মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আমাদের দেশে বিকৃত ইতিহাস পরিবেশনের জন্য ইংরেজদের দোষ দেয়া হলেও তাঁদের কূটনৈতিক জ্ঞান ও সুদূরপ্রসারী চিন্তাধারার কথা অস্বীকার করা যায় না। তারা বুঝেছিলেন, ইতিহাসে ভেজাল দিয়েই ভারতবাসীকে অন্ধকারে রাখা সম্ভব এবং এ ইতিহাসের মাধ্যমেই হিন্দু-মুসলমানে বিভেদ সৃষ্টি করা যাবে। সে উদ্দেশ্যেই ইতিহাস-স্রষ্টা মুসলিম জাতির অক্লান্ত পরিশ্রমের রচনা-সম্ভার আরবী, ফার্সী ও উর্দু ইতিহাসগুলোর প্রায় প্রত্যেকটি অধ্যয়ন, গবেষণা ও অনুবাদ করতে তারা যে অধ্যাবসায় ও পরিশ্রমশীলতার দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন অনস্বীকার্য এবং উল্লেখযোগ্য।
উদাহরণ দিয়ে বলা যায়-আব্বাস শেরওয়ানির লেখা তুহফায়ে আকবর শাহী, জিয়াউদ্দিন বারনীর লেখা তারিখে ফিরোজশাহী, আবদুল হামিদখানের বাদশাহনামা এবং মুহাম্মদ আলীর লেখা চাচানামা, ফাতাহনামা ও মিনহাজুল মাসালিকের অনুবাদ করেছেন যুগ্মভাবে মিঃ ইলিয়ট ও মিঃ ডওসন। মিনজাউদ্দিন সিরাজের তাবাকাতে নাসিরির অনুবাদক এইচ, জি রেটি। আলী হাসানের সিয়াসাতনামার অনুবাদক মিঃ শেফার। ইউসুফের কিতাবুল খারাজের অনুবাদ করেছেন মিঃ ই, ফাগনন। আবু তালেব লিখিত মালফুজাতে তাইমুরির অনুবাদ মিঃ মেজর ডাভি।
বাইহাকির তারিখে সুবুক্তগীনের অনুবাদক মিঃ ড., এইচ, মোরবি। আবুল ফজলের আকবরনামার তৃতীয় খন্ডের অনুবাদ করেছেন মিঃ হেনরী বেভারিজ। আইনই আকবরীর দ্বিতীয় ও তৃতীয় খন্ডের অনুবাদ করেছে মিঃ এইচ এস, জারেট এবং প্রথম খন্ডের অনুবাদ করেছেন মিঃ এইচ, লো এবং স্যার ডব্ল হেইগ। মাওয়ার্দির আল-আহকামে সুলতানিয়ার অনুবাদ করেছেন যুগ্মভাবে মিঃ রগ ও মিঃ আঘনিডস। বালাজুরির ফাতহুল বুলদানের তরজমা করেছেন মিঃ ডি, কোজে।
আলবিরুনীর কিতাবুল হিন্দের অনুবাদ করেছেন মিঃ ই.সি, সাচান। ইবনুল আসির লিখিত তারিখুল কামিলের অনুবাদক হচ্ছেন মিঃ টর্ণবার্গ। মুসলিম মহিলা ঐতিহাসিক গুলবদন বেগম লিখিত হুমায়ুননামার ইংরেজী অনুবাদ করেছেন মিসেস বেভারিজ। বাদশা জাহাঙ্গীরের লেখা তুজুকে জাহাঙ্গীরীর অনুবাদক যুগ্মভাবে মিঃ রজার ও মিঃ বেভারিজ। মির্জা হায়দারের লেখা তারিখে রশীদীর ইংরেজী করেছে মিঃ ই,ডি,রস্। কাফি খানের মুনতাখাবুল সুবাবের অনুবাদ করেছেন স্যার ডব্ল হেইগ।
হেদায়ার মত গ্রন্থের অনুবাদ করতেও চার্লস হ্যামিল্টনের আটকায়নি। পর্যটক ইবনে বতুতার পর্যটনের কাহিনী লিখিত গ্রন্থের ইংরেজী অনুবাদ করেছেন মিঃ এইচ,এ, আর গিবন প্রভৃতি। মূল তথ্যের সাথে কোন কায়দায় কোন ভেজাল কিভাবে সংমিশ্রণ করতে হয় এ বিষয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনুবাদকগণ ‘নিপুণ শিল্পীর পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে-মূল গ্রন্থের ভাষা আরবী, উর্দু, ফার্সী না জানার জন্য ইংরেজীতে অনূদিত বিভিন্ন পুস্তকের সহায়তা নিয়েই এবং শুধু সেগুলোকে কেন্দ্র করেই ভারতের অধিকাংশ সরকারি ইতিহাস রচিত হয়েছে বা হচ্ছে।
আনন্দবাজার, যুগান্তর ও বসুমতীর প্রশংসিত গ্রন্থ বাংলা ও বাঙালীর ইতিহাসের ইতিহাসের খন্ডে শ্রীধনঞ্জয় দাস মজুমদার লিখেছেনঃ “ইংরেজগণ তখন শাসকজাতি ছিলেন। ভারতের আর্যগোষ্ঠীর বহির্ভূত পণ্ডিত ও ঐতিহাসিকগণের মধ্যে বাংলার ইংরেজের সংস্কৃতিতিতে অভিজাত ও বেতনভুক্ত ঐতিহাসিক ও শাস্ত্রকারগণ তাদের ইচ্ছামত শাস্ত্রগ্রন্থের বহু তালপত্র বদলাইয়া তাহাদের ইচ্ছামত শ্লোক প্রক্ষিপ্ত করেন।
আবার বহু তালপত্র ধ্বংস করিয়াছেন। এই শাসক গোষ্ঠীর ভারত শাসনের সুবিধার জন্য তাঁহারা হিন্দুশাস্ত্রের বহু তথ্য গোপন, বহু তথ্য বিকৃত এবং বহু মিথ্যা প্রক্ষিপ্ত করিয়া যে মিথ্যা ইতিহাস প্রস্তুত করিয়াছে তাহার বহু প্রমাণ দেওয়া হইয়াছে। বিভেদের সুযোগে ইংরেজ রাজত্ব চিরস্থায়ী করিতে চেষ্টা করেন। এইজন্য তাঁহারা তাদের নবাগত হিন্দুদিগকে এইরূপ মিথ্যা ইতিহাস লিখিতে অনুপ্রেরণা দিয়াছিল।”। পৃষ্ঠাঃ ৬৬-৬৭)
ইতিহাসে যে ভেজাল আছে এ শুধু আমার বক্তব্যই নয়, ভারতের বিখ্যাত নেতা স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ও এ প্রসঙ্গে লিখেছেনঃ “অনেক বৌদ্ধ গ্রন্থের দু' একটি স্থল ঈষৎ পরিবর্তনপূর্বক, কোথাও বা প্রমাণসূত্রটিকে বদলাইয়া সমগ্র গ্রন্থখানিকে ‘হিন্দু' করিয়া তোলা হইয়াছে ; পরবর্তীকালে ভাষার পরিমার্জনের সাথে সাথে বাঙ্গলার আদি কবি কৃত্তিবাসও পরিমার্জিত হইয়াছেন। কবির কাব্য পরিষ্কৃত করিতে যাইয়া সংশোধকগণ আবর্জনা রাশির দ্বারা কৃত্তিবাসকে আচ্ছন্ন করিয়া ফেলিয়াছেন। ইহা ছাড়া অন্যান্য পুরাণ, উপপুরাণ হইতে মনোরম অংশও লিপিকারগণ বাছিয়া আনিয়া কৃত্তিবাসে জুড়িয়া দিয়াছেন।” (সমালোচনা সংগ্রহ-কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, চতুর্থ সংস্করণ, পৃষ্ঠাঃ ২৮৩-২৮৪)
তাহলে ইতিহাস, সাহিত্য, প্রবন্ধ ইত্যাদিতে ভেজাল দেয়ার কথা প্রমাণিত হচ্ছে। এছাড়া আর একটি দিক হচ্ছে-সরকারি ইতিহাসের সাথে বেসরকারি ইতিহাসের পার্থক্য কতটুকু। এ সম্বন্ধে রমেশচন্দ্র মজুমদারের ভাষায় বলছি : “ইহা কিছুতেই ভুলিলে চলিবে না যে, সরকারি ইতিহাস এবং পণ্ডিতসুলভ (academle) ইতিহাসের মধ্যে আদর্শ উদ্দেশ্য এবং দৃষ্টিভঙ্গিতে পার্থক্য থাকিবেই।
সেইজন্য বেসরকারি ইতিহাসের একটি বিশেষ দায়িত্ব হইল সরকারী ইতিহাসের প্রকৃতির উপর দৃষ্টি রাখা। ভারতের জাতীয়তাবাদী ইতিহাস, স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিবৃত্তও নিরপেক্ষ গবেষণার কষ্টিপাথরে যাচাই হওয়া উচিত। হয়ত তাহার ফলে, প্রচলিত কিছু অলীক ধারণা ধূলিসাৎ হইবে। ব্যক্তি বিশেষের প্রতিষ্ঠার বনিয়াদ ভাঙ্গিয়া পড়িবে। তার ফলেই প্রমাণ হইবে প্রকৃত ইতিহাস রচনার সার্থকতা।”
শ্রী মজুমদার আরও বলেনঃ “সাম্প্রতিককালে সরকারি নির্দেশ মত সত্যকে এবং ইতিহাস রচনাশৈলীর মৌল নীতিকে জলাঞ্জলি দিয়া ইতিহাস রচনার প্রয়াসকে সমর্থন করা যায় না।” (ভারতে ইতিহাস রচনা প্রণালী, পৃষ্ঠাঃ ৬০-৬১)
এ প্রসঙ্গে এবার বর্তমান ভারতের ইতিহাসের দুজন দিকপালের দুটি উক্তির উদ্ধৃতি দিচ্ছি। শ্রীমতী রোমিলা থাপার বলেন : “স্কুল-কলেজের পাঠ্য ইতিহাসের বই সত্যিই সেকেলে এবং অজস্র ভুল তত্ত্ব ও তথ্যে ভরা। কিন্তু পাঠ্যপুস্তকের অনুমোদন সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার কিংবা শিক্ষা পর্ষদের এখতিয়ার। অথচ ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ইতিহাসের লোক ননহয় আমলা, নয় রাজনীতিবিদ, যাঁরা কখনও ইতিহাস পড়েন নি অথবা ৬০/৭০ বছর আগেরকার দু একটা বই মনে করে পড়েছেন। রাজনীতিবিদদের ইতিহাস চেতনার কথা আর নাই বা বললাম, ইতিহাসের মধ্যে নিজের দল গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের স্বার্থ খোজাই এঁদের কাজ।"
ইরফান হাবিব বলেন : “আমার মতে, ওরা (সরকারি পাঠ্য ইতিহাস লেখকরা) যেসব ধারণা প্রকাশ করছে সেগুলো শুধু সেকেলে নয়, একেবারে আদিম-যা সব সভ্যদেশেই বিস্মৃত হয়েছে-বহু যুগ আগেই। মনীষী রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, “ভারত বর্ষের যে ইতিহাস আমরা পড়ি এবং মুখস্থ করিয়া পরীক্ষা দিই তাহা ভারত বর্ষের ইতিহাসের এক দুঃস্বপ্নের কাহিনী মাত্র !”
সুতরাং প্রমাণিত হল যে, আমাদের দেশের প্রচলিত ইতিহাস সর্বাংশে সঠিক বলে মনে করা সত্যের অপলাপ ছাড়া আর কিছু নয়। ভারত বর্ষে ক্যান্সারের মত সবচেয়ে বড় ব্যাধি হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা। আর এ সাম্প্রদায়িকতার তিক্ততা অন্যান্য সম্প্রদায়ের চেয়ে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যেই বেশি প্রকট। এটাকে নির্মূল করতে হলে, আমাদের ধারণায় সর্বাগ্রে সঠিক ইতিহাস পরিবেশন অবশ্য কর্তব্য।
তাছাড়া এই দু' সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক জানাজানির, আদানপ্রদানেরও বিশেষ প্রয়োজন আছে। তবে সঠিক ইতিহাস পরিবেশনের পূর্বোহ্নে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার উচ্ছেদ সাধনে ইসলাম, কুরআন ও মুসলমান সম্পর্কে প্রাথমিক কিছু ধারণা দেয়া আবশ্যক। আমরা আলোচ্য গ্রন্থে এ সমস্ত বিবরণই উপস্থাপন করছি। আমীন!
-গোলাম আহমাদ মোর্তজা
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/492/3
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।