hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

চেপে রাখা ইতিহাস

লেখকঃ গোলাম আহমাদ মোর্তজা

৩৩
আওরঙ্গজেবের পরবর্তী মোগল বাদশাগণ
সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর তার পরবর্তী বংশধরগণ সম্রাট আওরঙ্গজেবের মত এত যোগ্যতাসম্পন্ন ছিলেন না ঠিকই, তাই বলে খুব অযোগ্যও ছিলেন না। বাহাদুর শাহ উপাধি নিয়ে আরওঙ্গজেবের জেষ্ঠ্যপুত্র শাহ আলম ১৭০৭ খৃস্টাব্দে সিংহাসনে বসলেন। সম্রাট শাহ আলম বা বাহাদুর শাহ বীর, পণ্ডিত ও ধর্মপরায়ণ ছিলেন। সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর সকল শক্তিই স্বাভাবিক ভাবে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে থাকে। কিন্তু শাহ আলমের বীরত্ব, গাম্ভীর্য ও কলা-কৌশলের শুধু ভূমিকা দেখেই অনেকে শান্ত ও ক্ষান্ত হয়। কিন্তু শিখ জাতি শক্তিশালী হয়ে বান্দার নেতৃত্বে ও আদেশে শিরহিন্দে লুটপাট শুরু করলে বাহাদুর শাহ কোন সেনাপতি নিয়োগ না করে নিজেই বীরবেশে সুশিক্ষিত সৈন্যসহ যুদ্ধক্ষেত্রে নামলেন। যুদ্ধে শিখ সৈন্য সম্পূর্ণরূপে পরাজিত হল এবং বান্দা কোনও রকমে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন।

ভারতের প্রান্তে প্রান্তে শাহ আলমের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। শাহ আলম মোঘল বাহিনীকে শক্তিশালী করে সাম্রাজ্য পরিচালনা করতে লাগলেন। কিন্তু ১৭১২ খৃষ্টাব্দে তাঁর মৃত্যু হয়। মাত্র ৫ বছর রাজত্ব করেন শাহ আলম। স্বল্পায়ু না হলে না শাহ আলমও আওরঙ্গজেবের মত অমর হয়ে থাকতেন। তিনি সিংহাসনে বসে রাজপুতদের সাথে মৈত্রী বন্ধনের ব্যবস্থা করেছিলেন ও পিতা আওরঙ্গজেবের আমলে বন্দী শম্ভুজীর পুত্র শাহুকে তিনি মুক্তি দেন।

এমনিভাবে পাণ্ডিত্য, বিচক্ষণতা সুদূর প্রসারী চিন্তাদারা সর্বোপরি ধর্মপ্রবণতা তাকে মহীয়ান করে তুলেছিল। কিন্তু চাপা পড়ে গেছে সেসব সত্য ইতিহাস-এখানে সুযোগ্য হয়েছেন কলমের খোচায় অযোগ্য। শাহ আলমের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র জাহান্দার শাহ সম্রাট হন। তিনি বিচক্ষণ ছিলেন। দুষ্টের দমনে তিনি ছিলেন খুব নির্ভীক। এক বছর রাজত্ব করার পর ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্তে তিনি গুপ্ত ঘাতকের হাতে নিহত হন। এখানে অপমৃত্যুর জন্য নিশ্চয় তিনি দায়ী নন বা অযোগ্য প্রমাণিত হবেন না। অথচ অনেক ঐতিহাসিক আওরঙ্গজেবের পরবর্তীগণ অযোগ্য ছিলেন বলে ব্যক্ত করেছেন বিনা দ্বিধায়, চিন্তার গভীরে প্রবেশ না করেই।

গান্ধীজী, ইন্দিরা গান্ধী, পাকিস্তানের লিয়াকত আলি খান, আমেরিকার মিঃ কেনেডি প্রমুখ শত্রদের হাতে নিহত হন। যারা হত্যাকারী তারাই কলঙ্কিত আর যারা নিহত তারা ইতিহাসের পাতায় নানা কারণে অমর হয়ে রয়েছেন। তাই এখানেও জাহান্দারের মৃত্যুতে অযোগ্যতার কি থাকতে পারে?

সম্রাট জাহান্দারের পরে বাহাদুর শাহের পৌত্র ফাররুখশিয়র সিংহাসনে বসেন ১৭১৩ খৃস্টাব্দে। পূর্বপুরুষদের আকস্মিক মৃত্যুর অভিজ্ঞতায় স্থির করলেন, মৃত্যুর পূর্বে এমন যোগ্য প্রতিনিধি তৈরি করতে হবে যারা যে কোন মুহূর্তে সাম্রাজ্যের হাল ধরতে পারবেন। তাই বংশের যোগ্য দুই ভাই, ইতিহাসে যারা সৈয়দ ভ্রাতৃদ্বয় বলে পরিচিত, সে সৈয়দ হুসাইন আর সৈয়দ আবদুল্লাকে সাথে নিলেন এবং কাজ-কার্যে এমন সুযোগ্য করে তুললেন যাতে সম্রাটের অসুস্থতা বা অনুপস্থিতির কারণে সম্রাটের ও সাম্রাজ্যের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারেন। অনেক ঐতিহাসিক অবশ্য মনে করেন যে, সম্রাট ফাররুখশিয়র সৈয়দ ভ্রাতৃদ্বয়ের হাতের পুতুল ছিলেন। কিন্তু বস্তুতঃ তিনি ছিলেন বিচক্ষণ ও দুরদশী। লেখকগণ অনেকে সম্রাটের বাস্তব মূল্যায়ন করতে পারেন নি।

তার সময় মারোয়াড়ের রাজা অজিত সিংহ বিদ্রোহ ঘোষণা করলে সম্রাট তা কঠোরভাবে দমন করেন। অজিত সিংহ পরাজিত হয়ে অত্যন্ত আগ্রহেই সম্রাট ফাররুশিয়রের আনুগত্য স্বীকার করেন এবং নিজের কন্যার সম্রাটের সাথে বিয়ে দেন। পূর্ববর্ণিত শিখ নেতা

বান্দাও আবার শক্তি সঞ্চয় করে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। ফাররুখশিয়র বিপুল বিক্রমে বান্দাকে পরাজিত এবং নিহত করেন। কিন্তু আবার আকস্মিক দুর্ঘটনা ঘটল ১৭১৯ খৃস্টাব্দে-আততায়ীর হাতে সম্রাট নিহত হন। অতএব এখানেও তার অযোগ্যতার কোন প্রশ্নই ওঠে না।

এমনিভাবে মুহাম্মাদ শাহ উপাধি নিযে বাহাদুর শাহের চতুর্থ পুত্র জাহান শাহ সম্রাট হলেন (১৭১৯-৮)। পতনোন্মুখ মোঘল সাম্রাজ্যের ইনিই ছিলেন শেষ প্রতাপশালী সম্রাট। তার সময়ে দরবারে ওমরাহগণ ইরানী ও তুর্কী এ দু' দলে বিভক্ত হয়ে যায়। ফলে সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা দেখা দেয়। তার উজির বা মন্ত্রী নিজামউল মুলক দাক্ষিণাত্যের সুবাদার থেকে স্বাধীন শাসক হয়ে উঠলেন; হায়দরাবাদ রাজ্যের তিনিই প্রতিষ্ঠাতা।

সুবাদারগণও চারিদিকে স্বাধীন হয়ে দাঁড়ালেন। অযোধ্যার সাদাত খা, বাংলাদেশের আলিবর্দী খা, রোহিলাখণ্ডে আফগানরা এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। অত্যাচারী মারাঠারাও এ সময় আবার খুব প্রবল হয়ে মালব, বুন্দেলখণ্ড, গুজরাট, বেরার ও উড়িষ্যা দখল করে। বঙ্গদেশও এদের আক্রমণ থেকে বাদ যায়নি। এদের লুটপাটকে বঙ্গের লোক তখন বর্গীর হাঙ্গামা' বলত। তাছাড়া এ সময় তুর্কী নাদির শাহ সাফাবী বংশের উচ্ছেদ করে পারস্যের মসনদে বসে ভারত আক্রমণ করেন। তার প্রচণ্ড আঘাতে মোঘল সাম্রাজ্যের মেরুদণ্ড ভেঙে যায়।

নাদির শাহ যে একজন আক্রমণকারী তাতে সন্দেহ নেই। অবশ্য সে যুগে এ ধরণের আক্রমণ অন্যায় ছিলনা, বরং বীরত্বই ছিল। মুসলমান নাদিরের আক্রমণে বহু নর-নারী নিহত হয়েছিল ও বহু ঘর-বাড়ি অগ্নিকাণ্ডে ধ্বংস হযেছিল-একথাও অসত্য নয়। কিন্তু ইতিহাসে, নাটকে ও যাত্রায় যা বোঝান ও দেখান হয় তাতে প্রমাণ হয় যে, মুসলমান নাদিরের অত্যাচার ও আক্রমণ ছিল আকস্মিক ও অহেতুক, ওটা যেন নতুন কিছু নয়, মুসলমানদের স্বাভাবিক কাজই হল এ ধরণের আক্রমণ।

কিন্তু বস্তুতপক্ষে ঘটনা তা নয়। আসলে তিনি স্বাভাবিক ক্ষয়ক্ষতি করেই দিল্লি দখল করেন। কিন্তু বিরুদ্ধপক্ষ রটিয়ে দিলেন যে, নাদির শাহ হঠাৎ মারা গেছেন। আর সে সাথে নাদিরের সৈন্য ও কর্মীদের যথেচ্ছভাবে হত্যা করা শুরু হল। এ রকম ঘটনা নাদিরের কল্পনার বাইরে ছিল। তার সৈন্যদের আক্রান্ত হবার ঘটনা যখন তিনি শুনলেন তখন তিনিও দিগ্‌বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পাইকারি হত্যা বা কঠোর প্রতিশোধ নিতে বললেন তার সৈন্যবাহিনীকে। ফলে জাতি, ধর্ম-নির্বিশেষে অনেকেই নিহত হল-এখানে ‘হিন্দু-মুসলমানের কোন ব্যাপার ছিলনা।

নাদির শাহের পর আহমদ শাহ আবদালির ভারত অভিযানে মোঘল সাম্রাজ্য একেবারে অন্তঃসারশূন্য হয়ে পড়ে। মুহম্মদ শাহের পরে আহমদ শাহ (১৭৮-'৫৪), দ্বিতীয় আলমগীর (১৭৫-৫৯), দ্বিতীয় শাহ আলম (১৭৫৯-১৮০৬), দ্বিতীয় আকবর শাহ (১৮০৬-'৩৭) ও দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ (১৮৩৭-'৫৮) পর্যায়ক্রমে বাদশাহ হন। শেষ মোঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহও অযোগ্য বিবেচিত হয়েছেন অনেক ঐতিহাসিকের কলমের খোঁচায়। তিনি নাকি কবিতা আর বিলাসিতা ভাল বুঝতেন, সাম্রাজ্য নয়। তাঁর চেপে রাখা ইতিহাস, কিন্তু মোটেই তা বলে না-তার থেকেই সামান্য কিছু পরিবেশিত হচ্ছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন