hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

চেপে রাখা ইতিহাস

লেখকঃ গোলাম আহমাদ মোর্তজা

৪৫
প্রকৃত স্বাধীনতা সংগ্রামের চাপা দেয়া ইতিহাস
বেরেলীর সৈয়দ আহমদ শহীদের (রহঃ) নিহত হওয়ার পর যেসব আন্দোলন, বিদ্রোহ বা সংগ্রাম সংঘটিত হয়েছিল, সেগুলোকে বিকৃত করে তাঁদের নাম পাল্টে কোনটাকে বলা হয়েছে সিপাহী বিদ্রোহ, কোনটাকে বলা হয়েছে ওহাবী আন্দোলন, ফারায়েজী আন্দোলন, মহম্মদী আন্দোলন, আবার কোনটাকে হিন্দু-মুসলমানের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বলে চালিয়ে দেয়া হয়েছে। ওহাবী নেতাদের ‘ওহাবী' বলা মানে তাদের শ্রদ্ধা করা তো নয়ই বরং নিশ্চিতভাবে গালি দেয়াই হয়, যেহেতু সে মহান বিপ্লবীরাই তাদেরকে ‘ওহাবী' নামে আখ্যায়িত করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। বাঙ্গালী বুদ্ধিজীবী ও বিচ্ছিন্নতাবাদ' পুস্তকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অমলেন্দু দে-ও একথা উল্লেখ করেছেন (পৃষ্ঠা ৯৫)

সেজন্য আমরা আমাদের আলোচনায় সিপাহী বিদ্রোহ' এবং ওহাবী' বা ফারায়েজী আন্দোলনের পরিবর্তে স্বাধীনতা সংগ্রাম', 'মহাবিপ্লব' মহাবিদ্রোহ' এবং ব্যক্তি বিশেষের ক্ষেত্রে ‘ওহাবী', ফারায়েজী ও মুহাম্মদী' শব্দের পরিবর্তে বিপ্লবী সংগ্রামী’ প্রভৃতি সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করা ভাল মনে করি। এমনকি উদ্ধৃতির কোন কোন ক্ষেত্রেও আমরা এ শব্দগুলো বাদ দিয়ে মূল শব্দের প্রথম অক্ষর বন্ধনীর মধ্যে রাখব-যেমন ওহাবী বা অহাবীর ক্ষেত্রে (ও, বা অ.) ফারায়েজীর ক্ষেত্রে (ফ.) ইত্যাদি। উদ্দেশ্য হল, ভবিষ্যতে যাতে এ কল্পিত, মিথ্যা শব্দগুলোর বহুল প্রচার না হয়।

একসঙ্গে আরও জানিয়ে রাখছি যে, অনেকক্ষেত্রে দেখা যায়, অনেকের একাধিক নাম থাকে। যেমন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের, অপর নাম ছিল ‘গদাধর। এখন ইতিহাসে যদি তাঁকে পদাধর বলে প্রকাশ হয়, তাহলে তা অনিচ্ছকৃত হলে অসাবধানতা এবং ইচ্ছাকৃত হলে অসভ্যতা বলে মনে করা যেতে পারে। তেমনি, স্বামী বিবেকানন্দের পূর্বনাম ছিল নরেন্দ্রনাথ। তার আগের নাম ছিল বীরেশ্বর। সে বীরেশ্বরের সংক্ষিপ্ত বীরে' থেকে ক্রমে ‘বিলে' বলেই তাকে ডাকা হত (মীদের ছোটবেলাঃ বিমল ঘোষ, পৃষ্ঠা ৮৯)

এখন তার স্বর্ণোজ্জ্বল ইতিহাস যদি স্বামী বিলে বরে আরম্ভ ও শেষ করা হয়, তাহলে তা হবে অতীব দুঃখের। কিন্তু অনেকক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বিখ্যাত বিখ্যাত নেতাদের আসল নামের পরিবর্তে, জানিনা কোন উদ্দেশ্যে ছেলেবেলার সেকেলে আজেবাজে নাম ব্যবহার করা হয়েছে-যেমন তিতুমীর, নোয়ামি, দুদু প্রভৃতি। এ ঐতিহাসক ভুলটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমরা তাই তাদের আসল ও সুন্দর নাম ব্যবহার করার পক্ষপাতি। প্রথমে ওহাব জিনিসটা কি সে সম্বন্ধে সামান্য আলোচনা করছি। আরবদেশে ১৭০৩ খৃস্টাব্দে আবদুল ওহাবের ছেলে মুহমদের জন্ম হয়। আরব দেশের নিয়মানুযায়ী এ নাম মুহমদ ইবুনে আবদুল ওহাব বলে বর্ণিত হয়। জন্মস্থানের নাম ছিল নজদ। এ ওহাবী আন্দোলনের নায়কের নাম আসলে মুহাম্মদ। ইংরেজদের কারসাজিতে ছেলেদের পরিবর্তে বাপের নামেই ইতিহাস তৈরী হয়েছে, তাদের রাখা এ নাম হল ওহাব।

আরবদেশ যখন শিরক, বিদআতি ও অধর্মীয় আচরণে ছেয়ে গিয়েছিল, তখন তা রুখতে এ ওহাবের পুত্র মুহাম্মদ প্রতিবাদী দল গড়ে তোলেন। ক্রমে ক্রমে তা রাজনৈতিক সংঘর্ষের রূপ নয়। ১৭৪৭ সনে বিয়াদের শেখের সাথে সংঘর্ষ হয়। ১৭৭৩ সনে রিয়াদের শাসন দাহহাম আবদুল ওহাবের পুত্র মুহাম্মাদের কাছে ভীষণভাবে পরাজিত হন। আরববাসীরা এ ঘটনার পর দলে দলে ভাঁর পতাকাতলে সমবেত হয়। অবশেষে ১৭৮৭ খৃষ্টাব্দে তিনি মারা যান। ওহাবী আন্দোলনের ১১৬ পৃষ্ঠায় আছে-“আবদুল ওহাবের ধর্মীয় শিক্ষা ও মতবাদের আলোচনায় প্রথমেই বলে রাখা ভাল, আরবদেশে ওহাবী নামাঙ্কিত কোন মাজহাবীর রা তরিকার অস্তিত্ব নেই। এ সংজ্ঞাটির প্রচলন আরবদেশের বাইরে এবং এ মতানুসারীদের বিদেশী দুশমন, বিশেষতঃ তুর্কীদের ও ইওরোপীয়দের দ্বারা ওহাবী' কথাটির অর্থ এবং তাদের মধ্যেই প্রচলিত। কোনও কোনও ইউরোপীয় লেখক, যেমন মীর (Nebuh) আবদুল ওহাবকে পা বলেছেন। এসব উদ্ভট চিন্তারও কোনো যুক্তি নেই। প্রকৃতপক্ষে আব্দুল ওহাব কোনও মাজহাবও সৃষ্টি করেননি, চার ইমামের অন্যতম ইমাম

খুলের মতানুসারী ছিলেন তিনি, এবং তার প্রযত্ন ছিল, বিশ্বনবীর এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের আমলে ইসলামের যে রূপ ছিল, সে আদিম সহজ সরল ইসলামে প্রত্যাবর্তন করা (জন্সি আঃ মওদুদ)। তারিখ হিসেব করে দেখা যায়, আরবের মুহম্মদ ইবনে আবদুল হারে যখন মৃত্যু হলেন সৈয়দ আহমদ বেরেলীর বয়স মাত্র এক বছর। তার সাথে যে এর কোন যোগাযোগ ছিল, তা সুশই প্রমাণ হয়। কিতাবুত তাওহীদে হল মাজহাব অনুযায়ী আবদুল ওহাবের পুত্র মুহাম্মদ যা যা নির্দেশ দিয়েছিলেন, অ বিস্তারিত উল্লিখিত হয়েছে।

তবে তার সংক্ষেপ হচ্ছে আল্লাহ ছাড়া কারও উপাসনা করা এবং পীর ও ওলীদের কবরে গিয়ে তাঁদের কাছ থেকে সাহায্য চাওয়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ; মাধ্যম ব্যতিরুেকে সরাসরি আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে। আল্লাহ ছাড়া কারও নামে মান্নতর শিক। কোরআন হাদীসের সরল অর্থকে বেঁকিয়ে ব্যাখ্যা করা নিষিদ্ধ। তাছাড়া জামাতের সাথে নামায পড়া তাঁর সময় ছিল জরুরী। ধুমপানকারীদের শাস্তি ছিল বেত্রাঘাত। মুসলমান দাড়ি কামালেও শাস্তির উপযুক্ত। যাকাত ঠিকমত না দিলে সেও

শাস্তিরযোগ্য। শুধু কলেমা পড়ে আল্লাহ নাম নিয়ে কেন হালাল পশু জবেহ করলেও তা হালাল খাদ্য হবে না, যদি তার চরিত্র মোটামুটি কলঙ্কমুক্ত না হয়। তাছাড়া তিনি কবরের উপর সৌধ নির্মাণ, কবরকে ইট ও পাথর দিয়ে বাঁধান প্রভৃতির উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন। এগুলো শুধু তার মুখের কথাই ছিলনা, বাস্তবে রূপ দিতে মক্কা ও মদীনার অনেক নামজাদা মনীষীর কবর তিনি ভেঙে দিয়েছিলেন।

অন্যদিকে আমরা দেখতে পাচ্ছি, দিল্লীর শাহ ওলিউল্লাহ থেকে শুরু করে তার পুত্র, শিষ্য ও ছাত্রগণ এমনকি শহীদ সৈয়দ আহমদ এবং তাঁর অনুগামীদের সকলেই মুসলমানদেরকে শরীয়তের উপর প্রত্যাবর্তন করার তাগিদ দিয়েছিলেন। ফলে কবর বাঁধন বা কবরের উপর সৌধ নির্মাণ করা থেকে ক্রমে মুসলমানরা বিরত হতে থাকে। ইংরেজরা মুসলমান বিপ্লবীদের মতিগতি লক্ষ্য করে, এ আন্দোলন যে তাদের বিরুদ্ধে অর্থ আগ্নেয়গিরির সৃষ্টি করছে তা বুঝতে পেরেছিল।

তাই তারা কতকগুলো দরিদ্র ও দুর্বলমনা আলেমকে টাকা দিয়ে ঘুরিয়ে তাদের মুখ দিয়ে বলিয়েছিল নিল-তোমরা যুগ যুগ ধরে যা করে আসছি, তা করতে থাক। এ বিপ্লবীরা আসলে ওহাব; ওরা নবী, সাহাবী ও শহীদের কবর ভাঙার দল। ইংরেজ তাদের প্রচারে যোগ দিয়ে বলল, ১৮২২ খৃষ্টাব্দে সৈয়দ আহমদ মক্কায় যান, ওখানে গিয়েই তিনি ওহাবী মতে দীক্ষা গ্রহণ করেন। অথচ এটা একেবারে মিথ্যা কথা। প্রত্যেক সক্ষম মুসলমানের জীবনে একবার মক্কায় গিয়ে হজ্ব করা অবশ্য কর্তব্য হিসেবেই তিনি গিয়েছিলেন। তাঁর হজে যাওয়ার পূর্বের এবং পরের কার্যাবলীর সাথে আরবের ওহাবী আন্দোলনের কোন যোগাযোগই ছিলনা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন