hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

চেপে রাখা ইতিহাস

লেখকঃ গোলাম আহমাদ মোর্তজা

২৩
সম্রাট হুমায়ুন
বাবরের পুত্র সম্রাট হুমায়ুন ২৩ বছর বয়সে পিতাকে হারান। হুমায়ুনও সাধু চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। তার চেহারা ও পোশাক পরিচ্ছদ পিতার মতই ছিল। তিনি ছিলেন নবী (সাঃ)-এর চিন্তাধারায় বিশ্বাসী। ১৫৩০ থেকে ১৫৫৬ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি বাদশাহ ছিলেন। তিনি একজন পরহেযগার মুসলমান ছিলেন। কিন্তু তাকে আফিমখোর বলে মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি একজন বিশিষ্ট বীর ও নিরপেক্ষ শাসক ছিলেন। কঠিন রোগমুক্তির পরেই পিতার মৃত্যুতে শোকার্ত হুমায়ুন দেখলেন, গুজরাটে বাহাদুর শাহ নামে এক প্রতাপশালী রাজা নিজ শক্তি বৃদ্ধি ও রাজ্যসীমা বৃদ্ধিতে চলমান, অন্যদিকে বিহারে পাঠনবীর শের আফগান প্রচল শক্তিতে দন্ডায়মান।

বাহাদুরের বিরুদ্ধে হুমায়ুন যুদ্ধ করে তাকে পরাস্ত করলেন। তারপর বিপুল বিক্রমে ১৫৩৯ খৃষ্টাব্দে চৌসার যুদ্ধে শের আফগানকে পরাস্ত করার চেষ্টা করলে, কিন্তু নিজেই পরাজিত হলেন। আসলে এ যুদ্ধ ধর্মের জন্য বা শৃঙ্খলার জন্য ছিলনা, যুদ্ধে ছিল শুধু বংশীয় মর্যাদা রক্ষার প্রশ্ন। তাই ১৫৪০ খৃস্টাব্দে আবার উভয়ে যুদ্ধ করলেন এবং শের আফগান দিল্লি ও আগ্রা দখল করলেন। একথা সঠিক যে শের আফগানের ধর্মগুণ, বীরত্ব, মহত্ব, চরিত্র, কূটনীতি ও রাজনৈতিক ক্ষমতা হুমায়ুন অপেক্ষা নিকৃষ্ট ছিল না বরং উক্তৃষ্টই ছিল। যাই হোক, হুমায়ুনকে পারস্যে পলায়ন করতে হয়। এ দুরবস্থার মধ্যে অমরকোট নামক স্থানে আকবর নামে তার এক পুত্রের জন্ম হয়।

পারস্য সম্রাটের সাহায্য পেয়েই হুমায়ূন ১৫৫৫ খৃস্টাব্দে ভারত আক্রমণ করেন দিল্লি ও আগ্রা দখল করে পূর্ব মর্যাদা ফিরিয়ে আনলেন। বিজয়ী হবার কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি তাঁর লাইব্রেরীতে সিড়ি থেকে নামতে গিয়ে পড়ে আহত হন। আল্লাহর নাম বারবার উচ্চারণ করতে লাগলেন আর জানালেন সকলকে শেষ বিদায়। সেটা ছিল ১৫৫৬ খৃস্টাব্দ।

উদারতা এবং কৃতজ্ঞতা স্বীকার হুমায়ুনের চরিত্রগত গুণ ছিল। একবার হুমায়ুন যুদ্ধক্ষেত্র থেকে খরস্রোতা নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। ফলে প্রাণ বাঁচান দায় হয়েছিল। সে সময় এক ভিত্তিওয়ালা তার ছাগল-চামড়ার ভিস্তিটি তাঁকে সাঁতার কেটে পৌঁছে দিয়ে তার প্রাণ রক্ষা করে উপকার করেছিলেন। হুমায়ুন বলেছিলেন, আমি যদি দিল্লীর সিংহাসন পাই তুমি দেখা করবে, আমি তাই-ই উপহার দেব যা তুমি চাইবে।' যখন হুমায়ুন দিল্লীর সিংহাসন পেলেন সে সময় ছেড়া ময়লা জামা পরিহিত কাধে ছাগল-চামড়ার ভিত্তি নিয়ে ভিস্তিওয়ালা হুমায়ুনের ফটকপ্রহরীকে প্রস্তাব করলেন, 'আমায় বাদশাহর কাছে যেতে দাও।' প্রহরী ক্রুদ্ধ হয়ে গুপ্তচর অথবা পাগল মনে করে আটক রেখে বাদশাহকে জানাতেই কর্মরত হুমায়ুন জানালেন, 'খুব সম্মানজনকভাবে একেবারে আমার কাছে নিয়ে এস।

অদ্ভুত ভেবে ভিস্তিওয়ালা রাজপ্রাসাদে হুমায়ুনের কক্ষে প্রবেশ করতেই হুমায়ুন ছুটে গিয়ে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলেন, 'আমি আপনার দ্বারা উপকৃত। বলুন আপনি কি চান? আমি ইনশাআল্লাহ্ বিনা দ্বিধায় আপনাকে তাই দেব।' ভিত্তিওয়ালা বলেন, আমি চাই তোমাকে সরিয়ে সিংহাসনে বসতে।' সমস্ত সভাসদ অবাক। হুমায়ুন মাথার মুকুট খুলে ভিত্তিওয়ালার মাথায় পরিয়ে তাকে সিংহাসনে বসিয়ে সভাসদকে জানিয়ে দিলেন, আজ থেকে ইনিই বাদশাহ। আমি এঁর নগণ্য খাদেম। গোটা দিল্লিতে তোলপাড়। হুমায়ুন বহুভাবে জিজ্ঞাসিত হলেন কেন তিনি এরকম করলেন? হুমায়ু, উত্তর দিলেন, পবিত্র কুরআনে আছে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা অবৈধ। আমি তো ডুবে মরেই যেতাম, তাঁর উপকারে তিনি যা চাইবেন তাই বলে স্বীকার করেছিলাম। যাই হোক, এক দিন এক রাত্রি যাপনের পর মহামান্য ভিস্তিওয়ালা হুমায়ুনকে

আলিঙ্গন করে তার মাথায় আবার মুকুট পরিয়ে তাকে সিংহাসনে বসিয়ে হাত তুলে দোয়া ও করমর্দন করে বলে গেলেন। আমি বড় পুরস্কার পেয়েছি, তা হচ্ছে আপনার মানবতা ও চরিত্রের দৃঢ়তা।'

আর একবার বিধবা রাণী কর্ণবতী তার শিশুপুত্রকে নিয়ে রাজ্য সামলাতে পারছিলেন না। ঠিক সে সময় তাঁকে আক্রমণ করার প্রস্তুতি চলে। তিনি তখন কয়েক গাছি সূতার বৃত্তাকার, যাকে ‘রাখী' বলা হয়, পাঠিয়ে হুমায়ুনকে লিখেছিলেন, 'আমি আপনাকে তাই হিসেবে এ রাখী পাঠালাম, আপনি হাতে পরবেন এবং আমাকে বোন হিসেবে ও আমার শিশুপুত্রকে ভাগ্নে হিসেবে সসৈন্যে এসে রক্ষা করবেন।' হিন্দু রমনীর সে সূতা হুমায়ুন অশ্রু সজল নয়নে হাতে পরলেন এবং স্বয়ং একদল সৈন্য নিয়ে হিন্দু বোন ভাগ্নে আর তাদের রাজ্য রক্ষা করতে।

একটি যুদ্ধ যাত্রায় লাখ লাখ টাকা খরচ-কিন্তু তা অল্প মূল্যের সুতার চেয়ে কম দাম মনে করে দীর্ঘদিন পর পৌঁছালেন সে বোনের রাজ্যে। কিন্তু তাঁর পৌছাবার পূর্বেই রাণী ভয়ে ভীত হয়ে বিষপান করে দেহত্যাগ করেছিলেন। হুমায়ুন সে সংবাদে এত কেদেছিলেন যে হঠাৎ কেহ দেখলে অবাক না হয়ে পারত না। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক বীর বাদশাহ তার পাতান বোনের জন্য এমন শিশুর মত কাঁদতে পারেন। ঠিক এ সুযোগেই শেরশাহ শক্তি সঞ্চয় করে হুমায়ুনকে পরাস্ত করে দিল্লী ও আগ্রা দখল করেছিলেন। (শিবরতন মিত্রের লেখা ‘প্রসাদ কুসুম' দ্রষ্টব্য)

অতএব এরকম এক মহান বাদশাহের চরিত্রে আফিমখোরের অভিযোগ আরোপ করে ইতিহাসের পাতাকে যেভাবে কলুষিত করা হয়েছে তা আজ আশ্চর্যের বিষয় সন্দেহ কোন সন্দেহ নেই। (হুমায়ুনের পুত্র আকবর ১৫৫৬ - ১৬০৫ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। এ সম্পর্কে আধুনিক গবেষণামূলক সুদীর্ঘ আলোচনার প্রয়োজন আছে বলে এটা আওরঙ্গজেবের পাশাপাশি আলোচিত হবে।)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন