hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

চেপে রাখা ইতিহাস

লেখকঃ গোলাম আহমাদ মোর্তজা

৫১
চেপে রাখা মোপলা বিদ্রোহ
মোপলা' মালাবারের একটা মুসলমান সম্প্রদায়। এদের সম্বন্ধে কিছু ইঙ্গিত পূর্বেই দেয়া হয়েছে। মোপলাদের বড় দোষ অথবা গুণ হচ্ছে, তারা বরাবর ইংরেজ বিরোধী। তাঁরা ছোট বড় অসংখ্য বিদ্রোহ ও বিপ্লবের সৃষ্টি করেছেন। তার মধ্যে পাঁচটি বিদ্রোহ বিপ্লবের দাবীদার। সাতান্নর বিপ্লবের পরেও তাদের এ বিদ্রোহগুলো যথাক্রমে হয়েছিল ১৮৭৩, ১৮৮৫, ১৮৯৪, ১৮৯৬, ১৯২১ খৃষ্টাব্দে। বিপ্লবীদের একশ ভাগই ছিলেন মুসলমান। আর যেহেতু সেখানকার রাজামহারাজা-জমিদাররা বারেবারে ইংরেজদের হয়ে সাহায্য করে এসেছেন, তাই বিপ্লবী মোপলা বাহিনী হিন্দু বিত্তবানদেরও শত্রু মনে করতে দ্বিধা করেনি উপেক্ষিত শোষিত অনুন্নত নিম্নেশ্রেণীর অমুসলমানরা প্রতিবারেই মোপলাদের সাথে যোগ দেয়ার ইচ্ছা করলেও নেতৃস্থানীয় ধনী মধ্যবিত্তদের কৌশলময় প্রচারের তাদের বোঝান সম্ভব হয়েছিল যে ওটা হিন্দু-মুসলমানের লড়াই।

আর তাই অনেক ক্ষেত্রে ধর্মের অপব্যবহারের ফলে নীল বিদ্রোহের মত মিলিত হিন্দু-মুসলমানের লড়াই। আর তাই অনেক ক্ষেত্রে ধর্মের অপব্যবহারের ফলে নীল বিদ্রোহের মত মিলিত হিন্দু-মুসলমান একত্রিত হতে পারেনি। গান্ধীজীর অসহযোগ আন্দোলন এবং মাওলানা মুহাম্মদ আলীদের খিলাফত আন্দোলনেও এ মোপলা বাহিনী রক্তাক্ত সাড়া দিতে ভোলেনি। ইংরেজ সরকার সারা ভারতে যা করেনি তা করেছে মোপলাদের মালাবারে। তারা সভা-সমিতি ও সম্মেলন করতে পারতেন না, কারণ কঠোরভাবে তা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু তাতেও বিপ্লবকে দমান যায়নি, বরং আগুণে পেট্রোল ঢালা হয়েছে। ফল হিসেবে ১৯২১ খৃস্টাব্দে মোপলারা মালাবারকে স্বাধীন বলে ঘোষণা করেন এবং স্বাধীনতার পতাকা উড়িয়ে দেন। সৈন্যদের সাথে মুসলমান মোপলাদের ভয়াবহ সংগ্রাম শুরু হয়। একদিকে শোষক ও শাসক ইংরেজ ও তাদের ধামাধরা স্থাবকের দল, অন্য দিকে শাসিত শোষিত মৃত্যু পথযাত্রী বিপ্লবী দল। ইংরেজ সৈন্যদের হাত হতে ওয়ালুতানাদ ও এরনাদ নামক দুটি স্থান ছিনিয়ে নেয়া হলে যুদ্ধ আরো জোরদার হয়।

তাছাড়া, সে সময় এ এলাকার বাইরে চিঠি পত্র, টেলিগ্রাম ইত্যাদির যোগাযোগ বন্ধ রাখা হয়। আর বাইরে থেকে আসা প্রত্যেকটি চিঠি পরীক্ষা করে তবে বিলি করা হত। সামান্য ক্ষতির গন্ধ থাকলে তা বিনষ্ট করা হত। তবে সরকারি খবরাখবর আদান প্রদান অব্যাহত ছিল। মোপলা বাহিনী ইংরেজের সাহায্যকারী কিছু ভারতীয় নেতাদের এ সময় নিহত করেন। চতুর ইংরেজরা মুসলমান কর্তৃক হিন্দু আক্রান্ত এ কথাটি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে প্রচার করে সাফল্য লাভ করে। ইংরেজের এ সমাপ্তি সরকারিভাবে গোপন রাখার চেষ্টা করা হলেও কিন্তু ভারতীয় নেতৃমহলে তা পৌছে যায়। সাথে গাজী, মাওলানা মহান আলী ও মাওলানা শওকত আলী মোপলা হত্যা এবং নকল সাম্প্রদায়িকতার খেলা বন্ধ করতে মালাবারে প্রবেশ করতে উদ্যত হলে, ইংরেজদের মালারে ঢুকতে না দিয়ে এবং জানিয়ে দেয়া হয়, কাউকে এখন মালাবারে ঢুকতে না দেয়ার আইন চালু রয়েছে। (আমাদের মুক্তি সংগ্রাম পৃষ্ঠা ২৩০-১)

এবার ব্রিটিশ সরকার মালাবারে হাজার হাজার সৈন্য নানা ধরনের। ট্যাঙ্ক, কামান, বোমা কতকগুলো গানবোট এবং রণতরী নিয়ে আসে। তার আগে ইংরেজী কায়দায় অপপ্রচার হয়েই ছিল। সুতরাং হিন্দুরা বিপ্লব মুসলমানদের তাদের শত্রু মনে করে

লড়াইয়ে নেমে পড়েন একদিকে ইংরেজ শক্তি তো আছেই, অন্য দিকে বাড়িতে পল্লীতে হিন্দু-মুসলমান ভাই-ভাই-এ লড়াই এক বীভৎস রূপ নিল। যুদ্ধ চলল এক মাস। তারপর একদিন ইংরেজরা আকাশ হতে বোমা বর্ষণ রণতরী হতে শেল বর্ষণ, ট্যাঙ্ক ও কামান হতে গোলা বর্ষণ করে মোপলাদের গরবাড়ি, দোকান পাট, ভষ্মস্তুপে পরিণত করে। যুদ্ধ শেষে মোপলা বাহিনীর দশ হাজার পুরুষ নারীর মৃতদেহ পাওয়া যায়। আর জীবন্ত যাদের পাওয়া যায় তাদের বন্দী করে বিচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। বিচারের পূর্বেই অনেক পুরুষ ও শিশুকে হত্যা এবং নারীদের উপর লজ্জাকর পাপাচার করা হয়। বাকী বেঁচে থাকা আসামীদের বিচার-ফল এমন দাঁড়ায়-এক হাজার জনের ফাঁসি দু হাজার লোকের দ্বীপান্তর অর্থাৎ সে আন্দামানে শ্রমসহ নির্বাসন আর আট হাজার লোকের পাচ হতে দশ বছর সশ্রম কারাদণ্ড। শাস্তির কি সুষম পরিবেশন।

এ অত্যাচারের ইতিহাসে আর একটি মর্মন্তুদ ঘটনা ঘটে। জীবন্ত বিপ্লবীদের মধ্যে যাঁরা শিক্ষিত ও নেতৃস্থানীয় ছিলেন তাঁদের মধ্যে বাছাই করা আশিমকে ট্রেনের একটা ছোট্ট কামরায় দরজা জানালা বন্ধ করে কালিকটে নিয়ে যাওয়া হয়। পথে তৃষ্ণায় কাতর হয়ে বন্দী বিপ্লবীরা পানির জন্য চিৎকার করেন এবং পানি ভিক্ষা চান। কিন্তু সে আর্তনাদে নিরদের প্রাণবিগলিত হয়নি।

যখন ট্রেন কালিকট পৌছাল তখন দেখা গেল অধিকাংশই শহীদ হয়েছেন। আরও দেখা গেল, একজন অপর জনের জিভ চুষে পিপাসা মেটাবার চেষ্টা করেছেন। কিনতু সে ও রসনা ততটুকু রস দিতে পারেনি বা তাদের বাঁচাতে পারত। যাহোক এতবড় একটা কাণ্ড ঘটনার পরও তখনকার ভারতীয় নেতারা সবাই যেন ক্ষেপে গেলেন ব্যাপারটা মুসলমানদের মনে বেদনা সৃষ্টির এটাও অন্যতম একটা কারণ বলা যায়। খিলাফত কমিটির নেতা মাওলানা মুহাম্মদ আলী এটা নিয়ে হৈ চৈ করতে গিয়ে বাধা পেয়ে বুকে আঘাত পান এবং কংগ্রেসের উপর আস্থা হারান। (আমাদের মুক্তি সংগ্রাম, পৃষ্ঠা ২৩১-২৩৩)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন