিন্তু কুরআনের অনুযায়ী আমল করে, তার উদাহরণ হচ্ছে ঐ খেজুরের ন্যায়, যা খেতে সুস্বাদু কিন্তু কোন সুগন্ধ নেই।

আর সেসব মুনাফিক, যারা কুরআন পাঠ করে কিন্তু আমল করে না, তাদের উদাহরণ হচ্ছে ঐ রায়হানা ফলের ন্যায়, যার মনমাতানো সুগন্ধ আছে, কিন্তু খেতে একেবারেই তিক্ত আর যে মুনাফিক কুরআন পাঠও করে না এবং তদানুসারে আমলও করে না, তার উদাহরণ হাঞ্জালার (মাকাল ফলের) ন্যায়, যা খেতেও তিক্ত এবং দুর্গন্ধযুক্ত। [বুখারী হা/ ৫০৫৯।]

ব্যাখ্যা বুঝে পড়তে হবে :

না‘ফে (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আবদুল্লাহ ইবনে উমর যখন কুরআন মাজীদ পাঠ শুরম্ন করতেন তখন শেষ না করা পর্যন্ত কারো সঙ্গে কথা বলতেন না। আমি একদিন তাঁর নিকট গেলাম। তিনি তখন সূরা বাকারা পাঠ করছিলেন। পাঠ করতে করতে তিনি এক জায়গায় থেমে গেলেন। অতঃপর আমাকে প্রশ্ন করলেন, কী বিষয়ে আয়াতটি নাযিল হয়েছে জানো? আমি বললাম, না। তখন তিনি বললেন, অমুক অমুক বিষয়ে নাযিল হয়েছে। তারপর তিনি আবার পাঠ করতে শুরম্ন করলেন। [বুখারী হা/ ৪৫২৬।]

সাত দিনের কমে খতম দেয়া ঠিক নয় :

আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ আমাকে বললেন, পূর্ণ একমাস সময়ের মধ্যে কুরআন (পাঠ করা) শেষ কর। আমি বললাম, কিন্তু আমি এর চেয়েও অধিক (পড়ার) ক্ষমতা রাখি। তখন নবী ﷺ বললেন, তাহলে প্রতি সাতদিনে একবার কুরআন শেষ কর এবং এর চেয়ে কম সময়ের মধ্যে কুরআন শেষ করো না। [বুখারী হা/ ৫০৫৪।]

ছোটদেরকে কুরআন পড়ানো উচিত :

ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রাসূল ﷺ যখন মৃত্যুবরণ করেন তখন আমি ছিলাম দশ বছরের এক বালক। এ বয়সেই আমি মুহকাম সূরাসমূহ (সূরা হুজুরাত থেকে শেষ পর্যন্ত) শিখে ফেলেছিলাম। [বুখারী হা/ ৫০৩৫।]

কুরআন জানার জন্য সাহাবীদের আগ্রহ :

মাসরূক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্র শপথ, যিনি ব্যতীত আর কোন মা‘বূদ নেই, আল্লাহর কিতাবে এমন কোন সূরা নেই যার সম্পর্কে আমি জানি না যে, তা কখন এবং কোথায় নাযিল হয়েছে, আর আল্লাহর কিতাবে এমন কোন আয়াতও নেই যা আমি জানি না যে, তা কার সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। তারপরও আমি যদি জানতাম যে, এমন কোন ব্যক্তি রয়েছে, যে আমার চেয়ে কুরআন ভাল জানে এবং সেখানে উট পৌঁছতে পারে, তবে আমি উটে আরোহণ করে হলেও সেখানে গিয়ে পৌঁছতাম। [বুখারী হা/ ৫০০২।]

কুরআনের সাথে লেগে থাকতে হবে :

ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেন, যে লোক কুরআন মুখস্থ করে হৃদয়ে রাখে, তার দৃষ্টান্ত ঐ উটের মালিকের ন্যায়, যে উট বেঁধে রাখে। যদি সে উট বেঁধে রাখে তবে তার নিয়ন্ত্রণে থাকে, কিন্তু যদি বন্ধন খুলে দেয় তবে তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। [বুখারী হা/ ৫০৩১।]

বিশেষভাবে লক্ষণীয় :

বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে, কুরআন বুঝে পড়তে হবে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হল : বর্তমানে অধিকাংশ মুসলমান এমন আছেন যারা অর্থ না বুঝে শুধুমাত্র কুরআনের শব্দগুলো পড়েন এবং প্রতি হরফে দশ নেকী অর্জনের চিন্তা করেন। অথচ কুরআন না বুঝে পড়লে এর দ্বারা কুরআন নাযিলের আসল উদ্দেশ্য সফল হয় না। মানুষ কুরআন পড়বে, বুঝবে এবং কুরআন অনুযায়ী তাদের জীবন পরিচালনা করবে- এটাই হল কুরআন নাযিলের মূল উদ্দেশ্য।

কুরআন তিলাওয়াতের ফযীলত সংক্রান্ত হাদীসগুলোর উদ্দেশ্য হচ্ছে কুরআন পড়ার প্রতি মানুষকে উৎসাহিত করা। না বুঝে পড়লে পড়ার হক আদায় হয় না। না বুঝে একশত খতম দেয়ার চেয়ে কেউ যদি দু’চারটি আয়াত অর্থ ও ব্যাখ্যাসহ বুঝে পড়ে এবং এর উপর আমল করতে পারে তবে এটা তার জন্য হাজারগুণ উত্তম হবে। কুরআন পড়ার সময় আমরা খেয়াল রাখব :

১। যেখানে আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে নিয়ামত দানের ওয়াদা দিয়েছেন আমরা তা পাওয়ার আশা করব।

২। যেখানে শাস্তির বর্ণনা দিয়েছেন, আমরা সে শাস্তিকে ভয় করব।

৩। যেখানে কিছু করার আদেশ দিয়েছেন আমরা তা পালন করব।

৪। যেখানে কিছু করতে নিষেধ করেছেন আমরা তা করব না।

৫। যেখানে তিনি উপদেশ দিয়েছেন আমরা সে উপদেশ গ্রহণ করব।

৬। যেখানে তিনি নবী-রাসূলদের কিস্সা-কাহিনী বর্ণনা করেছেন, আমরা এসব থেকে শিক্ষা গ্রহণ করব এবং আমাদের ঈমানকে আরো মজবুত করব।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন